নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জয় হোক সত্যের...........

মাকছুদুর রহমান

আমি মোঃ মাকছুদুর রহমান। একজন মুসলিম পরিবারের সন্তান। লেখা পড়ার পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যম গুলোতে সামান্য লেখালেখি করি। স্টুডেন্ট, অনলাইন একটিভেট এবং ব্লগার!

মাকছুদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুযদালিফায় চন্দ্রস্নাত একটি স্মরণীয় দুর্লভ রাত!!! ১ম পর্ব

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪৩

পরম পুলকিত মনে মন্ত্রমুগ্ধের মত আকাশ পানে তাকিয়ে আছি! কী এক অবিশ্বাস্য সন্মোহনী শক্তি যেন আমাকে নিয়ে গেছে কোন এক মধুময় স্বর্গরাজ্যে! স্নিগ্ধ মায়ার আঁচল বিছানো জোছনায় তখন সকল হাজীগণ স্নাত। বিশাল নীলাকাশ থেকে চাঁদের মোহময় অবারিত কিরণ ঝরছে সদ্যপ্রসূত পূত পবিত্র হাজীদের শরীর মনে। চাঁদের মায়াবী আলো শরীরে মেখে ঘুমিয়ে গেছেন অনেক ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত বয়োবৃদ্ধ হাজীগণ। একে একে আমার মনের কোণে তখন ভীড় করছিল মক্কা হতে মিনা, মিনা হতে আরাফা আর আরাফা হতে মুযদালিফায় আগমনের স্মরণীয় এবং ঘটনাবহুল ভ্রমণের মুহূর্তগুলো। সাথে আছেন অসুস্থ মা তাই হুইল চেয়ার, শুকনা খাবারসহ ৪/৫ দিনের উপযোগী মালপত্র সঙ্গে নিয়ে মক্কা হতে তিন মাইল পূর্বে অবস্থিত মিনায় এসেছিলাম আমরা। পূর্বের নির্ধারিত সময়ে। মিনায় বাংলাদেশী তাঁবুতে রাত্রি যাপনের পর ৯ই যিলহজ্জ ফযরের নামাজান্তে সূর্যোদয়ের পর মীনা হতে ৬ মাইল দূরে অবস্থিত আরাফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম সবাই। যাত্রাকালে লক্ষ লক্ষ জনতার বিশাল ঢলে আকাশ ভূমি প্রকম্পিত হয়ে উঠেলো। তালবিয়া, দু’আ তাসবীহ, তাকবীর, তাহলীল পাঠের এক উদ্বেলিত অনবদ্য সুর ধ্বনিতে। সেই সুমিষ্ট প্রকম্পনে আমার সমস্ত শরীর আত্মা শিহরিত হয়ে উঠলো। অন্তরে জেগে উঠলো অভূতপূর্ব এক আলোড়ন। মুহূর্তগুলোর প্রাণস্পর্শী আবেদন, স্নিগ্ধতা ও লক্ষ দরদী প্রাণের জীবন্ত স্পন্দন আকাশ বাতাস মুখরিত করে তুললো। আমার মত এক সংবেদনশীল অধমার হৃদয়ের তৃষ্ণাকে যেন আর শতগুণ বাড়িয়ে দিল। আনন্দে উদ্বেলিত এ দুর্লভ স্মরণীয় দৃশ্য কখনোই অন্তর থেকে মুছে যাবার নয়। কিসমতের সৌভাগ্য ও প্রাপ্তি কলবের মধ্যে সদা সজীব ও জীবন্ত হয়ে গেঁথে রইলো যেন। এরূপ মধুময় টুকরো টুকরো অনেক স্মৃতির সম্ভারে আমার হৃদয়সমুদ্র আনন্দে-আবেগে ও পুলকে-উচ্ছ্বাসে আন্দোলিত হয়ে উঠলো।

এমনি এক চিত্তাকর্ষক সুশীতল পরিবেশের মধ্যে স্বপ্নের আরাফার ময়দানে আমরা হাযির হলাম। সেখানে সারাদিন ইবাদত বন্দেগীতে ব্যস্ত সময় কাটলো সবার। আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য লাভের আশায় সবাই পেরেশান। মনে হল মানুষের চোখের পানিতে তখন আরাফাতের চত্বর ভাসছিল। যোহর ও আসরের নামায একত্রে আদায় করা। সারাদিন আল্লাহ্‌র সমীপে নিজের জন্য, মাতাপিতা, পূর্বপুরুষ, আত্মীয়-স্বজন, সন্তান-সন্ততি, বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনের জন্য হৃদয় নিঃসারিত দোয়া দরূদ প্রার্থনায় মশগুল থেকে মুযদালিফায় হাযির হওয়ার ঘটনা সত্যিই আমাদের জন্য ছিল বিস্ময়কর! লক্ষ লক্ষ জনতার ভীড়ে মমতাময়ী জননীর প্রয়োজন মিটিয়ে কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছানো সহজসাধ্য বিষয় ছিল না আমাদের জন্য। কিন্তু যাত্রাপথে যখনই প্রচণ্ডভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন অনুভূত হয়েছে তখনই আল্লাহ্‌র অশেষ অলৌকিক করুণায় তা নিমিষেই দূরীভূত হয়ে গেছে। সুন্দর সমাধান হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ্‌। আল্লাহ্‌র শোকরে ও কৃতজ্ঞতায় তখন আঁখিদ্বয় অশ্রুসিক্ত হয়েছিলো আর অন্তর বার বার দুলে দুলে উঠছিলো।

ক্রমশ.........

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.