নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওয়াজেদ বিপ্লব

আমরা মৃত্যুর আগে কি বুঝিতে চাই আর!

ওয়াজেদ বিপ্লব › বিস্তারিত পোস্টঃ

কালপুরুষ

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৮



এই নক্ষত্রমন্ডলটির উদয় ঘটে আকাশের পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ কোনায়। আশ্চর্য এক নক্ষত্রমন্ডল কালপুরুষ, যুগে যুগে শিল্প-সাহিত্যে-চিত্রকলায়, প্রাচীন গল্পগাঁথায় অথবা কাব্যে-মহাকাব্যে সবখানেই কালপুরুষের উজ্জল উপস্থিতি। এমনকি ধর্মগ্রন্থেও সে তার 'প্রভা' ছড়িয়েছে সমান গুরুত্বের সাথে। কালপুরুষ (সমরেশের "কালপুরুষ" নয়) নিয়ে কমবেশী আগ্রহ আমাদের সবারই আছে।

হোমারের ওডিসি আর ইলিয়াড দুটোতেই কালপুরুষের কথা উল্লেখ আছে। বাইবেলেের কয়েক জায়গায় কালপুরুষের কথা উল্লেখ আছে। তবে অস্ট্রেলিয়ান গল্পটি খুবই সুন্দর। জুলপান (কালপুরুষ) হল একটি নৌকা। তাদের মিথ অনুযায়ী, একদা ছিল দুই ভাই যারা একদিন মাছ ধরতে গিয়ে গিয়ে নিষিদ্ধভাবে একটি মাছ ধরে খেয়েছিল। এটি দেখে সূর্যদেব প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড় পাঠালেন যেটি দুই ভাইকে নৌকাসমেত আকাশে নিয়ে গেল। এরপর থেকে ভাই দু'জন নৌকাসহ আকাশে কালপুরুষ হয়ে আছে। ওদিকে ভারতের মিথ অনুযায়ী কালপুরুষ ভাইয়াদ নামের পরিচিত যার অর্থ হল শিকারী।

এবার আসা যাক গ্রীক পুরাণে...গ্রীক পুরাণে কালপুরুষের বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায়। হেসিয়দ সর্বপ্রথম এ কাহিনী লিপিবদ্ধ করেন। ক্রিতির রাজা ওরাইয়ন ছিলেন সমুদ্রদেব পসাইডোন এবং মিনোসের কন্যা ইউরাইয়ালের সন্তান। ওরাইয়ন পিতৃপ্রদত্ত ক্ষমতার কারণে সমুদ্রের ওপর হাঁটতে পারতেন। এভাবে হেঁটে হেঁটে একবার তিনি খিয়স দ্বীপে চলে যান যেখানে তিনি মদ্যপান করে মেরোপেকে আক্রমণ করে বসেন। মেরোপে ছিল সেখানকার শাসক ওইনোপিয়নের কন্যা। ওইনোপিয়ন প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ওরাইয়নকে অন্ধ করে দেন এবং তাড়িয়ে দেন। ওরাইয়ন লেমনোসের কাছে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়েন যেখানে হেপাস্টাস তার বাহিনী নিয়ে অবস্থান করছিলেন। হেপাস্টাস তার ভৃত্য সেদালিয়নকে বললেন ওরাইয়নকে পূর্বের কোনে নিয়ে যাবার জন্য যেখানে সূর্য হেলিওস ওরাইয়নকে সুস্থ্য করে তুলবেন। ওরাইয়ন সেদালিয়নকে তার কাঁধে নিলেন। তারপর ওরাইয়ন আবার খিয়সে আসলেন ওইনোপিয়নের ওপর প্রতিশোধ নেবার জন্য। কিন্তু রাজা পাতালে পলায়ন করলেন। ওরাইয়ন এরপর ক্রিতিতে রওনা দিলেন যেখানে তিনি তার মা লেতো এবং দেবতা আর্তেমিসকে সাথে নিয়ে শিকারে মত্ত হলেন এবং শিকার করতে করতে পৃথিবীর সমস্ত পশুকে খুন শিকারের হুমকি দিলেন। মাতা আর্থ তখন প্রতিবাদস্বরূপ বিশাল একটি বৃশ্চিক পাঠিয়ে ওরাইয়নকে হত্যা করলেন এবং ওরাইয়নের মৃত্যুর পর দেবতারাজ জিউস তাকে আকাশে নক্ষত্রমন্ডলীর মাঝে স্থান দিলেন। বীরের মৃত্যুর স্বীকৃতি দিতে এরপর বৃশ্চিকটিকেও তিনি আকাশে স্থাপন করলেন।

ইলিয়াডে কালপুরুষ নক্ষত্রমন্ডল এবং সিরিয়সকে তার কুকুর হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। হেসিয়দের ’ওয়ার্কস অ্যান্ড ডেইজ্”-এ কালপুরুষ একটি নক্ষত্রমন্ডলী যে কিনা সূর্যের সাথে উদয়-অস্ত যায় এবং বছর গণনায় ব্যবহৃত হয়। ওডিসিতে ওডিসাস কালপুরুষকে ব্রোঞ্জের গদা হাতে পাতালে শিকাররত একটি হন্তারকরূপে দেখে। এখানে নক্ষত্রমন্ডলরূপে কালপুরুষ পৃথিবীর সবচেয়ে সুদর্শন সৃষ্টি, দেবী ডনের প্রেমিক যাকে আর্তেমিস হত্যা করেছিল।

কালপুরুষের প্রধান তারাগুলো হল : বেটেলগাউস, সাইফ, রিগেল এবং বেলাট্রিক্স।


তবে কালপুরুষের সবচেয়ে দর্শনীয় যা তা হল ওর কোমরবন্ধনী- দা বেল্ট অব ওরাইয়ন। কোমরবন্ধনীর ৩টি তারা হল উপর থেকে নিচে : চিত্রলেখা, অনিরুদ্ধ আর উষা। প্রায় একটা সরলরেখায় খালি চোখেই দেখা যায় এটাকে।

******************************************************************************************
সন্ধ্যা প্রায় সাতটা হতে মোটামুটি নয়টা পর্যন্ত কালপুরুষকে দেখা যাবে শীতের আকাশে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৪০

চাঁদগাজী বলেছেন:


নক্ষত্রের এই বিচিত্র অবস্হান মানুষকে বিবিধভাবে অনুপ্রাণিত করেছে বিবিধ স্তরে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.