![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন তড়িৎ প্রকৌশলী। ****************** বুকের মাঝে স্বপ্ন আর হতাশার যুগলবন্ধী বসবাস...
রমনা পার্কের ভিতর দিয়ে হাটছি। গন্তব্য শাহবাগ মোড়। পিজি হাসপাতালে পরিচিত এক ভাইয়ের সাথে দেখা করতে যাব। তার স্ত্রী মা হতে চলেছে। আজকে অপরেশান হওয়ার কথা। ডাক্তার প্রথমে বলেছিল, নরমাল ডেলিভারী। এখন বলছে, বাচ্চা নাকি উল্টো হয়ে আছে, অপারেশান করতে হবে।
যে বাচ্চা দুনিয়াতে আসতেছেই উল্টো হয়ে, এসে না জানি কি করে বসে ! আচ্ছা, এমনও তো হতে পারে দুনিয়া পরিবর্তন করে দেয়া কোন মহামানব হতেও তো পারে। আগামী একশো বছর পরে, এর নাম মানুষের মুখে মুখে থাকবে।
এই যে ব্রাদার আপনার কাছে কি পানির বোতল আছে ?
আমি ঘুরে তাকালাম, গাছের নিচে একজোড়া ছেলেমেয়ে বসে আছে। মেয়েটি স্কুল ড্রেস পড়া। মগবাজার ইস্পাহানী গার্লস স্কুলে পড়ে। আমি যে বাসায় ভাড়া থাকি, তার মালিকের মেয়ে রুম্পা ঐ স্কুলে পড়ে। রুম্পা প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার আগে, আমার রুমের দরজায় টোকা দিয়ে বলে- ভাইজান পাম্প ছাড়নের সময় হইছে ! বলেই খিল খিল করে সে কি হাসি।
রুম্পার কথা মনে করেই বললাম, জ্বী আছে । কে খাবে ?
ছেলেটি বলল, কেউ না। আমারা বাজি ধরেছিলাম, আপনার কাছে পানির বোতল থাকলে ও আমাকে একটা জিনিস দিবে। না থাকলে দিবে না।
আমি ম্লান হেসে বললাম, ও আচ্ছা। বলেই হাটা শুরু করছি। এমন সময় পিছন থেকে একসাথে খিল খিল করে হাসির শব্দ শুনতে পেলাম।
মন'টাই খারাপ হয়ে গেল। ছেলে মেয়ে দু'টোর বাসায় জানে ওরা স্কুলে ক্লাস করছে। ওর মা-বাবা হয়তো কারো কাছে ওদের নিয়ে গল্পও করছে !
আচ্ছা, জামিল ভাইয়ের সন্তান'টাও কি এমন হবে ? স্কুলের নাম করে পার্কে বসে, বাজি ধরবে।
হাটতে গিয়ে হঠাৎ ঘুরে দাড়ালাম, সোজা ওদের দিকে হেটে যাচ্ছি। ওরা দুজনেই একটু অবাক হলো। আমি ঠোটে হাসি হাসি ভাব রেখে ছেলেটার কাছে গিয়ে বললাম, ছোট ভাই তোমার রক্তের গ্রুপ কি ?
ও সেই রকম অবাক হয়ে বলল, কেন ? কি দরকার ?
দরকার আছে। বলো না তোমার রক্তের গ্রুপ কি ?
এইবার ছেলেটা একটু ভড়কে গেল মনে হয়। মেয়েটার হাত ধরে বলল, ঝুমু চলো।
আমি একটা হাত দিয়ে আটকে বললাম। বললাম না, রক্তের গ্রুপ কি ?
