![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“তুমি আমার থেকে ইদানিং পালিয়ে পালিয়ে থাকো কেনো”? জানতে চাইলো মিথিলা।
“আরে না, পালিয়ে থাকি কই? আসলে স্কুল থেকে আসার পর বাসাতেও বই নিয়ে বসায় রাখে”।
“মিথ্যা কথা”। রেগে উঠলো মিথিলা। “তুমি কি ভাবো আমাকে? গাধা? আমি বুঝি দেখি না সব? ঐদিন তুমি তোমার বন্ধুদের সাথে দৌড়ে খেলতে চলে গেছো। আমি ডাকলাম অথচ তুমি শুনেও না শোনার ভান করছো”।
কথাটা আসলেই সত্যি। ফুটবল ম্যাচ ছিলো সেদিন। তাও বাজির খেলা। আমি দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। আমাকে খেলতেই হবে এবং আমি খেলতেও চাই। কিন্তু সেদিন যদি মিথিলার জন্য দাড়াতাম তবে সেও আসতে চাইতো। আমার ভয় লাগতো কখন যদি আবার ওর গায়ে বল পড়ে। ও ব্যাথা পাবে। তাতে আমারও খারাপ লাগবে।
“না মিথিলা, কিযে বলো। আরে তুমি ডাকলে আমি বুঝি দাড়াইতাম না। আসলে সত্যিই আমি শুনতে পাইনাই। আচ্ছা আমি তো একা ছিলাম না। ওখানে আমার বন্ধুরাও ছিলো। ওরাও তো শুনতে পায়নাই”।
“তুমি কি আমাকে গাধা মনে করো? আমি ডাকাতে ওরাও শুনতে পায়। ওরা সেসময় ফিসফিস করে তোমাকে কি যেনো বলছিলো। তুমি আসলে আমাকে দেখতেই পারোনা। আমার কিছু হলে তখন ঠিকই বুঝবে”। রাগ দেখিয়ে চলে গেলো মিথিলা। আমি আমল দিলাম না। আমি জানি ও ঠিকই ফিরে আসবে বিকেলে। উদ্ভট প্রশ্ন করে আমাকে জ্বালাবে।
মিথিলা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে। আম্মুর কাছে শুনতে পেলাম বেচারী বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেনা। আম্মুর কাছে জিজ্ঞেস করেছিলো আমি দেখতে আসিনি কেনো? শুনে লজ্জা পেলাম। একসাথে খেলি, ঘুরে বেড়াই, ঝগড়া করি। আমার তো উচিত ছিলো ওকে দেখতে যাওয়া। খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু বুঝতে পারি না খারাপ লাগার উৎসটা কোথায়? কেনো এতো খারাপ লাগে? রিতা অসুস্থ হলে তো খারাপ লাগেনা।
“আন্টি মিথিলা কোথায়”?
“ও তো খুব অসুস্থ বাবা। তুমি জানো না? ও তো কয়েকবার জিজ্ঞেস করলো তুমি এসেছো কিনা। ভিতরে যাও। ও বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারেনা।”?
“হাসঁপাতালে নেবেন না”?
“ডাক্তার তো বললো লাগবেনা। দেখি আরো দুটো দিন”।
ভিতরে গেলাম। মিথিলা শুয়ে আছে। মুখটা খুব ছোট হয়ে গেছে। চোখ দুটো বসে গেছে গর্তে। লজ্জা লজ্জা মুখে ওর কাছে গেলাম আমি। ও আমাকে দেখে খুব সুন্দর করে এক চিলতে হাসি দিলো।
“আমি ভেবেছিলাম তুমি আরো আগে আসবে”। কথা বললো মিথিলা।
“তোমার পছন্দের ক্যাডবেরী এনেছি”।
“এই চারদিন তুমি টিফিন খাওনি, তাইনা”?
“ওটা কোনো ব্যাপার না। এই নাও, তোমার পছন্দের রুপকথার বই”।
“তুমি তো কখনোই আমাদের বাসায় বেশীক্ষন থাকো না, আজ কি বাকি সময়টা থাকবে”?
এটা ওর জিজ্ঞেস করা লাগতোনা। আমি এমনিতেও থাকতাম। মিথিলা জানেনা ওর অসুখ শুনে আমার কতো চিন্তা লাগে। আমি আসতে চেয়েছি আরো আগে কিন্তু কি যেনো এক সংকোচ চলে আসে। কিন্তু কিছু সময় আছে যখন সংকোচও বাধা হয়ে থাকতে পারেনা। অবশেষে আমার বেলায়ও পারেনি। আমি মিথিলার হাত ধরলাম। আমরা এখনও ছোট। তাই আমি জানি কেউ দেখলেও কিছু মনে করবেনা। মিথিলা আবারও সুন্দর একটুকরো হাসি দিলো। আমি মনে মনে তিনটি যাদুময় শব্দ বললাম। ও শুনতে হয়তো পাবেনা, কিন্তু অনুভব ঠিকই করবে।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৩২
শেষ বিকেলের অদৃশ্য ছায়া বলেছেন: কেন?
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৯
নিষ্কর্মা বলেছেন: এত অল্প বয়সে প্রেম করা ঠিক না!