নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন একদিন স্বর্গীয় অপ্সরা আমার সম্মুখে এসে বলুক চলো দুজন পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করে আসি।

মেহেদি_হাসান.

ক্ষুদ্র একজন মানুষ লিখালিখি ভালো লাগে তবে এখনও লেখক হতে পারিনি, একজন পাঠক হিসেবেই পরিচিত।

মেহেদি_হাসান. › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ুন আহমেদের বই "নবনী" পাঠপ্রতিক্রিয়া

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:২৫


বইঃ নবনী
লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ

"চাঁদটা মনে হয় আকাশ থেকে নেমে আসছে। কি তীব্র তাঁর আলো? চাঁদের আলোয় কাকটার একটা দীর্ঘ ছায়া পড়েছে।
রক্তে আমার শাড়ি ভিজে যাচ্ছে। এত রক্ত মানুষের শরীরে থাকে?
পায়ের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকের পায়ের শব্দ। নোমান কি আসছে? সে যদি আসে তাহলে তাকে একটা কথা বলে যেতে চাই। কথাগুলি বলার মত শক্তি আমার থাকবেতো? আমি বলব, এই দেখ আমি মরে যাচ্ছি। যে মানুষ মরে যাচ্ছে তাঁর উপর কোন রাগ কোন ঘেন্না থাকা উচিত না। আমি অনেককাল আগে একটা মানুষকে যে ভাবে ভালবেসেছিলাম তোমাকেও ঠিক সেই ভাবেই ভালবেসেছি। ভালবাসার দাবী আছে। সেই দাবী খুব কঠিন দাবী। ভালবাসার সে দাবী নিয়ে তোমার কাছে হাত জোড় করছি।"

আলোচনাঃ
আচ্ছা হুমায়ুন আহমেদ কি প্রেমহীন কোন উপন্যাস লিখেছেন? তার প্রতিটা বইয়ের মধ্যেই তো প্রেম,ভালোবাসা রয়েছে তাহলে এই বইটার কভারে মোটা কালি দিয়ে কেন লিখেছেন 'হুমায়ুন আহমেদের প্রেমের উপন্যাস'? এই লেখাটা পড়েই বইটার প্রতি কৌতূহল জাগলো এবং পড়া শুরু করলাম।

কাহিনি সংক্ষেপঃ
উপন্যাসের মূল চরিত্র নবনী সে একটা গল্পের বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছিল যখন উঠল তখন তার এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হলো মা তাকে হাত ধরে খাট থেকে নামালেন যেন একটি বাচ্চা মেয়ে বাবাও তার সাথে মধুর আচরন করলেন। তার পরিবারের সবার চোখেমুখে একটা আনন্দের রেশ বয়ে যাচ্ছে ঘরে কেমন যেন উৎসব উৎসব ভাব। প্রথমে সে কিছুই বুঝতে পারে না কিসের জন্যে সবার চোখেমুখে আনন্দ,কিসের জন্যে ঘরে উৎসব ভাব। এরিমধ্যে ছোটবোন ইরা এসে তাকে জানায় আজ রাতে তার বিয়ে।

কিন্তু বিয়ের কথা শুনে নবনীর মধ্যে কোন ভাবান্তর দেখা যায় না কারন এরোকম অনেকবার তার বিয়ে ঠিক হয়ে ভেঙে গেছে। তার রয়েছে একটা ভয়ংকর অতীত যার কারনে তার বিয়ে ঠিক হলেও বিয়ে সম্পূর্ণ হয় না। এজন্যে তার পরিবারও আজকে নবনীর বিয়েতে কাউকে না জানিয়ে ঘরে পরিবার নিয়েই বিয়েরকাজ সম্পূর্ণ করতে চায়। সবার মধ্যেই উৎকন্ঠা আজকের নবনীর বিয়ে কি হবে?

রাতে সবার ভাবনাচিন্তা পেছনে ফেলে বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়। চুপ চাপ বিয়েটা হওয়ার কথা হলেও মহাধুমধামে বিয়েটা হয়। নবনীর সদ্য বিবাহিত স্বামী নোমানকে বাসররাতেই তার পছন্দ হয়ে যায়। নবনী ঠিক করে তার ভয়ংকর অতীত আজ রাজই তার স্বামী নোমানকে জানাবে কিন্তু রাতে জানাতে পারে না এবং পরেরদিন সকালেই তারা ট্রেনে ঢাকায় চলে যায়।

ঢাকায় ছোট একটা ঘর। ঘরে প্রানী মাএ তিনজন নবনী তার স্বামী নোমান আর একটা ময়না পাখি। নোমান তার বন্ধুর অফিসে একটা ছোট চাকরি করে নবনী সারাদিন বাসায় একাই থাকে। নোমানের মুখে সব সময় বন্ধু রফিক সাহেব এবং তার স্ত্রী অহনাকে নিয়েই যত কথা। নবনীর ছোট সংসার খুব ভালই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করে নোমানের বন্ধুর স্ত্রী অহনা নোমানকে নবনীর ভয়ংকর অতীত বলে দেয় এটা শুনে কি নোমান নবনীকে রেখে চলে যায়? কি এমন অতীত যার কারনে নোমান অবনীকে ছেড়ে চলে যাবে? বইটা পড়ুন সব উত্তর পেয়ে যাবেন।



