![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রংপুরের বদরগঞ্জে লাল বানু নামের স্বামী পরিত্যক্ত এক নারীকে শিকল দিয়ে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে সাত ঘণ্টা বেঁধে রেখে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গতকাল সোমবার ভোররাতে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ওই নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ওই নারীর বাড়ি বদরগঞ্জ উপজেলার শেখেরহাট হাটখোলাপাড়া গ্রামে। গত রোববার সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাস্তা থেকে টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে ওই নারীকে শিকল দিয়ে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়।
অমানবিক ওই নির্যাতনের খবর পেয়ে ওই দিন মধ্যরাতে প্রথম আলোর এই প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে যান। এ সময় লাল বানুকে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে মুক্ত করার জন্য কাঁদছিলেন। উপস্থিত লোকজন তাঁর শিকল খুলে দেওয়ার সাহস পাচ্ছিলেন না। নির্যাতনের বিষয়টি ঘটনাস্থল থেকে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান চৌধুরীকে মুঠোফোনে জানানো হয়। খবর পেয়ে রাত দুইটার দিকে পুলিশ সেখানে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে লাল বানুর বড় ভাই আনিছ রহমান (৫২) ও আনিছের জামাতা দুদু মিয়াকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও পুলিশ আরও জানায়, লাল বানু তাঁর মায়ের কাছ থেকে ২০০২ সালে নয় শতক জমি কিনে দলিল করে নেন। পরে সেখানে কাঁচাঘর তুলে তিনি বসবাস করে আসছিলেন। পাঁচ বছর আগে ওই জমি অংশীদার সূত্রে দাবি করে ওই নারীকে পিটিয়ে বাড়িছাড়া করেন তাঁর বড় ভাই আনিছ রহমান। তখন থেকে লাল বানু প্রতিবেশীদের বাড়িতে রাত যাপন করে আসছেন। ওই জমি নিয়ে আদালতে পরস্পরবিরোধী মামলাও বিচারাধীন আছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত রোববার সন্ধ্যায় লাল বানু তাঁর ভাইয়ের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় আনিছ ও তাঁর ছেলে নুর হোসেন (২০) লাল বানুকে ধরে টেনেহিঁচড়ে বাড়িতে নিয়ে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করেন।
লাল বানুর অভিযোগ, তাঁর বাবা ২৫ বছর আগে এবং মা আট বছর আগে মারা গেছেন। বিয়ের পর স্বামীও ছেড়ে গেলে তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে মায়ের কাছ থেকে নয় শতক জমি কিনে নিয়ে সেখানে ঘর তুলে বসবাস করছিলেন তিনি। এই জমি দখল করার উদ্দেশে তাঁর বড় ভাই তাঁকে মামলা-মোকদ্দমায় ফাঁসিয়ে, পিটিয়ে বাড়িছাড়া করেও ক্ষান্ত হননি; রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেছেন।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খোদা বকস মিয়া প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘গভীর রাতে আমি নিজে সেখানে গিয়ে মহিলার শিকল খুলে দিতে বললেও তা দেওয়া হয়নি। মহিলাকে জমিজমা ঘটনার জের ধরে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে।’
শিকলে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে কি না, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লাল বানুর ভাই আনিছ রহমান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আমার বাড়িতে ওই দিন সন্ধ্যায় চুরি করতে ঢুকলে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়।’ আনিছ রহমানের মেয়ে আকতারা বেগম বলেন, ‘তাবিজ পোঁতার জন্য তাঁর ফুপু বাড়িতে ঢুকলে তাঁকে বেঁধে রেখে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিচার দেওয়া হয়।’
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মামুন অর রশিদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, গতকাল সোমবার ভোররাতে ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে নয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই নারীর বড় ভাইসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:২৩
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ঐদুইটাকে আগে পেঠানো উচিত। তারপর জেল জরিমানা