নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
"আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি, দেশে ফিরে যাব। আর বেশিদিন এইদেশে থাকলে দোযখে যেতে হবে। 'দুনিয়া দুনিয়া' অনেক হয়েছে, এখন আখিরাত নিয়েও কিছু ভাবতে হবে।"
"কেন? আবার কী হলো?"
"আজকে কত তারিখ বল দেখি?"
"ছয়ই জানুয়ারী!"
"এইটাই প্রবলেম। এইকারণেই দেশে ফিরে যেতে চাইছি। এইদেশে থাকলে কেউ তারিখ জিজ্ঞেস করলে ‘ছয়ই জানুয়ারী’ জবাব দিতে হয়।"
আমি অবাক হয়ে গেলাম। ছয়ই জানুয়ারীর সাথে ইসলামের শত্রুতার কোন সূত্র খুঁজে পেলাম না।
"আরে ব্যাটা, হিজরী তারিখ কত সেটা জানিস?"
"নাহ। আরবি ক্যালেন্ডার শুধু রমযান মাস ছাড়া ফলো করা হয়না।"
অকপটে সত্য স্বীকার করে নিলাম।
"পনেরই রবিউল আউয়াল।"
"ও আচ্ছা।"
"ও আচ্ছা মানে? এখনও বুঝতে পারছিস না?"
"না।"
"বারই রবিউল আউয়াল যে ঈদে মিলাদুন্নবী গেল, সেটাও যদি তোকে ধরিয়ে দিতে হয়, তাহলে এইসব সত্যান্বেষী-ফত্যান্বেশীতে লিখালিখি বন্ধ করে দে, বুঝলি?"
কথাটিতে বিরাট একটা খোঁচা বিদ্যমান, বুকে এসে বিঁধে।
নড়েচড়ে বললাম, "বারই রবিউল আউয়াল গেছেতো এত উতলা হচ্ছিস কেন?"
বন্ধু তাজ্জব হয়ে চোয়াল ঝুলিয়ে বলল, "এত বরকতময় একটা দিন চলে গেল, কোন ইবাদত বন্দেগী করতে পারলাম না, আর তোর মনে কোন আফসোস হচ্ছে না?"
হেসে বললাম, "তুই যদি বুঝতে পারতি ঐ দিনে 'ইবাদত' না করায় তুই যে পরিমাণ সোয়াব কামিয়েছিস, তাহলে তুই আফসোস করতি কেন আরও আগে অ্যামেরিকায় এলি না!"
বন্ধু জানে ফালতু কথা বলার অভ্যাস আমার নেই। সে ভুরু কুঁচকে বলল, "মানে?"
হেসে বললাম, "আমাকে আগে তুই বল, বারই রবিউল আউয়াল তোরা কী সেলিব্রেট করিস?"
"নবীজির(সঃ) জন্মদিন অফকোর্স!"
"নবীজির (সঃ) জন্মদিন যে বারই রবিউল আউয়াল, এই কথা তোকে কে বলেছে?"
"পুরা দুনিয়া জানে। তারা সবাই কী ভুল?"
"আমাদের দেশে ক্ষমতায় যখন যে আসে, তার দলের স্বার্থের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচিত হয়, দেশের কোটি কোটি অন্ধ সমর্থক চুপচাপ তা মেনে নেয়, তার মানে কী সেসব এডিটেড ইতিহাস ১০০% সঠিক? নবীজির(সঃ) জন্মদিন নিয়ে যত ইসলামিক এবং হিস্টোরিকাল রেফারেন্স আছে, সবগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দূর্বলতম রেফারেন্স হচ্ছে এই 'বারই রবিউল আউয়াল' তারিখ, এইটা জানিস?"
