নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাউকে চোখ বন্ধ করে যা তা বলার আগে একটু চিন্তাভাবনা করে নিন।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:০৭

অস্ট্রেলিয়ায় এক তিন বছরের শিশু গাড়িতে বন্দি হয়ে মারা গেছে।
বাবা বড় ভাইকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে পেট্রোল নিতে গিয়ে ভুলে যান যে ওকেও ডেকেয়ারে নামাতে হবে। শিশুটিও তখন গাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। উনি পেট্রোল পাম্প থেকে বাড়িতে এসে গাড়ি পার্ক করে নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
দুপুরে ভাইয়ের স্কুল ছুটি হলে তিনি ভাইকে স্কুল থেকে তোলেন, গ্রোসারি শপে যান, বাজার করেন, এবং তারপরে গ্রোসারি তুলতে গিয়ে খেয়াল করেন ছোট শিশুটা গাড়িতেই শুয়ে আছে।
কী ভয়ংকর, দুঃসহ যন্ত্রনাময় মুহূর্ত একজন বাবার জন্য! আমি নিশ্চিত, ঐ এক মুহূর্তেই লোকটার কলিজা তাঁর হাতে চলে এসেছিল।
তৎক্ষণাৎ তিনি পাগলের মতন ঘুষি মারতে থাকেন গাড়ির কাঁচে, দরজা খুলে শিশুকে বের করেন, ইমার্জেন্সিতে কল করেন, কিন্তু সব বহু আগেই শেষ।
ঐ তাপমাত্রায় যদি কেউ গাড়িতে মাংস বেক করতে চায়, মাংস বেক হয়ে যায়। এতো ছিল মাত্র একটি শিশু। মাথায় রাখতে হবে, শিশুদের শরীরে পানিশূন্যতা বড়দের চাইতে দ্রুত হয়। এক দুই মিনিটের জন্যও তাই শিশুদের গাড়িতে বদ্ধ রেখে অন্য কোথাও যাওয়ার নিয়ম নেই। এইসব ব্যাপারে বিদেশী আইন ভয়াবহ কড়া। গ্রেফতার থেকে শুরু করে মোটা অংকের জরিমানা, বাচ্চার কাস্টডি হারানো সব ঘটতে পারে এর কারনে।
এরপরেও ঘটনাটা বিদেশে মোটেই নতুন না। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘটে। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ নাকি প্রতিবছর পাঁচ হাজার শিশুকে উদ্ধার করে এমন পরিস্থিতি থেকে। আমেরিকায় সংখ্যা আরও বেশি। আমি নিশ্চিত ইউরোপেও এমনটা অপরিচিত না।
তাই একটু সচেতনতামূলক পোস্ট দিলাম। যাতে আমরা প্রবাসীরা একটু সাবধান হই।

কিন্তু এতেই বহু মানুষ ফেসবুকে আদালত বসিয়ে দিয়েছেন। "কেমন বাবা মা যারা বাচ্চাদের খেয়াল রাখে না! ওদের বাবা মা হওয়াই উচিত না" টাইপ ম্যাসেজে ভরে গেছে পোস্ট। বিষয়টা এমন যে "ওরা খারাপ, আমি ভাল।"

আমার কথা হচ্ছে, কোন বাবা মাই (যদি সাইকো না হয়ে থাকে) ইচ্ছা করে এমনটা করবে না। আর "ভুলে যাওয়া" মস্তিষ্কের একটি বিচিত্র খেলা, আপনাকে নিয়েও সে খেলে। আপনি কখনই দাবি করতে পারবেন না জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত যত যা কিছু করে এসেছেন, কখনই আপনি একটি কণাও ভুল করেননি। বিদেশে বাবা মায়ের কোন সাহায্যকারী কাজের লোক থাকেনা। ঘরের এবং বাইরের সব কাজই তাঁদের একা করতে হয়। আপনি বলতে পারেন, "এত দুনিয়ার পেছনে ছুটে কেন?" ওয়েল, ওদের বাড়ির মর্টগেজ, গাড়ির পেমেন্ট, অন্যান্য খরচ আপনি দিবেন না। ওদেরকে কাজ করেই সেটা শোধ করতে হয়। ওরা কেউই কারোর গলায় ছুরি চালায় না, দুই নম্বরি করে উপার্জন করেনা। অনেক অনেক কিছু চলে মানুষের ছোট্ট মস্তিষ্কের ভিতর। তাই কোন কথা বলার আগে আমাদের একটু বিবেচনা করা উচিৎ।

আমরা নিজেরা কি ১০০% বিশুদ্ধ? আমাদের নিজেদের বাড়িতে ছুরি, দা, বটি, কীটনাশক, হারপিক বা এই জাতীয় বিষাক্ত কেমিকেল, ওষুধ ইত্যাদি সবই শিশুর নাগালের মধ্যেই থাকে। কিছুদিন পরপর শুনি অমুকের বাচ্চা ঘড়ির ব্যাটারি খেয়ে ফেলেছে, তো অন্য বাচ্চা তেমনই ভয়ংকর কিছু গিলে খেয়েছে। শিশু ডাক্তারদের সাথে পরিচয় থাকলে একবার জিজ্ঞেস করবেন প্রতিদিন এমন কয়টা কেস তাঁরা পান যেখানে বাচ্চার মৃত্যু ঝুঁকি থাকে। "লেড বেইসড পেইন্টের" বাড়িতে কতজন যে থাকেন, সেটার হিসাব নেই। কতজন জানেন লেড পয়জনিং সম্পর্কে? আমাদের দেশের গ্রামে প্রতি বছর কয়টা শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় হিসাব দিতে পারেন কেউ?
তিন বছরের ছোট শিশুটার মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত, অবশ্যই, কিন্তু আমরা কি ওর বাবা মায়ের ধারে কাছেও শোকাহত হতে পারবো? আমরা দুইটা কুকথা ফেসবুকে লিখে নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বো, ঐ বাবা মায়ের জীবন শেষ হয়ে গেছে! এই লোক বাকি জীবনে আর কখনও স্বাভাবিক হতে পারবে? মৃত্যুই ওকে মুক্তি দিতে পারবে। আর আমরা আসছি আল্লাদি কথাবার্তা নিয়ে।

প্লিজ! কাউকে চোখ বন্ধ করে যা তা বলার আগে একটু চিন্তাভাবনা করে নিন। আপনার ভাগ্য ভাল, সেই বাবা মায়ের জায়গায় আপনি এখন নেই। কিন্তু হতে এক সেকেন্ড সময়ও লাগে না।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:১৫

রানার ব্লগ বলেছেন: মানুষের মুখ বন্ধা রাখার কোন উপায় নাই। বুদ্ধিমানের কাজ হলো দুই কানের সর্বত্তম ব্যাবহার করা।

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষকে যাতা বলা ঠিক না। অথচ মানুষ রাগের মাথায় কুৎসিত কথা বলে। এটা ঠিক না।

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:১০

মিরোরডডল বলেছেন:




ঘটনাটা খুবই মর্মান্তিক!
ইচ্ছাকৃত অবশ্যই না, একটা দুর্ঘটনা।
মানুষ আমরা অনেক কিছু অনেক সময় ভুলে যাই, কিন্তু একজন সন্তানের উপস্থিতি সম্পূর্ণ ভুলে যাওয়া এতো দীর্ঘসময় এবং যার পরিণতি এত ভয়াবহ, এরকম ঘটনা বিরল।

এই ভদ্রলোক কখনও স্বাভাবিক হতে পারবেনা।
আমৃত্যু অপরাধবোধে জর্জরিত থাকবে। খুব দুঃখজনক!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.