নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠক লেখকের ভেদ নেই, তাই পাঠও নেই

মানস চৌধুরী

আমার প্রফাইলের পুরাটাই বৃত্ত। অন্ত নাই। তাই, বছর আষ্টেক পর আবার এসে যাই। পেশা: মাস্টারি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইমেইল: [email protected]

মানস চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জা.বি.: শাস্তি না দেয়াটা মূল দাবিকে ঠেকানোর জন্যও

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১:৫৬

শুরুতেই একটা কাহিনীতে সকলকে শরিক করি। ১৯৯৯ বা ২০০০ সাল। ১৯৯৮ সালের ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের নাগরিক স্মৃতি তখনও প্রকট। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপ্রধান তখন সম্ভবত জনাব সারা যাকের। তিনি কোনো একটা বিশেষ দিনে অন্যান্য অনুষ্ঠানের পাশাপাশি নারী থিয়েটার কর্মীদের পেশাগত নিরাপত্তাহীনতা এবং হয়রানির অভিজ্ঞতাকে জনদরবারে হাজির করার সিদ্ধান্ত নেন। সন্ধ্যাবেলা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এই বিষয়ে একটা খোলা আলোচনা আয়োজন করেন। হয়তো আমাদের ১৯৯৮ সম্পৃক্তির কারণেই, কাউকে কাউকে সেখানে তিনি হাজির থাকতে আগাম তাগাদা দেন। আমরা কয়েকজন সেখানে গেছিলাম। অবাক হইনি যে, একজনের পর একজন নতুন প্রজন্মের নারী থিয়েটার কর্মীরা সেখানে বক্তব্য রাখছিলেন থিয়েটার করতে এসে তাদের যে আসলে এসব ‌'বাজে' কোনো অভিজ্ঞতাই হয় না সেটা বোঝানোর জন্য। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারব না যে উদ্যোক্তারা 'থিয়েটার' অঙ্গণে "পবিত্র" সম্পর্ক আছে এই প্রচারণা চালানোর জন্যই অনুষ্ঠানটার আয়োজন করেছিলেন কিনা। কিন্তু আমরা কয়েকজন যারপরনাই ক্ষুণ্ন হয়েছিলাম। এবং আমাদের ওটাকে বড়জোর নৈশব্দের অনুশীলন মনে হচ্ছিল। আমাদের এক আলোকচিত্রী বন্ধু, সৈয়দা ফারহানা, মঞ্চে উঠে এই অভাবনীয় পরিবেশের কাহিনীকে অবিশ্বাস করার ঘোষণা দেবার আগ পর্যন্ত এই নাটক চলতেই থাকল। "আমাদের থিয়েটারের পরিবেশ কী ভালো কী ভালো!" জাতীয় প্রপাগাণ্ডা এরপর আর ঠিক জমে ওঠেনি। তবে নারীদের অভিজ্ঞতা নিয়েও কার্যকরী কোনো আলাপ হয়নি।



জাহাঙ্গীরনগরে হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড বা যৌন নিপীড়ন অধিক ঘটে -- এই থিসিসটা নিয়ে ইতোমধ্যেই দু'চারজন ব্লগার স্পষ্ট করেছেন। জা.বি.র শিক্ষার্থীরা নিশ্চুপ থাকার সংস্কৃতি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এটাই বড়জোর অপরাপর কর্মক্ষেত্র থেকে জা.বি.র স্বাতন্ত্র্য। এটাকে একদম সাধারণ বোধবুদ্ধি দিয়েই বোঝা সম্ভব।



ব্লগে মাঝেমধ্যেই যেরকম রংতামাশাধর্মী যোগাযোগ হয় সেই তুলনায় এই বিশেষ বিষয়টাকে ব্লগাররা যে অনেক সিরিয়াসলি নিয়েছেন সেটা জা.বি.র একজন বাসিন্দা হিসেবে আরামদায়ক।



