নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সন্ত্রাস মুক্ত সমাজ চাই। দূর্নীতি মুক্ত দেশ চাই।

আমাদের সমাজ আজ দুর্ণীতি তে গ্রাস হয়ে আছে। যা আমাদের দেশের অগ্রগতিতে বাধা গ্রস্থ করে । সন্ত্রাস আমাদের সমাজ কে কুলশিত করে রেখেছে। বর্তমানে সামন্য বিবাদ হলে দেখা যায় অস্ত্রের ঝনঝনা নি । যা আমাদের কাম্য নয় । ১৫+এখন তাদের হাতে থাকার কথা বই খাতা । কিন্তু দেখা

মো: নুর আলম

i am a student of bss.

মো: নুর আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

পোস্টমাস্টার, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:২৯

প্রথম কাজ আরম্ভ করিয়াই উলাপুর গ্রামে পোস্টমাস্টারকে আসিতে হয়। গ্রামটি অতি সামান্য । নিকটে একটি নীলকুঠি আছে , তাই কুঠির সাহেব অএক জোগারড় করিয়া এই নতুন পোস্টাপিস স্থপন করাইয়াছে।

আমাদের পোস্টমাস্টার কলিকাতার ছেলে । জলের মাছকে ডাঙায় তুলিলে যেরকম হয়, এই গাও গ্রামের মধ্যে আসিয়া পোস্টমাস্টারের ও সেই দশা উপস্থিত হইয়াছে । একখানি অন্ধকার আটচালান মধ্যে তাহার আফিস : অদূরে একটি পানাপুকুর এবং তাহার চারি পাড়ে জঙ্গল । কুঠির গোমস্তা প্রভূতি যে সকল কর্মচারী আছে তাহাদের ফুরসত প্রায় নাই এবং তাহারা ভদ্রলোকের সহিত মিশিবার উপযু্‌ত নহে।

