![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমার ছোট ছেলের যখন বয়স এক বা দেড়, তখন সে আমার বাম চোখে খামচি দিয়েছিল। বাচ্চাদের নখ থাকে বাঘের নখের মতন ধরালো, এক থাবাতেই আমি ধরাশায়ী, কর্নিয়ার উপরের লেভেলে যে চামড়ার আস্তর থাকে, সেটা ড্যামেজ হয়ে গেল। মনে হলো যেন ছোটখাটো কোন নুড়ি পাথর কেউ চোখে ঢুকিয়ে দিয়েছে, ননস্টপ খুঁচিয়ে যাচ্ছে। বাম চোখ খোলাতো অসম্ভব ছিলই, ডান চোখ খুললেও যে মনি নড়ে, সেটাতেও বাম চোখে খোঁচা লাগে। আমি চোখ বন্ধ করে আক্ষরিক অর্থেই অন্ধ হয়ে গেলাম।
ডাক্তারের ওষুধে ক্ষত সারলো, তবে পার্মানেন্ট না। চোখ শুকিয়ে গেলে, বা চোখে প্রেশার বেড়ে গেলে হঠাৎ হঠাৎ পুরানো ক্ষত খুলে যায়, তখন আবার কিছুদিন অন্ধ। ওষুধে আবার সারে, আবার ক্ষত ফিরে আসে।
তা গত এক মাসে পরপর দুইবার ঘটনা ঘটলো। দুই সপ্তাহের বেশি সময় অন্ধ থাকার পরে ডাক্তার বললো চোখের পর্দাই ফেলে দেয়া যাক। না থাকবে বাঁশ, না বাজবে বাঁশি। যেহেতু ওটা ডেড স্কিন, এমনিতেও সারবে না, উল্টো কিছুদিন পরপর যন্ত্রনা দিতেই থাকবে।
এখন আমার "চোখের পর্দা সরে গেছে" - আমাকে লজ্জাহীন বলতেই পারেন।
তা গত কয়েকদিনের ফেসবুকে দেশের খবরাখবর দেখলাম। পজিটিভ নেগেটিভ দুই পক্ষেই কিছু বলি।
১. গাজার পক্ষে বিরাট এক বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। দেশের সব কোণ থেকে সর্বস্তরের মানুষ যোগ দিয়েছেন। দেখে ভাল লাগলো। দখলদার ইজরায়েলি বাহিনী কোন রাখঢাক না করেই হামাস নিধনের নামে গাজায় নিরীহ, অসহায় সিভিলিয়ান মারছে, যার বেশিরভাগই শিশু। শুধু বোমা মেরেই মারছে না, ওদেরকে না খাইয়েও মারছে। ওদের মর্জি মোতাবেক বাইরের ত্রাণ ঢুকতে পারছে, ওদের মর্জি মোতাবেক খাবার ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসা দিতে যাওয়া ডাক্তার, ভলান্টিয়ার, সাংবাদিক কাউকেই ওরা ছাড়ছে না, সমানে মারছে। দুনিয়া চুপ, কারন আমেরিকা ইজরায়েলের পক্ষে। ট্রাম্প গাজায় অবকাশ যাপনের বিনোদন কেন্দ্র বানাতে চায়, গাজাবাসীকে না সরালে সেটা সম্ভব না। আজকে যেখানে শিশুরা ঘাস খেয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে, বোমার আঘাতে যাদের খুলি উড়ে যাচ্ছে, আগামীতে সেখানেই সাদা চামড়ার মেয়েরা বিকিনি পরে জলকেলী করবে। সৈকতে ঠান্ডা বিয়ারের বোতল হাতে রোদ পোহাবে কোন এক ধন কুবের।
