নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হযরত মুহাম্মদকে (সঃ) ব্যাঙ্গ করার কতিপয় সহজ উপায়

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪১

মধ্যরাতের ফাঁকা রাস্তা। সেই সাথে বাড়ি যাবারও ভীষণ তাড়া। ঘুমে চোখ ঢুলু ঢুলু, এইদিকে কাল খুব ভোরে অফিস!
এমন সময়ে ট্রাফিক সিগনাল লাল হয়ে গেল। আপনি গাড়ি থামাতে বাধ্য হলেন। ডানে বামে দেখলেন। কোথাও আর কোন হেডলাইট জ্বলতে দেখা যাচ্ছেনা। আপনি রেড সিগনাল ব্রেক করেই এক্সেলেটরে চাপ দিলেন। আপনি কী জানেন এই মাত্রই আপনি নবীজিকে (সঃ) ব্যাঙ্গ করলেন?
অথবা ধরুন সকাল এখনও হয়নি, ঘড়ির অ্যালার্ম বেজে উঠেছে। ফজরের নামাজের সময় হয়েছে। আপনি অ্যালার্ম বন্ধ করে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুম দিলেন। ফজরের নামাজ পড়া হলো না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অন্যান্য নামাজও আপনার নানান অযুহাতে ছুটে গেল। নবীজিকে (সঃ) আবারও ব্যাঙ্গ করা হলো।
কারও বারবার বলা কথা না শোনার মানে হচ্ছে তাঁকে পাত্তা নে দেয়া, পক্ষান্তরে ব্যাঙ্গ করা।
নবীজি (সঃ) তাঁর দীর্ঘ জীবনের প্রতিটা দিনেই অনবরত বলে গেছেন খুব সাবধানী জীবন যাপন করতে। অপরাধ, সেটা যত ছোটই হোক না কেন, এড়িয়ে চলতে। দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে (যতক্ষণ না সেটা আল্লাহর বিরুদ্ধে যাচ্ছে)।
ট্রাফিক সিগনাল ভঙ্গ করা আইনের দৃষ্টিতে একটি অপরাধ। কাজেই জেনে শুনে এই কাজ করা আর নবীজিকে ব্যাঙ্গ করা একই কথা।
নামাজের ক্ষেত্রেতো বলার কিছুই নেই। শুধুতো নবীজি (সঃ) না, আল্লাহ নিজেও বারবার নামাজ পড়তে বলেছেন। একটা ওয়াক্ত অবহেলার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ এবং নবীজি (সঃ) দুইজনকেই ব্যাঙ্গ করা।
সাধারণ জীবন যাপনে প্রতিদিন ছোটবড় নানা অপকর্মের মাধ্যমে আমরা তাঁদের ব্যাঙ্গতো করছিই, এমনকি "অতি ধর্ম চর্চা" যেমন শবে বরাত, শবে মেরাজ ইত্যাদি পালন করে, মিলাদ মাহফিল আয়োজন করে, এমনকি ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেও আমরা নবীজিকে(সঃ) সরাসরি ব্যাঙ্গ করছি। নবীজি (সঃ) জীবিতাবস্থায় এইসব "ইবাদতের" কথা বলেননি, আমরা মাতবরি ফলাতে এইসব উৎসবের প্রচলন করেছি, এবং ইশারা ইঙ্গিতে বুঝাবার চেষ্টা করেছি, "এইসবেও প্রচুর নেকি হাসিল হয়, আপনি (নবীজি (সঃ) স্বয়ং) কিছু জানেন না।"
আমরা মাজারকে মক্কা বানিয়ে ফেলছি, ভন্ড পীরদের নবী!
দেওয়ানবাগীসহ লাখ লাখ বদ্ধ উন্মাদকে পাগলা গারদে বন্দী না করে পীর বানিয়ে কোটিপতি বানিয়ে ফেলছি।
অথবা ফেসবুকে কোন একটা ছবি পোস্ট করে বলছি, "লাইক ও শেয়ার দিয়ে সবাইকে জানিয়ে দিয়ে অশেষ নেকি হাসিল করুন। নতুবা আগামী দশদিনের মধ্যে আপনার জীবনে ঘটা বড় কোন দূর্ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকুন।"
যেখানে সেখানে থুথু, আবর্জনা ফেলা থেকে শুরু করে ঘুষ লেনদেন, ছোট বড় দূর্নীতি ইত্যাদি - এই সবই নবীজিকে (সঃ) বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্যাঙ্গ করার অপর নাম।
ফ্রান্সে কিছু পথভ্রষ্ট "মুসলিম" নবীজির (সঃ) থেকে ইসলাম বেশি বুঝে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে সেই কার্টুনিস্টদের চেয়েও বেশি ব্যাঙ্গ করলো।
তাদের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে যারা হাদিস কোরানের রেফারেন্স দিয়ে "খুনকে" হালাল করার চেষ্টা করছেন, অথবা মাথামোটা আহাম্মকের মতন ফতোয়া দিচ্ছেন, "সরকার কোন বিচার না করায় জনগণকে নিজের হাতে আইনকে তুলে নিতে হয়েছে" - তারাও নবীজিকে (সঃ) এবং ইসলামকে, খোদ আল্লাহকে ব্যাঙ্গ করছেন!