"পন্ডিতি ফলাতে আসিস না।"
যদিও বন্ধুর গলায় একদমই জোর নেই। ও জানে আমার কাছে তথ্য আছে, প্রমাণও আছে।
গলা পরিষ্কার করে বলতে শুরু করলাম, "ইসলামে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় দুইটি রেফারেন্সকে, এক আল্লাহর বাণী কুরআন। আল্লাহ যা বলেন তাই মেনে নিতে হবে। এবং দুই, নবীজির(সঃ) মুখের বাণী বা সহীহ হাদিস। কথা হচ্ছে, আল্লাহ বা নবীজি(সঃ) কখনও কোথাও কী বলেছেন যে তাঁর জন্মদিন বারই রবিউল আউয়াল?"
"লক্ষ লক্ষ হাদিস আছে, আমার কী সব জানা আছে নাকি? নিশ্চই কোথাও বলেছেন, নাহলে এত এত স্কলাররা এই তারিখকে কেন ফলো করবে?"
"না, তিনি এমন কোথাও বলেননি যে তাঁর জন্ম বারই রবিউল আউয়াল তারিখে হয়েছে। তবে তিনি এইটা স্পষ্ট বলেছেন যে তাঁর জন্ম সোমবারে হয়েছে। কারণ সোমবারে তাঁর জন্মদিন বলেই তিনি প্রতি সপ্তাহে এই দিনে রোযা রাখতেন।"
"আর বলতে চাইছিস ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের সালটাও ভুল?"
"হিজরী ক্যালেন্ডারের আগে আরবে কোন ক্যালেন্ডার চালু ছিল না। তাঁরা মহা গুরুত্বপূর্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তারিখ নির্ধারণ করতো। যেমন ধর, তিন বছর আগে ক্ষরা হয়েছিল, তাহলে আজকের দিন রেফার করতে গেলে তারা বলতো 'ক্ষরার তিনবছর পরের পনেরই রবিউল আউয়াল।' এর দুই তিন বছর পর আরেকটা কোন বড় ঘটনা ঘটলে সেটাকে ঘিরে আবার নতুন ক্যালেন্ডার চালু হতো। সেই হিসেবে নবীজির (সঃ) জন্ম year of the elephant এ, মানে যে বছর আবরাহা হাতি নিয়ে কাবা ঘর আক্রমণ করেছিল, তাঁর জন্ম সেই একই বছর। তাঁর সমসাময়িক লোকজনের দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করেই এই জন্মসনটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। হিস্টোরিক্যালি যা ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দ। তবে এই সনটাও একদম ১০০% নিশ্চিত না। আল্লাহ ভাল জানেন।"
"তাহলে বারই রবিউল আউয়ালটা এলো কী করে?"
"ইবন ইসহাকের নাম শুনেছিস? তিনিই প্রথম নবীজির(সঃ) জীবনী সবচেয়ে সাকসেসফুলি রচনা করেন। তাও নবীজির(সঃ) জন্মের প্রায় দুইশো বছর পরে লেখা। তিনিই প্রথম লিখেছিলেন, নবীজির (সঃ) জন্ম বারই রবিউল আউয়াল, সোমবার। মজার কথা হচ্ছে, তিনি কোথাও উল্লেখ করেননি এই তথ্য তিনি কোথায় পেলেন। এখন যদি সমসাময়িক কালে রচিত আরেকটি জীবনী গ্রন্থ আমরা ঘাটাঘাটি করি, যা লিখেছিলেন তাবাকাত ইবন সা'আদ, তিনি বলেছেন, 'নবীজির(সঃ) জন্ম সোমবারে হয়েছে, কেউ বলেন তারিখটি ছিল ১০ম রবিউল আউয়াল, আবার কেউ বলেন ২রা রবিউল আউয়াল।' ১০ম রবিউল আউয়ালের পক্ষে ইবনে আব্বাসও সাক্ষ্য দেন। কেউ সাক্ষী দেন ৮ম রবিউল আউয়ালে জন্মেছেন। কেউ ২০শে রবিউল আউয়ালেরও কথা বলেছেন। কিন্তু এতো সূত্রের একটাও কিন্তু ১২ই