নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে বুঝতে পারছি না আমি কে বা কি ?

মাধুকরী মৃণ্ময়

কিংকর্তব্যবিমুড়

মাধুকরী মৃণ্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

শনিবার সন্ধ্যা

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৮:১৭


প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব

এটা একটি অমিথ্যা গল্প। জীবিত অথবা মৃত কারো সাথে মিলে গেলে লেখক স্বয়ং দায়ী। উপযুক্ত প্রমান দিয়ে ক্ষতি পূরন আদায় করতে পারেন !


আজ শনিবার।

অর্ণব সকাল থকেই অস্থির হয়ে আছে। কোন কাজে মন বসছে না। চোখ কিছুটা লাল, নিচে কালি। সারারাত ঘুম হয় নি । আজ কি হবে , কি হবে এই ভবে রাত গেছে পোহায়ে। অফিসে আসতে দেরী হয়ে গেছে। সাধারনত দেরি হয় না। অর্ণবের পাশের ডেস্কে বসে ইকবাল সাহেব। কিছুটা ভ্রুকুঞ্চিত করে বলল, কি শরীর খারাপ? অর্ণব শুধু মাথা নাড়ালো। মেইল ওপেন করে দেখলো পচিশটার মতো মেইল এসেছে। উত্তর দিতে হবে। কিন্তু অর্ণবের কিছুই করতে ইচ্ছা করছে না। পাচটা বাজতে এখনো ছয় ঘন্টা । কিভাবে দ্বীর্ঘ সময় যাবে এই ভাবতে ভাবতে কফিতে চুমুক দিলো।

জোহরা আজ অর্ণবের সাথে দেখা করবে। মানে দেখা করতে রাজী হয়েছে। এই রাজী হওয়া অর্ণবের কাছে মমতার তিস্তার পানি দিতে রাজী হওয়া বা আমেরিকার জিএসপি সুবিধা আবার দিতে রাজী হওয়ার চেয়েও গুরুত্বপুর্ণ। জোহরার সাথে অর্ণবের কথা হয়েছে দশ বছর আগে । দশ বছর আগে কোন এক চলে যাওয়া শীতের সন্ধ্যায় অর্ণব ডায়াল করে একটা ভুল নাম্বার । ওপাশ থেকে রিনিঝিনি কন্ঠে যে মেয়েটা হ্যালো বলে তার নাম হতে পারতো ইরা, নিপা কিংবা মিতা। কিন্তু না, তার নাম জোহরা। তাদের কথা হতে থাকে। তখন অর্ণবের বয়স বাইশ আর জোহরার ষোল। কথা হতে হতে ওপাশের মেয়েটার কিছু হয় কিনা অর্ণব আচ করতে পারে না। কিন্তু এ পাশের ছেলেটা গভীর প্রেমে পড়ে যায়। সেই মেয়েটার রিনিঝিনি হাসি, অকারণে হেয়ালি, হঠাৎ ফোন বন্ধ করে হারিয়ে যাওয়া সবকিছুর প্রেমে পড়ে যায়।
এই গভীর প্রেমে যখন অর্ণব হাবুডুবু খাচ্ছে তখন সে প্রস্তাব দেই চলো দেখা করি। আধো আধো সন্ধ্যায় ধানমন্ডি লেকে অর্ণবের সাথে দেখা হয় জোহরার। অর্ণবের মনে হয় পৃথীবির সমস্থ রুপ এক জায়গায় জড়ো করলে যে দৃশ্য তৈরি হয় সেই দৃশের নাম জোহরা। তাদের খুব বেশি কথা হয় না। অর্ণব রুপ দেখে থমকে যায়। অর্ণবের মনে হয় এই রুপের কাছে পৃথীবির সমস্থ সুন্দর কথায় তুচ্ছ হয়ে যাবে । অর্ণব কথা বলতে পারে না। রাতে ফিরে এসে ফোন দেই জোহরাকে । ফোন দশ বছরের জন্য বন্ধ হয়ে যায় আর টাইমল্যাপ্স এ পড়ে যায় অর্ণব।
এই দশ বছরে ব্যাক্তিগত জীবনে , প্রফেশনাল জীবনে অনেক চড়ায় উৎরায় অর্ণব পার করেছে কিন্তু জোহরাকে পার করে কোন মেয়েকে তার মনে স্থান দিতে পারে নাই। এক অচেনা , অজানা মেয়ে , যার নাম ছাড়া আর তেমন কিছুই সে জানেনা তার জন্য ক্ষনে ক্ষনে কেন বুকে এতো ঢেঊ জাগে , এই ভেবে অর্ণব আকুল হয়েছে বহুবার । কিন্তু জোহরাকে সে কোনভাবেই ভুলতে পারে নাই। এই দশ বছরে অনেক মেয়েই অর্ণবের জীবনে হাওয়ার মতো ভেসে এসেছে এবং ভেসে গেছে কিন্তু জোহরা আকাশের মতো স্থির হয়ে গেছে।