মেয়েটা বলল, ভাইয়া সরি। ভুল হয়ে গেছে। আমাদের যেতে দিন।
অবশ্যই যাবে। তবে একটু পরে, ঐযে পুলিশের দল'টা আসছে। উনারা এখানে এলে তারপর যাবে। এসআই ছাব্বির সার, ঐ যে কালো চশমা পড়া। উনি এখানে এলেই তোমরা যেতে পারবে।
ছেলেটা পকেট থেকে মোবাইল বের করছে।
' কাউকে ফোন করবে ? মন্ত্রী লেবেলের কেউ ? '
' না, কাউকে ফোন করছি না। '
' আপনি শুধু শুধু বিরক্ত করছেন। আমাদের যেতে দিন। '
' আমার কাছে পানি খেতে চেয়েছিলে না। পানি না খেয়ে চলে যাবে ? তোমরা এখন এই এলাকার মেহমান। পানি না খেয়ে যেতে পারবে না। সাব্বির ভাই আসুক পানি খেয়ে চলে যাবে।'
মেয়েটা আসলেই ঘাবড়ে গেছে। পুলিশের দলটার দিকে চেয়ে আছে। হাতের ব্যাগটা শক্ত করে ধরে আছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে যেকোন সময় দৌড় দিবে।
সাব্বির ভাইকে আমি বেশ আগে থেকেই চিনি। রমনা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে পরিচয়। উনার শ্যালিকার নাম মোনা। ভার্সিটি এডমিশান নিবে। আমার কাছ থেকে ইউসিসি কোচিং এর শিট ফটোকপি করে নিয়েছিল। আমার সাব্বির ভাই বেশ কয়েকদিন নিজে থেকে বলেছে, মোনাকে তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব। সে আশায়, পরে আমি নিজে থেকে গিয়েও দুটো শিট দিয়ে এসেছিলাম। ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন, মোনা তার বান্ধবি রুমকির বাসায় যাচ্ছি বলে এলাকার এক বখাটের সাথে পালিয়ে গেল। আমার সাথে আর দেখা হল না। কিন্তু সাব্বির ভাইয়ের সাথে পরিচয়টা থেকেই গেল।
' সাব্বির ভাই, একটু এদিকে আসেন তো। '
' আরে তুমি। এইখানে কি করো ? এরা কারা ? '
' ভাই, জামিল ভাইয়ের ওয়াইফের বেবি হবে। পিজিতে আছে। আমি ঐদিকে যাচ্ছিলাম।'
' কোন জামিল ? আমি চিনি ? '
' চিনেন তো, ঐযে একদিন বৃষ্টির দিনে আমরা খিলগাও গেলাম। জামিল ভাইয়ের বউ আমলকির আচার দিয়ে খিচুরী খাওয়ালো। '
' ও হ্যা, মনে পড়ছে। ডেলিভেরীর ডেট কবে ? '
' কালকে। ডাক্তার প্রথমে বলেছিল অপারেশান লাগবে না। এখন বলছে লাগবে। রক্ত লাগবে। আমি যাচ্ছিলাম, হঠাৎ এই ছেলেটা বলল, আপনার কাছে কি পানির বোতল আছে ? '
' সাব্বির ভাই, এক কনেস্টাবলের দিকে তাকিয়ে বলল, এই এদের ব্যাগ সার্চ করো। দেখো বাবা-টাবা আছে নাকি ? '
আমি ওদের থেকেও হতভম্ব ! বলে কি ? সাব্বির ভাই বলল, আর বলো না। স্মাগলার'রা এখন এই স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েদের দিকে নজর দিয়েছে। ওদেরকে এই সব নেশা বিক্রির এজেন্ট বানিয়ে বড়লোক হয়ে যাওয়ার লোভ দেখাচ্ছে।
তোমাকে যে বলল, ভাই আপনার কাছে পানির বোতল আছে ? এসব হচ্ছে ওদের ইঙ্গিত। তুমি বুঝতে পারনি দেখে ওরা হেসেছে।
কনেস্টেবল, হাবিবুর রহমান ব্যাগ খুজে বলল। স্যার নাই।
তাহলে ছেড়ে দাও।
আমি তাকিয়ে দেখি, ওরা একরমের দৌড়ানোর মত করে হাটছে। মেয়েটা একবার পিছনে তাকাল। আমি হাত নেড়ে বিদায় জানালাম।
সাব্বির ভাই বলল, আচ্ছা তাহলে এখন যাই। এখন শাহবাগ থানায় যাব। বিকেলে সময় পেলে জামিল ভাইয়ের ঐখানে আসবো নে।
আমিও হাটতে শুরু করছি। জামিল ভাইয়ের অনাগত সন্তানের কথা ভাবছি। আর দোয়া করছি, সে যেন বাবা হিসাবে শুধু জামিল ভাইকেই চিনে... অন্য কিছুকে নয়... !!
