বারান্দার গল্প

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৯

দুপুর নিস্তেজ হয়ে এলো, বারান্দায় ছায়া পড়লো । আমি স্নান করে এসে বারান্দায় দাড়ালাম, ছোট্ট ফাকঁ দিয়ে যেটুকু সূর্য্যর আলো-পড়লো যেখানেই শরীর শুকানো । তুমি এসে বারান্দায় বসলে, সুই-সূতো নিয়ে ছেড়া কাথাঁ সেলাই করতে ,অনেকক্ষন দাড়িয়ে দাড়িয়ে তোমার সেলানো দেখলাম তারপর রুমে এসে শরীরে তেল মাখলাম , শরীরে উঞ্চনতা খুজেঁ পেলাম ।
কিছুক্ষন পুরনো পত্রিকা ঘাটলাম, চোখ ব্যর্থা ধরে এলো আবার বারান্দায় গেলাম, তুমি তখনো সেলাচ্ছো একনাগারে মাথা নিচু করে ।
আমি তোমার কাদেঁ হাত রাখলাম তুমি সেলাই থামালে কিছুক্ষন,হাত সরিয়ে নিতেই আবার সেলাই শুরু করলে ।

বারান্দায় একটি বই নিয়ে বসলাম ,বইয়েতে মনোযোগি দিতে পারছিলাম না, শীতল দিনটি বার বার বাইরে নিয়ে যেতে চাচ্ছে । তুমি সেলাই শেষ করে, কাপড় ধুয়ে বারান্দায় কাপড় শুকাতে আসলে, কাপড় সম্ভবত বেশি চিপে জলরস বের করনি তাই বারান্দা ভিজে যাচ্ছিলো ।
আমি ঊঠে তোমার ভেজা কাপড়ের ঘ্রার্ণ নিতে গেলাম, নাকের কাছে নিতেই তোমার শরীরের মিষ্টি একটা স্বাদ ঘ্রার্ণ বিলিয়ে গেল, কাপড়ের ছেড়া আচলঁটি সম্ভবত সেলাইঁ করতে ভুলে গেছ , ছেড়া অংশটিতে বার বার হাত ছলে যাচ্ছিলো । খুব আলতো করে স্পর্শ করলাম, তুমি এসে দেখলে তোমার ছেড়া আচঁলটি ধরে আছি , তুমি মুচঁকি হেসে বারান্দা থেকে চলে গেলে । আমি আবার বই নিয়ে বসলাম, চোখ ঝিমিয়ে এলো , তুমি এসে পাশেঁ কফি রাখলে -কাপে একটু চুমুক দিতেই সতেজতা ফিরে পেলাম ।

বারান্দায় কি যেন ভাবতে ভাবতে ,বারান্দায় এক-কোনে চিরকুট খুজেঁ পেলাম । চিরকুট মেলে , প্রেম পত্র পেলাম । প্রেম পত্রটি তোমাকে নিয়ে লেখা , পাশের বাসার বারান্দা থেকে কোন বাচ্ছা ছেলে দিয়েছে হয়তো- হাতের লেখা কথার ধরন দেখেই বুঝা যায় ।
চিরকুটটি শুরু হয়েছে, এমন করে-: প্রতিদিন বারান্দায় দেখা অচেনা নারী,তোমাকে দেখি সাংসারিক কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ততুমি । সেলাই করা,কাপড়ধুয়া,মরিচ কাটা তোমার নিত্য কাজ -, তোমাকে দেখে দেখে ভালোবেসে ফেলেছি খুব সুন্দর তুমি । তুমি কি আমাকে ভালোবাসবে? হয়তো দেখে বলবে-কালো ছেলে /বাচ্ছা ছেলে । তোমার চেয়ে বয়সে কমতো হবোই ।

পড়ে পড়ে কিছুটা বিব্রত হলাম । বধুর কাছে আজকাল-প্রেমপত্র আসছে । কেমন আনাড়ি ছেলে, প্রথমচিঠিতেই ভালোবাসার কথা, কাছে আসার কথা বনর্ণা করেছে । চিরকুটটি কুচি কুচি করে ছিড়ে বারাদায় ফেলে দিলাম । তুমি আবার বারান্দায় এলে, আমার দিকে আড়-চোখে তাকিয়ে বললে:- ইস! বারান্দা আবার ময়লা করে ফেললে? আমি বললাম- এই তো চিরকুট ছিড়লাম । তোমাকে কেউ লিখে হয়তো পাঠিয়েছে বারান্দায় কুড়ে পেলাম । তুমি হেসে বললে: ওগুলো এখন প্রতিদিনি পাই ! আমি অভাগ হয়ে যখন তোমার দিকে তাকালাম-তুমি বললে, এমন করে দেখার কিছু নেই । চিরকুট তো দেয় অচেনা ছেলে ! বারান্দার দরজা অফ করেদিলে ওগুলো আর আসবে না কিন্তু তোমার বন্ধু,অফিসের বসদের আটকাবে কি করে? ওরা যে আমাকে প্রতিদিন বিরক্ত করে ।

(অসমাপ্ত )

০ টি +০/-০