![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বেশ কয়েক বছর ধরে দেখছি যে ssc রেসাল্ট দেয়ার পর পরই রেসাল্ট নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। কেউ কেউ আবার এটাকে একটা ট্রল, জোকস মনে করে সমালোচনার প্রতিযোগিতা শুরু করে দেয়। এই ব্যাপার গুলো আগেও ছিলো। কিন্তূ তখন ফেসবুক মিডিয়ার এতো দাপট না থাকাতে সমালোচনা গুলো অতটা প্রসারিত হতো না।
আমি যে বছর ssc পাশ করেছি, আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমাকে শুনতে হয়েছিলো যে "এ বছর ঝরে বক মরছে, তাই পাশ করেছি। সরকার রাজনৈতিক কারনে সবাইকে পাশ করিয়েছে" তা না হলে ফেল করতাম।
এমন অনেক কথা হজম করতে হয়েছিলো পাশ করেছিলাম বলে। আর যারা এ+ পেয়েছিলো, তারা সম্মুখে প্রশংসা পেলেও আরালে ঠিক ই কম বেশি সমালোচনার স্বীকার হয়েছিলো।
সমালোচনাকারিদের উদ্দেশ্য আমার কয়েকটি কথা।
আপনি হয়তো আপনার আমলে এ + পেয়েছেন অথবা এমন একটা রেসাল্ট করেছেন যেটা তখন ভালো রেসাল্ট বলে গণ্য হতো। সেই আপনি ই এখন যারা এ+ পাচ্ছে বা ভালো রেসাল্ট করছে, তাদের নিয়ে সমালোচনা করছে। তার পেছনে আপনার যুক্তি হল
১। এখনকার পোলাপান প্রশ্ন ফাঁস কইরা এক্সাম দেয়।
২। ৪/৫ তা টিচার এর কাছে পড়ে এরা হাইব্রিড জাতের ফসল হচ্ছে, মাগার গুনাগুন নাই।
৩। আওয়ামীলীগ সরকার পোলাপান রে পাশ করাইয়া ইমেজ বারাতেছে, ভোট ব্যাংক বাড়াইতেছে।
এমন ভাবে বের করলে আর অনেক যুক্তি আপনাদের কাছে আছে। এই জিনিস গুলো আপনাদের কাছে মহা অন্যায় মনে হয়, তাই আপনারা চেচান। চেচাইতে থাকেন, গণতান্ত্রিক দেশ, চেচানো দোষের কিছু না।
আচ্ছা একবার মনে করে দেখুন তো
- আপনি বা আপনার আমলে এমন হয়েছে কিনা যে পরীক্ষার আগের রাতে বাপ, চাচা, খুরার লেঞ্জা ধরে সেন্টার স্কুল এর হেড মাস্টার বা কোন নেতা টাইপের কারো লেঞ্জা ধরে এক্সাম হলে পরিচিতো টিচার গার্ডে দেয়ার কোন লবিং হয়েছিলো কিনা??
- মনে করুন তো, কয়টা বিষয় আপনি গদ বাধা মুখস্ত ছাড়া পড়ে পাশ করেছিলেন।
- মনে করুন তো প্রাকটিকাল এ ফুল মার্ক পাওয়ার জন্য কত জনের লেঞ্জা ধরছেন, ঘুষ দিছেন।
- -মনে করে দেখুন, কত দিস্তা কাগজ আপনি বা আপনার আমল নকল করে শেষ করেছেন।
- মনে করে দেখুন তো, আপনার আমলে এমন কোন সরকার কি ছিল যারা নিজেদের ইমেজ বাড়ানোর জন্য পাশের হার বাড়ায় নি?
খুজলে হয়তো আরও কিছু কথা বের হবে। এবার একটু ভেবে দেখুন, যে কাজ গুলো আপনি বা আপনার আমলে ঘটেছে, সেগুলকে কি আপনার অন্যায় মনে হয়??? যদি অন্যায় মনে না হয় তবে আপনি একজন আদর্শ সুবিধাবাদী।
যদি অন্যায় মনে হয়ে থাকে, তাহলে তো আপনি ও সেই অন্যায়ের সুবিধা নিয়ে ভালো রেসাল্ট করেছেন।
তাহলে হুদাই ষাঁড়ের কণ্ঠ নকল করছেন কেন??
ও আচ্ছা, আপনাদের আমলে এতো খারাপ অবস্থা ছিলো না, তাইতো বলতে চাচ্ছেন?? তাই চেঁচাচ্ছেন আর কি।
এতোখনে লাইনে আসছেন, আপনাদের আমলে পেছনের দরজার সুযোগ কম ছিলো বলে ভাগে কম পড়ে গেছে, তা না হলে আপনি চার ডবল এ+ পাইয়া জাইতেন। তাইতো??