বিশেষত কলিকাতার ছেলে ভালো করিয়া মিশতে জানে না । অপরিচিত স্থানে গেলে হয় উদ্ধত নয় অপ্রতিভ হইয়া থাকে । এই কারণে স্থানীয় লোকের সহিত তাহার মেলা মেশা হইয়া উঠে না । অথচ হাতে কাজ অধিক নাই। কখনো কখনো দুটো একটা কবিতা লিখিতে চেষ্টা করেন । তাহাতে এমন ভাব ব্যক্ত করিয়াছেন যে সমস্ত, দিন তরুপল্লবের কম্পন এবং আকাশের মেঘ দেখিয়া জীবন বড়ো মুখে কাটিয় যায় কিন্তু অন্তর্যামী জানেন , যদি আরব্য উপন্যাসের কোনো দৈত্য আসিয়া এক রাত্রের মধ্যে এই শাখা পল্লব সমেত সমস্থ গাছগুলো কাটিয়া টাকা রাস্তা বানাইয়া দেয় এবং সারি সারি অট্রালিকা আকাশের মেঘকে দৃস্টি পথ হইতে রুদ্ধ করিয়া রাখে তাহার হইলে এই আধমরা ভদ্রসন্তানটি পনশ্চ নবজিবন লাভ করিতে পারে ।
পোস্টমাস্টারের বেতন অতি সামান্য । নিজে রাধিয়া খাইতে হয় এবং গ্রামের একটি পিতৃমাতৃহীন অনাথ বালিকা তাহা র কাজকর্মা করিয়া দেয় চারিটি চারিটি খাইতে হায়। মেয়েটির নাম রতন । বয়স বারো-তেরো । বিবাহের বিশেষ সম্ভাবনা দেখা যায় না।
সন্ধ্যার সময় যখন গ্রামের গোয়ালঘর হইতে ধূম কুগুলায়িত হইয়া উচিত ঝোপ ঝোপে ঝিল্লি ডাকিত দুরে গ্রামের নেশাখোর বাইলের দল খোল করতাল বাজাইয়া উচ্চেঃস্বরে গ্রামের নেশাখোর বাইলের দর খোল করতাল জুড়িয়া দিত যখন অন্ধকার দাও য়ার একলা বসিয়া গ্রাছেরকম্টন দেখিলে কবিহৃদয়ে ও ঈষৎ হৃৎকম্প উপস্থিত হইত তখন ঘরের কোণে একটি ক্ষীণশীখা প্রদীপ জ্বালিয়া পোস্টমাস্টার ডাকিতেন “রতনন। রতন দ্বারিএ বসিয়া এ ই ডাকের জন্য অপেক্ষা করিয়া থাকিত কিন্তু এক ডাকেই ঘরে আসিত না: বলিত “কিগোবাবু কেন ডাকছ। পোস্টমাস্টার । তুই কী করস।
রতন । এখনই জুলো দরাতে যেতে হবে হেশেলের পোস্টমাস্টার । তোর হেশেলের কাজ পে হবে এখন ্‌একবার তামাকটা সেজে দেতো । অনতিবিলম্বে দুটি গাল ফুলাইয়া কলিকায পু দিতে দিতে রতনে প্রবেশ । হাত হইতে কালিকাটালইয়া পোস্টমাস্টার ফস করিয়া জিজ্ঘাসা করেন আচ্ছা রতন তোর আমকে মনে পড়ো ? : সে অনেক কথা কতক মনে পড়ে কতক মনে পড়ে না । মায়ৈর চেয়ে বাপ তহাকে বেশি ভালোবাসিত বাপকে অল্প আল্প মনে আছে। পরিশ্রম করিয়া বাপ সন্ধ্যাবেলায় ঘরে ফিরিয়া আসিত তাহারই মধ্যে দৈবাৎ দিটি একটি সনধ্রা তাহার মনে পরিস্কার ছবির মো অং্গিকত আছে। এই কথা হইতে হইতে ক্রমেরতন পোস্টমাস্টারের পায়ের কাছে মাটির উপর বসিচা পড়িত । মনে পড়িত তাহার একটি ছোটোভাই ছিল বহু পূর্বেকার বর্ষার দিনে একদিন একটা ডোবার ধারে দুইজনে মিলিয়া গাছের ভাঙা ডাকে ছিপ করিয়া মিছামিছি মাছধরা খো করিয়াছিল আনেক গুরুতর ঘটনার চেয়ে সেই কথাটাই তাহার মনে বেশি উদয় হইত এইরুপ কথা প্রসংগে মাঝেমাঝে বেশি রাত হইয়া যাইত তখন আলস্যক্রমে পোস্টমাস্টারের আরম রাধিতে ইচ্ছা করিত না। সকালের বাসি ব্যঞ্জন থাকিত এবং রতন তাড়াতাড়ি উনুনু ধরাইয়া খানকয়েক রিটি সেকিয়া আনিত তাহাতেই উপভয়ের রাত্রের আহারচরিয়া যাইত।
