নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধ্রুবতারা

এম বি ফয়েজ

সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা এবং জেনে-শুনে সত্য গোপন করা কোন ব্লগারের কাম্য হওয়া উচিত নহে।

এম বি ফয়েজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গগৈর সরল হাসির কুটিল স্বরূপ উন্মোচনঃ অরাজক অসমে আরক্ষীর বর্বরতা; "পশু-খেদার বদল পশু-খেদা।"

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৪:৩৯

(এম বি ফয়েজ)

গোয়াহাটী, অসম ১৯ আগষ্ট।। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ গতকাল অসম-নাগাল্যাণ্ড সীমান্ত অঞ্চল গোলাঘাট জেলার উরিয়ামঘাট আশ্রয় শিবির পরিদর্শনে গেলে নাগা দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে বাস্তুহারা আশ্রিত জনতার রোষানলে পড়ে একপ্রকার “পশু-খেদা” খেয়ে পালিয়ে বাঁচতে হয়। শিবিরে আশ্রিত মহিলারা তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে শিলাবৃষ্টি করে এবং সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী অসমীয়া মানুষের জান-মাল রক্ষায় ব্যর্থ গগৈ সরকার ভেঙ্গে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবী জানিয়ে শ্লো-গান দিতে থাকে। বেগতিক দেখে মুখ্যমন্ত্রী মুচকি হাসি দিয়ে সে স্থান থেকে প্রস্তান করেন এবং বিকেল তিনটের দিকে রেল-গাড়ীতে করে সোজা রাজধানী শহর দিসপুর ফিরে আসেন।



আজ মুখ্যমন্ত্রী গগৈর সরল হাসির কুটিল স্বরূপ উন্মোচিত হ’ল। গত ৮ই আগষ্ট থেকে নাগাল্যাণ্ডগামী জাতীয় সড়ক অবরোধকারীদের উপর সকাল ছ’টার দিকে হঠাৎ করে ঝাপিয়ে পড়ল অসম আরক্ষী ও সিআরপিএফের বিরাট এক ঘাতক বাহিনী। শুরু হয় নির্বিচারে লাঠি-চার্জ, গুলি ও ধড়-পাকড়। মুহূর্তের মধ্যে পরিষ্কার করা হয় রাস্তার দু’পাশে আটকে থাকা নাগাল্যাণ্ডগামী খাদ্য-পণ্যবাহী শত শত লরি। ভণ্ডুল করা হয় নাগাল্যাণ্ডের উপর আরোপিত অর্থনৈতিক অবরোধ।



গগৈর আরক্ষী বাহিনী প্রতিবাদকারী দ্বারা আরোপিত নাগাল্যাণ্ডের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ ভণ্ডুল করে দিলে তারই প্রতিবাদে অনির্দ্দিষ্টকালের জন্য আজ গোলাঘাট জেলা সর্বাত্মক বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। সেই সুবাদে বিকেল পাঁচটার দিকে গগৈর অরাজক অসমে শুরু হয় আরক্ষীর বর্বর তাণ্ডব। বর্বরতার সকল অভিলেখ ভঙ্গ করে গোলাঘাট জেলার রঙ্গাজানে নিরস্ত্র প্রতিবাদকারীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে অসম আরক্ষী ও সিআরপিএফ বাহিনী; আরম্ভ হয় গনহারে ধড়পাকড়, লাঠি-পেটনা ও সর্বোপরি ধারাসার, নির্দয় গোলা-বর্ষন। পুরোদমে চলে “পশু-খেদার বদলা পশু-খেদা”। রক্ষা পড়েনি ন’মাসের কোলের শিশু নিয়ে পথ-চলা মহিলা এবং লাচিত ফুকন নামে পথ-চলা বাইক আরোহী। এ স্থানে পুলিশের গুলিতে মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ছয় জন; তন্মধ্যে ওজিত তাঁতর নামে একজনের ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।



গগৈ-বাহিনী এখানে শুধু থেমে থাকেনি; চড়াও হয় নুমালীগড় কলেজে। বিনা প্ররোচনায় এখানে শুরু হয় ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নির্বিচার গুলি-বর্ষন। প্রানভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করতে গিয়ে বহু ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়েছে। উন্মত্ত গগৈ-সেনারা হঠাত ছাত্র-ছাত্রীদের উপর কেন চড়াও হ’ল—সে কথা ছাত্র-ছাত্রীরা আচ করতে না পারলেও পরে জানা যায় যে, গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রমন কালে প্রতিবাদে ছাত্র সংগঠন ও সামিল ছিল এবং আজ তাঁর প্রতিকার নেওয়া হচ্ছে।

গগৈর আরক্ষী বাহিনীর তাণ্ডব কেবল জাতীয় সড়কে সীমাবদ্ধ থাকেনি; পুলিশের সহযোগে সি আর পি এফ জওয়ানরা এরপর গ্রামে গ্রামে ঢুকে পড়ে এবং যুবকদেরকে বাড়ী থেকে টেনে-হেচড়ে বের করে এনে উত্তম-মধ্যম দিয়ে থানায় নিয়ে যায়। রঙাজান চা বাগান এলাকায় এহেন গর্হিত কার্য্য সম্পাদন কালে স্থানীয় মহিলারা লাঠি-সঠা হাতে নিয়ে সদলবলে সি আর পি এফ জওয়ানদেরকে তাড়া করলে তাঁরা পালিয়ে বাচে যেন “গাজায় মহিলারা ইসরাইলি সেনাদেরকে তাড়া করছে।“ উল্লেখ্য, গতকাল মহিলা মোর্চার একটি সংগঠন মুখ্যমন্ত্রীকে ‘পশু-খেদা’ দিয়েছিল। তারই প্রতিকারে আজ মহিলা সি আর পি এফ জওয়ান ডেকে বাগান এলাকায় লেলিয়ে দিলে তাঁরা রাং-কুকুরের মত মহিলাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ও বেদড়ক লাঠি-পেটা দিয়ে প্রতিশোধ গ্রহন করে।





নিরীহ প্রতিবাদকারীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ মূলক “পশু-খেদার বদলা পশু-খেদা” এবং গগৈর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ন নীতি-কাণ্ডে রাজ্যজুড়ি কেবল ধিক্কার আর ধিক্কারের জোয়ার বয়ে চলেছে। গোয়াহাটী উচ্চতর ন্যায়ালয়ের সিনিয়র এডভোকেট মিঃ বিজন মহাজন তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ এবং রাজ্য আরক্ষী সঞ্চালক প্রধান মিঃ খগেন শর্মার বিরুদ্ধে আইপিসি ১২০(বি) ধারায় মামলা রুজু করে আইনের কাঠ-গড়ায় দাড় করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। শাসকীয় কংগ্রেস দলের রঙ্গাজান সমষ্টির বিধায়ক দেবব্রত শৈকিয়া এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী (কং) পবন সিং ঘাটোয়ার আজকের পুলিশী আতিশয্যের ধিক্কার জানিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করেছেন। আগামি গোলাঘাট জেলায় কালো-দিবস পালন করার কার্য্যসূচী গ্রহন করা হয়েছে।





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.