![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
ঘটনাটা এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে শোনা।
আমেরিকার এক স্টেটে এক বাঙাল থাকতে এসেছে। এসে রেস্টুরেন্টে চাকরি নিয়েছে। মাঝে মাঝে পার্কে বেড়াতে যায়। পার্কে রাজহাঁস ঘুরে বেড়ায়। দুনিয়ার অন্যান্য দেশের দর্শনার্থীরা হাঁস দেখে মুগ্ধ হয়, ছবি তুলে। বাঙ্গালের মনে প্রশ্ন আসে, "একটি যদি ধরে নিয়ে খেয়ে ফেলি, সমস্যা কি? কেউতো দেখছে না। আর দেখলেই বা কি? এগুলিতো কারোর বাড়ির পোষা হাঁস না। সরকারি মাল, দরিয়ামে ডাল!"
একদিন বাঙাল সুযোগ বুঝে আস্ত একটা রাজহাঁস ধরে বাড়িতে নিয়ে এলো।
"বিসমিল্লাহ" বলে জবাই করলো। কোন প্রাণীকে বিসমিল্লাহ বলে জবাই না করলে সেটা আবার হালাল হয়না। বিদেশে এসে "হারাম" খেলে ধর্মভ্রষ্ট হয়ে যাবে। চুরির মাল? ইয়ে, এত গভীরে চিন্তা করবেন না তো! ঘটনায় মনোযোগ দিন।
ধুয়ে মুছে বেশি বেশি মশলা দিয়ে অনেকক্ষন ধরে কষিয়ে রান্না করে তৃপ্তি সহকারে কয়েকদিন খেল।
হাঁসের মাংস খাওয়া শেষ হলে আরেকটা ধরে আনলো। পার্কে সাপ্লাইয়ের অভাব নেই। ফ্রীতে রাজহাঁস খেতে কার না ভাল লাগে? বাইরে থেকে কিনতে গেলে একশো ডলারতো মিনিমাম যাবেই।
এইভাবে কিছুদিন নিজে খেল।
তারপরে একদিন সে যে রেস্টুরেন্টে কাজ করতো, ওর কলিগদের বলল রাজহাঁস খাবে কিনা।
ভুনা রাজহাঁসের মাংস কোন বাঙালি না করবে? ওরাও খেল।
কয়েকদিন এইভাবে খাওয়ার পরে মাথায় এলো ব্যবসায়িক চিন্তা। দেশের সবাই উদ্যোক্তা হয়ে যাচ্ছে, আমি মার্কিন মুল্লুকে এসে কতদিন রেস্টুরেন্টের ডেকচি পাতিল মাজবো? রাজহাঁসের মাংস বিক্রি করবো। তা থেকে যা টাকা আসবে, তা জমিয়ে আমি নিজের রেস্টুরেন্ট খুলবো। তারপরে সেই রেস্টুরেন্টের লাভের টাকায় আরেকটা রেস্টুরেন্ট। তারপর আরেকটা। এইভাবে গোটা আমেরিকা ছাড়িয়ে বিশ্বময় ছড়িয়ে যাবে আমার রাজহাঁসের রেস্টুরেন্ট। কেএফসির বুড়ার মতন আমার ছবিও বিলবোর্ডের শোভা বাড়াবে। হলিউডের সেলিব্রেটি তরুণীরা গাড়ির কাঁচ নামিয়ে সেই বিলবোর্ডের ছবি দেখে বলবে "ওয়াও! কত হ্যান্ডসাম এই যুবক! এ যদি আমার জীবনে চলে আসতো, তাহলে লাইফে আর কিছু চাওয়ার থাকবে না।"
ওদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে ওদের আত্মীয়-ঘটকরা ওর মোবাইল ফোনে কল করবে, কিন্তু সে ব্যস্ততার কারনে ধরবে না।
রেস্টুরেন্টে কাস্টমার আসে, ওদেরকে বলে "ভুনা রাজহাঁস খাবেন?"
কাস্টমার জিভে জল এনে বলে "মেনুতেতো দেখছি না।"
"ওটা ইস্পিশাল আইটেম। খাইলে বলেন, এনে দিব। দাম এতো।"
কাস্টমার ভুনা রাজহাঁস খায়।
ব্যবসা চলতে থাকে। স্বপ্নের পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে থাকে সে।
এদিকে পার্ক রেঞ্জার লক্ষ্য করে রাজহাঁসের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। ওরা তদন্তে নামে এবং আস্ত চক্রকে গ্রেফতার করে।
সেদিনই সেই বাঙ্গালের মন থেকে আমেরিকার উপর থেকে সব বিশ্বাস, ভালবাসা, ভক্তি গায়েব হয়ে যায়। কিসের স্বপ্নের দেশ? কিসের দুনিয়ার সেরা অর্থনীতি? সামান্য রাজহাঁস খাওয়ার জন্য যে সরকার এত ঝামেলা করে, এর চেয়ে ছোটলোক দুনিয়ায় আর কেউ আছে?
আর আপনারা অবাক হচ্ছেন সিলেটের সাদা পাথর গায়েব হলো কিভাবে?
২| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১২:০৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: না হেসে পারলাম না ।
৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১২:৫৮
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: বাঙালির বাটপারি বিশ্বজুড়ে।
৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ ভোর ৪:০৮
লোকমানুষ বলেছেন: চমৎকার রসিকতা আর তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গের ভেতর দিয়ে লেখাটি আমাদের ভেতরকার এক গভীর বাস্তবতা দেখিয়ে দিচ্ছে।
স্বার্থের মোহে নৈতিকতা কীভাবে গায়েব হয়ে যায়, তা আপনার গল্পটিতে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। রাজহাঁসের গল্পটা যতটা হাস্যকর, ততটাই চিন্তার খোরাক বিলাচ্ছে।
সিলেটের সাদা পাথর গায়েব হওয়ার প্রশ্নটা এখন আর অবাক করে না। যেখানে লোভই নিয়ম, সেখানে প্রকৃতি বা সম্পদ রক্ষা তো বিলাসিতাই বটে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:২৯
বিজন রয় বলেছেন: হা হা হা ............. সাদা পাথর!!