![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রুপাদি অনেকদিন পর আমাকে ডেকেছিল আড্ডা দেয়ার জন্য ,তার সাথে দেখা করার জন্য বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বের হয়েছিলাম গতকাল শত্রুবার দুপুরে ।
দেখা হতেই রুপাদির মুখে এক-ঝলক হাসি । সব-সময়ই যেটা থাকে, এই নারীটা যদি কঠিন অসুস্থ অবস্থায়ও বলি –কেমন আছ? হেসে উত্তর দেবে ,বেশ আছি? । হেসেই প্রশ্ন কি কেমন আছিস? ভালো দিদি, তুমি?। রুপাদি:-আমি কোনদিন খারাপ থাকি না ! তো তোর জার্মান যাওয়ার খবর কি? কিছুদিন ধরে তো দেখি মন খারাপ করে স্ট্রাটাস মারিস!
না দিদি কিছুই হচ্ছে না । আর লেখা –পড়াতে মন বসাতে পারিনা আর তোমাকে তো ফেসবুকে দেখি না ,ফেসবুক কি চালাও নাকি ? । ঢুকে ছিলাম অনেকদিন পর ,আর আগেই বলে রাখি সরি তোর সাথে যোগাযোগ রাখতে পারিনি একটু ব্যস্ত ছিলাম।
তোমরা তো এখন ব্যস্ত মানুষ তোমাদের নাগাল পাওয়া মানে চাদঁ পাওয়া গো দিদি । রুপাদি ভ্রু কুচকে বললো: তোর লেখা গুলো দেখলাম, ঠিক আছে কিন্তু মন খারাপ করে জিদ করে কিছু করে ফেল,মন খারাপ করে ঘরে বসে থেকে লাভ নেই । জানি এদেশে পদে পদে বাধাঁ-জীবন তো আর কম দেখিনি । হ্যাঁ দিদি তোমার কথাই ঠিক কিন্তু মাঝে মাঝে কোন উর্চ্ছ্বাস পাই না , কেন যে বেচেঁ আছি । রুপাদি:-হুম ,ট্রাই কর দেখবি হঠাৎ করেই কিছু হবে! মধ্যবিত্তদের ঠেলতে ঠেলতে পথ চালাতে হয় যাইহোক আমাকে একটা গল্প লিখে দিবি?। দিদি তোমাকে গল্প লিখে দিব?।রুপাদি একটু নির্জন হয়ে বললো: মনে কর আমার জীবনের গল্পই আমি আমার জীবনের কিছু অংশ বলবো তুই তোর মত করে লিখবি । আচ্ছা বলো । তোকে দিয়েই শুরু করি মানুষ-এই যে তুই শত শত সিবি জমা দিয়ে বেকার হয়ে গুরে বেড়াচ্ছিস আর বিদেশে পাড়ি দেবার স্বপ্নে আছিস, তোর লেভেলের একটা মেয়ের ঢাকা শহরে বেচেঁ থাকাটা কতটা সেফটি তুই মনে করিস? কোন সেফটি নাই এখানে । আমি যখন ক্লাস ট্রেন –এ পড়ি তখন নির্জন বাসায় আপন মামার হাতে রেপ হয়েছিলাম ! ডরে –ভয়ে কাউকে বলিনি। পৃথিবীর কয়টা গল্পই মানুষ জানে বল! বা বলেই কি হতো –সারাজীবন অপমান নিয়েই বাচঁতে হতো , এরপর মাদারীপুর থেকে ঢাকাতে আসি – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই সেখানেও ডিপাটমেন্টের চেয়্যারম্যান ধারা বহুবার বাধ্য হয়ে ব্যাবহার হয়েছি । শিক্ষাজীবন চুকিয়ে সরকারী জব নিয়েছি সেখানেও বসের কাছে ! এরপর বিয়ে হলো-তিন সন্তানের মা হলাম ঠিকি স্বামীর কাছেও সামাজিক ধর্ষণ হচ্ছি । যদি নিজেদের অবস্থান ভালো থাকতো –তাহলে হয়তো কারো কাছে তেল মাখতে যেতে হতো না কাজের জন্য ,আর এমনভাবে ধর্ষিতও হতাম না । শুধু আমি না মানুষ-শহরতলী থেকে যারা উঠে আমার পর্যায় এসেছে ,তারা বাধ্য হয়েই সব কিছু করেছে ,করার কিছু নেই যে। যেমন ধর –আমার ছেলে মেয়ে ওরা কোনদিন হয়তো অন্তত্ব বাধ্য হয়ে ধর্ষিত হবে না ঐ অবস্থান পরিবর্তন করে ফেলেছি । জীবনটাতে যে শুধু দু:খ বোধ আছে তা কিন্তু নয়-অনেক অনেক দিন এর ভেতর ভালোও কাটিয়েছি অনেক ভালো বন্ধু,টিচার ও কলিগও পেয়েছি ।
রুপাদি জীবনের অনেক অনেক গল্প বললো-দু:খ,হতাশা,রাতের পর রাত কান্না আর মজার মজার স্মৃর্তিসব । উত্তান-পতন নিয়েই মানুষের জীবন । আমার ভেতরও অনেক অনেক গল্প জমা আছে যা হয়তো কোনদিন ভাষায় –ডাইরীতে প্রকাশ করবো না ।থাক না ,অজানা সবার ভেতর । তবে দিদির গল্প লিখবো –হয়তো তার জীবনবোধেই অনেক হতাশাগ্রস্থত মেয়েদের আলোর পথ দেখাবে ।
আমার আর দিদির কথা শেষ হলো । দিদি বললো-লিখিস কিছু তোর মতো করে। অনেক্ষন আড্ডা দেয়ার পর ,দিদি আর আমি স্ট্রারে দুপুরের লাঞ্চ করলাম । দিদি বললো-লেগে থাক হয়ে যাবে । দিদিকে আমি বললাম-শুনিছি তুমি প্রচুর ড্রিংস করো! একটু কমিয়ো । দিদি হেসে বললো: হুম কমাবো তারপর দিদি চলে গেল ,আমিও পাঠশালায় চলে আসলাম বৃষ্টি মাথায় নিয়ে
©somewhere in net ltd.