নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল করেই সেটা জানে এবং ওরাও পারলে ইরানকে ধূলিস্যাৎ করে দেয়।
দুই দেশের এই যখন মুখোমুখি অবস্থান, তখন এদের পরাশক্তি মিত্ররাও না জড়িয়ে পারে না।
ইজরায়েলের জন্ম থেকেই ওর সাথে আমেরিকার লাইলী-মজনু টাইপ প্রেম। সাথে সখি সখা হিসেবে যুক্ত আছে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ওয়েস্টার্ন শক্তি। মধ্যপ্রাচ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতেই ওখানে ইজরায়েলকে হাতে রাখা।
যেহেতু আমেরিকা ইজরায়েলকে ভালবাসে, তাই রাশিয়া-চায়না অবস্থান নিয়েছে ঠিক এর বিপরীত। "শত্রুর শত্রু আমার মিত্র" - এই বিশ্বাস থেকেই ইরানের সাথে ওদের বন্ধুত্ব ও ভালবাসা। এখানে ওরা সবাই টাকা ও ক্ষমতার পূজারী, "ইসলাম বনাম ইহুদি" মূলত একটা বাহানা।
তা গাজায় যখন ইজরায়েল নির্বিচারে মানুষ খুনে ব্যস্ত, গোটা বিশ্ব তখন ইজরায়েলকে তিরস্কার করে আসছিল। প্রায় চল্লিশ হাজার সিভিলিয়ান হত্যা করা হয়েছে। যার প্রায় তিরিশ হাজারই নারী ও শিশু। ওদের সব হাসপাতাল গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ওদের জন্য কোন ত্রাণ পাঠানো যাচ্ছে না। মানুষ হয় অনাহারে মরছে, নাহয় বোমার আঘাতে। মানুষের এমন নৃশংসতা দেখে ইবলিসের মনও হয়তো কেঁদে উঠে। হয়তো আমাদের এতটা অধঃপতন সেও কল্পনা করেনি।
তাই প্রথমবারের মতন আমেরিকা ইজরায়েলের কিছু কর্মকান্ডের বিরোধিতা করলো। যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিল না। আন্তর্জাতিক আইন পাস হলো। তবু ইজরায়েল সেই আইনকে মধ্যাঙ্গুলি দেখিয়ে এখনও নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইজরায়েল নিজের বর্ডারে ত্রাণ আটকে রেখেছে। আমেরিকা প্লেনে করে ত্রাণ বিতরণ করে আসলো। এর মাঝে কিছুদিন আগেই গাজায় ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের সাত ত্রাণকর্মীকে ইজরায়েলি বোমা হত্যা করায় আমেরিকা স্পষ্ট বিরক্তি প্রকাশ করলো। এতেই নেতানিয়াহু ঠোঁট উল্টে বলে, "তুমি আর আমাকে আগের মতন ভালবাসো না! নিশ্চই তোমার বাইরে কোন এফেয়ার চলছে।"
এরই মাঝে ইজরায়েল আরেকটা গুন্ডামি করলো। ওরা ইরানি দূতাবাসে আক্রমন করে ওদের কিছু মিলিটারি জেনারেল খুন করে ফেলল। আন্তর্জাতিক আইনে যা পুরোপুরি নিষেধ। আপনি আরেক দেশের দূতাবাসে কেন আক্রমন করবেন? ইজরায়েল কান্নাকাটি জুড়ে দিল, "ওরা আমাদের জন্য হুমকি! ওরা আমাদের নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করছিল। ওদেরকে না মারলে ওরা আমাদের মারতো।"
"প্রমান দাও!"
