নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উদ্ভট দুনিয়া....

আমি তোমার পথ চেয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবো, দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে আমার পায়ে শিকড় গজাবে, আমার শাখা-প্রশাখা গজাবে, আমি বৃক্ষমানব হয়ে যাবো তবুও আমি অধৈর্য্য হবো না... ... ...

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান

এই ব্লগের কোন লেখা লেখকের অনুমতি ব্যতিরেকে হুবহু অথবা আংশিক পরিবর্তন করে প্রকাশ করা নিষেধ। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন [email protected]

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি আমার মাকে যে কারণে পছন্দ করি এবং যে কারণে অপছ্ন্দ করি।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ২:৩৩

আমার মায়ের সবচেয়ে আদরের যে বস্তু যেটা সেইটা মনে হয় আমি। যখন বাড়িতে ছিলাম(এস.এস.সি পরীক্ষার পরীক্ষার আগ পর্যন্ত) তখন মায়ের মমতা বুঝতে পারতাম না। কলেজে পড়ার সময় বাড়ি ছাড়তে হল। উঠলাম একটা মেসে। কলেজ ফরিদপুরেই ছিল।



তাই প্রতিসপ্তাহে একবার বাড়িতে যেতাম। যদিও মাসের খরচের টাকাটা অগ্রীম নিয়ে নিতাম। আব্বু মেপে টাকা দিত(মাসে পাচহাজার)। প্রতিমাসে বাবা টাকা দেওয়ার পরও মা আমাকে পাচশত টাকার একটা নোট ধরিয়ে দিত। আমি নিতে না চাইলেও একপ্রকার জোড় করেই টাকাটা দিত। এই খবর বাবা জানত না। জানলে হয়তো বাজেট থেকে পাচশত টাকা কমিয়ে দিত। আমার মিষ্টি খাওয়ার একটা নেশা ছিল। যাহোক অতিরিক্ত এই টাকাটা দিয়ে সেই নেশা নিবৃত্ত করা যেত। বাবার পাচাহাজার টাকার কথা ভূলে গেলেও মায়ের পাচশত টাকার কথা হাশরের ময়দানেও হয়তো ভূলতে পারবো না। কারন টাকাটা চকচকে এবং অতি যত্নে রাখা বলে মনে হতো।(এটা মায়ের জমানো টাকা)। যাহোক দুবছর ভালই কেটেছিল।

ভর্তি কোচিং করার সময় প্রথম ঢাকায় এসেছিলাম ২০০৭ এ। তখনই মূলত মাকে বেশি মিস করা শুরু করি। কারণ তখন প্রতি সপ্তাহে মায়ের সাথে দেখা করার সুযোগ ছিল না। তখন আমার মোবাইল ছিল না। অনেক আবদার করেও মোবাইল নামক জিনিসটা পাইনি। মাঝে মাঝে খুব রাগ হতো বাবার প্রতি এই কারণে। যেহেতু মোবাইল ছিল না। তাই দোকান থেকে আমিই মাঝে মধ্যে বাসায় ফোন দিতাম। আমি আবার কিছুটা সময়জ্ঞানহীন মানুষ। একবার একটানা পনেরো দিন বাসায় ফোন না দিয়ে ছিলাম। পনেরোদিন যে বাসায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল এটা আমার অনুভূতিতেই আসেনি কারন তখন কোচিং এর প্রেশার একটু বেশি ছিল। তখন মা পাগলের মত হয়ে গীয়েছিল আমার সাথে কথা বলার জন্য। পনেরো দিন পরে ঢাকায় এক আঙ্কেলের মাধ্যমে আমার সাথে ফোন করে কথা বলে, সে সময় বকা খেয়েছিলাম অনেক।

বিশ্ববিদ্যালয় নামক স্বপ্নের ক্যাম্পাসে পদচারনা শুরু হল। যখন পিলখানা ট্রজেডি শুরু হলো তখন আমি হলে অবস্থান করছিলাম। নিউমার্কেট-আজিমপুরবাসীদের সরে যেতে হয়েছিল। সেদিন আমার মোবাইলে চার্জ না থাকার কারণে মোবাইল বন্ধ ছিল এবং আমি রুমের বাইরে ছিলাম। মা আমার রুমমেটদেরকে কমপক্ষে পন্চাশ বার ফোন দিয়েছিল। পরে আমি ফ্রেন্ড-এর মোবাইল দিয়ে বাসায় কল করতেই খেলাম গরম গরম ঝাড়ি। আমি কি আর করব আতঙ্ককে সাথে নিয়ে রাতটা কাটিয়ে দিলাম। পরেরদিন দশটার দিকে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। পোছাতো প্রায় ৩ টা বেজে গেল। সেদিন মা আমাকে জড়িয়ে ধরে ঢুকরে কেদেছিল। আমি মাকে বারবার বলছিলাম আমি ঠিক আছি মা কোন সমস্যা নেই। সে যেন ছেলেকে হাতে ধরেও বিশ্বাস করতে পারছে না যে তার ছেলে ফিরে এসেছে। মায়ের প্রতি আমার অভিমান হলো সে কেন আমার জন্য এতটা চিন্তা করে। আমার জন্য কেউ চিন্তা করে কষ্ট পাবে এইটা আমি মেনে নিতে নারাজ।