সময়ও ভেসে যায় হাওয়ার চেয়ে দ্রুত। এক এক করে যখন অনেকগুলো শীত বসন্ত পেরিয়ে গেল। একটা স্বাস্থ্যবান চাকরী বগলদাবা করে অর্নবও ভাবা শুরু করেছে , আর কতো একটা মেয়ের জন্য অপেক্ষা করবো যে কিনা কোন কথায় আমাকে দিয়ে যায় নি, যে কিনা পৃথীবির সমস্ত রাজকন্যাদের মতো রুপ নিয়ে চলে গেছে দূরে , তার জন্য প্রতিক্ষার প্রহর শেষ করে ফ্যামীলি ডিমান্ডে বিয়া করে ফেলবো। ঠিক তক্ষুনি পেয়ে যায় সে জোহরাকে। কোন এক অলস দুপুর ফেইসবুক ঘাটতে ঘাটতে যে মেয়েটার ছবি আচমকা চোখের কোনা দিয়ে বেরিয়ে যায় সে আর কেউ না জোহরা। অর্ণব প্রোফাইল এ যেয়ে দেখা তারা একি ট্রেডে জব করে এমনকি একি পোস্টে। এইখানে ঘটনা সিনাম্যাটিক হলেও এই ভেবে সান্তনা পাওয়া যায় যে জীবন সিনেমার চেয়েও ঘটনাবহুল।
অর্নব থমকে যায়। এই এক কোটি মানুষের শহরে যে মেয়েটার মুখ সমস্ত জায়গায় খুজেছে সে মেয়েটা এখন কম্পিউটারের মনিটরে জ্বালজ্বল করছে। যার জন্য দিবস রজনী বৃথায় করেছে সে মায়া মায়া চোখ করে তাকিয়ে আছে।
অর্ণব খুজতে শুরু করে ওদের কোম্পানিতে তার কোন বন্ধু আছে কিনা। পেয়েও যায়। তার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে ফোন দেই জোহরাকে। একবার , দুই বার, তিনবার।ফোন যতবার বাজে বুকের ভেতর সমানতালে ড্রাম বাজে অর্ণবের।ফোন ধরে জোহরা।
অর্ণবঃ হ্যালো
জোহরাঃ কে
অর্ণবঃ আমি অর্ণব।
জোহরা কিছুক্ষন থামে। বলে তুমি এতদিন পরে ? কি মনে করে? তার কন্ঠে কোন উচ্ছাস, আবেগ উত্তেজনা কিছুই নেই। অর্ণবের ড্রামের শব্দ আস্তে আস্তে স্তিমিত হতে থাকে। অর্ণব বলে , তেমন কোন দরকার নেই, এমনিতেই ফোন করলাম। কেমন আছো। জোহরা বলে, আছি ভালো। অর্ণব ভাবে মানুষের কন্ঠে কেমন করে এতো বিষাদ মাখানো থাকে। জোহরা জিজ্ঞাসা করেনা আমার কর্পোরেট নাম্বার তুমি কিভাবে পেয়েছো। শুধু বলে তুমি তো বুড়া হয়ে গেছো , বিয়া করো নাই ক্যান!অর্ণব বলে, তুমি কি আমার সাথে দেখা করবা। জোহরা বলে , শনিবার পাচটা, বনানী।