অভিযুক্ত, এবং সদ্য অভিযোগ থেকে প্রশাসনিক উপায়ে খালাসপ্রাপ্ত, ছানোয়ার হোসেন-এর খালাসপ্রাপ্তি অনেকগুলো উপাদানের উপর নির্ভর করেছে। তিনি নিজে একজন একনাগাড় দলবাজ। যদ্দুর শোনা যায়, মাস্টারির এই কাজটাতে যোগদানের সময় যেখানে বাজিগিরি করেছেন সেই দলের সঙ্গ দরকার মতো বাদ দিয়ে আবার অন্য দলের বাজিগর হয়েছেন। মাস্টার হিসেবে তিনি কেমন ছিলেন (আছেন) সেটা স্বতন্ত্র জিজ্ঞাসা এবং আমি তার ছাত্র না বিধায় না বলাই অধিক যুক্তিসঙ্গত। এখানে দলের বিষয়টা একটু খোলাসা করা ভাল। এই সুযোগে অনেকেই এনজিও-সিভিল-বিশ্বব্যাঙ্কের সুরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি উঠিয়ে দেবার দাবি করেছেন। ক্যাম্পাসে দলবাজি, জাতীয় রাজনৈতিক দলের ফপরদালালি আর দাবিনামা পেশের অধিকারচর্চা সবগুলো একটার থেকে একটা স্বতন্ত্র জিনিস। লক্ষ্য করবেন এখানে অন্তত তিন ধরনের মালের কথা বলা হলো। এবং তালিকাটা আরও দীর্ঘ বানানো সম্ভব। যখন 'রাজনীতি বন্ধ কর' ধরনের কথা ওঠে তখন আতঙ্ক জাগে পাছে না আপনারা পেশাগত অধিকারচর্চাটাই বরবাদ করে বসেন। কারণ, ক্যাম্পাসে লীগ, দল, জাপা, জামাত-এর ফপরদালাল থাকবে না এমন আব্দার ৪টাকার মাস্টার না হয় ধরা যাক মানতে শুরু করল, হাজার গুণ্ডার পার্টি মানবে তো?! ক্যাম্পাসে দালালবৃদ্ধির জাতীয় চর্চাটা বন্ধ করা লাগবে না? এ তো গেল একটা দিক। একটা ৪হাত মাদুরে পর্যন্ত কে আগে বসেছে তা নিয়ে আল-ঠেলাঠেলি চলে। আর একটা আস্ত ক্যাম্পাসে দলবাজি চলবে না? কিন্তু পেটি-স্বার্থময়তার এই দলবাজির পাল্টা কী রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করা যায় সেই উপায়ও তো ভাবা দরকার। এগুলো বলছি একটা বাতিকগ্রস্ত "রাজনীতি চাই না" আওয়াজ যে উপকারী নাও হতে পারে সেটা স্পষ্ট করার জন্য।



কিন্তু কথা হচ্ছিল জনাব ছানোয়ার হোসেন-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ জা.বি. কর্তৃপক্ষ খালাস করে দেয়ার প্রেক্ষাপট নিয়ে। আরও যদ্দুর বোঝা যায়, দলবাজির দক্ষতা ছাড়াও খালাসপ্রাপ্ত শিক্ষক নিজ এলাকায় এবং ক্যাম্পাসে যথাক্রমে আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-এর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহযোগিতা পেয়েছেন। এই বাহিনীর কাজ ছিল এককথায় বললে আন্দোলনরতদের চেতনা/সাহস ধ্বংস, টেলিফোন মাধ্যমে কিংবা সাক্ষাত ভীতিপ্রদর্শন এবং মূল এজেন্ডাগুলোকে পাতলা করে দেয়ার বাজারী গল্প চালু করা। এগুলো ক্যাম্পাস-রাজনীতির পুরানো চালিয়াতি। কিন্ত একত্রে বাঘে-মহিষে কাজ করার তো আর আকছার উদাহরণ থাকে না। খালাসপ্রাপ্তের কৃতিত্বই মানতে হবে এটাকে। (এই কাজ এখনো কেন্দ্রে করা সম্ভব হয় নাই।)