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২০
আবদুল্লাহ্ আল্ মামুন বলেছেন:
খেয়া ঘাট, আপনাকে ধন্যবাদ,পড়ার জন্য। আমি একটা সময় বিনে পয়সায় খেয়া ঘাটের মাঝির কাজ করেছি। মজা লাগতো। মানুষকে নদী পার করে দিতাম।
সে দিন গুলো মিস করি।
২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:১১
সপ্নচোরা বলেছেন: ভালো লিখেছেন, ভাল লাগা রেখে গেলাম.......
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৩
আবদুল্লাহ্ আল্ মামুন বলেছেন: ধন্যবাদ...
৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩২
মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: ভাল লাগল, তবে মেয়েটার মুখের অভিব্যক্তি পড়ে আমিও হতভম্ব হয়ে গেলাম
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৯
আবদুল্লাহ্ আল্ মামুন বলেছেন: কেন ?
৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৫
স্বপনচারিণী বলেছেন: লেখাটা খুব ভাল হয়েছে। কিন্তু বিষয়টা খুবই ভয়ের। পার্ক দিয়ে যাওয়া হয় না বলে এ দৃশ্য দেখা হয়না। কিন্তু বাসে যাতায়াতের সময় ওদের আচরন দেখে এবং স্কুলের কাছের পান বিড়ির দোকান থেকে ধুমসে সিগারেট খাওয়া দেখে ভীষণ আতঙ্কিত হই। কী হবে আমাদের এই সন্তানদের?
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৮
আবদুল্লাহ্ আল্ মামুন বলেছেন: ভাই, এটা একটা গল্প। মনে হয় ঠিক মত লিখতে পারি নাই...
৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৭
স্বঘোষিত মিসির আলী বলেছেন: এইডা কি বাবা ? :!> আমি তোঁ মনে করছিলাম জামিল ভাই বাবা হপে
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৯
আবদুল্লাহ্ আল্ মামুন বলেছেন:
৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৪
আখিলিস বলেছেন: খুবই ভাল লেখা - ঝরঝরে,পড়ে যাবার মত ! চালিয়ে যান ভাই ।
আর এরকম দৃশ্য এখন অহরহই চোখে পড়ে - স্কুলের ড্রেসপড়া বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা কি অবলিলায় ডেটিং করে বেড়াচ্ছে ! আহা ওরাতো কৈশরের আনন্দটাই পেল না ! কেমন সমাজে আছি আমরা ? কেমন দেশ রেখে যাচ্ছি আমাদের উত্তরসুরীদের জন্য ?
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৪২
আবদুল্লাহ্ আল্ মামুন বলেছেন: সেটাই। এখন কৈশর আটকে আছে হাতের মুঠোয়। মোবাইল ফোনে।
অবাক হওয়ার কিছু নেই... এর পরের জেনারেশান হয়ত, ওদের দেখে অবাক হবে... তারা নিশ্চয় আরো আপডেট হয়েই দুনিয়াতে আসবে...
৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৪
েভােরর স্বপ্ন বলেছেন: ভালতো ভাল না !!
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৪৫
আবদুল্লাহ্ আল্ মামুন বলেছেন: হু, তাই তো দেখছি... .
৮| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো লেখাটা। তবে হুমায়ূনী টাচ এড়াইতে পারেন নাই।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৪৩
আবদুল্লাহ্ আল্ মামুন বলেছেন: হামা বস, ধন্যবাদ ভালো লাগার জন্য... হু, তার টাচ চলে আসেই। এড়ানো কঠিন...
৯| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৮
িজসান বলেছেন: b halo laglo
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৪৫
আবদুল্লাহ্ আল্ মামুন বলেছেন: ধন্যবাদ...
১০| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:১৯
শ্রাবণধারা বলেছেন: বেশ ভাল লাগলো, ঝরঝরে লেখা.........।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০৫
খেয়া ঘাট বলেছেন: খুবই ভালো লিখেছেন।