তা এই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ হচ্ছে। ধর্মীয় কারনে, মানবিক কারণেও। মুসলিমরা প্রতিবাদ করছে, খ্রিষ্টানরাও করছে, এবং অনেকে শুনে বিস্মিতও হতে পারেন, ইহুদিরাও প্রতিবাদ করছে। গত বছরই আমেরিকার বিখ্যাত সব ইউনিভার্সিটিতে যে ছাত্ররা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল, সবাই অমুসলিম ছিল। নিউ ইয়র্কে প্রচুর ইহুদি নিয়মিতই ফিলিস্তিনের পক্ষে আওয়াজ তুলে।
বাংলাদেশের মানুষের কাছে অজানা যে ইহুদিদেরও দুই জাত আছে। অর্থোডক্স ধার্মিক ইহুদি আর সেকুলার জায়নবাদী ইহুদি। তাওরাত মতে, মসিহ আসার আগে ওদের কোন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার হুকুম নেই। কাজেই জায়নবাদীরা যা করছে, সেটা মূলত ওদের তাওরাতেরই বিরুদ্ধে যাওয়া। মানে ওরা "ইহুদি নাস্তিক" বা "ইহুদি কাফের"। এছাড়াও ওদের টেন কমান্ডমেন্টস পড়েন, ৬, ৭, ৮, ৯, এবং ১০ এর সবগুলোই ওরা ভঙ্গ করেছে। ইহুদি ধর্ম আমাদের ইসলাম ধর্মের চাইতেও বহুগুন কট্টর। ১০ কমান্ডমেন্টসের একটা ভাঙলেও ওরা কাফির হয়ে যায়, জায়নবাদীরা অর্ধেকই অমান্য করছে। আমাদের কোন জাত যদি বলে "আল্লাহ ছাড়াও উপাস্য আছে এবং মুহাম্মদ (সঃ) তাঁর পয়গম্বর নন" - তাহলে ঐ লোককে আপনি মুসলিম বলতে পারবেন? এখানেও ঘটনা এক।
এক কথায় বললে, ইসলামের নাম ভাঙিয়ে কোন সন্ত্রাসী সংগঠন যখন কোন দেশ/রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে, আমরা গোটা দুনিয়ার মুসলিমরা যেমন সেই দেশকে অস্বীকার করি (যেমন আইসিসের "খিলাফত," আমরা কেউই পাত্তা দেইনাই), তেমনই ইহুদিদেরও একই অবস্থা। ইজরায়েলের জন্মের ইতিহাস পড়লেই আপনারা দেখবেন প্রাথমিক ধাপেও ধার্মিক ইহুদিরা এই মতবাদকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ না ঘটলে, বিশেষ করে হিটলার ইহুদিদের এইভাবে গণহত্যা না করলে এর জন্মও হতো না। আমার খুবই আফসোস হয়, বাংলাদেশিদের বই পড়ার, ইতিহাস জানার অভ্যাসটাই নেই। অথচ কে বলবে, এই বাঙালি জাত শিক্ষিত ছিল বলেই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নেতৃত্বে এই বাঙালিরাই এগিয়ে ছিল?