এটা কাকতালই হবে যে জা.বি.র উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া এবং ছানোয়ার হোসেন-এর তদন্ত সময়ের বিচারে এক কালে হয়েছে। কিন্তু এটা কাকতালীয় নয় যে আগের উপাচার্য এবং তার লোকজন এটাকে যথাসম্ভব প্রলম্বিত করেছেন। বর্তমান উপাচার্য এমনিতে নামেই উপাচার্য। দলবাজি করে করে নিজের লোকজন বানিয়ে ফেলার অনেক সুযোগ তিনি তার ক্যারিয়ারে তেমন এস্তেমাল করেন নাই। ফলে তার বাহিনী বলতে খুব ঢোড়াসাপ কিসিমের অল্প এবং কনফিউজড প্রকৃতির একদল মানব। এই লুরমা দশাটা ছানোয়ারকে সাহায্য করেছে মানতে হবে। আমার বক্তব্য কিন্তু এই নয় যে, উপাচার্য ছানোয়ারকে শাস্তি দেবার চেষ্টা করেছেন; বরং এই প্রসঙ্গে তার নড়াচড়া (অন্যান্য প্রসঙ্গেও) অগ্রজের পাদুকাবহন মাত্র। আমার বক্তব্য হচ্ছে পাইকপেয়াদাহীন উপাচার্য একাধারে পাইক ও পেয়াদা ছানোয়ার-এর প্যারেন্ট দল নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন। তিনি দীর্ঘসূত্রিতা করেছেন একদম বড়ভাইয়ের কায়দায়। এখানে এটা ভাবার একটা ক্ষীণ সুযোগ আছে যে আগের উপাচার্য মেয়াদবৃদ্ধির সুযোগ পেলেই বরং চক্ষুলজ্জাজনিত একটা মামুলি শাস্তি ছানোয়ার লাভ করে থাকতে পারতেন। এখানে আমার আলোচনায় চক্ষুলজ্জা বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। যারা জানেন না তাদের জানানোটা আমার কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে যে জনাব ছানোয়ার হোসেন দলবাজির গতিপ্রবাহে, সর্বশেষে, "মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি" নামধারী এবং আওয়ামী ঘোষণাবাহী শিক্ষককুলের একাংশপন্থী যে একাংশ শিক্ষক সমিতির সভাপতির নেওটা; এবং এই সভাপতি সাবেক উপাচার্যের মিত্র (মানে নেওটা আরকি)। ফলে নিজ পুত্রকে বিচারে এক থাপ্পড় লাগানোর মতো চক্ষুধোলাই একটা শাস্তি হলেও হতে পারত। বর্তমান উপাচার্য সেটাকে এড়ানোর জন্য মোচড়াবেন এটাই স্বাভাবিক ছিল।



কিন্তু এখানে তদন্ত কমিটিসমূহ একটুও কম ভূমিকা রাখেন নাই। তারা সমূহ, কারণ তিনটা ভিন্ন ভিন্ন কমিটি হয়েছে, এবং সমূহ বিপদের কারণ হয়েছে। ইচ্ছায় হোক বা অলখে এই কমিটিগুলো দীর্ঘসূত্রিতার সবচেয়ে বড় মালমশলা সরবরাহ করেছেন। এবং সেটা তিনটা কমিটি হওয়া থেকেই বোঝা সম্ভব। এদের রিপোর্ট যেহেতু একটা দাবি এখন, এবং যেহেতু তা এখনো পাওয়া যায়নি, আপাতত এই বিষয়টা আমি সংক্ষিপ্ত রাখি।



হিসেবে থাকুক বা নাই থাকুক ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) এক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতায় অবদান রেখেছে। এটা কালিক দীর্ঘসূত্রিতা না ঘটালেও মানসিক ঢিলেমির দারুণ একটা অবকাশ করে দিয়েছিল এমন একটা সময়ে যখন কর্তৃপক্ষের কিছু না কিছু উসিলা দরকার পড়ছিলই। সেই সময়ে অখণ্ড নীতিমালার একটা ঘোষণা, তা যতই ভাল হোক, জা.বি. কর্তৃপক্ষকে একটা অজুহাত সরবরাহ করেছে। "আমরা আর কী! এখন তো ইউজিসিই নীতিমালা করবে।" এরকম আরকী।