গতকাল এক অজ্ঞের সাথে এই নিয়েই তর্ক হলো।
আমি সুরা মাইয়িদার বিখ্যাত আয়াতটা উল্লেখ করলাম, "যে একজন মানুষকে হত্যা করলো, সে যেন গোটা মানবজাতিকে হত্যা করলো।"
আমি বললাম, "আল্লাহর শব্দ চয়নটা দেখুন, তিনি বলেছেন 'মানুষ,' বলেননি মুসলমান। মানে, একজন নিরপরাধ মানুষ, সে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, আস্তিক, নাস্তিক, পুরুষ, রমনী, হিজড়া যেই হোক না কেন - তাঁর হত্যা মানেই মানব ঘটিত সবচেয়ে extreme অপরাধ! এর উপরে শির্ক ছাড়া আর কোন অপরাধ নাই!"
সেই সাথে নবীজির(সঃ) হাদিসের ব্যাকআপ দিলাম, "যুদ্ধে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে নারী, শিশু, বৃদ্ধ এমনকি গাছ পালারও কোন ক্ষতি না হয়।"
এখন কথা হচ্ছে, ফ্রান্সে ব্যাঙ্গকারীদের মারতে গিয়ে একজন মুসলিম পুলিশ অফিসারকেও হত্যা করা হয়েছে। "সকল মুসলমান ভাই ভাই" থিওরি অনুযায়ী নিজের ভাইয়ের বুকেই গুলি চালানো হয়েছে। আল্লাহ এবং নবীর(সঃ) স্পষ্ট নির্দেশের তাহলে কী গুরুত্ব রইলো?
তখন মাতবর বলে, "আধুনিক যুদ্ধে দুই চারজন মারা যেতেই পারেন। এখনকার যুদ্ধে দূর পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয় - এখন ওভাবে সাবধানে যুদ্ধ করা চলে না।"
আরে বাহ্! ঝটপট ফতোয়া জারি হয়ে গেল। এই ভদ্রলোক আল্লাহ এবং তাঁর নবীর থেকে ইসলাম বেশি বুঝে। এর সাথে তর্ক করার সাধ্য আমার আছে? একে ইমার্জেন্সি বেসিসে অস্কার দেওয়া হোক!
নবীজিকে(সঃ) যদি কেউ সত্যিই ভালবেসে থাকেন, তবে তাঁর কথা শুনতেন, তাঁর দেখানো পথে চলতেন।
সেই কাঁটা ছড়ানো বুড়ির ঘটনা কে না জানে? সেটা থেকে কী শিক্ষা পাওয়া যায়?
যেদিন বিশ্বের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব তাঁর চলার পথে ময়লা আবর্জনা ও কাঁটা না দেখে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলেন বুড়ি অসুস্থ, তিনি সেই বুড়ির খবর নিতেই তাঁর বাড়িতে চলে যান। তখনই কেবল বুড়ি বুঝতে পারেন কোন মহামানবের সাথে তিনি এতদিন অন্যায় করছিলেন।
তিনি শিখিয়ে গেছেন, একজন অমুসলিমকে সম্ভাব্য মুসলিম হিসেবে দেখতে। যখন তাঁরা বুঝতে পারবে ইসলাম আসলে তাঁদের নিজেদের কল্যানের জন্যই প্রবর্তিত হয়েছে, তাঁরা নিজেরাই একে সাদরে গ্রহণ করবে। আর গ্রহণ না করলেই বা কী?
সেটা আল্লাহ এবং তাঁর নিজস্ব ব্যপার। আমার কী আসে যায়?
