নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ব্লাউজের পিছনে কী আছে, ব্লাউজের পিছনে কী?"

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৬

"এই, 'চোলি' মানে কী বলতো!"
"জানি না। চোলি মানে কী?"
"ব্লাউজ। চোলি মানে ব্লাউজ।"
"ও আচ্ছা।"
"আরে বুঝলি না.....'চোলি কে পিছে কেয়া হ্যায়, চোলি কে পিছে!' হিহিহি।"
উপরের কথোপকথন ক্লাস থ্রি/ফোরে পড়া দুইটি ছাত্রের। বয়সের হিসাবে ওদের শিশু বলাই যায়।
বলিউডে 'খলনায়ক' তখন বিরাট ব্লক বাস্টার। স্যাটেলাইট টিভি তখনও সেইরকম সহজলভ্য না হওয়ায় বলিউডি জোয়ারে বাংলাদেশ ডুবতে একটু সময় লাগতো। তবে ডুবতো ঠিকই। বাংলাদেশের প্রতিটা ক্যাসেটের দোকানে তখন এই গান বাজতো।
সুরটা আকর্ষনীয় হওয়ায় সহজেই মাথায় ঢুকে যেত এবং কিছুতেই বেরুতে চাইতো না।
কাজেই বাচ্চারাও তখন বুঝে না বুঝে গুনগুন করে একটা প্রশ্ন করতো, "চোলি কে পিছে কেয়া হ্যায়, চোলি কে পিছে?"
গীতিকার যদিও পরের লাইনেই উত্তর দিয়েছেন, কিন্তু গানটা যে 'দিলের' জন্য হিট করেনি সেটা গ্রীষ্মের দুপুরে গাছের ছায়ায় বসে জাবর কাটতে থাকা অতি নিরিহ গবাদি পশুও দিব্বি বলে দিতে পারবে।
এর কিছুদিন পরে এলো "সেক্সি, সেক্সি, সেক্সি মুঝে লোগ বোলে, হাই সেক্সি, হ্যালো সেক্সি কিউ বোলে...."
লিরিক এখানেই থামলো না। এলো "কাভি মেরে সাথ, কোই রাত গুজার, তুঝহে সুবহা তাক ম্যায়, কারু পেয়ার!"
একবার এক কমেডিয়ান মজা করে বলেছিলেন, "ভিডিওতে পোলার চেহারা দেখে কিন্তু মনে হচ্ছিল না মাইয়াটারে পাইলে দুই তিন রাতের আগে ছাড়ার কোনরকম নিয়্যত তার আছে!"
যেকোন কিছুকে দ্রুত জনপ্রিয় করার সবচেয়ে সহজতম উপায় হচ্ছে সেটাকে অশ্লীল করে ফেলা। আদি রসে ডুবিয়ে দাও, তাহলেই দর্শক খাবে।
চলচ্চিত্রে আমরা এর অব্যর্থ প্রয়োগ দেখতে পাই। অনেক লেখককেও দেখেছি এই কাজটি করে অতি দ্রুত জনপ্রিয় হবার চেষ্টা নিতে।
অপ্রয়োজনে একটা সেক্স/রেপ সীন বর্ণনা করতে শুরু করে দেন। একজন লেখিকা তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের যে ঘিনঘিনে বর্ণনা দিয়েছিলেন, তা পড়ে তাঁর প্রতি এতটুকুও সিম্পেথিতো জন্মায়ইনি, বরং সন্দেহ জেগেছিল, উনি এঞ্জয় করেননিতো?
ব্লগাররাও তাই করছেন। এতে গল্পের মূল বক্তব্য কোথায় হারিয়ে যায়, সেদিকে বিন্দুমাত্র পরোয়া নেই। জয় অশ্লীলতা!
বলিউডি উদাহরণই দেই।
কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, বলিউডের সর্বকালের সর্বসেরা সিনেমা কোনটা - বেশির ভাগই উত্তর দিবেন, "দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে।"
বলিউডের ইতিহাস পাল্টে দেয়া একটি চলচ্চিত্র। তিনশো সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হলে চলেছে। এক বছর সমান বাহান্ন সপ্তাহ। তার মানে ছয় বছর ধরে দর্শককে হলে টেনে এনেছে এই ছবি। অথচ একটিও অশ্লীল দৃশ্য নেই। কিভাবে হলো?
স্ক্রিপ্ট রাইটার/ডিরেক্টর কেবল মাথা খাটিয়েছেন গল্পের মূল বক্তব্য বর্ণনার দিকে। নায়িকার গোসলের দৃশ্য কিংবা নায়কের সাথে বেড সীন নিয়ে ভেবে ভেবে সময় নষ্ট করেননি।
এই বিষয়ে সালমান খানের একটা কথা বলতেই হয়।
সালমান খান জীবনেও কোন নায়িকাকে চুমু দেন নি। মানে অন স্ক্রীন চুমুর কথা বলছি আর কি। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "একটি চুমুর দৃশ্য একটি স্ক্রিপ্টের জন্য এতটা জরুরি হতে পারেনা যে সেটাকে রাখতেই হবে। আর যদি সেটা হয়, তবে সেটা অত্যন্ত দূর্বল স্ক্রিপ্ট।"
