নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিজয় না হওয়া পযন্ত সংগ্রাম করো

মানুষ আজিজ১

মানুষ আজিজ১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টির একদিনে

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৪

গতকাল রাতে বৃষ্টিতে ভিজে বাসায় আসলাম । রমা দরজা খুলে দিয়ে নিশ্চুপে বারান্দায় গিয়ে দাড়ালো । আমি তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে রমার পাশে গিয়ে বললাম- কি হলো রমা? মন খারাপ? । রমা বললো: মন খারাপ হবে কেন?
-এই যে কোন কথা বললে না । অন্যসময় তো আমি বাসায় ঢুকতেই আমাকে জরিয়ে ধরতে যেন গুপ্তধন খুজে পেতে , বৃষ্টিতে ভিজে এলে জোর করে মাথা মুছে দিতে । এগুলো তো আজ পেলাম না তাই ।
রমা: ও ।
-কিছু হয়েছে রমা ।
রমা: স্বামী তুমি এমন কেন?
-কেমন রমা? কি হয়েছে গো ?
রমা: কি করনি তুমি বলতো?
-কি করেছি?
রমা: বলতে আমার খুব বাধছে ।
-কি এমন কাজ করলাম , আমাকেও বলতে বাধছে?প্লিজ বলো ।
রমা: স্বামী আমি তো তোমার স্ত্রীই নাকি? তো –আমাদের ভেতর কি হয় সবাকে বলে বেড়াবে?ফেসবুকে দিতে হবে ?আমার ব্লাউজ ছিড়ে গেছে এটা কিভাবে ফেসবুকে লিখলে! স্বামী-স্ত্রীর মধ্য কি হয় এটাতো সবাই জানে তাই না , এগুলো কি প্রচার করে বেড়াবে ।
-না ,রমা আমি ওগুলো বলি না ।
রমা: আমার বান্ধবী যে বললো-তুমি ওগুলো বলে বেড়াও ।
-তোমার বান্ধবী মিথ্যা বলেছে। তোমার সাথে আমার দন্ধ তৈরী করার জন্য ।এর আগেও তো করেছে –ভুল প্রমানিত হয়নি ? আমাদের ভালোবাসার কথাই তো বলি ফেসবুকে ।
রমা: আচ্ছা স্বামী ,ফেসবুকে তো কত মেয়েছেলে আছে কোন প্রেমে –টেমে পড়নি তো?
-দুর, আমি বলেই বেড়াই আমার লক্ষীসোনা রমা আছে, জেনে শুনে কে আসবে বলো ।
রমা: তারপরও তোমরা ষাড়ের জাত তো ! কোথাও কোমল রস,পেলে যদি গলে যাও ।
-বুঝেছি সন্দেহ ঢুকে গেছে তোমার মনে । বল কি করলে, সন্দেহ দুর হবে?
রমা: পারবে?
-বলেই দেখ না ।
রমা: ফেসবুক চালানো বন্ধ করে দিতে পারবে ?
-এটা কি বল । সব –বন্ধু আত্মীয়স্বজন ফেসবুকে আছে।
রমা: পারবে না তো । আমি তো ফেসবুক চালাই না চলে যাচ্ছে না জীবন ।
--তুমি আমাকে ফেসবুক বন্ধ করে দিতে বলতেছ এর মানে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে ! কার কাছে কি শুনেছো ,এটা নিয়ে আমাকে ভুলই বুঝলে ।
রমা: আমি শুধু শুনিনি তোমার লেখাগুলোও অন্যজন দেখিয়েছে ।এত নোংরা ভাবে উপস্থাপন করতে পার তুমি , আমার বমি আসছে ! শুধু কি এটা? নীলা কে?
-নীলা ! তুমিই , এক নামে এত ডাকতে খারাপ লাগে তাই ও নামে ডাকি।
রমা: মিথ্যা বলো না ।তুমি তো সেই কখন থেকে মিথ্যা বলে যাচ্ছ ।
-সত্যিই তুমি নীলা ।
রমা: স্বামী আবার মিথ্যা বললে ।
-মিথ্যা না ।এটাই বাস্তব ।
রমা: স্বামী সত্যি তো?
-সত্যিই ।
রমা তখন ধর্মীয় একটি গ্রন্থ সামনে এনে বলছে: এটি ছুয়ে বল, যা বলছো সত্যিই ।
-আমি তোমার হাত ছুয়ে বলি ? তোমার শরীর আমার কাছে ঐ গ্রন্থ থেকে বেশি পবিত্র ।