এক একদিন সন্ধ্যাবেলায় সেই বৃহৎ আটচালার কোনে আফিসের কাঠের চৌকির উপর বসিয়া পোস্টমাস্টারও নিজের ঘরের কথা পাড়িতেন ছোটোবাই মা এবং দিদির কথা প্রবাসে একলা ঘরে বসেয়া যাহাদের জন্য হৃদয় ব্যথিত হইয়া উঠিত তাহাদের কথা । যে সকল কথা সর্কদাই মনে উদয় হয় অথচ নীলকুঠির গোমস্তাদের কাছে যাহা কোনোমতেই উত্থাপন করায়ায় না সে ই কথা একটি অশিক্ষিতা ক্ষুদ্র বাললিকাকে বলীযা যাইতেন কিছুমাত্র অসংগত মনে হইত না। অবশেষে এমন হইল বালিকা কথোপকথনকালে তাহার ঘরের লোকদিগকে মা দিদি দাদা বরয়া চির পরিচিতের ন্যায় উল্লেখ করিত । এমন কি হাতার ক্ষুদ্র হৃদয়পটে বালিকা তাহাদের কাল্পনিক মুতৃইও চিত্রিত করিয়া লইয়াছিল।
একদিন বর্ষাকারে মেঘমুক্ত দ্বিপ্রহরে ঈয়ৎ তপ্ত সুকোমল বাতাস দিতে ছিল ; কনে হইতেছিল যেন ক্লান্ত ধরনীর উষ্ণ নিশ্বাস গায়ের উপরে আসিয়া লাগিতেছে । এবং কোথাকার এক নাছোড়বান্দা পাখি তাহার একটা একটানা সুরের নালিশ সমস্ত দুপুরবেলা প্রকৃতির দরবারে অত্যন্ত করুণস্বরে বারবার আবৃত্তি করিতেছিল পোস্টমাস্টার এর হাতে কাজ ছিল না সেদিনকার বৃস্টিধৌত মসৃণ চিক্কণ তরুপল্লবের হিল্লোল এবং পরাভূত বর্ষার ভগ্নাবশিস্ট রৌদ্রশুভ্র স্তূপাকার মেঘস্তর বাস্তবিকই দেখিবার বিসয়ে ছিল ; পোস্টমাস্টার তাহা দেখিতে ছিলেন এবং ভাকিতেছিলেন এই সময কাছে একটি কেহ নিতান্ত আপনারলোক থাকিত –হৃদয়ের সহিত একন্ত সংলগ্ন একটি হেপুত্তলি মানবমূর্তি । ক্রমে মনে হইতে লাগিল , সেই পাখি ঐকথাই বার বার বলিতেছে এবং এই জনহীন তরুচ্ছায়নিমগ্ন মধ্যাহ্ণের পল্লবমর্মরে অর্তও কতকতটা ঐরুপ। কেহ বিশ্বাস করে না এবং জানিতেও পায়না । কিন্তু ছোটো পল্লীর সামান্য বেতনের সাব পোস্টমাস্টারের মনে গভীর নিস্তব্ধ মাধ্যাহ্নে দীর্ঘ ছুটিরদিনে এইরুপ একটাভাবের উদয় হইয়া থাকবে।
পোস্টমাস্টার একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া ডাকিলেন রতন । রতন তখন পেয়ারাতলায় পা ছড়াইয়া দিয়া কাঁচা পোয়ারা খাইতেছিল; প্রভুব কন্ঠস্বর ,শুনিয়া অবিলম্বে ছুটিয়া আসিল হাপাইতে হাপাইতে বলিল দাদাববু ডাকছ? পোস্টমাস্টার বলিলেন তোকো আমি একটু একটু কারে পড়তে শেখাব । বলিয়া সমস্ত দুপুরবেলা তাহাকে লইয়া স্বরে অস্বরে আ করিলেন । এবং এইরুপে অল্পদিএই যুক্ত অক্ষর উত্তীর্ণ হইলেন।