সালমানের যুক্তি পরিষ্কার, তাঁর সিনেমা পরিবারের সবাই মিলে দেখতে যায়। কাজেই তিনি এমন কিছু রাখতে চাননা যেখানে কারও অনুভূতিতে বিন্দুমাত্র আঘাত লাগতে পারে।
পর্দার সালমানের চেয়েও বাস্তবের সালমান তাই অনেক বড় নায়ক!
টাইটানিকের সেই বিখ্যাত ছবি আঁকার দৃশ্য বাদ দিলে কী খুব একটা ক্ষতি হয়ে যেত? নাহ। সিনেমা সেরকমই অমর হতো।
মাঝে দিয়ে ক্লাস নাইনে পড়া আমার এক সহপাঠি যখন চোখ টিপে বলেছিল, "টাইটানিক দেখেছিস? দেখিস, খুব মজা পাবি!" তখন তার উপর এত রাগ লেগেছিল! একটি দুর্দান্ত প্রেমের গল্পের এমন ট্র্যাজিক ক্লাইমেক্সের কিছুই তার মাথায় ঢুকেনি। সে তখনও ছবি আঁকার দৃশ্যেই আটকে আছে। আহারে!
সেদিন এখানকার হিন্দি রেডিওতে এক বাবা ষ্টুডিওতে ফোন করে তাঁর মেয়ের জন্মদিনে "শিলা কী জাওয়ানি" গানটি উৎসর্গ করলেন। মেয়ের নাকি সেটা ষষ্ঠ জন্মদিন ছিল।
ধন্য হে পিতা-এ-হিন্দ! তুমি ধন্য!
ঐ একই রেডিওতে বাচ্চাদের অনুষ্ঠানেও 'শিলা কী জাওয়ানি' সবচেয়ে জনপ্রিয় গান। বাচ্চারা ফোন করলেও এই গানটা বাজে, না করলেও বাজে। মা বাবা ষ্টুডিওতে ফোন করে বলেন, এই গানটা শুনলে তাঁদের বাচ্চারা নাচতে শুরু করে।
এ যেন আমাদের সেই গুনগুনিয়ে "ব্লাউজের পিছনে কী আছে, ব্লাউজের পিছনে কী?" গানের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।
আমি বুঝিনা, ওরা কী হিন্দি না বুঝে গানটাতে নাচে গায়? নাকি আমার দূষিত মনই চমৎকার একটি হিন্দি গানের অশ্লীল মানে খুঁজে বের করে?
আরেকবার আরেক অনুষ্ঠানে দেখি বাচ্চারা নাচছে আরেক গানে।
"গোরে গোরে নটি, নটি, রাউন্ড রাউন্ড টুং!"
যাহার বাংলা করিলে আক্ষরিক অর্থ দাঁড়াইবে, "ফর্সা, ফর্সা, দুষ্টু দুষ্টু, গোল গোল পাছা!"
চোখ কপালে উঠে গেছে?
কিন্তু সেদিনতো দেখি দর্শকরা খুব মজায় তালি বাজাচ্ছিলেন। দর্শক মানে ঐ বাচ্চাদেরই মা বাবা - কাকা কাকিরা। হিন্দি যাঁদের মাতৃভাষা!
এরপরে কোন একদিন যদি আপনার টিনেজ কন্যা হঠাৎ করেই বমি করতে শুরু করে, তখন যেন আবার আপনি তাকে পেটাতে পেটাতে প্রশ্ন না করেন, "What did I do wrong?"
সে কিছু বলুক কী না বলুক, দোষটা আসলে শুধুই আপনার।
আপাতত হিন্দি কমিউনিটি নিয়ে লেখাটি লিখলেও আমাদের দেশী ভ্রাতা ভগিনীদের ক্ষেত্রেও কিন্তু কথাগুলো ১০০% প্রযোজ্য! ভুলে যাবেন না, এখন স্যাটেলাইট যুগ। বলিউডের জোয়ারে আমাদের দেশ ইতিমধ্যেই একশো হাত গভীর জলে নিমজ্জিত।
সেদিন শুনলাম দেশের একটি স্কুলের ক্লাস থ্রীর বাচ্চা মেয়ের উপর attempt to rape হয়েছে। যে ছাত্র কাজটি করেছে, সে নিজেই ক্লাস ফাইভে পড়ে। বয়স খুব বেশি হলে এগারো হবে।
তাজ্জব হয়ে গেলেন? সেই উনিশশ তিরানব্বই সালে যদি একটি দেশের ক্লাস থ্রীর বাচ্চা ছেলে তার সহপাঠিকে দাঁত কেলিয়ে "চোলি কে পিছে কেয়া হ্যায়" গানের তর্জমা ডিটেইলে বয়ান করে, তাহলে তার একুশ বছর পর সেই দেশে এরকম ঘটনা ঘটাইতো স্বাভাবিক হবার কথা।
https://www.facebook.com/groups/canvasbd/

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৪

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
জেনিফারের “বুটি সং” দেখতে দেখতে এসব কথা হওয়ায় মিলিয়ে যায়, মঞ্জুর।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: জেনিফারের গানতো পিএইচডি লেভেলের জিনিস। আপাতত ম্যাট্রিকটা ঠেকানো যাক!