কিন্তু কারণগুলোকে পর্যালোচনা করলে এই কারণটাকেও গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে যে গত এক দশকে ক্যাম্পাস সংস্কৃতির যে কর্পোরেটায়ন হয়েছে তাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনমুখিতা। একটা গড়পড়তা আন্দোলনবিমুখতা এখনকার ক্যাম্পাসের সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এর একটা ফলাফল হচ্ছে আন্দোলনে ব্যাপক এবং প্রগাঢ় অংশগ্রহণ ১০ বছর আগের তুলনায় লক্ষণীয়ভাবে কম। সম্ভবত বাংলাদেশের স্বদেশী এবং বিদেশী শাসকেরা এর থেকে বেশি খুশি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আর হতেই পারেন না।



রমজানের ছুটির প্রাক্কালে পরিশেষে কর্তৃপক্ষ ছানোয়ার হোসেন-কে বেকসুর ঘোষণা করলেন।



শুরুতে একটা কাহিনী আপনাদের দরবারে হাজির করেছিলাম। জা.বি.তে নাট্যকলা বিভাগে (বিচ্ছিন্নভাবে অন্যান্য বিভাগ সমেত) যৌন নিপীড়ণ ও হয়রানির অভিযোগ নিয়ে কানাঘুষা চলে কম করে হলেও দু' দশক। ২০ বছর। কিন্তু নিশ্চুপ থাকার, ও রাখার সংস্কৃতি ভীষণ শক্তিশালী। অনেকেই ভণিতা করতে পারেন যে তারা জানেন না কিছু, কিন্তু অনেকেই ভণিতা করেন না এবং তাদের জানাশোনাটা ব্যক্ত করেন। কিন্তু সেটা তারা প্রকাশ্যে করেন না। সমস্যাটা কেবল জা.বি.র নয়। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগেরও নয়। পাবলিক ও প্রাইভেট বিভিন্ন সেক্টরে। মিডিয়া ও প্রেস-এ। থিয়েটার ও সঙ্গীত দলসমূহে। কিন্তু একটা চক্রব্যুহ ভেঙ্গে কথা বলবেন কে?! ভুক্তভোগী, নাকি সাক্ষী, নাকি সহকর্মী? খোদহয়রানকারী নিশ্চয় করবেন না।



কর্তৃপক্ষ একটা প্যারানয়ার মধ্যে ছিল। এখনো আছে। ছানোয়ার হোসেন খালাস পেয়েছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কেবল তাকে রক্ষা করে নাই। তারা রক্ষা করেছে একটা শিথিল এবং মিথোজীবী ব্যবস্থাকে। তারা রক্ষা করেছে খোদ নিজেদেরকেই। ছানোয়োর হোসেন যদি "দোষী" "সাব্যস্ত" হতেন এবং নামমাত্র একটা শাস্তিও তাকে দিতে হতো তাহলে কর্তৃপক্ষের মোকাবিলা করতে হতো আরও কঠোর এবং ব্যবস্থার জন্য স্পর্শকাতর একটা দাবি। নীতিমালা। ছানোয়ার হোসেন খালাসপ্রাপ্ত হয়ে খোদ জা.বি. কর্তৃপক্ষকে খালাস করে দিল আশু একটা চাপের মুখ থেকে।



কর্তৃপক্ষ একটা প্যারানয়ার মধ্যে ছিল। এখনো আছে। এটাই সম্ভবত এই মুহূর্তে মনোযোগ দেবার জায়গা। এটাই সম্ভবত এই আন্দোলনের কাজ করবার জায়গা।



.......

মোহাম্মদপুর।। ২০শে সেপ্টেম্বর ২০০৮।। রাত ১:৫৩



মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:০৩

রুবেল শাহ বলেছেন: কপি নিলাম মানস দা................

তবে ভাল লাগা রেখে গেলাম.................

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:৪৫

রাসেল ( ........) বলেছেন: নিজের বিযুক্ততা এবং নিজের স্ট্যান্টবাজি প্রকাশের জন্য বা.জা. ছাত্রদল লিখবার কারণটা বুঝলাম না। আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ লেখা গেলে এই ইতরামিতা কলমে আসলো কেনো?

