নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিলাকাশ

নিলাকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অর্থ বুঝে কোরআন পড়া (পর্ব-২)

০২ রা জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৪



আল-কোরআন এক অনন্য গ্রন্থ । অনন্য শুধু বিষয়বস্তুর কারণে নয় বিষয়বস্তুর উপস্থাপনের কারণেও । গতানুগতিক অন্যান্য গ্রন্থ যেমন ভূমিকা, আলোচ্য বিষয়ের বিস্তারিত ধারাবাহিক উপস্থাপনা এবং সবশেষে উপসংহার টেনে সমাপ্ত হয়, আল-কোরআন তেমনটা নয় । এখানে ভূমিকা ছাড়াই সরাসরি মূল বিষয়ের আলোচনা, ক্রমধারা অনুসরণ না করেই ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর বর্ণনা, একই আয়াতে প্রায়ই বক্তা ও শ্রোতার পরিবর্তন ঘটেছে [৬] । তাই প্রথম কেউ কোরআনের অনুবাদ পড়তে গেলে তার কাছে এটি এলোমেলো মনে হতে পারে । তবে সময়ের সাথে সাথে এমনটা মনে হবে না । আল-কোরআনের এমন অনন্য উপস্থাপনের একটা কারণ হতে পারে যে, পাঠক যখন কোরআনের কোন অংশ থেকে কয়েকটি বাক্য পড়ে তখন সে কোন না কোন পুর্নাঙ্গ বার্তা পেয়ে যায়; তাকে কোরআনের প্রথম থেকে বা সূরার প্রথম থেকে পড়ে আসার দরকার পরে না । আর কোরআনের প্রধান উদ্দেশ্যইতো হচ্ছে মানুষের কাছে আল্লাহ্‌র বার্তা পৌঁছানো ।

আল-কোরআনের বাংলা অনুবাদের ক্ষেত্রে কোন কোন অনুবাদক আল-কোরআনকে শাব্দিক অনুবাদ করেছেন আবার কোন কোন অনুবাদক করেছেন ভাবার্থ অনুবাদ । শাব্দিক অনুবাদে আনুবাদকগন কোরআনের মূল শব্দের অর্থের কাছাকাছি বাংলা প্রতিশব্দের ব্যবহার করতে চেষ্ঠা করেন । সেক্ষেত্রে মাঝে মাঝে পাঠকগণের কাছে অনুবাদটি দুর্বোদ্ধ হয়ে যায় । প্রকৃতপক্ষে, কোরআনকে আক্ষরিকভাবে অনুবাদ করা যায় না । কারণ, অধিকাংশ আরবি শব্দেরই একাধিক অর্থ রয়েছে । ফলে অনুবাদকের জন্য সঠিক প্রতিশব্দ নির্বাচন কঠিন হয়ে পড়ে । অনেক সময় কোরআনের অর্থেরও বিকৃতি ঘটে । অন্যদিকে ভাবার্থ অনুবাদের ক্ষেত্রে আনুবাদকগন সুবিধাজনক প্রতিশব্দ ব্যবহার করে কোরআনের ভাবার্থ ঠিক রাখতে চেষ্ঠা করেন । এক্ষেত্রে, অনুবাদে অনেক সময় অনুবাদকের নিজস্ব চিন্তাধারা ও মতাদর্শের প্রতিফলন ঘটে যায় । আবার ভাষার সীমাবদ্ধতার কারণে কোরআনের সঠিক অনুবাদ করা যায় না । যেমন আরবি ভাষায় বচন তিন প্রকারঃ একবচন, দ্বিবচন এবং বহুবচন । বাংলা ভাষায় দ্বিবচনের ধারনা নেই । আরবি ভাষায় সর্বনামের পুরুষবাচক এবং স্ত্রীবাচক শব্দ (ইংরেজী he/she এর মত) আছে যা বাংলাতে নেই । ফলে দেখা যাচ্ছে অনুবাদ পড়ে মূল কোরআন অনুধাবন করতে পাঠকের সমস্যা হয় । অতএব আমাদের উচিত কোরআনকে কোরআনের ভাষাতেই অনুধাবন করা ।

যেকোন ভাষা জানতে তার শব্দ ভান্ডার বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই । তাই, চলুন প্রথম আমরা শব্দ ভান্ডার বাড়ানোর চেষ্ঠা করি তারপর এর ব্যকরণের দিকে মনোযোগ দেই । আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ কোরআনকে কত সহজ করে দিয়েছেন। কোরআনের মোট শব্দের অর্ধেক (৫০%) শিখতে আমাদের মাত্র ৬০টি শব্দের অর্থ জানলেই হবে !! এই পর্বে ৬ থেকে ১৫ নং শব্দের অর্থ দেয়া হল । নিচের টেবিলে এগুলোর অর্থ ও কোরআনে এর ব্যবহারসহ, পুনারাবৃত্তি সংখ্যার ভিত্তিতে অধঃক্রমে সাজানো হল । গত পর্ব এবং এ পর্ব মিলিয়ে আমরা মোট ১৫ টি শব্দ (যা কোরআনের মোট শব্দ সংখ্যার ৩০%; প্রায় একতৃতীয়াংশ !) শিখব, ইনশা আল্লাহ্‌ ।
‘রব্বী যিদনী ইলমা’




(চলবে ইনশা আল্লাহ্‌ ….)

ফেসবুক লিংক
অর্থ বুঝে কোরআন পড়া (পর্ব-১)view this link
অর্থ বুঝে কোরআন পড়া (পর্ব-২)view this link
অর্থ বুঝে কোরআন পড়া (পর্ব-৩)view this link

Note: মানুষ মাত্রই ভূলের উর্দ্ধে নয় । তাই যেকোন ভূল কারো চোখে পরলেই শুধরে দেয়ার অনুরোধ রইল ।

নোটটি লিখতে যেসব বইয়ের সাহায্য নেয়া হয়েছেঃ
১। Qur’an word frequency, http://quran.ilmsummit.org
২। সহীহ নূরানী কোরআন শরীফ, মূল তরজমা - মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রঃ) ।
৩। কোরআনের বাংলা অনুবাদ - মুহিউদ্দীন খান ।
৪। আল-কোরআনের ভাষা - এস এম নাহিদ হাসান ।
৫। তিন ভাষায় Quranic Vocabulary - আবদুল করিম পারেখ, দারুস সালাম বাংলাদেশ ।
৬। কোরআন বোঝার মূলনীতি - ড. আবু আমীনাহ বিলাল ফিলিপস, সিয়ান পাবলিকেশন লিমিটেড, ২০১৬ ।
৭। Arabic-English Dictionary of Qur’anic Usage By Elsaid M. Badawi, Muhammad Abdel Haleem, Koninklijke Brill NV, Leiden, The Netherlands, 2008.

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:০২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক উপকারী পোষ্ট ।
বিশেষ ধন্যবাদ রইল ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.