মুক্তিযুদ্ধের একটা নাটক "রেবেকা" দেখলাম। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেলের ফিরে আসার আকুতি আর পেরেশানি দেখে আমি ছেলের প্রতি মায়ের ভালবাসা কিছুটা আচ করতে পেরেছি।

আজ মা কে খুব মনে পড়ছে।

আজ দেশ মায়ের হাজার হাজার সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। ছেলের জন্য তার চিন্তার অন্ত নেই, চোখে ঘুম নেই, ছেলের চিন্তায় মা যে কত রাত নির্ঘুম কাটায় তা আমাদের অজানা। মা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ছেলেকে দিয়েছে জ্ঞান অর্জন করা জন্য নেতা হবার জন্য নয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ঘটনা ঘটেছে তাতে কত মায়ের যে ঘুম হারাম হয়ে গেছে, কত মায়ের চোখের পানি যে অঝড়ে পড়েছে তার হিসাব আমাদের কাছে নাই।

জবি তে যারা মারামারি করেছে তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই, আপনি যাকে মারলেন ক্ষমতার জন্য তার মা হয়তো তাকে কোনদিন একটা থাপ্পর পর্যন্ত দেয়নি। আর আপনি তাকে মেরে রক্তাক্ত করে দিলেন। এ ক্যামন বিবেক আপনার?

আমারা কিন্তু সবাই দেশ মায়ের সন্তান। বিশ্বের বুকে আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের ছেলে। যেহেতু আমরা দেশের সন্তান সেহেতু সবাই আমরা ভাই ভাই। ভাই ভাই মারামারি করলে কি আর চলে?

আসো আমরা সমস্ত হিংসা বিদ্বেস আর স্বার্থের উর্ধ্বে একান্ত ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করে দেশ মায়ের কষ্ট নিবাড়ন করি।



-------------------

পোষ্ট শেষ। ধন্যবাদ।

মন্তব্য ৩১ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৩১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ২:৪২

অদৃশ্য সত্তার বাক্যালাপ বলেছেন: ভাল লাগল

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৩:০১

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ২:৫৫

গোধুলী রঙ বলেছেন: দারুন লিখেছেন। মনটা নাড়া দিয়ে গেলো।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৩:০২

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: ধন্যবাদ, সার্থক আমি।

৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৩:৪৯

অর্ণব আর্ক বলেছেন: ভার্সিটিতে আমরা যারা যারা পড়ি তার সবাই আমাদের পরিবার ছেড়ে নতুন একটি পরিবারে যোগ দিই। এখানে আমরা সবাই ভাই-ভাই,ভাই-বোন,বোন-বোন। তবে যারা এখানে মারামারি (সাধারণ), চুলোচুলি(ইডেন) করে আমি বলতে পারবো না তারা কোন মায়ের সন্তান। আসুন না আমরা সকল দলাদলি ভুলে এগিয়ে আসি। কাধে কাঁধ মিলিয়ে গড়ি সোনার বাংলাদেশ। :( :( :( :( :(

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:০৮

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: সহমত, ধন্যবাদ।

৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:১৭

নষ্টছেলে বলেছেন: :(( :(( :(( :(( :(( :(( :(( :(( :((

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:০৮

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: :(( :(( :(( :(( :((

৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:০৩

কামরুল হাসান শািহ বলেছেন: ভাল লাগল

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:০৯

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:১৪

কাজলভোমোরা বলেছেন: ভাল লিখেছেন, তবে কথা কি জানেন, চোর না শোনে ধর্মের কথা। আপনার যে বোধ জেগেছে সেটা কজনের আছে বা কজন সেটা অর্জন করতে পারে?

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১০

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলেই হবে.............।

৭| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৬:১২

শোশমিতা বলেছেন: সুন্দর +

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১০

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: ধন্যবাদ, লাল সালাম।

৮| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ৭:০৫

বিবেক সত্যি বলেছেন: +

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১১

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: ধন্য....

৯| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ৯:১২

শাহরিয়ার রিয়াদ বলেছেন: সুন্দরবোধ জাগ্রত হোক

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১১

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: এটাই কামনা......

১০| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:২৬

মেঘলা মানুষ বলেছেন: "আসো আমরা সমস্ত হিংসা বিদ্বেস আর স্বার্থের উর্ধ্বে একান্ত ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করে দেশ মায়ের কষ্ট নিবারণ করি।"
-- অসাধারণ একটা লাইন।

ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১২

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: স্বাগতম, দোয়া করবেন।

১১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৩৯

জেরী বলেছেন: +++

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১২

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: ধন্যবাদ।

১২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১৪

""শ্রাবণী"" বলেছেন: ভালো লাগলো...

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৪৫

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: ধন্যবাদ........

১৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১৬

আলীেহােস বলেছেন: ++++++++++++++

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৪৬

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: Thank you.

১৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৫২

নিভৃত নয়ন বলেছেন: এভাবে আসলেই কি ঐ নরপশুগুলো ভাবে।
আপনার প্রকাশভঙ্গী চমৎকার।
ভাল লাগল।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৪৭

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: সভ্যতার আলো ছড়িয়ে দিতে...........প্রাণপন।

১৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০০

তারার মেলা মিটিমিটি বলেছেন: মাসুইদ্যা তুইতো ব্যাপক জমাইয়া লইছস।
নে ধরঃ

১৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০২

তারার মেলা মিটিমিটি বলেছেন:

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৪৮

মো: মাসুদুর রাহ্‌মান বলেছেন: থ্যাংকু থ্যাংকু, বালা থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.