![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই জন্মে এবং এরপরের জন্মেও (যদি সত্যি নতুনকরে আবার জন্মানোর সুযোগ দেন করুণাময় আমাকে,) আমি কেবল একজন কবি-ই হতে চাইব
ক্ষুধা
১২/০৮/১৪
_____________________________________________ক্ষুধা একটা খুব সাধারণ অনুভূতি।
এমনি সাধারণ যে এর জন্য কাঁদতে ইচ্ছে করে না। বুকের ছ ইঞ্চি নিচে অন্ত্রের বিচিত্র পাকে অক্ষমতার একটা সাধারণ আত্মসমর্পন।
আর যদি এ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে তবে
ক্ষুধার কি জ্বালা!
এ্যাসিডের বিষ দাহনই নিয়তির সর্বশেষ লক্ষণ হিশেবে
ব্যথাবাসই করে নিন নির্ধারণ।
ক্ষুধা কী জিনিস, আপনারা জানেন না মশাই!
বাপের জনমে আপনারা এ জিনিস দেখেননি,
ইউরোপ, আমেরিকা আপনাদের নখদর্পণে,
সাত সমুদ্র তের নদী ঘেটে স্বাদ ও সাধ্যের ব্যাপৃত ভাণ্ডার আপনারা করেছেন অর্জন
কিন্তু ক্ষুধার জন্য কখনো কি দুকদম হেঁটেছেন?
আপনারা এ জিনিসের উপলদ্ধি পাবেন না।
নুরা পাগলা লোকটা খারাপ ছিলো না মোটে।
ময়লা চিটচিটে শার্ট তার পাঁচ ফুট দেহের
তিন ফুট ঢেকে নিত বলে কতজনে
পাগলই বলত।
নুরা পাগল ছিল না তার মায়ের কসম!
না হলে সামান্য রুটি থেকে ছিঁড়ে নিয়ে পাশের বিড়ালের মুখে তুলে দিত না নিজের এঁটোভাগ্য!
বিড়ালটা মুমূর্ষ ছিল, লোকটা অর্ধেকখানি রুটি ছুঁড়েছিল বিড়ালের দিকে
বেচারা বিড়ালের কি ক্ষমতা দয়ার প্রতি নমিত হয়ে নিজের সততার প্রমাণ দেয়? নুরা পাগল পারফর্ম করলো সেখানে
অস্বাভাবাবিক দ্রুততার সাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিড়ালের মুখের কাছ থেকে তুলে নিল গ্রাস,
জনা পাঁচেকের হাততালিতে ব্যাপারটা খুব রসবোধ হয়ে যায়।
নুরা পাগলা একহাতে রুটি, আরেক হাতে বিড়াল নিয়ে লোকচোখের অাড়ালে পালায়,
জনা পাচেকের রসবোধ বেড়ে চলে
'পাগলও শরমায়!'
যে নুরা তার বাপের জনমেও একপ্লেট রঙ্গিন
ভাত দেখেছে কি না সন্দেহ
সেই পাগলা নুরা বিড়ালের গ্রাসে ভাগ বসায়!
ব্যাপারটা কি খুব স্বাভাবিক ছিল রুটিওয়ালার কাছে?
একবার আমি নুরাকে পঞ্চাশটা টাকা দিয়ে বলেছিলাম
একবেলা ভরপেট খাবেন।
এরপর থেকে আমাকে দেখলেই তার জেগে উঠে সেই ভরপেট ক্ষুধা!
আমাকে ভাবতে হয় না-সামান্য রুটির কষ্ট যাকে এত কষ্ট দেয়, ভরপেট
তাকে প্রতিদিন কতবার গলাটিপে মারে?
নুরা পাগল আমাকে স্যার ডাকে এখন।
সে জানে তার ক্ষুধার সন্তানগুলো এই স্যারের গল্পেই নিশ্চিন্তে মাথা গুঁজতে পারে।
©somewhere in net ltd.