ফালতামি করার জন্যও করা ঠিক না, বিশেষত এমন ইস্যুতে ইতরামি ন্যাংটা হয়ে রাস্তায় বসে থাকবার মতো।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১০:২৫

মানস চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ রাসেল। আপনি গোচরে আনার পর বা.জা. ছাত্রদল বদলে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল লিখেছি। এতে ছাত্রলীগ ও তাঁরা সমতাও পেলেন বটে। ধন্যবাদ আবারও। আমার মনে হয় জা.বি. গুলাও বদলানো দরকার।

কিন্তু আপনার এই জেঠামশাইগিরি নিজের ভ্রাতুষ্পুত্রদের সঙ্গে করাই ভাল। ব্লগ পাবলিক জায়গা বলেই তো সবাই আপনার ভাইজতা না যে ইচ্ছামতো কান মলে দেবেন। বিযুক্তি মাপছেন ঠিক আছে, স্ট্যান্টবাজি পেয়েছেন -- আচ্ছা পেতে থাকুন। ইতরামি ফাতরামিও আবিষ্কার করছেন! আপনার এই অভ্যাসের সঙ্গে আমি পরিচিত। কিন্তু তফাৎ যান জনাব। আপনার এংরি ইয়ংম্যানগিরি আর গালাগাল আমাকে আকর্ষণ করে না। দুঃখিত।

তবে ইস্যুটার গুরুত্ব আপনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সেজন্য ধন্যবাদ। কিন্তু ঘটনাচক্রে আপনি মনে করিয়ে দেয়ার আগেও আমি এটাকে গুরুত্ব দিতে জানতাম।

৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:৪৯

ফিউশন ফাইভ বলেছেন: হ্যাঁ, মোটের ওপর মূল কথা এই, যা আপনি বলেছেন শেষাংশে- কর্তৃপক্ষ একটা প্যারানয়ার মধ্যে ছিল। এখনো আছে। ছানোয়ার হোসেন খালাস পেয়েছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কেবল তাকে রক্ষা করে নাই। তারা রক্ষা করেছে একটা শিথিল এবং মিথোজীবী ব্যবস্থাকে। তারা রক্ষা করেছে খোদ নিজেদেরকেই।

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৪৮

মানস চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ফিউশন ফাইভ। আমি জানি না এদ্দিন পর আমার তরফে এই যোগাযোগের কোনো ফায়দা আছে কিনা। আমি খুব সামান্য এই সাইটে এসেছিলাম এর মধ্যে। ... শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অপরাপর লিবেরেল-বুর্জোয়া প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক হঠকারিতা বাদ দিয়ে কোনো নিপীড়নই বোঝা সম্ভব নয় বলে আমার মনে হয়।

৪| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ৮:৩৩

কানা বাবা বলেছেন:
বলেছেন: অভিযুক্ত, এবং সদ্য অভিযোগ থেকে প্রশাসনিক উপায়ে খালাসপ্রাপ্ত ...
আমার বিনীত জিজ্ঞাসা হ'লো: প্রশাসনিক উপায় ছাড়া আর কী কী বিবিধ তরিকায় জনাব ছানোয়ার "খালাস" হ'তে পারতেন?

থিয়েটার অঙ্গন ধোয়া তুলসীপাতা এটা দাবী করতে সাহস পাইনা; কিন্তু 'নৈশব্দের অনুশীলন' দেখে আপনাদের কয়েকজনের 'ক্ষুণ্ন' হ'য়েছেন- কেবল এই উপাত্তকে আমলে নিয়ে সেদিনকার 'অনুশীলনের' নারী থিয়েটারকর্মীদেরকে পাইকারিভাবে মিথ্যুক ভাবতে বাধে... আপনাদের কয়েকজনের 'ক্ষুণ্ন' হওয়াটা অবশ্যই বিবেশনার দাবী রাখে; রীতিমতোন মহার্ঘ্যবিবেচ্য; তবু সহায়ক আরো কিছু তাত্ত্বিক উপাত্ত নাগালে না পেলে তো মোটা দাগের এতবড় একটা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছুনো সম্ভব হচ্ছেনা...
...আমি ভাই বড়ই বেবুঝ!

অ্যানিওয়ে, ভাল্লাগচে আপনার এই ওয়েদার ফোর্কাস্টিং ... পুস্টে তাই পিলাচ্...

