নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকা মাখনের পাগলামি

সামুর মডু বুঝা বড় দায়

আমি মাখন

আমি এক মহা ফাজিল। ফাজলামো করতে ভালোবাসি। আমাদের সমাজের মানুষদের নানা রকমের চিন্তা( দুঃচিন্তা)। তাই কাউকে হাসতে দেখলেই তারা ভাবে এর কয়েকটা স্ক্রু হয়তো পড়ে গেছে। আমি হাসি। কারনে-অকারনে হাসি। যে স্ক্রু আমার হাসি বন্ধ করে দেবে আমার তার দরকার নাই।

আমি মাখন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণিত ও ছায়া

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৯

আমি কখনো কোন কাজ ভেবে করি না। তার মানে এই না যে আমি ভাবি না। আমি সবসময় কিছু না কিছু চিন্তা করি। মাঝে মাঝে চিন্তাগুলো এতটাই জটিল হয়ে যায় যে ঘুমাতে পারি না। গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকি।







কোন কাজ করার সময় আমি ভাবি না। কারণ যা ভাবি তা কখনই হয় না। জীবনটা সম্ভবত বাইনারি ভিত্তিতে চলে না। এখানে হাঁ না এর ভেতরে বাহিরেও অনেক কিছু থাকে। অথবা খুবই জটিল একটা বাইনারি পদ্বতিতে চলে। হতে পারে ৫ ডাইমেনশনের একটা বাইনারি সিস্টেম। সংখ্যা ০ আর ১, কিন্তু পরিস্থিতি ভিন্ন, প্রতিটা শর্ত ভিন্ন। প্রতিটা ০ আর ১ নির্ভর করছে অন্য আরেকজোড়া ০ আর ১ এর উপর, সে ০ আর ১ ও নির্ভর করছে অন্য আরেকজোড়া ০ আর ১ এর উপর।







গল্প লিখতে বসে গণিতের দিকে চলে যাচ্ছি। আমার কোন কাজই ভেবে করা হয় না। তবে এই গল্পের সাথে গণিতের সম্পর্ক আছে। আমি গণিত বুঝি না। বুঝি না বলতে একেবারেই বুঝি না। শুধু গণিত দিয়ে যদি IQ এর পরীক্ষা নেওয়া হয় তবে আমি সুনিশ্চিতভাবেই শুন্য পাব। আবার অন্যদিকে চলে যাচ্ছি। আসলেই আমার কোন কাজ ভেবে করা উচিত না।



যাই হোক গত শনিবারের কথা বলছি, গণিত ক্লাস চলছে। এই একই কোর্স তৃতীয় বারের মত করছি। এই পর্যন্ত একবারও পাশ করতে পারিনি। এইবার যেভাবেই হোক পাশ মার্ক তুলতে হবে। না হলে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমার আর সার্টিফিকেটটা নেওয়া হবে না। ক্লাস চলছিল, বরাবরের মতই পেছনের বেঞ্চে বসে খাতায় আকি বুকি করছি। আমি কোন কাজ ভেবে করি না, তাই কখনো আকঁতে পারি না। খাতায় কিছু একটা আকার জন্যে আগে মনের ক্যানভাসে আকতে হয়। আমার মনের ক্যানভাসে হয়ত কোন সাদা পাতাই নেই। ক্লাসের বাইরে হঠাৎ হইচই শুরু হল। পাশের ক্লাস ছুটি হয়েছে। সবাই হুড়োহুড়ি করে বের হচ্ছে। ওদের কয়েকজনকে দেখে বুঝলাম প্রথম সেমিস্টার। আবার আকি বুকির দিকে ঝুকলাম। বেশ অদ্ভুদ কিছু একটা দেখলাম সেইখানে। খাতার উপর কারো ছায়া পড়েছে। আর ছায়াটা এমনভাবে পড়েছে, আর আমার ছন্নছাড়া আকিবুকির সাথে এমনভাবে খাপ খেল যে দেখে মনে হচ্ছে অন্ধকার ঘর থেকে জানালা দিয়ে কেউ একজন বাইরে থাকিয়ে আছে। আমিও থাকালাম বাইরে, ঐ প্রথম সেমিস্টারেরই কেউ একজন দাঁড়িয়ে হাসছে তার সহপাঠির কোন এক কথায়। আমার খাতায় যেই ছায়াটা পড়েছে সেটা তার গায়ে জড়িয়ে থাকা শালের। কি মনে করে ঠিক ছায়াটা বরাবর পেন্সিল দিয়ে একটা ছায়া একে ফেললাম। ছায়া আকা শেষ হতে না হতেই মেয়েটা সরে গেল। সেদিকে থাকিয়ে দেখি সে নেই। এইবার অন্য পাশে থাকিয়ে দেখি ম্যাডাম দাঁড়িয়ে আছে। কিছু একটা বলতে এসেছিলেন হয়ত। খাতার দিকে কিছুক্ষন থাকিয়ে কিছু না বলেই চলে গেলেন।







ক্লাস শেষ, যথারীতি বাসার দিকে রওনা দিলাম। আড্ডা দেওয়ার মত এখন আর কেউ নেই। আমার ব্যাচের ছেলে-মেয়েরা আরো ছয় মাস আগে বের হয়ে গেছে। আমি বসে আছি, আমার সাথে বসে আছে আমার ৪০ না পাওয়া গণিতের কোর্সগুলো।







গতকাল ভার্সিটিতে একটু তাড়াতাড়িই চলে আসতে হয়েছে। সকাল হতে না হতেই আব্বু ভয়ানক ঝাড়ি দেওয়া শুরু করাতে। লিফটে উঠেছি, আর কেউ নেই। দরজা বন্ধ হতে যাবে এমন সময় কারো ছায়া যেন দেখলাম। পায়ের আওয়াজ পাওয়াতে লিফট থামালাম। দরজার সামনে আসতেই দেখি আগের দিনের সেই মেয়েটা। ছোট্ট করে একটা থ্যাঙ্কস দিল। অপরিচিতদের কাছে আমি বরাবরই অভদ্র, কিছু না বলে লিফটে ফ্লোর নাম্বার দিলাম। আমি কখনই কোন কিছু ভেবে করি না। কিন্তু আজ করলাম ব্যাগ খুলে গতকালের খাতায় আকা পাতাটা ছিড়ে দিলাম। অপরপাশে হিজিবিজি করে কিছু লিখা আছে। মেয়েটা ছবিটা দেখল একটু মৃদু হাসল। তারপর তার ব্যাগ থেকে একটি খাতা বের করে সেই খাতার ভাজে পাতাটা রেখে দিল। খাতাটা ব্যাগে রাখার পর, নিজের নাম বলল মেয়েটা। ভাগ্যিস হাত বাড়ায় নি, না হলে দ্বিতীয় দফা অভদ্রতা করে ফেলতাম। আমিও নিজের নাম বললাম। এইবার মেয়েটা হাসতে শুরু করল। তারপর এক সময় আমার চোখে প্রশ্ন দেখতে পেয়ে হাসি থামাল। বলল, পাক্কা তিন বছর ধরে আমি আপনার পাশের বাসায় থাকি, কোনদিন একবার হাই হ্যালো বলেননি। আর আজকে লিফটটে একা পেয়ে গিফট দিয়ে দিলেন?







আজকে পাশের বাসায় যাচ্ছি, গণিত শিখতে। নিশাত গণিত অলিম্পিয়াড না কিসে যেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। গণিত নাকি তার কাছে হাতের ময়লা। মনে হচ্ছে এই যাত্রায় গণিতের নদীটা পার হয়ে যাব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.