রবিউল আউয়ালের কথা বলেনা। ১২ই রবিউল আউয়াল জনপ্রিয় হয়েছে মিডিয়েভাল পিরিয়ডে এবং এর কারণ একমাত্র ইবন ইসহাক। নব্বই ভাগেরও বেশি সিরাত (নবীজির(সঃ) জীবনী) লেখক ইবন ইসহাকের লেখাকেই কপি পেস্ট করে থাকেন। তিনি যা বলেছেন, তাই সবাই চোখ বন্ধ করে মেনে নেন। কোন খোঁজ নেয়ারও প্রয়োজন মনে করেননা। সেখান থেকেই আমরা এখন এই দিনটা পালন করি। হয়তোবা তারিখটা সঠিক, হয়তোবা ভুল, আল্লাহ ভাল জানেন। তবে এই দিনটির আলাদা কোনই গুরুত্ব নেই, এইটা নিশ্চিত। কারণ গুরুত্ব থাকলে নবীজি (সঃ) নিজেই নিশ্চিত করতেন আমরা যেন তা পালন করি। যেমনটা তিনি দুই ঈদের তারিখ নিশ্চিত করে গেছেন।"
দীর্ঘ বক্তৃতা অত্যন্ত ধৈর্য্যের সাথে শোনার পর বন্ধু বলল, "আচ্ছা, নাহয় মেনে নিলাম তারিখটা সঠিক না, কিন্তু এই দিনটিতে নবীজিকে (সঃ) স্মরণ করে দোয়া দুরুদ পড়লে অথবা এক্সট্রা নফল ইবাদত করলেতো দোষের কিছু নেই।"
"ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাবার অভ্যাসটা মানুষের কখনই গেল না। ভাইরে, তুই কী নবীজির(সঃ) থেকে, খলিফাদের চেয়ে, তাঁর সাহাবীদের চেয়ে বেশি ধর্ম বুঝিস? যদি তাঁরা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন না করে থাকেন, তবে তোর এত কিসের ঠ্যাকা পড়েছে আগ বাড়িয়ে মাতবরি দেখাবার?"
"অসুবিধার কী আছে?"
"অবশ্যই অসুবিধার আছে। নবীজিকে(সঃ) পৃথিবীতে পাঠানোই হয়েছিল যাতে তিনি যেন ইবাদতের সব মাধ্যম এবং তরিকা সম্পর্কে আমাদের সবাইকে অবহিত করেন। তিনি সেটা করেওছেন। তিনি জীবিত থাকাবস্থাতেই আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন ইসলাম ধর্মকে পূর্ণতা দেয়া হয়ে গেছে, এরমধ্যে নতুন কিছু সংযোজন অথবা বিয়োজন করা যাবেনা। করলে আল্লাহকে অপমান করা হবে, তাঁর নবীকে(সঃ) অপমান করা হবে। এই অপরাধের শাস্তি জাহান্নাম!"
"বলিস কী! সারা বিশ্বে যেভাবে বিপুল সমারোহে কোটি কোটি মানুষ ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেন, সবাই তাহলে জাহান্নামে যাবে?"
"সবাই জানেনা বলেই করে। সবাইকে জানানো আমাদের সবার দায়িত্ব। কিন্তু কেউ যদি জানার পরেও ফাজলামি করে, তবে সেটার জন্য সে নিজে আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবে। নবীজির (সঃ) জন্মদিন পালন করা ইসলামে ফরয না, তবে কেউ যদি তাঁর জন্মদিন 'উদযাপন' করতেই চায়, তবে তাঁকে নবীজির (সঃ) দেখানো রাস্তাতেই পালন করা উচিৎ - প্রতি সোমবার রোযা রাখা। আর তারচেয়েও বড় কথা হচ্ছে, নবীজিকে (সঃ) সম্মান দেয়ার বেস্ট উপায় হচ্ছে, তাঁর শেখানো আদর্শ মেনে চলা। বছরের একটা দিন আমরা তাঁর কথা স্মরণ করে নামাজ পড়ে কান্নাকাটি করে গোস্ত পরোটা খাবো, আর বছরের বাকি তিনশো চৌষট্টিদিন ত্যাদড়ামি করে বেড়াবো, এইটাতো কোন কাজের কথা না। তাই না?"