ভাই, কি বললেন বুঝি নাই, আর একবার বলবেন?? ও আচ্ছা এই বার বুঝতে পারছি, আপনি বলতে চাচ্ছেন যে যতই লাফালাফি করুক, এরা আসলে কোন কোয়ালিটির না, এরা কিছুই জানে না। মেধাহীন। আরে মিয়া আমাদের আমলে বহুত পোলাপান দেখছি, যারা কষ্ট করে, না খেয়ে থেকে পড়াশুনা করে ভালো রেসাল্ট করছে। গিয়া দেখেন কোয়ালিটি কারে কয়?
ও আচ্ছা, তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন এরা খেয়ে কেন ভালো রেসাল্ট করলো???
ঠিক আছে ভাই মানলাম, যারা কষ্ট করে ভালো রেসাল্ট করেছে, তাদের স্যালুট। ভাই আপনি কি সেই কষ্টে ভোগাদের দলে???
না ভাই।
তাইলে আপনি কেন ভালো রেসাল্ট করলেন। আর যারা কষ্ট না করে ভালো রেসাল্ট করেছে, তাদের নিয়া আপনার এতো চুল্কানি কেন?
আপনি যখন ssc পাশ করছেন, আপনি কি জানতেন ইন্টারনেট কি? জানতেন না। কিন্তূ এই হাইব্রিড পোলাপান গুলা ইন্টারনেট ইউজ করেই দুনিয়ার অনেক কিছু জানে, যা আপনি আজ ও জানেন না। সময়ের পরিক্রমায় তারা অনেক সুবিধাই পাবে, যেটাকে তারা ইথিকাল, আনইথিকাল অনেক কাজে ব্যবহার করে জীবন ধারন করবে। যেটা আপনি করেছেন এবং আপনার আগের প্রজন্ম আপনাকে দেখে আফসোস করেছে।
ভাই, শোনেন, যে যেভাবেই ভালো করুক না কেন, আজাইরা সমালোচনা না কইরা এমন কিছু করেন যেটা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে ভালো কিছু শিখায়। কয়েক জন এর ভুলের জন্য সবাইকে একচেটিয়া দোষারোপ করার মানসিকতা পরিবর্তন করুন। নিজের পরিবারের দিকে তাকান। ছোট ভাই বোন ছেলে মেয়েদের ভালো কিছু শেখানোর বেবস্থা করুন। বুকে হাত দিয়ে তাওবা করুন নিজের ছেলে মেয়েদের জন্য যদি হাতে প্রশ্ন চলে আসে, ছুরে ফেলে দিবেন। আর সমালোচনা গীবত থেকে নিজেকে দূরে রাখবেন।
মনে রাখবেন;
রবীন্দ্রনাথ স্কুল পালাইয়া রবীন্দ্রনাথ হইছে বইলা সবাই স্কুল পালাইয়া রবীন্দ্রনাথ হবে না। সবাই লেটো গানের দলে যোগ দিলেই নজরুল হবে না। লাম্প পোস্ট এর নিচে পরলেই শেরে বাংলা হয় না, প্যান্টের উপর দিয়া আন্ডারওয়্যার পরলেই সুপার ম্যান হওয়া যায় না।
নিজেরে সুপার ম্যান বানাইতে যাইয়েন না।
এবার যারা পাশ করেছো, তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা।
তোমরা যারা এবার পাশ করেছো, তোমাদের অভিনন্দন। সৃজনশীল পদ্ধতি নামক উচ্চ বিলাসী এক পদ্ধতির গিনিপিগ হয়ে তোমাদের জীবনের প্রথম ধাপ পার করেছো, যে পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার না সিখেই তোমাদের উপর চেপে বসেছে শিক্ষা ব্যবস্থা। সেই ঘুনে ধরা শিক্ষা ব্যবস্থার নমুনা স্বরূপ তোমাদের মধ্যে কেউ ভালো করেছো প্রশ্ন পত্র ফাঁস করে, কেউ আবার সত্যিকার অর্থে পড়াশুনা করে। কিন্তূ ঘুনে ধরা সমাজ তো দোষী আর নির্দোষী চেনে না। তাই তোমরা সবাই জীবনের প্রথম ধাপটা শুরু করলে বিশাল এক অপবাদ নিয়ে, যে তোমরা ফাঁস করা প্রশ্ন পত্র দিয়ে পাশ করেছো।
তোমরা অনেকে হয়তো শিখেছ, “পাপীকে নয়, পাপ কে ঘৃণা কর”
কিন্তূ এ সমাজ পাপীকেই ঘৃণা করে। কিন্তূ একটা মজার বিষয় হলো, ইতিহাস থেকে, জীবন থেকে জততুকু জেনেছি। যতটুকু দেখেছি, তাতে শেষ বিজয়ের মুকুট টা কিন্তূ পাপী এ পড়ে, যে পাপী পাপ কে ঘৃণা করে নিজেকে শুধরে নেয় এবং সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
নিজেকে একটা প্রশ্ন করো।
- আমি ভালো রেসাল্ট করেছি, যেটা আমাকে একজন মেধাবী হিসেবে উপস্থাপন করে। আমি সত্যিই কি কিছু শিখে মেধার স্বাক্ষর রেখেছি?