মতামতঃ
বইটি পড়ে একটি গভীর বিষাদে আচ্ছন্ন হয়ে গেছি কোথায় যেন হাহাকার। হুমায়ুন আহমেদ দিয়েছেন কতগুলো বাস্তব চরিত্র। বুঝিয়েছেন সত্যিকার ভালোবাসায় আনন্দর চেয়ে বিষাদ বেশি। রফিক সাহেবের জন্যে খারাপ লেগেছে সে তার স্ত্রীর সাথে অতীতে কিছু করেছে যার কারনে স্ত্রীর কাছে একটা ঘৃণার পাত্র হযেছেন। অহনা আর নোমানের সম্পর্কটা রহস্য রয়ে গেছে আমি বুঝতে পারিনাই তাদের সম্পর্ক কি ছিল। নবনীর মামার চরিত্রটা ভালো লেগেছে। ইরা চরিত্রটা অতটা গুরুত্বপূর্ণ বহন করে নাই। উপন্যাসটি পড়ার পড়ে মনে হলো শেষ হয়েও শেষ হলো না। হুমায়ুন আহমেদ নবনীর শেষের পরিনতি রহস্য রেখে দিয়েছেন।

অবশেষে একটা কথা বলবো অসাধারণ একটি বই। পড়ার শেষে গভীর বিষাদে আচ্ছন্ন হয়ে গেছি। এবং শেষে একটা কথাই বার বার বলেছি এরোকম রোমান্টিক উপন্যাস আগে পড়লাম না কেন? নিরদ্বিধায় বলতে পারি হুমায়ুন আহমেদের সেরা রোমান্টিক উপন্যাস এটি।
হ্যাপি রিডিং

প্রথম ছবি-ফেইসবুক একটা পেইজ থেকে
দ্বিতীয় ছবি-ফেইসবুক গ্রুপ "বই চিত্রময়" থেকে

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৫৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বইটি যেহেতু পড়া নেই পাঠ প্রতিক্রিয়া ভালো লেগেছে এর বিশেষ কিছু বলতে পারছিনা।
তবে নবনীর অতিত জানতে ভীষণ কৌতুহলী হয়ে পড়লাম।
পাশাপাশি একটা কথা বলার চেয়ে যে চরিত্র শব্দটি কেন আপনি সব জায়গায় অমন করে লিখেছেন বুঝতে পারলাম না। যাইহোক পোস্টে ভালোলাগা।

শুভেচ্ছা জানবেন।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৩৩

মেহেদি_হাসান. বলেছেন: বইটি পড়ে ফেলুন ভালো লাগবে, নবনীর অতীত ও জানতে পারবেন।
আসলে এই রিভিউটা মোবাইলে লিখেছিলাম তাই ভুলটা ধরতে পারিনি এখন ঠিক করে দিয়েছি।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পোস্ট ভালোলাগায় প্রীত হলাম, শুভেচ্ছা জানবেন।

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:২৯

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: "হতাশা,গ্লানি ও বঞ্চনার পৃথিবীকে এত সুন্দর করে বানানোর কি প্রয়োজন ছিল কে জানে?"

নবনী, হুমায়ুন আহমেদ।


২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৩

মেহেদি_হাসান. বলেছেন: কথাটা ভালো লেগেছে, ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: বইটা বহুবার পড়েছি।
চমৎকার একটি বই। গভীর প্রেমের উপন্যাস।

আপনি খুব সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৭

মেহেদি_হাসান. বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ রাজীব ভাই।
ভালো উপন্যাস অনেকবার পড়া যায় হুমায়ুন স্যারের "তেতুল বনে জোছনা" ও" দিঘির জলে কার ছায়া গো" এ দুটো বই আমি কয়েকবার পড়েছি।

৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: অল্প কথায় ভাল লিখেছেন। বইটির প্রতি পাঠকের কৌতুহল জাগাতে পেরেছেন।
পোস্টে ভাল লাগা + +।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৪৯

মেহেদি_হাসান. বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ স্যার। আপনার মন্তব্যে, পোস্টে ভালো লাগা এবং প্লাসে অনুপ্রেরণা পেলাম।

৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১১

কল্পদ্রুম বলেছেন: অনেকদিন আগে পড়েছিলাম বলে কাহিনী মনে নেই। আপনার পাঠ প্রতিক্রিয়ার লেখা ভালো লেগেছে। সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৭

মেহেদি_হাসান. বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম।
শুভেচ্ছা জানবেন।

৬| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৫৮

ঢুকিচেপা বলেছেন: নবনী বইটা অনেক আগে পড়েছি।
পাঠপ্রতিক্রিয়া ভালো লেগেছে এবং আপনার লেখার স্টাইল সুন্দর।

৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:০৯

ইসিয়াক বলেছেন: যখন হুমায়ূন আহমেদের নবনী পড়েছিলাম তখন দিনে চার পাঁচটা বই পড়তাম। নবনী যেদিন বেরিয়েছিল সেদিনই কিনেছিলাম। বইটা পড়ে অন্য কোন বই সেদিন আর পড়তে পারিনি। কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল আমার প্রিয় কোন মানুষের কষ্ট আমায় দারুণভাবে স্পর্শ করে গেছে। শঙ্খনীল কারাগার,নন্দিত নরকের পর এই বইটি আমার খুব খুব প্রিয় তালিকায়।

পোস্টে ভালো লাগলো।

শুভ কামনা রইলো।

৮| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫২

প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: ++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.