![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ব্লগ লিখতে এবং পড়তে ভালোবাসি তাই সবমসয় ব্লগে পড়ে থাকি। ফেইবুকে আমি www.fb.com/Mr.Sajjad.Hosen
আমরা বিয়ে করেছি। কিন্তু বাসায় জানে না। বাসায় জানলে ৩ টা সমস্যা হবে। আব্বু আম্মু মাইর লাগাবে। দ্বিতীয় সমস্যা, বাসা থেকে বের করে দেবে। তখন সবে ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট সেমিস্টার। বাসা থেকে বের করে দিলে কোথায় থাকবো, কি খাবো?
তৃতীয় সমস্যা সবচেয়ে ভয়ংকর। পুলিশ। আমি যখন বিয়ে করি, তখন সার্টিফিকেট অনুযায়ী আমার বয়স ১৯। বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলেরা দারুন বৈষম্যের শিকার। ২১ বছর না হলে তাদের বিয়ে বেআইনি হয়ে যায়। কাজেই বাসায় যদি জানে যে আমরা বিয়ে করেছি এবং ছেলে নাবালক, তাহলে পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যাবে।
এজন্য আমি আর মিতু বিয়ে করলাম। কিন্তু বাসায় জানালাম না।যে যার বাসায় থাকি। ইউনিভার্সিটিতে আসি। মিতুকে আমি বলি, বউ। মিতু বলে, ওগো আমার স্বামী। আমরা ক্লাসে পাশাপাশি বসি। ক্যান্টিনে গিয়ে চা খাওয়ার সময় মিতু ওড়না দিয়ে চায়ের কাপ মুছে দিয়ে স্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে। পরীক্ষার হলে মিতুকে আমি খাতা দেখিয়ে স্বামীর দায়িত্ব পালন করি। অতি সুখের সংসার।
ক্লাস শেষ হলে আমরা দুজন গাছতলায় বসি। মিতুকে আমি কথা দিয়েছিলাম, বিয়ের পর দুচোখ যেদিকে যায়, চলে যাবো। গাছের তলায় ঘর বাঁধবো।
কাজেই গাছের তলায় বসতে পেরে মিতু খুবই খুশি। তার স্বামী প্রতিশ্রুতি রেখেছে। বিয়ের পর গাছতলায় সংসার ফেঁদেছে।
এর মধ্যে মিতুর বাসায় কি যেন এক ঝামেলা হলো। মিতুর বাবা ঝাড়ি মেরে ওকে বলল, আমার খাও, আমার পড়ো, আর আমার সাথে বেয়াদবি ?
বিয়ের পর মেয়েরা আসলেই পর হয়ে যায়। এই সামান্য কথায় মিতু দারুনভাবে আহত হলো। খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিলো। সে আর পিতার অন্ন মুখে তুলবে না। ক্লাসে এসে বলল, বাজার করে দাও।
আমি আকাশ থেকে পড়লাম। বাজার মানে? টাকা পাবো কোথায়? প্রথম আলোতে লিখে তখন কয়েকশত টাকা পেতাম। সেই টাকা তোলা হলো। কারওয়ান বাজার থেকে দুই কেজি চাল, আধা কেজি আলু এবং ডাল কেনা হলো। মিতু ব্যাগ ভর্তি করে বাজার নিয়ে বাসায় চলে গেলো। নিজে রান্না শুরু করলো। ভাত, আলু ভর্তা, ডাল। নিজেই রান্না করে, নিজেই খায়। সে এক কঠিন ব্রত।
আমি ভেবেছিলাম, এইভাবে মিতু একদিন মারা যাবে। না মিতু মারা যায়নি। বরং অতি সাধাসিধে খাওয়াদাওয়ার চর্চা করায় মিতু অল্প দিনেই শুকিয়ে গেলো। রাতারাতি তাকে অপ্সরীর মতো লাগতে লাগলো।
মিতুকে কখনো বলিনি, মিতু যতদিন ডালভাত কর্মসূচী চালিয়েছে, আমিও বাসায় মাছ মাংস ঠেলে সরিয়ে শুধু ডাল ভাতই খেতাম। আমার মা বলতেন, তোর কি হইছে?
আমি চোরের মতো মাথা নিচু করে বলতাম, কিছুই না, কিছুই না।
মাকে আমার বলতে ইচ্ছে করতো মিতুর কথা। কে বলে মেয়েরা লাজুক হয়? আমি যখন প্রথম আম্মুকে মিতুর কথা বলি, তখন আমি লাইট নিভিয়ে বলেছিলাম, আম্মু , আমার সাথে একটা মেয়ে পড়ে, ওর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তুমি আর আব্বু একটু যাবা, ওদের বাসায়?
আমার কথা শুনে আম্মু লাফ দিয়ে উঠলো। চট রুমের লাইট জ্বালিয়ে বলল, কোন মেয়ের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, তাতে তোর কি? এসব তুই কি কইতাছোস? তোর কি মাথা খারাপ হইয়া গেছে?