ইজরায়েল কোন প্রমান দিতে পারে না।
কিন্তু দুনিয়ার কোন মোড়লেরই ডিম্বকোষে এতটা সাহস নাই যে ওদেরকে গিয়ে বলে, "যথেষ্ট হয়েছে, তোমাকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং শাস্তি পেতে হবে।"
হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ, অপমানিত ইরান বলে আসছিল ওরা জবাব দিবে। সেজন্য ১২ দিনের মতন অপেক্ষা করলো। তবে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স সবাই ইজরায়েলের সাথেই প্রস্তুত ছিল। তাই শয়ে শয়ে ড্রোন, মিসাইল ইত্যাদি ইজরায়েলের কোন ক্ষতিই করতে পারলো না। আয়রন ডোম ৯৯% মিসাইলই আকাশে ধ্বংস করে দিয়েছে। কেবল একটি এয়ারপোর্টের একটি রানওয়েতে সামান্য ক্ষতির ছবিই প্রকাশ হয়েছে।
ইরান বলছে পাল্টা জবাব দেয়া শেষ। ঘটনার এখানেই সমাপ্তি হলে সবার জন্যই ভাল।
কথাটা ঠিক। গোটা দুনিয়াও একই কথাই মানে।
কিন্তু ইজরায়েল এত সুবোধ বালক হলেতো টেনশন ছিল না। বরাবরের মতোই এইবারও ভিকটিম কার্ড প্লে শুরু করেছে। সে নিজে যে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙে আরেক দেশের জমিতে অন্য দেশের দূতাবাস আক্রমন করে ওদের জেনারেল হত্যা করে ফেলেছে সেসব দিব্যি চেপে গিয়ে ফোকাস করার চেষ্টা করছে যে ইরানই ওদের দেশে আক্রমন করেছে।
এখন ওরা হুমকি দিচ্ছে যে ইরানকে এর জবাব দেয়া হবে। আমেরিকা, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড যদিও বলছে শান্ত থাকতে, তবে ইজরায়েল সেটা পাত্তা দিবে কিনা সন্দেহ। ওদের বিশ্বাসই এই যে শত্রুকে নিশ্চিহ্ন না করলে নিজে টিকে থাকা সম্ভব না।
গোটা দুনিয়া এখন আল্লাহ খোদার নাম নিচ্ছে যেন কোন যুদ্ধ না বাঁধে। কারন আধুনিক যুগে একটি যুদ্ধ শুরু করা খুবই সহজ, কিন্তু সেটা বন্ধ করতে যুগের পর যুগ কেটে যায়। মৃত লাশের সংখ্যাবৃদ্ধি এবং কোটি কোটি টাকার অপচয় ছাড়া বাস্তবে যার কোন ফলই আসেনা। এবং বর্তমানে একটি যুদ্ধ মানেই অন্যান্য দেশগুলির মাঝেও ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকে। এখানে যেমন ইজরায়েল যদি ইরানকে আক্রমন করে, ইরানও বসে থাকবে না। গোটা মধ্যপ্রাচ্যেই তখন যুদ্ধ ছড়ানোর সুযোগ থাকবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এরই মধ্যে ইউরোপকে অস্থিতিশীল করে রেখেছে, মিডলইস্ট যুদ্ধে লিপ্ত হলে বাকি বিশ্ব কি শান্ত থাকতে পারবে? এই মুহূর্তে গোটা বিশ্ব কয়েকবার ধ্বংস করার মতন বোমা পরাশক্তিগুলোর হাতে আছে। হিরোশিমার এটম বোমা এইসব বোমার তুলনায় দুগ্ধপোষ্য শিশু। আইনস্টাইনের বিখ্যাত উক্তিটা মনে পড়ে যায়, "আমি জানিনা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কবে হবে, তবে এইটা বলতে পারি চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধে মানুষ লাঠি আর পাথর দিয়ে লড়বে।"
সহজ ভাষায়, হাজার হাজার বছরের প্রচেষ্টায় লব্ধ এই মানব সভ্যতা ধ্বংস হতে কয়েক মিনিট সময়ও লাগবে না।
এই মহাপ্রলয় রুখতে হলে জাতিসংঘের এগিয়ে আসা উচিত। যদিও ওদের কাজটা ঠিক কি তা আমি আজ পর্যন্ত বুঝি নাই। যতদূর জানি, দুনিয়ার দেশগুলো যাতে একজন আরেকজনের সাথে কামড়াকামড়ি করে মরে না যায়, সেটা নিশ্চিত করাই ওদের লক্ষ্য। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোথায় কোন যুদ্ধ ওরা রুখতে পেরেছে? না আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে ওরা কোন ঘোড়ার আন্ডা পেরেছে, না অন্যসব বড় যুদ্ধে।
২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩২
কথামৃত বলেছেন: আফগানিস্তানে তালেবান সরকারকে উৎখাত, ইরাকে আক্রমণ, লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে উৎখাত, বাশার আল–আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা—এসব সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এখন পঞ্চমবারের মতো গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন তাদের জন্য আরও বড় বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে।
অবশ্য ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র কতটা ভুল করেছে, সেটা বুঝতে তাদের সময় লাগবে। একইভাবে ইরাকে হামলা তাদের কত বড় ভুল ছিল, সেটা বুঝতে তাদের সময় লেগেছিল।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন কংগ্রেসের সামনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেছেন, গাজায় ইসরায়েল যে গণহত্যা চালিয়েছে, তার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নেই। তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়ালের বক্তব্যের ভয়াবহ মিল রয়েছে। পাওয়েল জাতিসংঘে বক্তৃতায় বলেছিলেন, ইরাকি নেতা সাদ্দাম হোসেনের কাছে যে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র আছে, সেই প্রমাণ তাঁর কাছে আছে। বাস্তব অর্থে ২০০৩ সালের তাঁর সেই বক্তৃতার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষয় হতে থাকে। এভাবে প্রতিবছরই দেশটি দ্রুতই তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে।
পরে পাওয়েল তাঁর সেই বক্তব্যের জন্য অনুশোচনা করেছিলেন। অস্টিনও একসময় একইভাবে অনুশোচনা করবেন।
৩| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪০
রাসেল বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষণ। আমি মনে করি, আপনার লেখায় যুদ্ধের কারণ হিসাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং আরবদের অনৈক্য ও পদলেহননীতি তুলে ধরতে পারতেন। আমার পরামর্শের জন্য দুঃখিত।
তামিম আল আদনানী এর মন্তব্য ভালো লাগেছে।
৪| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪১
রানার ব্লগ বলেছেন: ধর্ম ও যুদ্ধ দুইটাই ব্যবসার লাভজনক এলিমেন্ট !!!
