নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওয়াজেদ বিপ্লব

আমরা মৃত্যুর আগে কি বুঝিতে চাই আর!

ওয়াজেদ বিপ্লব › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের ফুলকি : দা কাসকেইট অব ম্যালাকাইট

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫২

রাশিয়ার উরাল অঞ্চলের শ্রমিকদের সুখ-দু:খ, বেদনার অনবদ্য গাঁথা পাভেল বাজোভের ম্যালাকাইটের ঝাঁপি বইটি। জীবনের ফুলকি কাহিনীটাতে লোকপ্রজ্ঞা এক অনন্য নিদর্শন দেখি......উরাল এলাকায় রয়েছে নানা ধরনের পেশা। প্লাটিনাম কুঁড়ানো, মাটি ধুয়ে সোনা বের করা, খনি থেকে খনিজ পাথর আনা, গাছ কেটে নদীতে ভাসানো, শিকার করা, মাছ ধরা, চাষবাস- এককথায় এলাকাটা বিশাল এক কাজের ক্ষেত্র। কিন্তু এই কর্মময় এলাকায় নিবিষ্ট কর্মীদের প্রত্যেকেরই প্রয়োজন জীবনের ফুলকি। এ এমন এক জিনিস কথকের মতে যা নাকি আজকের দিনেও অনেকে ভালো করে বোঝে না।

আর গল্পের নায়ক তিমোখা 'খাটো হাত'-ও তা বুঝতো না, বরং তার ক্ষেত্রে ঘটলো আরো অদ্ভূত ঘটনা। কোন কাজেই মনযোগ নেই একনিষ্ঠ। একটা কাজ না ধরতেই ফের নতুন কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার সব কাজই জানা থাকা চাই। তিমোখার ভাষায়, চড়বো সব গাছের মগডালে! ওদিকে পাড়া-পড়শীর চিন্তায় ঘুম নেই- কী হবে এ ছেলের ভবিষ্যত! নির্দিষ্ট কোন কাজে দক্ষ না হলে পেট চালাবে কি করে...। কাজে-কর্মে তিমোখা খারাপ তা কিন্তু মোটেও নয়।

যে কাজই ধরে তাই বেশ ভালোভাবেই করতে পারে। কিন্তু তা করতে পারলে কি হবে? একটা কাজ খুঁটিয়ে শেখার পরেই আবার সে নতুন কাজ ধরে যে! এতে তার আয়ও কমে যায়, কিন্তু তা নিয়ে তার মাথাব্যাথা নেই। শেষমেষ তিমোখা নামলো কাঠকয়লা পোড়ানোর কাজে। বৃদ্ধ নেফিওদ দাদুর কাছে গিয়ে শিখতে লাগলো কাঠকয়লা নিখুঁতভাবে পোড়ানোর নানান কলাকৌশল। কিন্তু তারপরও দেখা গেলো তার বানানো সবগুলো কাঠকয়লা একইরকম ভালো হচ্ছে না। চিন্তায় পড়ে গেল তিমোখা। নিজেই মাথা ঘামাতে লাগলো কিভাবে ওগুলো আরো নিখুঁত করা যায়। শেষপর্যন্ত কাঠকয়লা পোড়ানোর কাজেই থিতু হল তিমোখা। এ কাজেই সে খুঁজে পেল জীবনের ফুলকি।

কি এই জীবনের ফুলকি?

প্রাজ্ঞ নেফিওদ দাদুর জবানিতে গল্পের শেষে ফুটে উঠেছে তা: তিমোখা সবসময় নিচের দিকে তাকিয়ে থাকতো, কিন্তু সে যখনই ওপরের দিকে তাকালো এবং নিজের কাজ আরো ভালো করতে চাইলো তখনই জীবনের ফুলকি তাকে ধরে ফেললো। সবরকম কাজের মধ্যেই আছে এই জীবনের ফুলকি, যে মানুষকে তা ধরে তা পিছন পিছন তাকে ডেকে নিয়ে যায়! সহজ-সরল ভাষায় অসাধারন একটি লোকপ্রজ্ঞা কী চমৎকারভাবে উপস্থাপিত হয়েছে এ গল্পে! তিমোখা তার জীবনের শেষপর্যন্ত কাঠকয়লা পোড়ানোর কাজই করেছিল, কারণ তার ভাষায় : সে তার কাজের মধ্যে কখনোই এই ফুলকিটাকে ধরতে পারেনি, তিমোখার চেয়ে অনেক আগে আগে ছোটে ওটা! তিমোখার অপর নাম 'খাটো হাত'-এর তাৎপর্য ভাঙ্গানো হয়েছে গল্পটির শেষবাক্যে- আজও এলাকায় তিমোখার ছেলে কিংবা ছেলের নাতিরা বেঁচে আছে যারা নিজেদের মধ্যে খোঁজে সেই ফুলকিটাকে, কিন্তু তারা এখন আর হাত নিয়ে আফসোস করে না, কারণ তারা জানে চর্চা মানুষের হাতকে এত বড় করতে পারে যে তা পৌঁছে যেতে পারে মেঘ পর্যন্ত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.