বন্ধু চুপচাপ হয়ে আছে দেখে জিজ্ঞেস করলাম, "কী হলো? বুঝতে পারিস নাই, নাকি আরও বুঝাতে হবে?"
সে বিরবির করে বলল, "তাহলে আমার বাপদাদারা এতদিন যা পালন করে এসেছে, সব ভুল ছিল?"
গলার স্বর শান্ত করে বললাম, "তাঁরা মানুষ, ভুল করার জন্যই তাঁদের সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহও সেটা জানেন। তিনি পরম করুণাময়। আমাদের এখন এইটা make sure করতে হবে যাতে আমাদের পরবর্তী জেনারেশন কখনও আমাদের ভুল নিয়ে চিন্তায় না পড়ে। বাকি আল্লাহ ভরসা।"
বন্ধু স্মিত হাসি হাসলো।
তাঁর মন হালকা করতেই বললাম, "এখনও কী ইচ্ছা করছে নাকি কাফের নাসারার দেশ ছেড়ে স্বদেশ পাড়ি দেবার?"
রসিকতায় সে হেসে দিল।
তার কাঁধে হাত রেখে বললাম, "একদিন দেশে ফেরার ইচ্ছাতো আমাদের সবারই আছে। বিদেশে থেকে দেশে চলমান অসঙ্গতিগুলো আইডেন্টিফাই করে নেই, সেসব সমাধানের পথ শিখে ফেলি - তারপর আর তোকে বলতে হবেনা, আমিই তোকে এসে বলবো, 'অনেক হলো বন্ধু, এবার বাড়ি চলো!' আমরা না ফিরলে দেশকে বদলাবেটা কে?"
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ! আপনি সবাইকে ম্যাসেজ পৌছে দিন। এই ফালতু কালচার বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:০৩
রাবার বলেছেন: +++++্
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩
পরিবেশক বলেছেন: +++++++
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন:
৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪৬
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: বরাবরের মতোই তথ্যপূর্ণ ও যুক্তিযুক্ত লেখা ভ্রাতা +++++++++
অনেক শুভকামনা
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: বরাবরের মতই অনেক ধন্যবাদ ভাই।
কথা হচ্ছে আমার একা ব্লগিংয়ে কাজ হবেনা, আপনাদেরও সহায়তা চাই। বন্ধু বান্ধবদের অবহিত করুন, এইসব অপকর্ম সমাজ থেকে বিদায় হওয়া জরুরি।
৫| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭
অস্তমিত সুর্য বলেছেন: ১। খইরুল কুরূন হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ছাহাবী, তাবিয়ী ও তাবি’ তাবিয়ীনগণের যুগ। আর উক্ত তিন যুগের প্রথম যুগই হচ্ছে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের যুগ এবং সে যুগেই ‘পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উদযাপিত হয়েছে। সুবহানাল্লাহ
যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
অর্থ : “হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত আমির আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার গৃহে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন যে, তিনি উনার সন্তান-সন্ততি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে নিয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন এবং বলছেন, এই দিবস এই দিবস, অর্র্থাৎ এই দিবসে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ আনেন এবং এই এই ঘটনা মুবারক সংঘটিত হয়েছে। এমন সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন। (তিনি যখন উপস্থিত হলেন সমবেত সবাই দাঁড়িয়ে উনাকে সালাম পেশ করতঃ অভ্যর্থনা বা স্বাগত জানিয়ে আসনে বসালেন।) তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার অনুষ্ঠান এবং পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার কারণে খুশি প্রকাশ করতে দেখে উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি আপনাদের জন্য রহমতের দরজা উš§ুক্ত করেছেন এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম আপনাদের জন্য মাগফিরাত তথা ক্ষমা প্রার্থনা করছেন এবং যে কেউ আপনাদের মতো এরূপ কাজ করবে, আপনাদের মতো তারাও রহমত ও মাগফিরাত এবং নাজাত লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ! (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর, সুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও মীলাদে আহমদী পৃষ্ঠা- ৩৫৫)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা উনার নিজ গৃহে সমবেত হযরত ছাহাবীগণ উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা তথা তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে পবিত্র ছলাত শরীফ-সালাম শরীফ (পবিত্র দুরূদ শরীফ) পাঠ করছিলেন। এমন সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন। (তিনি যখন উপস্থিত হলেন তখন সমবেত সবাই দাঁড়িয়ে উনাকে সালাম পেশ করতঃ অভ্যর্থনা বা স্বাগত জানিয়ে আসনে বসালেন।) তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার অনুষ্ঠান এবং পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার কারণে খুশি প্রকাশ করতে দেখে উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত মুবারক ওয়াজিব।” (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর, সুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও মীলাদে আহমদী পৃষ্ঠা-৩৫৫)