অর্ণব ক্রিমসন কাপ এ বসে আছে। ইচ্ছা করেই ব্লাক শার্ট পড়েছে । কিন্তু তার পড়া উচিত ছিল লাল কোন শার্ট কারন জোহরার লাল পছন্দ। অর্ণবের খুব ক্লান্ত লাগছে। মনে হচ্ছে দ্বীর্ঘ দিন কোন কঠিন পরিশ্রমের কাজ করে আজ একটু বিশ্রাম পেয়েছে। তার জীবনে আর কিছুই করার নাই, তার সমস্ত কাজ শেষ হয়েছে। অর্ণব ঘড়িতে দেখলো পাচটা বেজে দশ মিনিট। তার প্রচন্ড ঘুম লাগছে।তার মনে হচ্ছে জোহরা আসার আগেই সে ঘুমিয়ে পড়বে। সে আপ্রান চেষ্টা করছে চোখ খোলা রাখতে।



মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৮:৪২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শনিবার। পাঁচটা,বনাণী। তারপর....

বেশ কিছু টাইপো আছে।

পোস্টে প্রথম লাইক।

শুভকামনা জানবেন।

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:৪৬

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: প্রথম লাইক দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। থাকুক না কিছু টাইপো।পাচটা , বনানী। তারপর আরো অনেক কিছু। সে গল্প অন্যদিন।

২| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৮:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: পৃথিবীটা ভরে যাক প্রেম ভালোবাসায়। তাহলে মন্দ কাজ কম হবে।

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:৪৭

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ঠিক কথা বলেছেন

৩| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৮:৫৬

মা.হাসান বলেছেন: সুন্দর লেখা । চালিয়ে যান।

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:৪৮

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ধন্যাবাদ। চালিয়ে যাব।

৪| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:৫৪

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: সুন্দর লেখা......

চলুক এ লেখা ব্লগের বুক বয়ে......

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:১৯

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: অনুপ্রেরনা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:৫১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার !
অনেক অনেক ভালোলাগা।

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৩৮

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:২০

মুক্তা নীল বলেছেন:
সুন্দর হয়েছে গল্পটা। এক অজানা, অচেনা মানুষ,,,
নিশ্বাসে খুঁজে পেয়েছে বিশ্বাসের ছোঁয়া +++

২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ২:২৯

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৭| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ১:২১

জাহিদ অনিক বলেছেন: দশ বছর পরে আবার পরিচয়, আবার সেই একই প্রেম। ঠিক যেন কবিতার মতন, 'আবার বছর কুড়ি পরে------'

সুন্দর, শুভেচ্ছা

২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ২:৩০

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: হুম, প্রেম তো আসলে মরে না। কোথাও না কোথাও ধিকি ধিকি জ্বলতে থাকে।

৮| ২৬ শে মে, ২০১৯ ভোর ৪:৩২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্পে মোড় থাকবে তা হলো গল্পের অলংকার কিন্তু বলে দিতে হবে গল্পটি চলবে বা সিরিজ পর্ব চলছে। যাইহোক গল্পে ভালো লাগা রইল।

২৬ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:১৪

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ভালো লাগার জন্য কৃতজ্ঞতা। আসলে আমিও কনফিউজ যে এইটা সিরিজ করবো না এইখনানে শেষ করবো। তাই এমন জায়গায় শেষ করেছি যেখান থেকে দুটোই করা যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.