২. এই রেশ ধরেই আসি দ্বিতীয় পয়েন্টে। Rallyতে কাউকে কাউকে দেখলাম হিটলার জয়গান গাইছে। হারামজাদাটাকে হিরো বানাচ্ছে। মুর্খামির চূড়ান্ত রূপ দেখে স্তব্ধ হয়ে যাই! যে আরিয়ান সুপ্রিমেসিতে বিশ্বাসী নরাধম আরিয়ান ছাড়া দুনিয়ার সব মানুষকেই নিকৃষ্টজ্ঞান করতো, এমনকি জার্মান আরিয়ান নাগরিক যদি ভিন্ন জাতের কাউকে বিয়ে করতো, ওদের দুইজনকেই গুলি করে মারতো - এমন ভয়াবহ নরপিশাচকে কিভাবে কোন লজিকে বেকুবরা হিরোজ্ঞান করে? ইহুদি মারার পরেই ও মুসলিম হত্যা শুরু করতো, কারন জাতিতে আমরাও (মুসলিম আরব) নন-আরিয়ান "স্যামাইট।" আল্লাহ আমাদের পরম সৌভাগ্য দিয়েছিলেন যে ঐ নরপশু আমাদের দিকে হাত বাড়ানোর আগেই মরে গিয়েছিল।
৩. আরও ক্ষুব্ধ হলাম বাটা কেএফসি দোকানগুলো ভাংচুর ও লুট হতে দেখে। ছিঃ ছিঃ ছিঃ! গাজার শিশুরা মরছে, আর একদল বাংলাদেশী সেই ইস্যুতে রীতিমত চুরি চামারিতে নেমে এসেছে। এরচেয়ে লজ্জার, অপমানের আর কি হতে পারে? এইসব দোকানে মূলত বাংলাদেশী মুসলিম ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদেরই বেশি ক্ষতি হয়েছে, এবং এর জের ধরে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগের আগে বিদেশী কোম্পানিগুলো শতবার চিন্তাভাবনা করবে নিশ্চিত, কারন ওরা প্রথমেই ধরে নিবে এই দেশের এক পাল মূর্খ ঠিকঠাক খোঁজ না নিয়েই প্রচার করবে "এইসব কোম্পানির মালিক ইহুদি, তাই এগুলি ইজরায়েলের দোসর - ভেঙ্গে দাও, গুড়িয়ে দাও" (অর্থোডক্স ইহুদি আর জায়নবাদীর পার্থক্য বুঝার জ্ঞান ও বুদ্ধি এইসব চোরের দলের নেই, সেটাই স্বাভাবিক। মাঝে দিয়ে শ খানেক বাংলাদেশী কর্মচারীর (জুতা ও ভাজা মুরগির দোকানের কর্মচারী, ধনী হওয়ার প্রশ্নই উঠে না) চাকরি চলে গেল। তবে চোরেদের ঘরে "ঈদ" নেমেছে, বাটা জুতা পায়ে জড়াতে পারছে।
৪. নববর্ষে দুর্দান্ত লেজার শো দেখলাম। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের নামে হাস্যকর ও গু গোবর মার্কা লেজার শোয়ের চাইতে কোটিকোটিগুন উন্নত আর সাশ্রয়ী ছিল এইটা নিশ্চিত বলতে পারি। আমি যদি শেখ হাসিনার জায়গায় সেদিন উপস্থিত থাকতাম, সবার আগে দায়িত্বে থাকা হারামজাদাকে দিগম্বর করে গোটা ঢাকা শহরে কানে ধরে হাঁটিয়ে পাবলিকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শাস্তি দিতাম। আর পাবলিকের সাথে ফাজলামির জন্য ক্ষমা চাওয়াতাম। সেইদিক দিয়ে এই লেজার শো ছিল দারুন।
তবে, যতদূর মনে পড়ে, জুলাই আন্দোলনের একটি অন্যতম কারন ছিল রাষ্ট্রীয় টাকা লুটপাট ও অহেতুক অপচয় বন্ধ করা। তাহলে এই শোয়ের মাধ্যমে কি একই ঘটনা ঘটলো না? আমি যতদূর জানি আজও সেই আন্দোলনের আহতদের অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, অনেক পরিবারে ক্ষতিপূরণ ঠিকঠাক পায়নি। ওসব ইগনোর করে "সরকারি খরচে" এই শো কতটা যৌক্তিক ছিল? তাহলে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ৪০০ কোটি টাকার আতশবাজি পোড়ানোর যে কুযুক্তি আফসোসলীগ দেয়, সেটাকে কাউন্টার করা হবে কোন লজিকে?