আমাদের নবীকে(সঃ) যারা চেনেনা তারাই কেবল তাঁকে নিয়ে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করতে পারে। আমাদের উচিৎ তাঁকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে তিনি ঠিক এই নির্দেশটাই দিয়েছিলেন। তাঁর বাণী পৌছে দিতে হবে। যখন তাঁরা তাঁর আসল পরিচয় জানতে পারবে, তখন নিজেরাই নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে চাইবে।
একজন নির্দোষ ভাল মানুষকে মিথ্যা ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করার চেয়ে বড় অপরাধবোধ আর কী হতে পারে?
কিন্তু আমরা তাঁকে কিভাবে পরিচিত করাচ্ছি?
কেউ আমার মতের বিরুদ্ধে একটি কথা বললেই "আল্লাহু আকবার" (আল্লাহ মহান) বলে গুলি চালিয়ে দেই!
কেউ শিয়া, কেউ সুন্নি, কেউ কুর্দি, কেউ বোহরী - আমরা একজন আরেকজনকে 'কাফের' ডাকি, এবং একসময়ে কোন উপায় না দেখে গুলি করে মারি!
এবং সবচেয়ে বড় কথা, হত্যাকে জাস্টিফাই করার জন্য তাঁরই হাদিস, তাঁরই কুরআন থেকে ভুল রেফারেন্স টানি।
নাইন ইলেভেন, লন্ডন, বোস্টন, আই.এস., বালি, সিডনি, পেশাওয়ার, তালিবান, আল-কায়েদা, জে.এম.বি., ১৯৭১ এবং এখন প্যারিস - সব জায়গাতেই মুসলিমরা সন্ত্রাসী! লজ্জা করেনা? এরা কিনা সেই নবীর(সঃ) উম্মত বলে দাবী করে যিনি কাফিরদের হাতে প্রচন্ড মার খেয়েও তাদের হত্যা না করার নির্দেশ দিতে গিয়ে বলেছিলেন, "আমাকে মানবজাতির কাছে রহমত স্বরূপ প্রেরণ করা হয়েছে!"
একটু মাথা খাটালেই আহাম্মকেরা বুঝতে পারতো, কেউ ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বললেই যদি তাকে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়, তবে একসময়ে পুরো পৃথিবী মানব শুন্য হয়ে যাবে।
অন্ধকারকে অন্ধকার দিয়ে দূর করা যায়না, আলোর প্রয়োজন হয়। ইসলাম এসেছিল সেই আলো নিয়েই। ফাজিলেরা এখন ইসলামের চাদর ব্যবহার করেই সেই অন্ধকারকে ফিরিয়ে আনতে চায়।
আরে, যিনি আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন, তাঁর সম্মান কী এতই ঠুনকো যে সামান্য একটা মানুষের কথায় সেটা নড়বড়ে হয়ে যাবে?
আর সেই তিনিই যখন ঘোষণা দিয়েছেন সব সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হযরত মুহাম্মদ (সঃ), তাঁর কথার কী তবে কোনই মূল্য নেই? এতই ঠুনকো যে কেউ ব্যাঙ্গ করলেই নবীজির(সঃ) সম্মানে shortage পড়বে, তিনি অপমানিত হয়ে যাবেন?
আমরা নিজেরাই কী প্রতি মুহূর্তে তাঁর নির্দেশ অমান্য করে তাঁকে বেশি ব্যাঙ্গ করছি না?
নবীজিকে ব্যাঙ্গ করার শাস্তি যদি মৃত্যুদন্ড হয়, তবে আসুন, আমরা একে অপরকে মারতে শুরু করি।
কাকে দিয়ে শুরু করবেন? নিজের বাড়ি থেকেই শুরু করা যাক, কী বলেন?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৩৭

দধীচি বলেছেন: ভাই কথাগুলো সব মাথার উপর দিয়া গেল। আসলে কি বুঝাইতে চাইছেন খাঁটি বাংলায় বলেন।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:৩৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সহজ ভাষায়, আমরা সবাই নবীজিকে (সঃ) অসম্মান করে আসছি। তাঁর কথা, তাঁর নির্দেষ না শোনা, না মানা মানেই তাঁর অপমান।
কেউ কার্টুন এঁকে যে অপরাধ করছে, নবীজির (সঃ) নির্দেষ না মেনে আমরা সবাই একই অপরাধ করছি।
এখন বিচার প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে না গিয়ে আমরা যদি কাউকে হত্যা করে প্রমাণ করার চেষ্টা করি আমরা বিরাট আশেকে রাসূল, তাহলে সেটা নবীজিকে (সঃ) করা সবচেয়ে বড় অপমান! কারণ তিনি এই নির্দেষ দেননি।
যারা একে সাপোর্ট করেন, তারাও একই অপরাধে অপরাধি!
বুঝাইতে পারছি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.