অতএব, প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানাতেই, অর্র্থাৎ খইরুল কুরূনের প্রথম যুগেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা ‘পবিত্র ঈদে মীলানদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উপলক্ষে মাহফিল করেছেন এবং সে মাহফিলে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার শ্রেষ্ঠতম রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উপস্থিত হয়ে ‘পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উদযাপনকারীগণ উনাদেরকে রহমত, মাগফিরাত, নাজাত ও শাফায়াত লাভের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, ক্বিয়ামত পর্যন্ত যারা ‘পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উপলক্ষে মাহফিল করবে উনাদের জন্যেও একই সুসংবাদ প্রদান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
২। পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার দিন। এটাই সবচেয়ে ছহীহ ও মশহূর মত।
যেমন, এ প্রসঙ্গে হাফিয হযরত আবূ বকর ইবনে আবী শায়বাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছহীহ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন-
অর্থ : “হযরত আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত জাবির ও হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনারা বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ ‘হস্তি বাহিনী বর্ষের পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ সোমবার শরীফ হয়েছিল।” (বুলুগুল আমানী শরহিল ফাতহির রব্বানী, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনার সনদের মধ্যে প্রথম বর্ণনাকারী হযরত আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে মুহাদ্দিছগণ উনারা বলেছেন, “তিনি একজন উচ্চ পর্যায়ের নির্ভরযোগ্য ইমাম, প্রবল স্মরণশক্তি ও দৃঢ়প্রত্যয় সম্পন্ন ব্যক্তি।” (পবিত্র খুলাছাতুত তাহযীব শরীফ)
“দ্বিতীয় বর্ণনাকারী হযরত সাঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য।” (পবিত্র খুলাছাহ শরীফ, পবিত্র তাক্বরীব শরীফ)
আর তৃতীয়ত হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। এ দু’জন উচ্চ পর্যায়ের ফক্বীহ ছাহাবী উনাদের বিশুদ্ধ সনদ সহকারে বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হলো যে, “পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ হচ্ছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস।” এ ছহীহ ও নির্ভরযোগ্য বর্ণনার উপরই হযরত ইমামগণ উনাদের ইজমা (ঐকমত্য) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (পবিত্র সীরাত-ই-হালবিয়াহ শরীফ, পবিত্র যুরক্বানী আলাল মাওয়াহিব শরীফ, পবিত্র মাছাবাতা বিস সুন্নাহ শরীফ ইত্যাদি)
উপরোক্ত বিশুদ্ধ বর্ণনা মুতাবিক পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফই হচ্ছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস। এটাই ছহীহ ও মশহূর মত। এর বিপরীতে যেসব মত ঐতিহাসিকগণ থেকে বর্ণিত হয়েছে তা অনুমান ভিত্তিক ও দুর্বল। অতএব তা আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাই, এইসব তথ্য আপনি কোথায় পেলেন? কারণ "মিলাদ মাহফিলের" সূত্রপাত ৫০০ হিজরিরও পরে শুরু হয়েছে, মিশরে প্রথম মিলাদুন্নবী পালিত হয় এবং পরে ইরাকে পালিত হয়। এবং দুই ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রীয়ভাবে উৎসবের সূচনা করা হয়। এসবই হিজরি ৫০০ সালের পরের ঘটনা, যেখানে ইসলামে নবীজির (সঃ) মৃত্যুর পরে একটিও সংযোজনকে বিদআত ধরা হয়ে থাকে।
নবীজি (সঃ) বা তাঁর সাহাবিদের কখনই মিলাদ "মাহফিল" করতে দেখা যায়নি, এইটাই সহীহ হাদিসের শিক্ষা। এবং কুরআনেও এমন কিছুই বলা হয়নি। এইসবই ধর্মব্যবসায়ীদের "প্রোডাক্ট।"
আপনি উপরের মতগুলো কোথায় পেলেন?
৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৩
অস্তমিত সুর্য বলেছেন: দলীলগুলো ভালো করে পড়ূন। ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময়ই ছিলো।
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সেটাই বলছি ভাই, ভূয়া দলীলগুলো কোথায় পেলেন?
ইসলাম মানে পবিত্র কুরআন এবং সহীহ হাদিস শরীফ - এর বাইরে কোন কিতাব নয়, কোন আইলিয়ার মনঃপুত কোন ফতোয়া নয়। বুখারি, মুসলিম, তিরমিযি - এইসব হাদিস গ্রন্থে মিলাদুন্নবির কোন রেফারেন্স আছে? নেই। কেন নেই? কারণ এইটা বেদাত। ধর্মব্যবসায়ীদের একটি প্রোডাক্ট মাত্র। ইমিডিয়েট বেসিসে একে বন্ধ করতে হবে।
৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪১
অস্তমিত সুর্য বলেছেন: শুধু বুখারি, মুসলিম, তিরমিযি - এইসব হাদিস গ্রন্থ বানতে হবে--সেটার দলীল দেন।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:০৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাই, কুরআন আল্লাহর বাণী, এবং এতে কোন বিকৃতি নেই - এইটা ধ্রুব সত্য। তবে রাসূলের (সঃ) বাণীতে প্রচুর বিকৃতি ঢুকে গেছে। অনেকেই অনেক কথা নিজেদের স্বার্থে তাঁর নাম করে চালিয়ে দিয়েছে, এবং মানুষ কিছু না চিন্তা করেই সেসব বিশ্বাস করেছেন।
তিনলাখেরও বেশি ভুয়া হাদিস পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে।
ছয়টি গ্রন্থের (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম, সুনান-আল নাসা'ই, আবু দাউদ, তিরমিজি এবং সুনান ইবন মাজাহ) হাদিসকে বিশুদ্ধ ধরা হয়, কারণ এইসব গ্রন্থে কেবল অথেনটিক হাদিসই স্থান পেয়েছে।
প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে অথেনটিসিটি ডিটেক্ট করা হয়?
যিনি হাদিস বর্ণনা করছেন, সবার আগে তাঁর ব্যাকগ্রাউন্ড দেখা হয়। তিনি মিথ্যাবাদি কিনা, তাঁর সাথে নবীজির আসলেই দেখা হয়েছিল কিনা, হলে তাঁর বয়স তখন কত ছিল, কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে হাদিস বর্ণিত হলো - ইত্যাদি অনেক যাচাই বাছাই করেই কেবল হাদিসকে শুদ্ধ বা অশুদ্ধ সার্টিফিকেট দেয়া হয়।
আশা করি বুঝাতে পেরেছি।
আল্লাহ ভাল জানেন।
৮| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:৩৭
নাইমুল ইসলাম বলেছেন: বুখারী, মুসলিম, তিরমিজি, আবু-দাউদ ---- এই ৪টি হাদীসের সংকলন ব্যতীত অন্যান্য হাদীস সমূহের প্রতি আমি কখনই পূর্ণ আস্থা রাখতে পারিনা।
উপরের লাইনটা বলার পেছনের কারণটা আশা করি বুঝতে পারবেন!
