নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ূন আহমেদ

১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:২৫

পৃথিবীর একটা বিরাট জনগোষ্ঠির কাছে অ্যামেরিকা হচ্ছে স্বপ্নের দেশ। এইদেশে আসার জন্য অনেকে জীবন বাজি পর্যন্ত রাখেন। অনেকেই বেআইনিভাবে বছরের পর বছর ধরে মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন, ইমিগ্রেশন পুলিশের হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে করতে একটা জীবন কাটিয়ে দেন - তবু এদেশ ছেড়ে যান না।

সাধে কী আর অ্যামেরিকানরা বলেন "America is the land of opportunities?"

যে মানুষ জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে এইদেশে কিছু করতে পারেনি, সে পৃথিবীর আর কোন দেশেই কিছু করতে পারবে না। এইটা মোটামুটি নিপাতনে সিদ্ধ সত্য।

দেড়শ বছরেরও বেশি সময় ধরে পৃথিবীর এক নম্বর ইকোনমি এই দেশ। এখানকার দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম ব্যক্তিও দুইবেলা মাংস খাবার ক্ষমতা রাখেন। লজ্জা নিবারণের পোশাক তাঁর থাকে। এখন পোশাক পড়া না পড়া সেটা অবশ্য তাঁর ব্যক্তিগত ব্যপার।

বেশিরভাগেরই মাথার উপর ছাদ থাকে। বেঁচে থাকার জন্য প্রধাণ তিন উপাদানই এই দেশে সহজলভ্য।

অলিখিতভাবে পৃথিবী নামের গ্রহটির রাজধানী হচ্ছে অ্যামেরিকা এবং এই দেশের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি বা সম্রাট!

কিভাবে এই দেশটি এত সফল হলো?

অনেকগুলো কারণের একটি হচ্ছে, এরা মানুষের মস্তিষ্কের মূল্য বুঝে। পড়াশোনায় মাথা আছে এমন ব্যক্তির খোঁজ পেলেই ওরা তাঁকে নিজেদের দেশে রেখে দেয়ার জন্য অস্থির হয়ে যায়। পিএইচডির ছাত্রদের তাই এই দেশে থেকে যেতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়না। এদেশের সরকারই নিজেদের আগ্রহে ভিসা, গ্রীন কার্ড, সিটিজেনশিপের ব্যবস্থা করে দেয়।

বেশ অনেক বছর আগে এক যুবকের জন্যও এমন সুযোগ এসেছিল। যুবক তখন মাত্রই নিজের পিএইচডি ডিফেন্ড করেছিলেন। তাঁকে তাঁর প্রফেসর অভিনন্দন জানিয়ে বলেছিলেন, "তোমার ভিসা-গ্রীনকার্ডের জন্য আমি ব্যবস্থা করতে পারি।"

যুবক তখন বলেছিলেন, "তার আর দরকার হবেনা, আমি দেশে ফিরে যাচ্ছি।"

হতভম্ব শিক্ষক কিছু বুঝতে পারলেন না। এইভাবে "land of opportunities"কে কেউ অবহেলা করে? তিনি অন্তত জীবনেও দেখেননি।

যুবকের স্ত্রী বললেন, "দেশে গিয়ে আমরা কী করবো? ওখানে আমাদের টানাটানি করে সংসার চালাতে হবে। এদেশে থেকে গেলে কী অসুবিধা?"

যুবক তখন শান্ত গলায় বলেছিলেন, "আমার বাবা এই কারনে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হননি যাতে তাঁর সন্তানেরা বিদেশে গিয়ে বাস করতে পারে।"

স্ত্রীও কিছু বলেন নি। যে লোক টেপ রেকর্ডারে করে বাংলাদেশের বৃষ্টি এবং ব্যাঙের ডাক শোনে, তাঁর মতন পাগল দেশপ্রেমিককে কতদিনই বা তাঁর দেশ থেকে দূরে ধরে রাখা সম্ভব?

যুবক তাঁর পরিবার, একটি একশ ডলারের নোট এবং একটি ফ্রিজ সাথে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। সাতবছর প্রবাস জীবনে এই তাঁর সম্পত্তি। মাতৃভূমিতে তাঁর ভবিষ্যত কী, তিনি জানেন না। একটা পিএইচডি ডিগ্রী আছে - সেটাই ভরসা।

ডিগ্রী ছাড়াও তাঁর আরেকটি ভরসা আছে। সেটি হচ্ছে শখের লেখালেখি। কিন্তু লেখালেখি করে আমাদের মতন গরীব দেশে, তাও কিনা আবার যুদ্ধ বিদ্ধস্ত, কিই বা করা সম্ভব?

প্রায় চল্লিশ বছর পর তিনি যখন শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে কফিনে শুয়ে পৃথিবী থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন তাঁকে বিদায় দিতে পুরো রাষ্ট্র যেন ভেঙ্গে পড়ছিল। যারা সেদিন সেখানে যেতে পারেন নি, তাঁরা টেলিভিশনের পর্দায় তাঁদের প্রিয় মানুষটির জন্য চোখের পানি ফেলছিল। এসবই তাঁর চল্লিশ বছর ধরে কলম সেবার ফল!

কফিনে শুয়ে শুয়ে তিনি হয়তো উপলব্ধি করেছিলেন, তাঁর দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত মোটেও ভুল ছিল না।

এত মানুষের ভালবাসা পেলে এক জীবনে আর কী লাগে?

আগামী তেরই নভেম্বর বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক, গল্পের জাদুকরের জন্মদিনে ক্যানভাস গ্রুপের পক্ষ্য থেকে তাঁর প্রতি রইলো অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।

পরকালে তাঁকে যেন উপরওয়ালা শান্তিতে রাখেন, এই কামনা করছি।

https://www.facebook.com/groups/canvasbd/

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৬

আমিনুর রহমান বলেছেন:




প্রিয় লেখকের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা !

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৫

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: এক শাওনের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে এই সর্বশ্রদ্ধেয় মানুষটি নিজের সমস্ত অর্জনকে ছোট করে ফেলেছে।

৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৬

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: তর্ক বিতর্ক যাই থাকুক , ওনার অবদান অনস্বীকার্য ।

গুনী এই লেখকের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ।

৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯

খাটাস বলেছেন: গল্প টা আমি ও শুনেছিলাম। অদ্ভুত মানুষ ছিলেন হুমায়ন আহমেদ।
তার প্রতি রইল অনেক শ্রদ্ধা।
যেখানেই থাকুক তিনি, ভাল থাকুক।

৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০৩

পার্সিয়াস রিবর্ণ বলেছেন: তার জন্মদিনের তারিখটা স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ । গল্পটা আগেও জানা ছিলো । আবারও জানলাম । :)

৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২০

ইমরান আশফাক বলেছেন: চমৎকার লাগলো, দোষেগুনেই মানুষ। তবে তিনি তো কোন পরকীয়ায় লিপ্ত হোন নাই আমার জানামতে। নীল আকাশ যে দাবী করলেন হুমায়ুন আহমেদ শাওনের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন এই তথ্যটি উনি কোথায় পেলেন?

৭| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৪১

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
১ম পরকিয়া পরে তা ঢাকার জন্য কাগজের মাধ্যমে বৈধতা দেয়া এ-ই যা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.