নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেবার মাধ্যমে বন্ধুত্ব

ব্লগিং করে আনন্দ , সত্য সুন্দর শেয়ার করতে চাই

আহলান

ব্লগার

আহলান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈদ উল আদ্বহা উপলক্ষ্যে সত্য ঘটনা অবলম্বনে অতি প্রাকৃতিক নতুন আঁষাঢ়ে গল্প-

১৩ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৬




আমাদের বাড়ি থেকে বেশ কিছু দূরে একটা আম গাছ আছে। সেই আম গাছটির বয়স আনুমানিক ৭০ বছর। তবে লক্ষনীয় বিষয় হলো ঐ আম গাছে কখনোই আম ধরে না। রাস্তা থেকে গাছটি একটু দূরে মাঠের মধ্যে। তখন ছিলো বর্ষা কাল। একদিন বর্ষাকালে দুপুর বেলা সাইদ ভাই মাঠ থেকে গরু নিয়ে নিজ ঘরে ফিরছিলেন। হটাৎ করেই কালো মেঘে ছেয়ে গেলো চারিদিক। আষাঢ় মাসে এমন আবহাওয়া অনাকাঙ্খিত নয়। গরম একটা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। সাইদ ভাই বুঝতে পারলেন যে জোর বৃষ্টি আসছে। সাইদ ভাই দ্রুত পথ চলতে শুরু করলেন।
কিন্তু দু চার টা বজ্র সহ বিদ্যুৎ চমকে উঠেই বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা ঝম ঝম করে পড়া শুরু হয়ে গেলো। আশে পাশে এমন কোন বাড়ি ঘর বা গাছ পালা নেই যে সেখানে দাড়িয়ে আশ্রয় নেয়া যায়। শুধু ঐ আম গাছ ছাড়া। সাইদ ভাই দ্রুত গরুটিকে এক প্রকার দাবড়িয়ে ঐ আম গাছটির নিচে এসে দাড়ালেন।

সাইদ ভায়ের মুখে কাঁচা পাকা লম্বা দাড়ি। পরনে নীল রঙের লুঙ্গি, মাজায় একটা আধ ছেঁড়া পুরোনো গামছা আর গায়ে হাফ হাতা ফতুয়া। আম গাছ অবধি পৌছাতে প্রায় ভিজেই গেলেন সাইদ ভাই। গরুটাকে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে উনি মাজার গামছাটা খুলে মাথা মুখ ও গা মুছতে লাগলেন। শোঁ শোঁ শব্দে বাতাস কেটে যাচ্ছে। বৃষ্টি আর বাতাসের ঝাপটায় সাইদ ভাই ভিজেই যাচ্ছেন। পায়ে প্লাস্টিকের হলুদ স্যান্ডেল জোড়াও পিছলে যাচ্ছে।

চারিদিকে তাকিয়ে দেখলেন আর কাউকে দেখা যায় কি না। কিন্তু না। তিনি ছাড়া এই তল্লাটে আশে পাশে আর কেউই নাই। গরুটাও এই প্রাকৃতিক দূর্যোগ আঁচ করতে পেরে চুপ চাপ পিঠ বাঁকিয়ে দাড়িয়ে আছে, যেনো সাইদ ভায়ের বন্ধু সে। মাঝে মধ্যে লেজ নাড়িয়ে মাছি তাড়ায়। আম গাছের পাতা আর ডালের ফাঁক দিয়ে বৃষ্টির পানি সাইদ ভাই ও গরু উভয়কেই ভিজিয়ে দিচ্ছে। কতটা সময় এভাবে দাড়িয়ে থাকবে, তাই ভাবছে সাইদ ভাই। একবার ঘাড় উঁচিয়ে আম গাছের দিকে তাকায় সে। মেঘের কি অবস্থা বোঝার চেষ্টা করে। ডাল পালা আর পাতার ফাকে দিয়ে সে দেখে ধুসর মেঘ।

আশে পাশে তাকায় সাইদ ভাই। বৃষ্টি থামার কোন লক্ষণই নাই। মনে মনে সাইদ ভাই ভাবে, সেই ছোট বেলা থেকে দেখছি এই আম গাছ। এই আম গাছে কখনো একটা আমও ধরতে দেখি নাই। সাইদ ভায়ের ভাবনা শেষ হতে না হতেই তার পিছনে ধুপ করে কিছু একটা পড়ার শব্দ হলো। তার পর আবারো ধুপ ধুপ ...... ! শব্দ লক্ষ্য করে সাইদ ভাই মাটিতে তাকাতেই দেখে কাঁচা পাকা চারটে আম ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘাসের উপরে পড়ে আছে। তাজা আম। বোঁটা থেকে তখনো আমের সাদা কস ঝরছে। বিস্ময়ে সাইদ ভায়ের মুখ হা হয়ে গেছে। একবার ঘাড় উঁচিয়ে আম গাছের দিকে তাকায়। বিস্ময় ভরা চোখে সে খোঁজার চেষ্টা করে গাছে কি আদৌ আরো কোন আম ধরেছে কি না! আরো আম আছে কি না! কিন্তু না ....... গাছে কোন আম দেখা যায় না। তাহলে এই বড় বড় চারটি আম পড়লো কোত্থেকে! সে খুবই চমকে গেলো। আম এই আম চারটি সে নিবে কি না ভাবতে লাগলো। অতি প্রাকৃতিক ঘটনা সম্পর্কে সে ছোট বেলা থেকে অনেক কিছুই শুনে এসেছে। কিন্তু তার সাথে এর আগে কখনোই এমন অদ্ভুত ঘটনা ঘটেনি। সাইদ ভাই আম চারটি কুড়িয়ে গামছায় বেঁধে বাড়ির পথে রওনা দিলেন। যদিও বৃষ্টি তখনো থামেনি। কিন্তু সাইদ ভাই আর এখানে দাড়িয়ে থাকতে চায়নি। সাইদ ভায়ের এক হাতে গরুর দড়ি অপর হাতে গামছায় বাঁধা চারটি ডাসা ডাসা আধ পাকা আম, যা এই মৌসুমে এই গাছ থেকে পাওয়ার কোন কথাই না....... মনে চলছে বিস্ময়ের ঢেউ ...... !

(ছবি নেট থেকে সংগৃহিত)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: চিপাচাপায় আম ধরছিল হয়তো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.