নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
রোজা রাখার মূল উদ্দেশ্য মানুষের তাকওয়া পরীক্ষা। মানে অদেখা আল্লাহকে আপনি কতটা মানেন, সেই পরীক্ষা দেয়া আর কি।
যে রোজা রাখতে চায়, তাঁকে শত প্রলোভনেও টলাতে পারেনা, আর যে রাখতে চায়না, সে শুধু বাহানা খোঁজে।
যেমন ধরেন, ইউনিভার্সিটি জীবনের শেষের দিকে এখানে একটি রেস্টুরেন্টে এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার ছিলাম। সারাদিন বার্গার রান্না হচ্ছে, গ্রিলের গন্ধে পেটে গুড়মুড় আওয়াজ উঠতো। আমাদের জন্য ড্রিংকস ছিল ফ্রী। নিজ হাতে কাস্টমারের টেবিলে ট্রে ভর্তি খাবার রেখে এসেছি। একবারের জন্যও রোজা ভাঙ্গেনি।
রেস্টুরেন্টে আমরা তিনজন ছিলাম মুসলিম। দুইজন বাঙালি, একজন আরব। কেউই একটা রোজা ভাঙ্গিনী।
এর আগে রিটেইলে যখন কাজ করতাম, তখন কাজের মাঝেই ইফতারের সময় হয়ে যেত। একদিকে কাস্টমার চেকআউট করছি, সেই ফাঁকে আমার "লিকুইড ইফতার" সেরে নিতাম। আমার লিকুইড ইফতার ছিল ভ্যানিলা আইসক্রিম, সামান্য দুধ, এবং একটি কলাকে ব্লেন্ড করে (অনেকে এটাকে "ব্যানানা শেক" বলে, আমি ভাই শেখ-জিয়া এইসব বুঝিনাই, বানাতে ও খেতে সহজ ছিল বলেই বানাতাম) ফ্লাস্কে ভরে নিয়ে যাওয়া। অফিসের ফ্রিজে রেখে দিতাম। ইফতারের আগে কাজের ব্রেকে নিয়ে এসে নিজের রেজিস্টারে রেখে দিতাম। তারপরে ইফতারের সময়ে চুমুক দিয়ে খাও। ক্ষুধা তৃষ্ণা দুইটাই মিটতো।
এই খাবার শুধু কাজ না, ক্লাসেও নিয়ে যেতাম। প্রফেসর লেকচার দিতেন, আমি এই চান্সে ক্লাস করতে করতেই "ইফতার" করে নিচ্ছি। ক্লাসের অন্যান্য মুসলিম ছাত্রছাত্রীরা স্ন্যাক্স দিয়ে রোজা খুলতো।
তো - কেউ কেউ বলতে পারেন, অনেকেরই তাকওয়া দুর্বল। ওদের সামনে খাবার আনলে নিজেদের কন্ট্রোল করতে পারে না।
ওয়েল, এইটা ওদের সমস্যা। প্র্যাকটিসের মাধ্যমেই এই ব্যাধি সারে। কিন্তু আপনি যেটা করার অধিকার রাখেন না, তা হচ্ছে, অন্যের উপর জুলুম করা।
বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরেই এক আল্লাদি শুরু হয়েছে যে রমজান মাসে দিনের বেলায় কোন খাবারের দোকান চালু রাখা যাবে না।
যারা চালু রাখে, কেউ কেউ গিয়ে ওদের দোকান ভাংচুর করে, অথবা সামাজিকভাবে ওদেরকে তিরস্কার করে।
বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এইসব জুলুমবাজ জনতার জ্ঞাতার্থে,
১. রোজা সবার জন্য ফরজ না। অমুসলিমদের জন্যতো অবশ্যই না, এছাড়া অসুস্থ মুসলিম, মাসিক চলছে এমন মুসলিম নারী, শিশু, মুসাফির প্রমুখদের জন্য রোজা ফরজ নয়। সূরা বাকারার ১৮৩-১৮৫ তম আয়াত পড়ুন। আল্লাহ স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছেন কাদের উপর ফরজ, কাদের উপর না।
২. রোজাই একমাত্র ইবাদত যা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ এবং তাঁর গোলামের মধ্যকার ব্যাপার। আপনি জবরদস্তি করে বা লোক দেখানো নামাজ পড়তে পারেন, হজ্জ্বে যেতে পারেন, দান খয়রাতও করতে পারেন, কিন্তু রোজা রাখতে পারবেন না। রোজা রাখলে মন থেকেই রাখতে হবে। কারন লোকচক্ষুর আড়ালে যদি আপনি কিছু খেয়ে ফেলেন, তাহলেতো সেটা রোজা রাখাই হলো না। এখানে জবরদস্তির কোন বালাই নেই।
৩. ইসলামে জবরদস্তির উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সূরা বাকারাতেই আল্লাহ বলে দিয়েছেন কোন রকমের জবরদস্তি করা যাবেনা। নবীজির (সঃ) জীবনী থেকেই যদি উদাহরণ দিতে হয়, তবে বলবো, মক্কায় মুসলিমদের উপর যে পরিমান অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার ঘটেছিল, তারপরেও সাহাবীগণ ইসলামত্যাগ করেননি। নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন, অনাহারে মারা গেছেন - তারপরেও মুখ দিয়ে বেরিয়েছে "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ!"