রমা: শরীর না । গ্রন্থটি ছুলেই আমি বিশ্বাস করবো ।
-রমা এরপর থেকে প্রতিদিন ওটা আমাকে ছুইয়ে ঘরে প্রবেশ করিও ! তাতে লাভ কি জানি না । বিশ্বাস তো মনের ব্যপার ,আর মন শরীরের ভেতর বাসা বাধেঁ ।আর ওটা পুস্তক মাত্র ! না পড়া ছাড়া এটার মুল্য নেই । অনন্ত ওটার দুহাই দিয়ে যদি তোমার মনের ক্লেষ কমে ,আমি করবো কিন্তু হৃদয় দিয়ে দেখো তো একটু ।
রমা ধর্মীয় গ্রন্থটি যথা স্থানে রেখে বললো ,আচ্ছা বুঝেগেছি এই বলে অন্যরুমে প্রস্থান করতে ছিল । আমি রমার সামনে হাত ধরে দাড়িয়ে বললাম: স্বামীকে নিয়ে এত টেনশন? এত হারানোর ভয় ?এত ভালোবাসা ।
রমা কোন কথা বললো না , কিছুক্ষন নিশ্চুপে দাড়িয়ে থেকে বললো: তুমি রেষ্ট্র নাও । আমি তরকারি রান্না করি, ভাত হয়েগেছে ।
-রমা, ভুল বুঝলে আমাকে ?
রমা: না স্বামী , কাকে ভুল বুঝবো । আমার আসন্ন সন্তানের বাবাকে ?এতটুকুই বলবো-তুমি তোমার সন্তানের একজন আদর্শ বাবা হয়ে উইঠো ।
-হুম। তার আগে কি আমাকে আদর্শ স্বামী মনে করতো ?
রমা: স্বামী ভাত কিন্তু পুরে যাবে । ভাতটা নামিয়ে আসি পর কথা বলি ।
-এতটুকু শব্দ বলতে কতক্ষন ।
রমা: ছাড়, ভাত পুরে গেল কিন্তু রাতে খেতে পারবে না । আমি আর রাধতে পারবো না ।
-রাধার দরকার নেই ।বলো –আদর্শ স্বামী মনে করতো ।
রমা: মুখে বলতেই হবে টের পাও না ।এবার ছাড়।
-না ছাড়বো না । তো এত অভিনয় করলে কেন?
রমা: ইস! ঐযে ভাত পুডা গন্ধ বের হচ্ছে কিন্তু , পর কথা বলি ।
-না বলে যাও । এমন করলে কেন?
রমা: সত্যিই অন্যদের মুখে শুনে একটু দন্ধ কাজ করছিলো , এখন নেই স্বামী ! এবার ছাড় ।
-না ছাড়বো না । কি করবে ।
রমা: হাতে কামড় দিবো কিন্তু ।
-দিবে,দাও ।
রমা সত্যিই হাতে কামড় দিয়ে আমার হাত ছুটে পালালো রান্নারুমে , ততক্ষনে ভাত পুড়ে ছা্ই ।
আমিও গেলাম দৌড়ে রান্না রুমে, রমা আমার দিগে তাকিয়ে কট-মট করছে আর বলছে এই পুড়া ভাতই আজ তোমাকে খাওয়াবো ,আমি আর রান্না করতে পারবো না । কি মনে করো,আমি তোমার ঝি ?
-আমি হেসে বললাম হুম –ঝি ।
রমা: এক-কামড়ে কাজ হয়নি, না !
এই বলে রমা হা করে আসছে আবার কামড় দিতে ,আমি দৌড়ে বাথরুমে খিল দিয়ে বাচঁলাম । আমি বাথরুম থেকে বললাম-রমা কি রাক্ষুসী হয়ে গেলে ।
রমা: হলাম। বের হও তোমাকে চিবিয়ে খাব্ ।
-চিবিয়ে কি খাবে?
রমা: আবার অসভ্যতা শুরু করলে ?
-বাহ! রাক্ষুসীরাও অসভ্যতা মানে বুঝি ।
রমা: বাথরুমেই বসে থাক।ওটাই তোমার উপযুক্ত স্থান । আজ ওখানেই ঘুমাবে তুমি ।বের হতে দিব ।
-রমা আমি না তোমার আসন্ন সন্তানের বাবা! কষ্ট দিবে আমাকে ।
রমা: স্বামী বের হয়ে এসো ।
-কামড় দিবে না তো ?
রমা: দিব না ।
আমি বের হয়ে আসলাম । রমা আমার বুকের ভেতর শান্তির আশ্রয় খুজতে লাগলো । এরপর রামাই আবার রান্না করলো, আমাকে মুখে তুলে খাওয়ালো , রমা হাতে একটু জোরেই আমড় দিয়েছিল

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.