ধন্যবাদ চমৎকার ডায়ালগ উপস্থাপনের জন্য! আপনার দেওয়া তথ্য এবং যুক্তি সমূহ বরাবরের মতই প্রশংসিত
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:০৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। সিয়াহ সিত্তাহ কিন্তু ছয়টি বইয়ের সমষ্টি, আপনার বলা চারটি ছাড়াও আরও আছে সুনান-আল নাসা'ই এবং সুনান ইবন মাজাহ।
চেষ্টা থাকে গল্পের মাধ্যমে কুসংস্কার দূরিকরণ। আপনাদের ভাল লাগে জেনে আমারও ভাল লাগে।
৯| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভাই আপনার লেখা দেখে মনে হল আমরা সচরাচর যা করি- নিজের মতের পক্ষের যুক্তিগুলোই চোখে দেখি!
নইলে আপনি পবিত্র কোরআনের ঐ বাণীকে কি করে ভুলে গেলেন-
"ইণ্ণাল্লাহা ওয়া মালায়িকাতিহী ইয়ুসাল্লুন্না আলান নাব্যিয়ি- ইয়া আইয়ুহাল্লাজনি আমানু সাল্লু আলাইহি ওয়া সাল্লি মু-তাসলিমা"...
আল্লাহ তাঁর ফেরেশতাদের নিয়ে নবীজির উপর দরুদ পাঠ করেন- হে মুমিনগণ তোমরাও উত্তম আদব, আয়োজন, ইজ্তের সাথে নবীর উপর দরুদ পাঠ কর।
কোন হাদী, কোন সন্দেহ কোন যুক্তি তক্কের অবকাশ হিন সরাসরি আদেশ।
আর সেই দরুদ পাঠের জণ্য তাঁর জন্মদিনের উসিলার চেয়ে উত্তম উসিলা আর কি হতে পারে্!
আপনাকে সাধারন দিনে শুভেচ্ছা আর আপনার জন্মদিনের শুভেচ্ছার সাধারন পার্থক্য টুকু অনুভব করতে পারেন তো!!!!
পারলে- ইয়াজিদী ওহাবী ধারার মত ছেড়ে আল্লাহর হুকুম মতো রাসূল সা:কে সর্বোচ্চ ভালবাসার স্থানে স্থান দিন। আর যাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসা যায় তার জন্যইতো সব কিছূ সবচে বেশি বিনা অজুহাতে পালন করা যায়। ইয়াজিদী ওহাবীরা নবী সা: এর শানের বিরোধীতা এইসব বাকোয়াজ মতবাদ ছড়ায়।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৪০
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: নবীর উপর দুরুদ পাঠ করতে যে আদেশ করা হয়েছে সেটা যেকোন সময়ের জন্যই প্রযোজ্য, তাঁর জন্মদিনের জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়নি। তাঁর নাম শুনে দুরুদ পাঠ না করা তাই গুনাহ।
নবীজির (সঃ) জন্মদিন (মিলাদুন্নবী) প্রথমবারের মতন পাবলিক ইভেন্ট হিসেবে সেলিব্রেট করা হয় ৫১৭ হিজরী সালে, মানে নবীজির(সঃ) ইন্তেকালের পাঁচশো বছর পরে। এর আগে মুসলিম বিশ্ব "জন্মদিন" নিয়ে মাথা ঘামাতো না, কারণ এটি তাঁদের কালচার ছিল না। নবীজি (সঃ) নিজেও এই ব্যপারে গুরুত্ব দেননি।
এখনও আপনার দাদী/নানীকে (যদি জীবিত থাকেন) জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন, তাঁরা হয়তো তাঁদের জন্মদিন কবে সেটা সঠিক বলতে পারবেন না। অন্তত আমার দাদী পারতেন না। এইটা ফ্যাক্ট।
যাই হোক, ঈদে মিলাদুন্নবী প্রথম সেলিব্রেট করে মিসরের "ফাতিমিদস" সম্প্রদায়, যাঁরা কট্টর শিয়া মতাবলম্বী, যারা বর্তমানের আগাখানি এবং বোহরা শাখার পূর্বপুরুষ।