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৫০

মানস চৌধুরী বলেছেন: কানা বাবা, আপনার ফ্যালাসি/কূটাভাসটি আমার ভাল লেগেছে। হ্যাঁ আর কোনো উপায়ে খালাসপ্রাপ্ত হওয়া সম্ভব না। আমি বড়জোর প্রশাসন এবং উপায় শব্দদুটোকে আরেকবার সামনে রাখতে চেয়েছি। :)

৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:১১

বিগব্যাং বলেছেন: মানসদা'র বক্তব্যরের মূলসুর সমর্থন করছি...

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৫১

মানস চৌধুরী বলেছেন: মূলসুরটা তাহলে আছে বিগব্যাং। থ্যাংক্যু ...

৬| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১০:১৫

আদৃতা আবৃত্তি বলেছেন: প্রিয়তে রেখে দিলাম আরেকবার পড়বার জন্য

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৫৫

মানস চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আদৃতা। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আপনি যদি অপ্রিয়তে রেখে আরেকবার পড়তেন, কিংবা কোথাও না রেখেই পড়তেন; এমনকি রেখেও না-পড়তেন তাহলেও একই গুরুত্ব ছিল আমার জন্য। অজস্র শব্দ-বাক্য উৎপাদনের কাল এইটা। প্রিয়-অপ্রিয়তে ততটুকুই ফারাক যতটুকু আমার (লেখকের) ক্ষমতা বৃদ্ধিতে মদদ দেয়। ধরুন অনেকের অপ্রিয় আমি, কিন্তু ক্ষমতাবান ... তাহলে? :)

৭| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:১৫

নৃপ অনুপ বলেছেন: মহাত্মন,

আপনার লেখার যৌক্তিকতার সাথে আমি সম্পূর্ণ এক মত।

অনেকেই ভণিতা করতে পারেন যে তারা জানেন না কিছু, কিন্তু অনেকেই ভণিতা করেন না এবং তাদের জানাশোনাটা ব্যক্ত করেন। কিন্তু সেটা তারা প্রকাশ্যে করেন না। সমস্যাটা কেবল জা.বি.র নয়। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগেরও নয়। পাবলিক ও প্রাইভেট বিভিন্ন সেক্টরে। মিডিয়া ও প্রেস-এ। থিয়েটার ও সঙ্গীত দলসমূহে। কিন্তু একটা চক্রব্যুহ ভেঙ্গে কথা বলবেন কে?

এখন বিষয়টি এমন জায়গায় এসেই ঠেকেছে...
তবু এই যে আপনি তো আপনার জায়গার থেকে চিৎকারটা দিচ্ছেন কয়জন তা প্রকাশ করার ক্ষমতা রাখে।
মানস'দা
আমরা নিজেরাই ক্রমশ নষ্ট হচ্ছি,
কিন্তু খুঁজছি কি আমাদের নষ্ট হওয়ার পিছনের বা আগাম বা চলমান ইতিহাস ?
আমাদের শিক্ষাঙ্গন থেকে আমরা যে ধরনের অভ্যস্ততার মধ্যে দিয়ে বড় হয়ে উঠি তাতে কেউ সুশীল বক্তা হন, কেউবা হন সেই রকম প্রশাষণের নিখাদ সুবিধাভোগী, কেউ এ জঘন্য পৃথিবীকে লাথি মেরে চলে যায়।
আমি লাথি মারা পার্টির লোক হয়েও মৃতু্কে আলিঙ্নন না করেও খামচে ধরে আছি মানচিত্রের মানুষদের...

সবাই কেবলি পোতাইয়া যাইতেছে।
এই র্দূযোগ থেকে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত যেন মৃতু এসে আমার কাছে নতজানু হযে বসে থাকে।

মঙ্গলার্থে...