আমি যখন বাসা থেকে পালালাম। একটা ফার্মেসি থেকে মিতুদের বাসার ল্যান্ড ফোনে কল দিলাম। মিতুকে বললাম, মিতু তুমি চলে এসো। আমি বাসা থেকে বের হয়ে এসেছি।
মিতু ছোট্ট করে বলল, আচ্ছা।
সব মিলিয়ে ১৫ সেকেন্ড।
টিএসসিতে আমি দাঁড়িয়ে আছি। তখন মোবাইল ফোনের যুগ না। অস্থির হয়ে বার বার ঘড়ি দেখছি। মিতু আসবে তো? দেরি করছে কেন? কখন আসবে? আমার চোখ জ্বালা করছে। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যত। পকেটে একটা টাকাও নেই। মাঝে মাঝে মায়ের কথা মনে পড়ছে। মাথার রগ টন টন করছে। চোখ অকারণে আর্দ্র হচ্ছে।
এমন সময় হুড তোলা রিকশায় করে মিতু আসলো। রিকশা থেকে নেমেই আমাকে দেখে হাসলো।
আমার ১৫ সেকেন্ডের একটা অনুরোধে একটি মেয়ে সব ফেলে চলে এসেছে। তার ১৮ বছরের বাবা, মা, ভাই, বোন। সবকিছু। কোথায় যাবে জানে না, কি খাবে, সেটাও জানে না।
কিন্তু রিকশা থেকে নেমেই এমন উজ্জলভাবে হাসলো ... যেন সে সব পেয়েছে। যেন সে পুরো বিশ্ব জয় করেছে।
আমি ভ্যালেন্টাইন ব্যাপারটা ঠিক বুঝিনা। ভালবাসা, প্রেম এগুলোও ঠিক মাথায় ঢোকে না।
আমার কাছে প্রেম মানে, ওই উজ্জল, নির্মল, সুখী একটা হাসি। কি পরম নির্ভরতাই না ছিল সেই হাসিতে। কি গাঢ় বিশ্বাসে মাখা ছিলো সেই হাসি।
এটাই আমার ভালবাসা। আমি বুকে হাত রেখে বলতে পারবো, আমি নিজের চোখে ভূত দেখিনি, কিন্তু ভালবাসা দেখেছি। কে বলে ভালবাসা বলে কিছু নেই? ওই এক মুহুর্তের হাসিই আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন।
পুনশ্চ: আমি আর মিতু একসাথে ১৫ অথবা ১৬ বছর ধরে সংসার করছি। আগে বছর গুনে মনে রাখতাম। এখন গোণাগুনির ঝামেলায় যাই না। ওই হবে একটা। প্রতিদিন ঝগড়া করি, সপ্তাহে একদিন কথা বন্ধ থাকে, মাসে একবার ডিভোর্সের চিন্তা করি।
কিন্তু কিছু করতে গেলে, ওই হাসিটাই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।
২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৩
Sajjad Hosen বলেছেন: হুম সারা জীবন কি আর গাছ তলায় থাকা যায়.....।
৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: খারাপ না।
৪| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৭
দূরের যাত্রী বলেছেন: নেমন্তন্ন রইল। একদিন স্বামী স্ত্রী মিলে আমার গরীবালয়ে আসুন। শুটকি দিয়ে কচুপোড়া খাওয়াবো।
৫| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৯
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: শুভ কামনা রইলো আপনার এবং মিতুর জন্য .....
৬| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৪
নীল আকাশ বলেছেন: গাছ তলা থেকে পাক্কা ১৫-১৬ বছর পার করে দিলেন। সাবাস প্রেমিক প্রেমিকা জুটি।
৭| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫২
আতোয়ার রহমান বাংলা বলেছেন: অনেক অনেক শুভ কামনা
৮| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৪
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: একটা ছেলে একটা কম্পিউটার কিনেছে।প্রথম প্রথম কম্পিউটার ছাড়া সে কিছু বুঝতো না,সারা দিন পড়ে থাকতো কম্পিউটারের মধ্যে।অনেক দিন পার হয়ে গেলো,এখন কম্পিউটারের নাম শুনলে সে প্রচুর বিরক্ত হয়ে যায়।
৯| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৫
আঁধার রাত বলেছেন:
রাত পোহালে পাখি বলে দেরে দেরে খাই। এক পোয়া দুধ হইলেই চলত। গাই কিনে বসে আছে। নিতে চাই যৌবনের মজা, অর্ডার দিয়ে বসে আছে যৌবনের সাজা।
১০| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৫
সনেট কবি বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন ।
১১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: বাবা (ছোট ছেলেকে) : এক গ্লাস পানি আনতো।
ছোট ছেলে : পারুম না ।
বড় ছেলে : বাদ দাও তো বাবা। এইটাতো জন্মের বেয়াদব। যাও তুমি নিজেই গিয়া পানি খাইয়া আসো আর হ্যাঁ, আমার জন্যেও এক গ্লাস নিয়া আইসো।
১২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৯
দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: আহমেদ এন্তাজ রবি ভাইয়ের লেখা। উনি অনেক পুরনো ব্লগার। এখন আর ব্লগিং করেন না। বইমেলায় ওনার বই বের হয়। বাইরে থাকেন।
লেখাটা যেহেতু সংগ্রহ করেছেন, কার লেখা সেটা জানা এবং সবাইকে জানতে দেয়াও জরুরি বলে আমি মনে করি।
১৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫০
আমিন রবিন বলেছেন: লিখেছেন সংগ্রহ করা, কিন্তু কার লেখা উল্লেখ করেননি। এতে যেন মনে হচ্ছে এটা আপনার জীবনেরই ঘটনা!
১৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪০
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: গল্পটা যে রবির এটা কি লেখার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করলেন না??
১৫| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৮
ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: গল্পটা আসলে কার বা কাদের তা উল্লেখ করা থাকলে ভালো হতো। যাইহোক গল্পটি পড়ে আমারও বিবাহ করতে ইচ্ছে করছে।
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭
Sajjad Hosen বলেছেন: আহেন বিয়ে করি
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১০
তারেক ফাহিম বলেছেন: গাছ তলায় এখনও আছেন?
গাছ তলা থেকে পাক্কা ১৫-১৬ বছর পার হয়ে গেল, তাই বললাম।