- উত্তর যদি হা হয়, তবে আমাকে এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
- আর উত্তর যদি না হয়, তবে আমাকে সত্যিকারের অর্থে অন্তত কিছু শেখার চেষ্টা করতে হবে।
একটা বিষয় মনে রেখো, তোমার এই ভালো রেসাল্ট তখন ই কাজে লাগবে যখন তুমি সত্যিকারের অর্থে কিছু গেয়ান অর্জন করতে পারবে।
মনে করো তোমাকে একটা স্বর্ণের খনির সন্ধান দেয়া হলো, এবং সেই খনি থেকে কিভাবে স্বর্ণ আহরণ করতে হয় সেটাও শিখিয়ে দেয়া হলো। স্বীকৃতি স্বরূপ তুমি একটা ফার্স্ট গ্রেড এর সার্টিফিকেট পেলে যেটার মানে দাড়ায় তুমি খুব ভালো একজন স্বর্ণ আহরণকারী।
এবার তোমার কাজে নেমে পড়ার পালা। খনি থেকে স্বর্ণ আহরণ করতে হলে তোমাকে প্রথমে খনিতে যেতে হবে। এই যাওয়ার রাস্তা টাকে তুমি তুলোনা করতে পারো তোমার অর্জিত সার্টিফিকেটের সাথে। এবার তুমি খনিতে পৌঁছে গেলে। এখন স্বর্ণ আহরনের পালা।
এখানেই তোমার সত্যিকারের দক্ষতার পরিচয়। তুমি যদি সত্যি কিছু গেয়ান, দক্ষতা দিয়ে কাজ শিখে সার্টিফিকেট অর্জন করে থাকো, তাহলে তুমি অনায়াসেই খনি থেকে স্বর্ণ আহরণ করতে পারবে। আর যদি তুমি বিকল্প কোন ভাবে ভালো সার্টিফিকেট অর্জন করলে কিন্তূ দক্ষ হলে না, তাহলে তুমি স্বর্ণের খুব কাছে গিয়ে ও তোমাকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসতে হবে।
এবার তুমি ই সিদ্ধান্ত নাও, তুমি যে সার্টিফিকেট টা অর্জন করেছো কিংবা করবে, সেটার দক্ষতা দিয়ে তুমি জীবন টাকে স্বর্ণময় করতে পারবে কিনা???
যদি কোন ভুল করে থাকো, তবে সেটা মার্জনীয় যদি তুমি চাও যে ভুল কে শুধরে সঠিক কাজ টা করবে। আর যদি ভুলের ভ্রমে গা ভাসিয়ে চলো, সাময়িক সফলতা পাবে, কিন্তূ স্বর্ণের খনির মুখ থেকেই ফিরে আসতে হবে।
কারো কথায় কান না দিয়ে টিকে থাকার লড়াইয়ে নেমে পড়ো। বিজয়ী কিন্তূ সেই হয় যে সব কিছু পেছনে ফেলে টিকে থাকে। যারা টিকে থাকে না তারাই পেছনে পড়ে যায়।
অনেক কাছ থেকে এমন অনেক কে দেখেছি, এখন ও দেখছি, একটা ভালো রেসাল্ট করে আকাশে উড়তে থাকে, তাদের পা মাটিতে পড়ে না। অহংকার তাদের কুরে কুরে খায়। এক সময় তারা মাটির গভীরে হারিয়ে যায়। কেউ তাদের খবর রাখে না। আর যারা টিকে থাকার লড়াইয়ে নিজের সর্বচ্চ দিয়ে অনাবরত চেষ্টা করে যায়, একটা নির্দিষ্ট সময় পর তাদের আর পেছনে তাকাতে হয় না।
তোমাদের জন্য শুভ কামনা রইলো।
২| ১৭ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৫
ঢাকাবাসী বলেছেন: এদের জিজ্ঞেস করুন 'আমার মনে হয় আমি জিপিএ ৫ পাওয়ার সঠিক ব্যাক্তিটি না, অন্য কেউ!' ইংরেজী কর। ২০% ছাত্র বলতে পারলে হার মানব। দোষ এদের না, এদের শেখাচ্ছে আরেক ...
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৬
বিজে রায়হান বলেছেন: গোরায় গলদ হলে কিছু্ূই হবেনা, আমাদের ও হয়নি ওদের ও হবেনা।
যারা নকল করে ও প্রশ্ন পে্য়ে পাস করে দুজনের অবস্থা একই।