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:০৪

মানস চৌধুরী বলেছেন: নৃপ, লম্বা মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। দেরি হয়ে গেল। আমি এই দেরিসমূহ করেই চলেছি। তাতে কিছু সুবিধাও হচ্ছে আমার। যাহোক, আশা করি আপনি কিছু মনে করবেন না যে "নষ্ট হয়ে যাচ্ছি" বা এই ধরনের প্রতিক্রিয়া/অভিব্যক্তি আমাকে বিশেষভাবে সতর্ক করে দেয়। রাজনীতি (রশি টানাটানি অর্থে) আমার জন্য সেন্টিমেন্টাল নয়। তার থেকেও বড় কথা, নষ্টামির প্রতি আমার সুবিশাল আগ্রহ আছে। নষ্টামির বিপরীত নিশ্চয়ই খাঁটিত্ব/পিউরিটি। খুবই বিপজ্জনক মাল। ইতিহাস সাক্ষী, আমরা পিউরিটানদের শাসনে আর তাফালিং-এ আছি। আমি পিউরিটি/পবিত্রতা/খাঁটিত্বের ঘোরতর বিপক্ষে। যদি গৌড়জনে লেহাজের রাজত্ব কায়েম করে, তখন নষ্ট হতে থাকাই তো প্রতিরোধ।

৮| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৫৪

ফজলুল কবিরী বলেছেন: একটা মন্তব্য শেষ করে প্রকাশ করতে গিয়ে দেখলাম আই অ্যাম নট লগড ইন। স্বগত মন্তব্যটা হারিয়ে গেল। যাই হোক এমন দরকারি লেখাটার জন্য ধন্যবাদ। আরো একবার শীত নিদ্রায় না যাওয়া পর্যন্ত ব্লগে স্বাগতম। আপনার গল্প লেখার কী অবস্থা?

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:০৮

মানস চৌধুরী বলেছেন: আপনার মন্তব্যটা না পেয়ে একটু পেট পুড়ছে। কয়েকবার অফলাইন হয়ে আমিও এসেছিলাম সামহোয়ের রাজত্বে। কিন্তু তেমনভাবে লগ করে কথা কওয়া হয়নি। ... আমার গল্প নিয়ে আগ্রহ ব্যক্ত করে আমাকে যুগপৎ গৌরবান্বিত ও শারমিন্দা করলেন। শারমিন্দা কারণ আমি অনেকদিন লিখছি না। লিখতে ও না-লিখতে এখন একই রকম আনন্দ লাগে। তারকা হবার লোভ আমার থাকলেও, না হবার সুবিধা এটা। হয়ে গেলে আর না-লেখার আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব হয় না।

৯| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:০২

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: দুর্দান্ত বিশ্লেষণ!!! চমৎকার।

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:১১

মানস চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ শরৎ। ন্যারেশন "নিরাসক্ত" বা ডিসপ্যাশনেট ধাঁচের হলে অনেকেই "বিশ্লেষণ" শব্দটা ব্যবহার করেন না। বিশ্লেষণ/অবস্থান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আবেগপ্রবণতা এবং ঘোষণাধর্মিতার একটা প্যাঁচের মধ্যে থাকে। আমাদের দেশে/ভাষায় তো বটেই। আপনি সেই প্যাঁচমুক্ত বলে খুশি হলাম।

১০| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:২২

ফাহমিদুল হক বলেছেন: ভালো বিশ্লেষণ মানসদা।
সার্বিক একটা চিত্র বা তার বিশ্লেষণ পাওয়া গেল -- শাস্তি না দেয়াটা মূল দাবিকে ঠেকানোর জন্যও, ক্যাম্পাসের কর্পোটারয়নের কারণে প্রতিরোধশক্তির শিথিলতা, জাবির শিক্ষকরাজনীতি ইত্যাদি।

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:১৩

মানস চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ফাহমিদ। প্রকাশনা রাজনীতি তো আপনি জানেনই। প্রথমে মনে হয়েছিল দৈনিকে যেহেতু প্রকাশিত হবার সম্পর্ক বিলুপ্ত হয়ে গেছে, ব্লগে লিখে আর কী লাভ! আপনার ও অন্যদের সঙ্গে এই উছিলায় একটু কথাবার্তা-যোগাযোগ হলো। এটাই লাভ।

১১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:৫৭

মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: অভিযুক্ত ছানোয়ার হোসেন হয়তো খালাস পেলেন, কিন্তু নিপীড়ন বিরোধী একটি নীতিমালা কি তৈরী করা যায়না এই সুযোগে?