তারা মিসরের শাসক থাকা অবস্থায় সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় অনেক উৎসব পালন করতো। এর পেছনে অনেক ধর্মীয় অনুভূতি ছাড়াও ইকোনমিক ব্যপারও জড়িত ছিল। উৎসব পালন করলে দেশের ইকোনমি লাভমান হতো, জনগণও শাসকের প্রতি খুশি থাকতো।
তাঁরা বিভিন্ন ঈমামের মৃত্যু দিবস পালন করতো, ১০ই মহররম পালন করতো এবং এইভাবে একদিন নবীজির (সঃ) জন্মদিন পালন শুরু করে।
বিস্তারিত পড়তে হলে ইতিহাস ঘেটে নিন।
এখন কথা হচ্ছে, আল্লাহ নিজে বলেছেন, "আজ আমি দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম" - মানে হচ্ছে এর পরে আর কোন কিছু যুক্ত, বা বিয়োগ যেতে পারবে না। এবং সেটি নবীজির (সঃ) মৃত্যুর আগেই ঘটেছে। নবীজির (সঃ) মৃত্যু মানে আনুষ্ঠানিকভাবেই ইসলাম পরিপূর্ণ হয়েছে, আর কোন কিছু এডিটিং চলবে না।
তাঁর মৃত্যুর পাঁচশো বছর পরে হঠাৎ আমাদের খেয়াল হলো বেশি বেশি সোয়াবের আশায় তাঁর জন্মদিনে (যে তারিখটাও নির্দিষ্ট নয়) একসাথে বসে দুরুদ পড়া উচিৎ - এইটা কী একটা সংযোজন নয়?
তাঁকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে, এবং যদি তাঁর মোহাব্বতে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করি, সেটা হতে হবে তাঁর বাতলানো তরিকাতে। সোমবার রোজা রাখা। তবে সেটি জরুরী নয়।
ওয়াহিবি বা ইয়াজিদী মত না, বেসিক ইসলামের রুল এটি। একটু ইন্টারনেট ঘাটুন, জানতে পারবেন।
১০| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:২৫
নাইমুল ইসলাম বলেছেন: ভুলে গিয়েছিলাম ভাইয়া বাকি দুইটার কথা বলতে।
আল্লাহর বানী আল-কুরআন এবং আল-কুরআনের ব্যাখ্যা হাদীস। আল- কুরআন কে আল্লাহ নিজের হেফাজতে রেখেছেন যার জন্য এটা কখনোই বিকৃত করতে পারবে না কেউ কিন্তু এর ব্যাখ্যাকে বিকৃত করা হবে সেটা সম্পর্কে সকলকেই আবগত করেছেন আল্লাহ আল-কুরআনে লাওহে মাহফুজের কথা বলে এবং আল্লাহ'র রাসূল (সা বিভিন্ন সময়। সিয়াহ সিত্তাহ কে যে (বর্তমানে) না বুঝতে পারবে সে আল-কুরআন কে কতটা বুঝবে ভেবে পাচ্ছি না ভা্ইয়া।
যদি ভুল বলে থাকি তাহলে অবশ্যয় আমাকে সঠিকটা কি হতে পারে সেটা বলে দিন তারপর আমি সঠিকটা নির্ণয় করব!
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:০৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সঠিক।
১১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:১৭
খোলা দরোজা বলেছেন: অত্যন্ত জরুরি ও সময় উপযোগী লিখা
জনাব অস্তমিত সুর্য বা বিদ্রোহী ভৃগু সাহেব্ মিলাদ এর বেপারে এতই সেনসিটিভ যার কারোনে এত স হি হাদিস থাকা সত্তেও জন্মদিনের উসিলা বা এ ধরনের দিন অনুসন্ধান করে থাকেন আর অন্নথা এর বিরুপ পোস্ট দেখলেই এক ধরনের আলারজি অনভব করে জাল দলিলের আশ্রয় নেন।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়াত করুন ।
পুনরায় লেখককে ধন্নবাদ
জাযাকাল্লাহ
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪০
কাহাফ বলেছেন: কিছু স্বার্থবাদী মানুষ ১২ রবিউল আওয়াল কে মিলাদুন্নবী সাঃ পালন করে!
যা একেবারেই ঠিক নয়!
অাপনার সাবলীল উপস্হাপনা ভাল লাগল!!