উল্টোদিকে যখন মদিনায় এসে মুসলিমরা ক্ষমতা পেলেন, তখন মুনাফেকরা নিজেদের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে বাধ্য হয়ে ইসলাম কবুল করে। এর ফলে ওরা মুনাফেকি করে গেছে বাকিটা জীবন। নবীজির (সঃ) জীবনে যখনই পেরেছে, ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। ওহুদ/খন্দক যুদ্ধ বলেন বা ইহুদিসহ অন্যান্য আরব গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান বলেন বা নবীজির একান্ত ব্যক্তিগত জীবনই বলেন - কোন অংশই ওদের আক্রমনের হাত থেকে ছাড় পায়নি।
কাজেই কারোর উপর জোর জবরদস্তি করে ইসলাম পালন করানো সম্ভবই না।
৪. রেস্টুরেন্টগুলোর বেশিরভাগের মালিক ও কর্মচারীই মুসলিম। রমজান মাসে দিনের বেলা বন্ধ রাখলে ওরা কি শুধু রাতেই ব্যবসা করবে? রাতে ওদের তারাবীহ/তাহাজ্জুদ/তিলাওয়াত কে পড়বে? আপনি? ওরা যদি আস্ত এক মাস ব্যবসা বন্ধ রাখে, ওদের সংসার কে চালাবে, আপনি? মালিক যদি কর্মচারীদের কাজ না করিয়ে বেতন দেয়, মালিকের হাতে সেই টাকা আসবে কোত্থেকে? আপনি এনে দিবেন? এখানে বাঙালির কূপমন্ডুকতা এবং হিপোক্রেসি অতি কদর্যভাবে বেরিয়ে আসে।
আপনি নিজের গৃহকর্মীদের, ড্রাইভার, লিফটম্যান, দারোয়ানদের এক মাস কাজ না করিয়ে বেতন দেন? বুয়া যদি অসুস্থতার জন্য একদিন কাজে না আসে, তাও বেতন থেকে কেটে রাখেন। রিক্সাওয়ালা যদি রোজার জন্য একটু বেশি ভাড়া চায়, ক্ষেত্র বিশেষে মারধর শুরু করেন। কিন্তু আশা করে বসে আছেন রেস্টুরেন্ট মালিকরা সব স্টাফদের দোকান বন্ধ রেখেই ঈদ বোনাস সহ বেতন বুঝিয়ে দিবেন। এত আল্লাদ মনে আসে কিভাবে?
রোজা হচ্ছে মুমিনদের জন্য তাকওয়া, ঈমান, ডিসিপ্লিনের পরীক্ষা। রোজাদারের সামনে খাবার আসবে, নারী আসবে, ঘুষের টাকা আসবে, দূর্নীতির সুযোগ আসবে, পর্ন আসবে, সে নিজেকে কতটা এইসব থেকে মুক্ত রাখতে পারছে, সেটাই ওর পরীক্ষা। আপনি আপনার মুখ, প্যান্টের জিপ, হাত, জিহ্বা, কম্পিউটার ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। অন্যের উপর জুলুম করলে জিন্দেগীর যাবতীয় ইবাদত বরবাদ হয়ে যায় - এইটা জানেন না?
পুরো একটা মাস কঠোর পরিশ্রমের পরে যখন সে পরীক্ষায় মুমিন পাশ করবে, তারপরে ওর চেষ্টা থাকবে বাকি ১১ মাসও যেন সে লড়াই চালিয়ে যায়। ওর মোটিভেশন হিসেবে তখন রমজান মাস আসবে। যদি একটা মাস আমি এসব থেকে দূরে থাকতে পারি, তাহলে আরেকটু চেষ্টা করলেই বাকিটা বছরও পারবো।
এইভাবেই একটা সময়ে মালাকুল মাউত এসে বলবে "আসসালামু আলাইকুম" আপনি-আমি যেন উৎফুল মনে বলতে পারি, "ওয়ালাইকুম আসসালাম! চলেন যাই।"
২| ১৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৬
সোনাগাজী বলেছেন:
টেক্সাসে কি সমস্যা দেখা দিয়েছে?
৩| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৬:৩৮
আলামিন১০৪ বলেছেন: রোজার উদ্দেশ্য তাকওয়া না বরং রোজা ফরজ করার উদ্দেশ্য তাকওয়া। আর রোজা শুধু আল্লাহর জন্য।
৪| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০১
রাজীব নুর বলেছেন: রোজা মানে না খেয়ে থাকা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১১
কামাল১৮ বলেছেন: হিন্দুদের সময় কি বলে?