৫| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯
আমি নই বলেছেন: মন্জুরভাই আপনার ইসফরমেসনে একটু ভুল আছে। আয়রন ডোম নয় বেশির ভাগ ড্রোন, ক্ষেপনাস্ত্র ইউএস, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং জর্দান ভুপাতিত করেছে ইসরাইলে প্রবেশের আগেই। যে কয়টা ইসরাইলের আকাশে ঢুকেছিল তার মাঝে নেভাটিম এয়ারবেজে ৫টি এবং অন্য আর একটি বেজে ৪টি মিসাইল আঘাত করে।
এই হামলায় ইরান এবং অন্যদের কন্ফিডেন্ট অনেক বাড়িয়ে দেবে। কয়েক ঘন্টার উইন্ডোতে ৩০০ টি মিসাইল+ড্রোন এর মাঝে কতগুলো টার্গেটে গেল (৯টা গিয়েছে) এথেকেই ইউএস গংদের আকাশ প্রতিরক্ষার আইডিয়া পাওয়া যায়। একই টাইম ফ্রেমে যদি ২০০০ মিসাইল যায় তাইলে ইউএস, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং জর্দান মিলেও ৫০০ ভুপাতিত করতে পারবেনা। আয়রন ডোমের ক্যাপাসিটিও অতটা হাই নয় এবং শেলের ঘাটতিও আছে।
এর পরের ব্যাপার খরচ, স্বল্প ক্ষমতার ১০০+ ব্যালাস্টিক মিসাইল এবং কয়েক হাজার ডলার মুল্যের ১৫০+ ড্রোনকে (আমার জানা মতে ইরানের টোটাল খরচ ৬০ মিলিয়ন) ভুপাতিত করতে ইউএস গংদের ১.২ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে, এই খরচ ইউএস কতদিন বহন করতে পারবে এটাও দেখার বিষয়।
অহরহ বলেছেন: ইরান ঝাকে ঝাকে আবাবিল পাখি পাঠিয়ে ইসরাইলের একটি মশাও মারতে পারল না। এর চেয়ে বড় মজা আর কী আছে??
কারন ইরান তোমার বাপ ইসরাইলের মত সন্ত্রাসি মনস্টার নয়, ওরা চাইলেই কয়েকটা সিভিলিয়ানদের উপর ফেলে শুধু মশা নয় কয়েকটা ইহুদি সন্ত্রাসিকেও মারতে পারত। কিন্তু তা না করে যুদ্ধের নিয়ম মেনে শুধু আর্মড ফোর্সের বেজই টার্গেক করেছিল।
আর ড্রোন, ক্ষেপনাস্ত্র ভুপাতিত করার ব্যাপারে তোমার বাপের কোনো কৃতিত্ব নাই, যা করার ইসরাইলের বাপ ইউএস, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং নয়া বাপ জর্দান করেছে। তোমার বাপ পারেই খালি শিশু/মহিলা/বৃদ্ধদের সাথে, পুরুষের সাথে লড়ার বিচি তোমার বাপের নাই। থাকলে বক বক না করে সাথে সাথেই রিএ্যাকশন দিয়ে দিত।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪৩
তামিম আল আদনানী বলেছেন: শত্রু-মিত্র যাচাইয়ের মূলনীতি-
.
