নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চোখাচোখি/Interview

মনু

রক মনু https://www.facebook.com/rk.manu ছবি: অভীক আদনান সিদ্দিকী

মনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফরহাদ মজহারের লগে বিএনপি কই যায়?

১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৭

আহমদ ছফা নাকি খালেদা জিয়ারে কইছিলেন যে কারে সেক্রেটারি রাখছেন—আহমদ ছফারে চেনে না? খালেদা জিয়ার জবাব ছিলো —কী করবো, আপনারা তো আসেন না!



শোনা কথা। তাই কান দিলাম। তো, এই কনভার্সেশনে খালেদা জিয়ার বুদ্ধির খবর পাই আমি; কিন্তু তারচে বড়ো খবর হইলো বিএনপির পলিটিকস্ বিষয়ে একটা প্রায় গোপন কথা; বিএনপি আহমদ ছফা টাইপের লোক দলে চায়।



কিন্তু খালেদা জিয়ার কাছে ছফা কোন টাইপের লোক? জানি না আমি, কিন্তু অনুমান আছে কিছু। আহমদ ছফা খালেদা জিয়ার কাছে সম্ভবতঃ শিক্ষিত, কথা বলতে পারে, ইন্টেলেক্চুয়ালদের মধ্যে মুভ করে, প্রতিপত্তি আছে, আওয়ামী লীগরে ডিফাই করার মতো যুক্তি, বুদ্ধি এবং আগ্রহ আছে; একই সাথে নিজেদের প্রগতিশীল মনে করা বহু মানুষও সমাজ-রাজনীতি বোঝার জন্য যাদের চিন্তা-ভাবনা সাবস্ক্রাইব করে তেমন লোক।



খালেদা জিয়ার এই চাওয়া আসলে জিয়াউর রহমানের চাওয়ারই কন্টিনিউশন। জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগার, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী, বামপন্থি প্রগতিশীল, ধর্মীয় নেতা—ইত্যকার বহু দূরে দূরের মানুষজন তাঁর দলে নিতে পারছিলেন, স্পেস দিয়া বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারছিলেন। বিএনপি বড়ো দল হইতে পারার মধ্যে ওনার এই ধারনক্ষমতার বিরাট ভূমিকা আছে। সামরিক বাহিনীপ্রধান আর রাষ্ট্রপতি হিসাবে দল গড়ার সুবিধার কথা হিসাবে নিয়াও ওই ধারনক্ষমতারে গুরুত্ব দিতে হবে; মনে রাখা দরকার, এরশাদও রাষ্ট্রপতি হিসাবে দল কইরা সুবিধা করতে পারে নাই বেশি। জিয়ার সবাইরে ধারণের আগ্রহে বিরাট ঝুঁকিও ছিলো—ভারসাম্য রাখতে পারার ঝুঁকি। জিয়াউর রহমান এই ভারসাম্য কদ্দূর রাখতে পারছিলেন তা বলবো এই লেখার পরের পর্বে।



এ পর্বে খালেদা জিয়ার বিএনপি নিয়াই থাকি; খালেদা জিয়ার বিএনপি ওই ভারসাম্য পুরা রাখতে পারে নাই। সেজন্য আওয়ামী লীগকে কৃতিত্ব দিতে হবে। বাম ও আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা বিএনপিকে একটা পুরা ডানপন্থি দল হিসাবে ট্যাগিং করতে সফল হইছে। ৭৫ সালে ভেঙে পড়া আওয়ামী লীগ ক্রমে খাড়াইয়া বিএনপিরে ডানপন্থি হিসাবে প্রচার চালাইছে। আওয়ামী লীগ এমনভাবে প্রচার চালাইছে যেনবা সে একটা বামপন্থি দল! এই ইম্প্রেশান ভূয়া হইলেও এতে বিএনপির সাথে প্রগতিশীলদের দূরত্ব বাড়ছে, সংস্কৃতিকর্মীদেরো দূরত্ব বাড়ছে। এই দূরত্বের কারণে বিএনপির ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেন নাই খালেদা জিয়া। বিপরীতে বিএনপির অ্যাটিচ্যুড এমন হইয়া উঠছে যে সে নিজেই যেনবা প্রগতিশীলদের দূরে রাখতে চাইছে!