আপনার পর্যবেক্ষণগুলো অসাধারণ।

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:১৬

মানস চৌধুরী বলেছেন: রিপন, নীতিমালা একটা দশ বছর আগেই তৈরি হয়েছিল। মানে খসড়া। সেই খসড়া বিগত এক দশকে ছোটখাট রদবদলে আরও পোক্ত হয়েছে বলেই আমি জানি। কিন্তু বিষয়টা হলো নীতিমালা গৃহীত হতে হবে তো প্রশাসনের কাছ থেকে। তারা টালবাহানাটা চালিয়েই যাচ্ছেন। ব্যুরোক্রেসি কীভাবে হঠকারীদের জন্য রক্ষাকবচ বানায় তাতো জানেনই। টালবাহানা চলছে বলেই নীতিমালা বলে প্রাতিষ্ঠানিক কিছু দাঁড়ায়নি। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের একাংশের লড়াইয়ের জায়গাও ওটা।

১২| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৫৯

হামোম প্রমোদ বলেছেন: "এখানে আমার আলোচনায় চক্ষুলজ্জা বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। যারা জানেন না তাদের জানানোটা আমার কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে যে জনাব ছানোয়ার হোসেন দলবাজির গতিপ্রবাহে, সর্বশেষে, "মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি" নামধারী এবং আওয়ামী ঘোষণাবাহী শিক্ষককুলের একাংশপন্থী যে একাংশ শিক্ষক সমিতির সভাপতির নেওটা; এবং এই সভাপতি সাবেক উপাচার্যের মিত্র (মানে নেওটা আরকি)। ফলে নিজ পুত্রকে বিচারে এক থাপ্পড় লাগানোর মতো চক্ষুধোলাই একটা শাস্তি হলেও হতে পারত। বর্তমান উপাচার্য সেটাকে এড়ানোর জন্য মোচড়াবেন এটাই স্বাভাবিক ছিল। " আপনার উপরোক্ত মন্তব্য আমাকে কিছুটা অস্বস্তিকর অবস্থাই রেখেছে, বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা যদি এই হয়, তাহলে কার কাছ থেকে সুবিচার আশা করতে পারি? (কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মহান শিক্ষকদের মধ্যেও যদি এই চরিত্র বর্তমান তাহলে দেশের কোন বিচারিক ব্যবস্থা কিংবা প্রশাসনিক ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখা কিংবা বিশ্বাস রাখাতা কঠিন হয়ে পরে। )

মানসদার প্রতি আমার অনুরোধ থাকলো, একটু কম আলসেমি করে, একটু কম ঘুমিয়ে ব্লগে উপস্থিতি টা একটু বাড়ালে, আমরা- বান্দারা কিছু সত্য ঘটনা, কিছু সত্য বচন শুনতে পারবো, যা আমাদের অনুসন্ধিৎসু মনের কিছুটা পুষ্টি যোগাবে।
ধন্যবাদ, ভালো একটা পোষ্টের জন্য।

১৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:০৯

নৃপ অনুপ বলেছেন: মহাত্মন,

মানস'দা,
আমিও বেশ কিছুকাল নেট জগতের বাইরে চলাচল করছিলাম।
কিছুক্ষণ আগে সময়ের ডাকে আমাকে টি.ভি. সেটের সামনে বসি এবং আপনার আলোচনার একটা গতিস্রোত আমার মাঝেও বহন করে।
এটি কেবলি একটি ঘরোয়া সালিশ নয়।
এর পেছনের যে রাজনৈতিক প্রেরণা কাজ করছে, সেই প্রসঙ্গে আপনার ফেরার যে জায়গা তা আমায় আনন্দিত করেছে।
দীর্ঘদিন হলো আপনার লেখা নেই ব্লগে..
আরেকটি লেখা কি এই প্রসঙ্গের আপডেট হিসেবে এখন আসতে পারে না।
এ নিছক আপনার লেখার পাঠক হিসেবে আমার আব্দার...
যত দ্রুত সম্ভব...

ত্রিশঙ্কুর কররেখা

মঙ্গলার্থে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.