শ্রাবন মাসে বর্ষনের আর অন্ত নাই । খাল বিল নালা জলে ভরিয়া উঠিল । অহর্নিশি ভেকের ডাক এবং বৃষ্টির শব্দ । প্রামের রাস্তার চলাচল প্রায় একপ্রকার বন্ধ নৌকায় করিয়া হাটে যাইতে হয়। একদিন প্রাতঃকাল হইতে খুব বাদলা করিয়াছে পোস্টমাস্টারের ছাত্রীটি অনেকক্ষণ দ্বারে কাছে অপেক্ষা রিয়া বসিয়া ছিল কিন্তু অন্যদিনের মতো যথাসাধ্য নিয়মিত ডাক শুনিতে না পাইয়া আপনি খুঙ্গি পুঁথি লইয়া ধূরে ধীরে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিল । দেখিল পোস্টমাস্টার তাহার খাইয়ার উপর মুইয়া আছেন – বিশ্রাম করিতেছেন কনে করিয়া অতি নিঃশব্দে পুনশ্চঘে হইতে বাহিরে যাইবার উপক্রাম রিল । সহসা শুনিল রতন । তাড়াতাড়ি ফিরিয়া গিয়া বলেল দাদাবাবু ঘুমোচ্ছিলে ? পোস্টমাস্টার কাতরস্বরে বলিলেন , শরীর টা আলো বোধ হচ্ছে নাদেখ তো আমার কপালে হাত দিয়ে ।
এই নিতান্ত নিঃসংগে প্রবাসে ঘনবসর্ষায় রোগকাতর শরীরে একটুখানি সেবা পাইতে ইচ্ছা করে । তপ্ত ললাটের উপর শাখাপরা কোমল হস্তের স্পর্শ মনে পড়ে । এই য়োরা প্রবাসে রোগযন্ত্রনায় স্নেহময়ী নারী রুপে জননী ও দিদিদ পাশে বসিয়া আছেন এই কথা মনে করিতে ইচ্ছা করে এবং এ স্থরে প্রবাসীর মনের অভিলাষ ব্রর্থ হইল না ্ বালিকা রতন আর বালিকা রহিল না। সেই মুহূত্যে এই সে জননীর পদ অধিকার করিয়া বসিল বৈদ্য ডাকিয়া আনিল যথাসমযে বটিকা খাওয়াইল সরারাত্রি শিয়রে জাগিয়া বহিল আপনি পথ্য রাধিয়া দিল এবং শতবার করিয়া জিজ্ঞাসা করিল হাগো দাদাবাবু একটুখানি ভালো বোধ হচট্ছে কি । বহুদিন পরে পোস্টমাস্টা ক্ষীণ শরীরে রোগশয্যা ত্যাগ করিয়া ইঠিলেন ; মনে স্থির করিলেন আর নয় এখান হইতে কোনোমতে বদলি হইতে । স্থানিয় অস্বাস্থ্যর উল্লেখ করিয়া তৎক্ষণাত কলিকাতায কর্তপক্ষদের নিকট বদলি হইবার জন্য দরখাস্ত করিলেন।
রোগসেব হইতে নিস্কৃতি পাইয়া রতন দ্বারের বাহিরে আবার তাহার স্বস্তান অধিকার করিল । কিন্তু পূর্ববৎ আর তাহাকে ডাক পড়ে না। মাঝেমাঝে উকি মারিয়া দেখে , পোস্টমাস্টার অত্রস্ত অন্যমনস্কভাবে চৌকিতে বসিয়া অথবা খাটিয়ায় শুইয়া আছে কিনা । রতন যখন আহ্বান প্রত্যাশা করিয়া বসিয়া আছে তিনি তখন অধীরচিত্তে তাহার দরখাস্তে রউত্তর প্রতিকষা করিতেছেন। বালিকা দ্বারের বাহিরে বসিয়াসহস্রবার করিয়া তাহার পুরানো পড়া পড়িল । গাছে যেদিন সহসা ডাকা পড়িবে সেদিন তাহার যুক্ত অকষর সমস্ত গোলমাল হঘইইয়া যায় এই তাহার একটা আশঙ্কা ছিল। অবশেষে সপ্তাহ খানেক পরে একদিন সনধ্যাবেলায় ডাক পড়িল। উদবেলিত হৃদয়ে রতন পৃহের মধ্যে প্রবেশ করিয়া বলিল দাদাবাবু আমাকে ডাকছিলে?
পোস্টমাস্টার বলিলেন রতন কালই আমি যাচ্ছি ।
রতন । কোতায় যাচ্ছ দাদাবাবু
পোস্টমাস্টার বাড়ি যাচ্ছি
রতন । আবার কবে আসবে
পোস্টমাস্টার। আর আসবে না।
রতন আর কোনো কথা জিজ্ঞাসা করিল না । পোস্টমাস্টার আপনিই তাহাকে বলিলে তিনি বদলির জন্য দরখাস্ত করিয়াছিলেন দরখাস্ত নামঞ্জুর হইয়াছে; তাই তিনি কাজে জবাক্ষ দিয়া বাড়ি যাইতেছেন । অনেকক্ষণ আর কেহ কোনো কথা কহিল না । মিটমিট করিয়া প্রদীপ জ্বলতে লাগিল এবং এক স্থানে ঘরের জীর্ন চাল ভেদ করিয়া একটি মাটির সবার উপর টপটপ করিয়া বৃষ্টির জল পড়িতে লাগিল।
কিছুক্ষন পরে রতন আস্তে আস্তে উঠিয়া রান্নঘরে রুটি গড়িতে গেল । অন্য দিনের মতো তেমন চটপট হইব না। বোধ করে মধ্যে মধ্রে মাথায় অণেক ভাবনা উদয় হইয়াছিল । পোস্টমাস্টারের আহার সমাপ্ত হইলে পর বালিকা তাহাকে জিজ্ঘাসা করিল দাদা বাবু আমাকে তোমাদের বাড়ি নিয়ে যাবে?