কিন্তু বাম এবং প্রগতিশীলরা বা লিবারালরা যে খালেদা জিয়ার বিএনপিরে এড়াইছেন তার ফল খুব খারাপ হইছে; বিএনপি চিন্তাশীল, শিক্ষিত, প্রগতিশীলদের অভাব পূরণের জন্য ফরহাদ মজহারের দুয়ারে গেছে; তার ফল আরো খারাপ হইছে। এই যাওয়া শূন্যস্থান তো পূরণ করেই নাই বরং শূন্যতা আরো বড়ো হইছে এতে! কেন এবং কিভাবে? সেই উত্তর বিএনপির বের করতে হবে। আপাতত আমি-ই বিএনপির হই।



উইকিপিডিয়ায় পাইলাম,



বিএনপি প্রতিষ্ঠার পরপরই জিয়াউর রহমান দলের কর্মীদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ নেন, যার মাধ্যমে দলের কর্মীদের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, দলের আদর্শ, সাংগঠনিক নিয়ম-কানুন ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হত।



১৯৮০ সালের সেপ্টেম্বরে এরকম একটি কর্মশালা উদ্বোধনকালে তিনি দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন,



“কোন রাজনৈতিক আদর্শ ধর্মকে ভিত্তি করে হতে পারে না। একটা অবদান থাকতে পারে। কিন্তু ধর্মকে কেন্দ্র করে কখনওই রাজনীতি করা যেতে পারে না। অতীতে আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে যে ধর্মকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান সময়ে যখনই রাজনীতি করা হয়েছিল সেটা বিফল হয়েছে। কারণ ধর্ম ধর্মই। আমাদের অনেকে আছে যারা আমাদের দেশে যে বিভিন্ন ধর্ম রয়েছে, সেগুলোকে কেন্দ্র করে রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করেন। রাজনীতির রূপরেখা বানাতে চেষ্টা করেন, আমরা বারবার দেখেছি তারা বিফল হয়েছে। ধর্মের অবদান থাকতে পারে রাজনীতিতে, কিন্তু রাজনৈতিক দল ধর্মকে কেন্দ্র করে হতে পারে না। এটা মনে রাখবেন, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।"



মনে রাখতে জিয়াউর রহমানের এই নির্দেশনা মনে রাখে নাই বিএনপি; বিএনপির রাজনীতির কেন্দ্রে চলে আসছে ধর্ম; ফরহাদ মজহারের বুদ্ধি লওয়াই এর প্রধান কারণ। মজহারের থিওরি বিএনপিরে দিয়া জেহাদ করাইতে চাইছে। সেই একই থিওরির মাধ্যমে আরেক দল বামরে দিয়া শ্রেণীসংগ্রাম করাইতে চাইছে। মজহারের থিওরি জেহাদরে দেখাইতে চাইছে শ্রেণীসংগ্রামের একটা ফর্ম হিসাবে। এই থিওরি স্পষ্টতঃ ফর্মরে গুরুত্ব দেয় না; রসুনের এক গোড়া দেখতে চাইয়া কোয়াগুলি যে ভিন্ন ভিন্ন রসুন সেইটা আর রিকগনাইজ করে না এই থিওরি! এই থিওরি আপনারে বহু দূর নিতে পারে; আপনি হয়তো মানুষের দেহকে বলবেন বস্তরই একটা ফর্ম মাত্র; ফর্মের ভিন্নতারে অস্বীকার করায় যেকোন একটা বস্তুর সাথে মানুষের দেহের তফাত করতেই পারলেন না আপনি! মায়াবাদের খুব কাছের চিন্তা; যেই মায়াবাদ মানুষের মরাকে বলতে পারে নিতান্তই বস্তুর বিলয়ের নিয়ম; মুরগীর থেকে নিজেরে আলাদা করতে পারলেন না আর! ফলে মানুষের মরায় নির্বিকার কইরা ফেললো আপনাকে মজহারের থিওরি। আপনি বিপ্লব করার জন্য জেহাদ বা শ্রেণীসংগ্রাম করে যাবেন নিয়ম মোতাবেক; অবিচলিতভাবে হত্যা করতে পারবেন; কেননা, মানুষ তো বস্তুর একটা ফর্ম বা অভিব্যক্তি মাত্র! বিপ্লব কইরা আপনি নতুন হাড়ি-পাতিল বানাইবেন যেন!