আমরা প্রায় সময়ই শত্রু-মিত্র চিনতে ভুল করি। শত্রুকে মনে করি বন্ধু, আর বন্ধুকে মনে করি শত্রু। অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কুরআনুল কারীমে শত্রু-মিত্র যাচাইয়ের মৌলিক সূত্র বলে দিয়েছেন এবং কার সাথে কেমন সম্পর্ক কেমন হবে তাও তিনি সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন। সুরা আলে ইমরানে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوۡا بِطَانَۃً مِّنۡ دُوۡنِکُمۡ لَا یَاۡلُوۡنَکُمۡ خَبَالًا ؕ وَدُّوۡا مَا عَنِتُّمۡ ۚ قَدۡ بَدَتِ الۡبَغۡضَآءُ مِنۡ اَفۡوَاهِهِمۡ ۚۖ وَ مَا تُخۡفِیۡ صُدُوۡرُهُمۡ اَکۡبَرُ ؕ قَدۡ بَیَّنَّا لَکُمُ الۡاٰیٰتِ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۱۸﴾
হে মুমিনগণ, তোমরা তোমাদের নিজেদের অর্থাৎ মুমিনদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের সর্বনাশ করতে ত্রুটি করবে না। তারা তোমাদের মারাত্মক ক্ষতি কামনা করে। তাদের মুখ থেকে তো শত্রুতা প্রকাশ পেয়েই গিয়েছে। আর তাদের অন্তরসমূহ যা গোপন করে, তা আরো ভয়াবহ। অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্ট বর্ণনা করেছি, যাতে তোমরা উপলব্ধি করতে পারো। (সুরা আলে ইমরান-১১৮)
.
এই আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা শত্রু-মিত্র বানানোর মূলনীতি বলে দিয়েছেন। মূলনীতিটা হলো আল্লাহ এবং রাসুলে বিশ্বাসী তাওহীদবাদী ছাড়া ভিন্ন কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করা যাবেনা। যদিও তারা নিজেদেরকে আমাদের হিতাকাঙ্খী, কল্যানকামী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে। তবুও তাদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে । কারণ উপরে উপরে তারা বন্ধুত্ব দেখালেও ভেতরে ভেতরে আমাদের শেষ করার ষড়যন্ত্র আঁকে। তারা যে আমাদের নিয়ে কত মারাত্মক ষড়যন্ত্র করছে তার কিছু অংশ তাদের বক্তৃতা লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ পেয়ে গেছে।
.
আমরা অনেক সময় তাদের ইফতার মাহফিলে অংশ গ্রহণ, ঈদ রোজায় শুভেচ্ছা জ্ঞাপন বা মুসলিমদের নিয়ে দু চারটা ভালো কথা শুনে ধোঁকা খেয়ে যাই। ভাবতে থাকি তারাই আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু, কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে তারা আমাদের ধ্বংসের জন্য বাহিনী প্রস্তুত করছে এবং এর জন্য অন্যন্য শত্রুদের সাথে জোট করছে সেসব বেমালুম ভুলে যাই।
.
এই আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে এই শিক্ষা দিলেন, যেন আমরা তাদের বাহ্যিক ভালো আচরণ দেখে গলে না যাই এবং তাদেরকে বন্ধু বা আপন ভাবতে শুরু না করি। দু চারটা কথা শুনে কাফেরদের বন্ধু ভাবার পরিণতি যে কতটা ভয়াবহ, তা ঐ সকল মুসলিমরা ভাল করেই জানে, যাদের অঞ্চলে কাফেররা আক্রমন করেছিল। এই তো কয়েক বছর আগে ভারতের গুজরাট, দিল্লি সহ বিভিন্ন জায়গায় দাঙ্গা হয়েছে। সেসময় পাড়ার ওই সকল হিন্দুরাই মুসলিমদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে, যাদেরকে তারা দাঙ্গা শুরু হওয়ার আগে ভাই-কাকা-দাদা বলে ডাকতো এবং আপন ভাবতো।
.
এজন্য আমাদের করণীয় হবে, আমরা যেমনিভাবে বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর দু চারটা ভালো কথা শুনে তাদেরকে বন্ধু মনে করবোনা, তেমনি আশেপাশের আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ কাফেরটাকেও আপন বা বন্ধু বানাবোনা। তবে হ্যাঁ, পাড়া-পড়শী হিসেবে বা মানুষ হিসেবে কুশল বিনিময় করতে বা ভালো আচরণ করতে বাধা নেই, কিন্তু অন্তরঙ্গ বন্ধু বানানোর ক্ষেত্রে সাবধান থাকবো।