আমি আফসোসলীগ না, আমি একজন নাগরিক হিসেবে প্রশ্ন করেছি, এবং আমার বিশ্বাস আমার প্রশ্নটা অযৌক্তিক না।
৫. এর বিপরীতেই সবচেয়ে ভাল লেগেছে ড ইউনূসের শুভেচ্ছা ভাষণের স্টেজ। কোন চক্কর বক্কর নেই, তিনিও অতি সাধারণ পোশাকে উপস্থিত হয়ে সুন্দর, নির্মল একটি শুভেচ্ছাবাণী পাঠ করেছেন। তিনি ড মুহম্মদ ইউনুস, সস্তা রাজনীতিবিদদের মতন পাবলিকের টাকায় চোখ ধাঁধানো স্টেজ, বিরাট শো ডাউনের প্রয়োজন হয়না। তিনি সাধারণ সস্তা পাঞ্জাবি/ফতুয়া পরে বিশ্বের যেকোন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে অনায়াসে যেতে পারেন, এবং ওরাও এই লোকের প্রতিটা শব্দ মনোযোগ দিয়ে শুনে। চক্কর বক্করের প্রয়োজন হয় ফকির মিসকিনদের, ওদের জাতে ওঠার খবর সবাইকে চিৎকার করে জানান দিতে হয়। এই হচ্ছে পার্থক্য।
৬. শুনলাম নারায়ণগঞ্জের এক সন্ত্রাসীকে (যুবদল নেতা) নাকি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনা কি? শামীম ওসমানের শহরে শামীম ওসমানের সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে গান্ধীবাদী কাউকে বিএনপি যে নেতা বানাবে না এইটাতো কমন সেন্সের ব্যাপার। তা এইভাবে পুরানো ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেয়ার পেছনে লজিকগুলো কি? ওরা আবার নির্লজ্জের মতন শো ডাউন করে, পাবলিকের (!?) সংবর্ধনাও পায়। আমার মনে পড়ে গেল ইন্ডিয়াতে গুজরাট রায়টে এক মুসলিম নারীকে গণধর্ষণকারী একদল নরপশুকে এই মোদী সরকার বেকসুর খালাস দিয়ে পাবলিক সংবর্ধনাও দিয়েছিল।
এনিওয়েজ, আমি দেশের বাইরে থাকি। আমি জুম আউট করে ওয়াইড স্ক্রিন এবং বিগ পিকচারে ঘটনাগুলো দেখি। কোন ব্যাপার চোখে লাগলে আমি স্পষ্ট বলি। এখনতো চোখের চামড়াও সরে গেছে, এখন আমার চক্ষুলজ্জার ধার ধারার কোন কারনই নেই।
সবাই ভাল থাকবেন। ন্যায়কে ন্যায়, এবং অন্যায়কে অন্যায় বলতে শিখবেন। আমার নবী (সঃ) এই শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। আমার আল্লাহ তাঁর কুরআনে এই নির্দেশ দিয়েছেন। মানা না মানা আপনার ব্যাপার।
১৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:৪৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে নিজেকেই সেটাতে পড়তে হয়। সন্ত্রাসীদের মুক্ত করা যদি হয় বিরোধীদলকে দমন, তাহলে এই সন্ত্রাসীরাই একদিন মাথাব্যথার কারন হবে।
২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:১০
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার ছেলে আপনাকেদ খামচি দিলো- অতঃপর আপনি লজ্জাহীন হয়ে গেলেন। কি সুন্দর যুক্তি।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:০৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার ৬ নং পয়েন্টের সাথে একমত আমি। তবে আরো কিছু কথা যোগ করতে চাই। জুলাই অভ্যুত্থানে কারা জানি কারাগার লুট করে বেশ কিছু সন্ত্রাসী ছিনিয়ে নিয়ে গেছে যাদের মধ্যে অনেক কে এখনো গ্রেফতার করতে পারে নাই সরকার। আবার চিটাগাং এর বিখ্যাত শিবির ক্যাডার নাছির দীর্ঘদিন পর মুক্ত হয়েছে। কিভাবে কি হলো কেউ জানে না। সামনে ইলেকশনে দাড়ানোর কথা তার। আবার ঢাকার সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম জামিনে বের হয়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাকির এখন বের হলো ! অথচ এদের সবার জেলে থাকার কথা।