বিএনপি এই অমানবিক থিওরি নিতে পারে না; বিএনপি কেন মজহারের জেহাদ বা শ্রেণীসংগ্রাম করবে? বিএনপির রাজনীতির লক্ষ্য কি জেহাদ করা? শ্রেণীসংগ্রাম করা? কোনটাই না! ওদিকে মার্ক্সবাদী যাঁরা মজহারের সাবস্ক্রাইবার তাঁরা কেন জেহাদ করবেন? যাঁরা জেহাদ করতে চাইছেন তাঁরা কেন শ্রেণীসংগ্রাম করবেন? তারচে বড়ো বিষয় হইলো যেই মানুষের জন্য জেহাদ করবেন, শ্রেণীসংগ্রাম করবেন সেই মানুষকে নিতান্ত প্লাস্টিকের বোতলের, ইটের বা মরা গাছের গুঁড়ির একটা ফর্ম মাত্র ভেবে বিপ্লব কেন করতে হবে আপনাকে? বা মানুষকে একটা অনন্য জৈব বস্তুপিণ্ড যদি না ভাবেন তাইলে তার জন্য বিপ্লব করতেই বা চাইছেন কেন?



কথা হচ্ছিলো বিএনপি নিয়া; মজহারের বুদ্ধি লইয়া বিএনপি ক্রমেই অমানবিক হইয়া উঠছে; বিএনপি মানুষের অনুভূতির রেসপন্স দিতে ভুলে যাচ্ছে ক্রমে। এই বিএনপি কি হইতে চায় বিএনপি আদৌ?



১১ মার্চ ২০১৩



প্রথম আলোর রিপোর্ট মিলাইয়া পড়েন আমার এক বছর আগের লেখা::



ফরহাদের বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, বিএনপি কখনো বিলীন হয়ে যাবে না। জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর বলা হয়েছিল বিএনপি নিঃশেষ হয়ে যাবে। কিন্তু বিএনপি এগিয়ে গেছে। যাঁরা বলেন বিলীন হয়ে যাবে, তাঁদের ধারণা সঠিক নয়।

এর পরই মঞ্চে বসা ফরহাদ মজহার দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আপনি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে কথা বলছেন। আমরা পেশাজীবী। আমি যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কথা বলেছি, আমার সেন্টিমেন্ট আপনাকে বুঝতে হবে। আমরা কেউ সরাসরি রাজনীতি করি না। বক্তব্য মনঃপূত না হলে ডাকেন কেন।’

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৩০

অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: দারুণ লিখছেন। আপনার কনসেপ্ট ক্লিয়ার।

আরেকটা উপাদান বলেন নাই। ব্যক্তি জিয়া ভয়ংকর রহস্যময়, জটিল চরিত্র। ঐটার উত্তরাধিকার তার ছেলেরা পায় নাই। ছেলেরা মায়ের মতো অইছে।

তারেক কিছুটা অইতে পারতো তবে স্কুল ও কলেজ জীবনে মামুনরে পোন্দাইয়া চরিত্র ডাইল কইরা ফালাইছে।

কলেজ পরবর্তী আমগো তরিকুল্লার মতো থার্ড ক্লাশ জাহাজ ব্যবসায়ীর লগে বাংলা মদ গিলা ক্যারেকটার আরো ঢিলা কইরা ফালাইছে।

যাই হউক আপনে লিখছেন চমতকার। মনে অইতাছে সামনের লেখায় বোম ফুটবো।

অফ টপিক : অন্য এক লেখায় আমারে ভুল বুজছেন। একটু রিভাইজ দিয়েন ঐটা।

২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৫৮

মনু বলেছেন: থাক না, আপনার মতের ভুল বোঝাটাই; আমি এন্টি বাগধারা লোক, পাইলেই একটু ফাইজলামি করি, ওইখানের ফাইজলামিটা থাক তাই...

৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০১

অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: থাউক।

তবে খিয়াল কইরা।

আমি চান্সে আছি কহন আপনেরে ঠগ দিমু। হা হা হা...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.