নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে নিজের ভিতরের কথাগুলো খুব প্রকাশ করতে ইচ্ছে করে। সেই ইচ্ছে থেকেই ব্লগে লেখার শুরু।

আবদুল্লাহ্-আল-মাহিন

গবেষক, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন

আবদুল্লাহ্-আল-মাহিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রায়া নেই, রায়া আছে.....

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩০

জুনায়রাহ মাহিন তানশী-আমাদের ছোট মেয়ে। মেয়েটার প্রথম জন্মদিন পালন করা হল সাধ্যের মধ্যে যতটুকু ভাল করা যায় তার কোন কমতি না রেখে। ছোট মেয়ের জন্মদিন পালনের পর থেকেই মনের ভেতর কেমন যেন একটু খচ্ খচ্ করতে লাগল। আজ আমার বড় মেয়ে মাইশা লাবীব রায়া বেঁচে থাকলে কতটুকু বড় হত? রায়ার জন্মদিন আমরা কিভাবে করতাম? রায়াকে বাদ দিয়ে যদি জুনায়রাহ এর জন্মদিন করা হত তাহলে কি আমার বড় মেয়েটা বাবা-মায়ের উপর অভিমানে ঠোঁট ফুলাত?

আচ্ছা রায়ার জন্মদিন পালন করলে ও কতটুকু খুশি হত? এই আনন্দটুকু যদি রায়ার মত অন্য কোন শিশু পায় তাহলে কেমন হয়? রায়ার জন্মদিনে অন্য কোন বাচ্চার চোখেমুখে যদি আমরা রায়ার “জন্মদিন-পালন” এর মত আনন্দ দেখি তাহলে কি আমার মনে হবে যে রায়াও খুশি? ও কি বুঝতে পারবে ও আমাদের কাছে নেই বলে ওকে আমরা ভুলে যাইনি?

১ জন না, অবশেষে আল্লাহ্ আমাদেরকে ৪০ জন শিশুর আনন্দ, তাদের উচ্ছ্বাস দেখার ব্যবস্থা করে দিলেন। ফেসবুক এ যারা নিয়মিত তারা “মজার ইশকুল” (https://www.facebook.com/mojarschool2013) না চেনার কথা না। আমিও তাদেরকে চিনেছি ফেসবুক থেকেই। তাই প্রথম তদের সাথেই যোগাযোগ করলাম যদিও মনের ভেতর আরো কয়েকটি স্কুল/সংগঠনের নাম মাথায় ছিল। এই স্কুলের আরিফ ভাই তার ২০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাদের স্কুলের আগারগাঁও শাখার ৪০ জন সুবিধাবঞ্ছিত শিশুর খুশি দেখার সুযোগ করে দিলেন।

এই কনকনে শীতে বাচ্চাদের জন্য আয়োজন করা হল এক পিকনিকের। ব্যবস্থা হল গাড়ী ভাড়া করে এই শিশুদের নিয়ে আসা হবে বসুন্ধরা মল এ, আসার পথে পরিচিত করানো হবে জাতীয় সংসদ ভবন এর সাথে, খাওয়ানো হবে মলের সবচেয়ে সুন্দর রেস্টুরেন্ট ক্যাপ্রিকর্ণ ওয়ার্ল্ড (Click This Link )এ, আর শীতের উপহার হিসেবে সবার জন্য থাকবে একটা করে নতুন জ্যাকেট। পুরো আয়োজন হবে রায়ার পক্ষ থেকে আর এই আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করবে “অদম্য বাংলাদেশ” এর মজার ইশকুল এর অদম্য সব স্বেচ্ছাসেবকরা। রায়া তার জন্মদিন পালনে যেমন আনন্দ পেত এই আয়োজনের মাধ্যমে সুবিধা-বঞ্চিত শিশুদের সেই আনন্দ দেয়ার জন্যই এই চেষ্টা।

নিষ্পাপ এই শিশুদের আনন্দ দেখার সাক্ষী হলাম আমরা কজন-রায়ার বাবা-মা, ওর ছোট বোন তানশী, ওর নানা-নানী। দাদীর অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আসতে পারেনি তার অসুস্থতার জন্য।ওপাড় থেকে দাদার দোয়াও নিশ্চয়-ই সঙ্গী হয়ে ছিল। আর রায়া সে তো আমাদের সবার মাঝেই ছিল।

আমরা তৃপ্ত হলাম রায়ার মত অন্য কোন শিশুর আনন্দ, হুটোপুটি দেখে আর আরিফ ভাইরা আনন্দ পেল তাদের পরিশ্রমে তিল তিল করে বেড়ে ওঠা সুবিধাবঞ্ছিত বাচ্চাগুলোকে একসঙ্গে এতগুলো আনন্দ পেতে দেখে। তাদের এই পরিতৃপ্তি আমরা দুই মা-বাবার কাছে রায়ার জন্য কিছু করতে পারার তৃপ্তিকে যেন কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল।

সেদিন ছিল ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ইং। বেঁচে থাকলে আমার মা টা সেদিন ৪টা মোমবাতি ফুঁ দিয়ে কেক কাটত। রায়া নেই, তবু রায়া আছে আমাদের মাঝে। রায়া থাকবে। আর রায়াকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এই রকম আরো আয়োজন করার সক্ষমতা আল্লাহ্ যেন আমাদের দেন। অন্যের হাসি-আনন্দের মাঝেই আমরা যেন খুঁজে পাই রায়ার আনন্দ।

(সবশেষে, ধন্যবাদ না বলে বলব কৃতজ্ঞ থাকলাম অদম্য বাংলাদেশের অদম্য সব ভাই-বোনদের কাছে)

ফেসবুক পেজঃ Click This Link

[

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.