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:২২

আদম_ বলেছেন: এগুলো কেউ পড়বেনা। কারণ কুত্তার পেটে ঘি হজম হওয়ার কথা না। অতি চমতকার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৬

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ! :)

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৪

অগ্নি সারথি বলেছেন: চমতকার পোস্ট।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৫

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: +++++++++++++++++++++++

আরও একটি ভালো পোস্ট আপনার কাছ থেকে ভ্রাতা ।

ভালো থাকবেন সবসময় :)

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ! :)

৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১২

জামান শেখ বলেছেন: ভালো লেখনি।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!

৬| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৩

লাজুক ছেলে...... বলেছেন: ঠেকানো মুশকিল।আমাদের দেশেও আছে এমন কিছু গান -
১। তুমি ছুয়ে দিলে আমার এই অঙ্গ যখন... ধাক ধাক করে এই বুকটা তখন
২। সুখ সুখ সুখিয়া....সুখ সুখ সুখিয়া... আয় না খেলি এক্কা দোক্কা গলা জড়াইয়া

ডিশ,ইন্টারনেট আর স্মার্ট মোবাইল এর যে জোয়ার এর ভিতরে অস্লিলতা ঠেকানো বড় কঠিন।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৬

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হাহাহা, আমাদের দেশের গান আরও অশ্লীল হয়, "যৌবন আমার লাল টমেটো..."

৭| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৭

হাসান নাঈম বলেছেন:
একেই বলে প্রযুক্তির প্রতাপ
কী করবেন, দ্রুত অধ:পতিত এই সমাজকে রক্ষার জন্য প্রযুক্তির ব্যাবহার বাদ দিতে পারবেন? পারবেন না।

ধর্মীয় শিক্ষা ও অনুশাষন একটা উপায় হতে পারে - কিন্তু সেটা করতে গেলেতো মৌলবাদী, জঙ্গী হয়ে যাবেন।

তাহলে উপায় কী?

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৭

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: কথা ঠিক। আপনি আপনার ধর্ম মানতে গেলে আপনাকে 'মৌলবাদি' অপবাদ শুনতে হবে। কিন্তু মৌলবাদি না হয়ে কোন সমাধান কী আছে? নেই।

৮| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বিকৃত রুচির মানুষের কাছ থেকেই
সৃষ্টি হয় বিকৃত রুচির গান, যার আবেদন
ক্ষনিকের। সময়ের আবর্তে এসব হারিয়ে
যায় কালের গর্ভে। অথচ শালীন ও সুখশ্রাব্য
গানগুলি বেঁচে থাকে কাল থেকে কালে...

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৮

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক।

৯| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৮

কলমের কালি শেষ বলেছেন: একমত । সত্য এবং নির্মম । :(

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৮

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

১০| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩৪

আর্টিফিসিয়াল বলেছেন: একমত, সমাজ থেকে এইসব এখন হঠাত করে দূর করতে পারবেন না। এইগুলো এখন সমাজের শিরা উপশিরায় ঢুকে পরেছে।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৮

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অ্যামেরিকায় অনেক বাবা মা আছেন যারা ছেলে-মেয়েদের টিভি দেখার উপর রেসট্রিকশন দিয়ে রাখেন। বাইরে যাওয়া যাওয়ি, বন্ধু বান্ধবের সাথে মেলামেশার উপরও একই নজরদারি।
আমরা ছেলে মেয়েদের বেশিই বিশ্বাস করি, এটা ঠিক না। তারা শিশু, তাদের অভিজ্ঞতা কম। তাদের গাইড করা আমাদের দায়িত্ব। 'অসম্ভব' বলে ভেবে বসলে হবে না। আমার নিজের বন্ধুর বাড়িতেও ডিশ কানেকশন নেই, কোনদিন ছিল না। ফলাফল সেই বন্ধুর চেয়ে চরিত্রবান ছেলে আমি আজ পর্যন্ত খুঁজে পাইনি। ইচ্ছা থাকলেই সব সম্ভব।

১১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১০

আর্টিফিসিয়াল বলেছেন: হুম,আপনার সাথে একমত। সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং করতে হবে। আর গোড়া থেকে এইসব উপড়াতে হবে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.