নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“Blogger | Law Student | Human Rights Activist”

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু

লেখালেখির মাধ্যমে আমি নতুন ভাবনা, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও সৃজনশীল প্রকাশ খুঁজে পাই। আমার লেখার লক্ষ্য পাঠকদের ভাবতে উদ্বুদ্ধ করা এবং একটি অর্থবহ আলোচনা তৈরি করা।

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

রমজানে বাজারের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি: নাগরিক জীবনের দুঃখগাথা

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৩৮



রমজান মাস মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আত্মসংযম, ইবাদত এবং ধৈর্যের মাস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই পবিত্র মাস উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমিয়ে জনগণকে স্বস্তি দেওয়ার রীতি থাকলেও, বাংলাদেশে এর চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বরং রমজান শুরুর আগেই বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হিড়িক পড়ে যায়, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য বড় ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।

এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে দাম বেড়ে গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রয়োজনীয় পরিমাণ তেল আমদানি হলেও দোকানে সহজে মিলছে না, আর মিললেও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। এ অবস্থা শুধুমাত্র সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে নয়, অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রেও লক্ষ করা যাচ্ছে। মসলা, ছোলা, সবজি, মাছ-মাংসসহ প্রায় সবকিছুর দাম রমজানকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় দাম বেড়েছে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যমতে, জানুয়ারি মাসেই বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, এই কৃত্রিম সংকট কারা তৈরি করছে? বাজারে বড় সিন্ডিকেট সক্রিয় বলে অভিযোগ উঠেছে, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব স্পষ্ট।

এদিকে সবজির বাজারেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। শসা, আলু ও মসলার দাম বেড়েছে। পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও আগের তুলনায় বেশি। বিশেষ করে এলাচের দাম হঠাৎ করেই অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে, যা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাছ-মাংসের দাম স্থিতিশীল থাকলেও, মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে, যা নিম্নআয়ের মানুষের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ।

একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এ অবস্থা সত্যিই উদ্বেগজনক। সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে অভিযান চালানো দরকার। একই সঙ্গে, বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া উচিত। রমজান মাস সংযমের মাস, এটি মুনাফা লোটার মাস নয়। ব্যবসায়ীদের নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে ভাবতে হবে—পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা এক ধরনের অন্যায়।

বাজার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পুরোপুরি সরকার এবং ব্যবসায়ীদের। সাধারণ জনগণের এতে করার কিছু নেই, কারণ তারা শুধুমাত্র ভোক্তা। সরকারের উচিত কঠোরভাবে বাজার তদারকি করা এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে, যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না হয় এবং সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার না হয়।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৪৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ঢাকার মিরপুর শেওড়াপাড়া কাচাবাজারে গতকাল আগুন লেগেছে। সবাই রমজানের জন্য দোকানে ধার দেনা করে হলেও মাল উঠাইসিলো। আল্লাহ মানুষ কে কি পরীক্ষার মধ্যে যে ফেলেন।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৫৬

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আপনার কথা শুনে সত্যিই খারাপ লাগলো। রমজানের প্রস্তুতির জন্য দোকানদাররা যে কষ্ট করে মাল তুলেছিলেন, সেই ক্ষতির বোঝা এখন কতটা ভারী হয়ে উঠেছে, তা ভাবতেই কষ্ট লাগে। আল্লাহ যেন সবাইকে এই কঠিন সময় মোকাবিলা করার শক্তি দেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করে দেন।

২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৩৫

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: টমেটো, আলু, পেঁয়াজ কিছু মাছ,‌ শাক-সবজি এর দাম যথেষ্ট কম মনে হইছে। আলু তো ১২০ করে ছিল মাস কয়েক আগে?

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৪৭

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। কিছু কিছু পণ্যের দাম সাময়িকভাবে কমতে পারে, তবে সামগ্রিকভাবে বাজারের পরিস্থিতি এখনো সাধারন মানুষের জন্য স্বস্তিদায়ক নয়। বিশেষ করে রমজানের আগে বেশিরভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, যা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়।

আলুর দাম আগে বেশি ছিল, তবে এখন কিছুটা কমেছে—এটা অবশ্যই ভালো দিক। তবে বাজার ব্যবস্থাপনা যেন স্বাভাবিক থাকে এবং পণ্যের দাম অপ্রত্যাশিতভাবে ওঠানামা না করে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৪৬

ধুলোপরা চিঠি বলেছেন:


রমযান মাস সব সময় এই রকমই ছিলো, এই মাস হচ্ছে ডাকাতদের উৎসবের মাস।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৫১

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আপনার সাথে আমি এবিষয়ে সহমত । তবে বর্তামান অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে রমজান মাসের শুরুতেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি আমাদের মত সাধারন জনগনের জন্য কষ্টদায়ক।

৪| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৩৯

ধুলোপরা চিঠি বলেছেন:



১৯ কোটী মানুষ, জমির পরিমাণ, চাষে টাকনোলোজী, চাষীদের আয়, জমির মালিকানা হিসেব করলে খারারের দাম বাংলাদেশে পানির মতোই সস্তা; কারণ ২ কোটী ৫০ লাখ চাষী পরিবারের মানুষদের জীবনের মান বলতে কিছুই নেই; ওরা কম আয় করে, বেশী শ্রম দিয়ে খাবারকে সস্তা করে রেখেছে।

০১ লা মার্চ, ২০২৫ ভোর ৬:৩৩

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: বাংলাদেশের ২ কোটি ৫০ লাখ চাষী পরিবার কঠোর পরিশ্রম করেও তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পান না। অন্যদিকে, ভোক্তারা উচ্চমূল্যে সেই পণ্য কিনতে বাধ্য হন। তাহলে আসল লাভটা কারা নিচ্ছে? মূলত মধ্যস্বত্বভোগী, দালাল ও চাঁদাবাজ চক্রই এই সুবিধা ভোগ করছে। যদি কৃষক ও ভোক্তার মধ্যকার এই অতিরিক্ত স্তরগুলো কমানো যায়, তাহলে কৃষকরা তাদের যথাযথ মূল্য পাবেন এবং ভোক্তারাও ন্যায্যমূল্যে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।

৫| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:২৬

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: বাজার সম্পর্কে আপনার কোন ধারনাই নেই। ছোলা ১৫০ থেকে কমে আজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫/১০০ টাকায়। চমৎকার দেশি পেয়াজ কিনলাম ৪ কেজি ১০০ টাকায়। শাক সবজির দাম পানির চেয়ে কম।

০১ লা মার্চ, ২০২৫ ভোর ৬:৩৮

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভাই আমার হয়তো বাজার সম্পর্কে আপনারমেতো গভীর ধারনা নেই। তবে আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে আমরা বর্তমান বাংলাদেশে নেই, বাস করছি মহারাজ যুধিষ্টিরের শাষনাধীন ইন্দ্রপ্রোস্থ রাজ্যে । যেখানে জনগন দুধ ভাত খেয়ে শান্তিতে বসবাস করছেন।

৬| ০১ লা মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি ।
এটা নতুন কিছু না। আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি।

০১ লা মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:২৮

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: অভ্যস্ত হতে পারেনি ভাই। বাজারে গেলে পকেটে টান পরবেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.