নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরোনামহীন

তানি তানিশা

তানি তানিশা › বিস্তারিত পোস্টঃ

২৬ মার্চ এর তাৎপর্য

২৬ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:৩২

একটু পিছনে ঘুরে দেখা যাক। ১০৭০ সাল। ৭ ডিসেম্বরের জাতীয় পর্যায়ে এবং ১৭ ডিসেম্বর – ১৭ জানুয়ারী ১৯৭১ প্রাদেশিক পর্যায়ে নির্বাচনে ৩১৩ টা আসনের মাঝে ২৯৮ টি টা আসনে বিপুল বেবধানে আওামিলীগ এর তৎকালীন নেতা বঙ্গবন্ধু জয় লাভ করলেও পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলার এই নেতার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অসম্মতি জানায়।

১৯৭১ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি ইয়াহিয়া খান ঘোষণা করেন ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু জুলফিকার আলি ভুট্টো ঘোষণা করেন ৬ দফা দাবি মেনে নিলে তার দল অধিবেশনে বসবেনা। এর যের ধরে ১ মার্চ ১৯৭১ সালে ইয়াহিয়া অধিবেশন অনির্দিষ্ট কলের জন্য স্থগিত করে দেন। এর অভিযোগে ২রা এবং ৩রা মার্চ পূর্ববাংলার বিক্ষুব্ধ জনতা হরতাল পালন করে। এবং ৩রা মার্চ বিকালে বঙ্গবন্ধু পল্টন ময়দানে জনসমাবেশে অসহযোগ আন্দলনের ডাক দেন। ৪ঠা মার্চ ১৯৭১ সাল থেকে সারা পূর্ববাংলার কলকারখানা, অফিস-আদালত, খাজনা ট্যাক্স বন্ধ করা হয়।

ইয়াহিয়া এবার নতুন কৌশল অবলম্বন করেন। ৬ মার্চ ঘোষণা করেন যে ২৫ মার্চ জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা করা হবে। এর আগে ১০ মার্চ ঢাকায় সংসদীয় দলের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে আহব্বান করা হলে বঙ্গবন্ধু বলেন “ বাঙ্গালির তাজা রক্ত মারিয়ে আমি সম্মেলনে বসতে পারবো না”। উল্লেখ্য ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারী আওয়ামীলীগের ছয় দফা দাবি প্রত্যাখ্যান হলেও মার্চ মাসে তার অনুমোদন দেয়া হলে বঙ্গবন্ধু সহ অনেক নেতাই বাংলাদেশের সমগ্র অঞ্চলে এর ব্যাখ্যা প্রদান করলে এর গুরুত্ব অ জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে শেখ মুজিবুর সহ বহু নেতা কর্মীকে বন্দি করা হয়। তাঁদের মুক্তির দাবিতে ৭ জুন প্রদেশব্যেপী হরতাল পালনের আহব্বান জানালে পাকিস্তান সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে। বাঙ্গালী ছাত্র-শ্রমিক-জনগন এই ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করে ফলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে ও গুলিতে ঢাকা নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নিহত ও বহু আহত হয়। পরবর্তী ১৯৬৯ সালের ১১-দফা আন্দলনে এর বিচার দাবি করলে তা প্রত্যাক্ষীত হয়। ফলে বঙ্গবন্ধু এ কথা বলেন।

অসহযোগ আন্দোলন যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে থাকে তখন ২৫ মার্চ ১৯৭১ জাতীয় পর্যায়ে অধিবেশনের আহ্বান করা হয়। ২৫ মার্চ পরিষদ অধিবেশনের পূর্ব শর্ত হিসেবে রেসকোর্সে ৭ মার্চ লাখো জনতার সামনে ঐতিহাসিক ৪ দফা শর্ত আরোপ করেন। এবং এটাই স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক হিসেবে আখ্যা পায়। দফা গুলঃ

১। সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে।

২। অবিলম্বে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে।

৩। সামরিক বাহিনী হত্যাকাণ্ডের (১৯৫৫, ৭ জুন) তদন্ত করতে হবে।

৪। অধিবেশনের পূর্বে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

এবার বঙ্গবন্ধু বলেন “ এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি আরও রক্ত দেবো , দেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।”

তিনি আরও বলেন “ ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করো।”

এর প্রেক্ষিতে ১৫-২৫ মার্চ ১৯৭১ ইয়াহিয়া খান ঢাকায় টানা ৯ দিন রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের আলোচনা চালায় এবং ৪-দফা মেনে নেয়। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক আলোচনা। এর ফলাফল ঘোষণা না করেই ইয়াহিয়া ২৫ মার্চ রাতেই ঢাকা ছেড়ে চলে যায়। এবং রাতের অন্ধকারে নিরস্ত্র সাধারন জনগনের উপর সামরিক বাহিনী হামলা চালিয়ে মানুষ মারতে থাকে। বঙ্গবন্ধু কে অ তার দলকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে ইয়াহিয়া এক বেতার কেন্দ্র থেকে ঘোষণা দিলে ২৫ মার্চ দিবাগত রাত্রে শেখ মুজিবর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অস্ত্র ভাণ্ডার আসলে তা বুঝে নিতে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে মেজর জিয়াউর রহমান সেখানে যাওয়ার পথে তাকে মেজর ডালিম বাঁধা দেয়। কারন সেখানে অস্ত্রভাণ্ডার পাকিস্তানীদের হাতে আসার পরেই জিয়াউর রহমানকে তাৎক্ষনাৎ হত্যা করার আদেশ ছিল। এসব জানার পর জিয়াউর রহমান তার দলবল কে নিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র হতে শেখ মজিবরের বলা স্বাধীনতার ঘোষণা দেশবাসীর উদ্দেশে উপস্থাপন করেন ২৬ মার্চ ১৯৭১। তার পর বাংলার মুক্তি পাগল জনতা অনভিজ্ঞ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে দীর্ঘ ৯ মাস ধরে যুদ্ধ করে ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা।

কিন্তু আসলেই কি আজকে আমরা স্বাধীন? রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, অরাজগতা সব কিছু থেকে নিজেদের যবে বের করে আনতে পারব সেদিন হয়তো আমাদের প্রকৃত স্বাধীনতা পাব।

26.03.14



M.Y. Tanya

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:২৭

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: স্বাধীনতা মনে লালন করার নাম স্বাধীনতা বলে না। স্বাধীনতা শুধু জাতীয় সংগীত ও নয়, স্বাধীনতা কর্মে প্রতিফলন দেখাতে হবে। স্বাধীন দেশের নদীতে ভাসে লাওয়ারিশ লাশ, স্বাধীন দেশের নারী হয় নির্যাতীত । কাউরান বাজারে খোলা আকাশের নিজে ঘুমায় স্বাধীন দেশের মানুষ! আর আমরা মুখে স্বাধীনতার কথা আউরায়ে যাই সভা সেমিনারে, কাগজে কিতাবে।হায়রে দেশ , হায়রে জাতি।

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:২৮

তানি তানিশা বলেছেন: তাই তো বলছি ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.