পোস্টমাস্টার এর হাসিয়া কহিলেন এ কীকরে হবে। ব্যাপারটা যে কীকী কারণে অসম্ভব তাহা বালিকাকে বুজানো আবশ্যত বোধ করিলেন না।
ভোরে উঠিয়া পওস্টমাস্টার দেখেলেন তাহার স্লানের জল ঠিক আছে: কলিকাতার অভ্যাস অনুসারে তিনি তোলা জলে স্লান করিতেন । কখন তিনি যাত্রা করিবেন সে কথা বালিকা কী কারণে জিজ্ঞাসা করিতে পারে নাই; পাছে প্রাতঃকালে আবশ্যক হয় এইজন্য রতন তত রাত্রে নদী হইতে তাহারস্নানের জণ তুলিয়া আনিয়াছিল । স্লান সমাপন হইলে রতনের ডাক পড়িল রতন নিঃশব্ধে গৃহে প্রবেশ করিল এবং আদেশ প্রতীক্ষায় একবার নীরবে প্রবুর মুখের দিকে চাহিলে । প্রভু কিহলেন . রতন আমার জায়গায় যে লোকটি আসবেন তাকে বলে দিয়ে যাব তিনি তোকে আমারই মতন যত্ন করবেন। আমি যাচ্ছি বলে তোকে কিছু ভাবতে হবে না। এই কথা গুলি যে অত্যান্ত গবীর এবং দয়াদার হৃদয় হইতে উত্থাত সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই কিন্তু নারিহৃদয় কে বিঝিবে । রতন অনেকদিন প্রভুর অনেক তিরস্কার নীরবে সহ্য করিয়াছে কিন্তু এই নরম কথা সহিতে পরিলনা না। একেবারে উচ্ছসিত হৃদয়ে কাদিয়া উঠিয়া কহিল না না তোমার কাউকে কিছু বলতে হবে না আমি তাকতে চাই না।
পোস্টমাস্টার রতনের এরুপ ব্যবহার কখনো দেকেন নাই তাই অবাক হইয়া বাহির করিলেন ।তখন রতন ধুলায় পড়িয়া তাহার পা জড়াইয়া ধরিয়া কহিল দাদাবাবু তোমার দুটি পায়ে পড়ি তোমার দুটি পায়ে পড়ি আমাকে কিছু দিতে হবে না তোমার দুটি পায়ে পড়ি আমার জন্যে কাউকে কিছু বাবতে হবে না বলিয়া এক দৌড়ো সেখানে হইতে পলাইয়া গেল। ভূতপূর্ব পোস্টমাস্টার নিশ্বাস ফেলিয়া হাতে কার্পেটের ব্রাগ ঝুলাইয়া কাধে ছাতা লইয়া মুটের মাথায় নিল ও শ্বেত রেখায় চিত্রিত টিনের পেটরা তুলিয়যা ধীরে ধীরে নৌকাবিমুখে চলিলেন । যখন নৌকায় উঠিলেন এবং ঔকা ছাড়িয়া দিল বৃস্তিতৃন্ন নদী ধরনীর উচছলিত অশ্রু রাশির মতো চারি দিকে ছলছল করিতে লাগিল তখন হৃদয়ের দশ্রে অত্যন্ত একটা বেদান অনুভব করিতে লাগিলেন একটি সামন্য গ্রাম বালিকার করুণ মুখচ্ছবে যেন এক বিশ্বব্যাপী বৃহৎ অব্রক্ত মর্মব্যথা প্রকাশ করিমতে লাগিল । একাবর নিতান্ত ইচ্ছ হইল ফিরিয়া যাই জগতের ক্রোড়বিচ্যুত সেই অনাথিনীকে সংগে করিয়া লইয়া আস কিন্তু তখন পালে বাতাস পাইয়াছে বিশাল স্রোত খরতর বেগে বহিতেছে গ্রাম অতিক্রম করিয়া নদি কূরের শ্মাশান দেখা দিয়েছে এবং নদিপ্রবাহে ভাসমান পতিকের উদাসম হৃদয়ে এই তত্ত্বের উদয় হইল জীবনে এমন কত বিচ্ছেদ কত মৃত্যু আছে ফিরিয়া ফল কি পৃথিবীতে কে তাহার।
কিন্ত রতনের মনে কোনো তত্বের উদয হইল না । সে সেই পোস্টঅফিস গৃহের চারি দিকে কেবল অজশ্র ভাসয়া ঘুরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতে ছিল । বোধ করি তাহার তনে কষীণ আশা জাগিতেছেল দাদাবাবু যদি ফিরিয়া আবে সে ই বন্ধনে ড়িয়া কিছুতেই দুরে যাইতে পারিতেছিল না । হায় বুদধহিন মানবহৃদয় ! ভ্রান্তি কিছুতেই ঘোচে না যুক্তি শ্রাস্ত্রের বিধান বহু বিলম্বে মাথায় প্রবেশ করে প্রবল প্রমাণকে ও অবিশ্বাস করিয়া মিথ্যাস আশাকে দুই বাহুপাশে বাধিয়া বুকের ভিতরে প্রাণপণে জড়াইয়া ধরা যায় অবশেসে একদিন সমস্ত নীড়িকাটিয়া হৃদয়ে রক্ত শুকিয়া সে পলায়ন করে তখন চেতনা হয় এবং দ্বিতীয় ভ্রান্তিপাশে পড়িবার জন্য চিত্ত ব্যাকুল হইয়া উঠে।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.