নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উঠন্ত মুলো পত্তনে চেনা যায়।

ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।

রাকিব জাভেদ মিন্টু

জ্ঞান অর্জন করাই আমার জীবনের মূল লক্ষ্য।

রাকিব জাভেদ মিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন আপনি হিংসা পরিহার করবেন!

২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৭

প্রাসঙ্গিকতাঃ



দুনিয়ার প্রায় অধিকাংশ লোকই হিংসা রোগে আক্রান্ত, যা এক খুব ভয়াবহ ক্ষতিকর রুহানী ব্যাধি।যার পরিণাম খুবই অশুভ ও ভয়াবহ। এ রোগের রোগী ইহকাল-পরকাল উভয় জীবনেই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত. হিংসা এমন এক মারাত্বক ব্যাধি যে, মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে পাকে স্বয়ং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হিংসুকের হিংসা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উদ্দেশ্যে মহা পরিত্রাণ দানকারী আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা নিকট পানাহ চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

অর্থাৎ হে নবী! আপনি একথা বলুন যে,



ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﺣَﺎﺳِﺪٍ ﺇِﺫَﺍ ﺣَﺴَﺪَ

“আমি আরো পানাহ চাইতেছি হিংসুকের হিংসা থেকে; যখন সে হিংসা করে (সুরা ফালাক্ব-৫)।



হিংসার সংজ্ঞাঃ



অন্যজনের নিয়ামত বা সুখ-সম্পদ নষ্ট হওয়ার কামনা করা। চাই হিংসুক নিজে এর মালিক হওয়ার কামনা করুক বা না করুক । সুতরাং এ ধরণের আশা করাটাই হলঃ ঘৃণিত হিংসা। পক্ষান্তরে অন্যের নিয়ামত বা সুখ-সম্পদ নষ্ট হওয়ার আশা না রেখে অনুরপ নিয়ামত বা সুখ – সম্পদ নিজের জন্য কামনা করাটাকে (غبطة) গিবতাহ বা প্রশংসনীয় হিংসা বলে ৷



হিংসা-বিদ্বেষ করা হতে ভীতি প্রদর্শণঃ



আবু হুরাইরা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “কোন মুমিন বান্দার পেটে আল্লাহর রাস্তার ধুলা এবং জাহান্নামের আগুন একত্রে জমা হতে পারে না এবং কোন বান্দার পেটে ঈমান ও হিংসা একত্রে জমা হতে পারে না।” ( আহমাদ,ইবনে হিব্বান,নাসাঈ,হাকেম,সহীহ তিরমিযি, ও বাইহাকী)নাবী সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরোও বলেনঃ “তোমরা পরস্পর (একে অপরের বিরুদ্ধে) হিংসা করা হতে দূরে থাক। কারণ, তা হলো (দ্বীন) ধ্বংসকারী। ( সহীহ তিরমিযি ) ।



হিংসার কারণ সমূহ:



* শত্রুতা ও ঘৃনা করা।

* হিংসার শেষ পরিণাম সম্পর্কে অজ্ঞতা ।

* ঈমানের দূর্বলতা ।

* আল্লাহর বিচার ,ক্ষমতা ও হিকমতের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাসের অভাব ।

* নেতৃত্ব ও সুখ্যাতি অর্জণ করার লোভ ।

* লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয় ।

* মানুষের কল্যাণ করার ব্যাপারে কৃপনতা ।

* প্রতিপক্ষ বা সমকক্ষদের কারো যদি ক্ষমতা বেড়ে যায়, তবে তার নিজের ক্ষমতা পতনের ভয়।

* নিয়ামত বা সম্পদ লাভের সংবাদ প্রকাশ হয়ে পড়া এবং মানুষের মাঝে ওগুলোর আলোচনা হওয়া। ফলে অন্যান্য জায়গার তুলনায় গ্রাম-গঞ্জে হিংসা-বিদ্বেষ বেশী হয়। কারণ গ্রাম-গঞ্জেই সম্পদ বা প্রাচুর্য প্রাপ্তির সংবাদ বেশী প্রকাশ হয়ে পড়ে।

* নিয়ামত প্রাপ্ত বা সম্পদশালীদের অহংকার ও খারাপ আচরণ । এটা কখনও কখনও তাদের উপর সাধারণ মানুষের প্রভাব বিস্তারের কারণ হয়ে দাঁড়ায় ।



হিংসা থেকে বাঁচার উপায়



প্রথমতঃ হিংসুকের জন্য যা করণীয়ঃ



* এটা জানবে যে, সে তার হিংসার মাধ্যমে আল্লাহর ক্ষমতার বিরোধিতা করছে।

* হিংসুক মুমিনদের গুণ বা বৈশিষ্ট্য থেকে বের হয়ে যায়।

* হিংসুক ইবলীস ও ইয়াহুদীদের অনুরূপ।

* হিংসুক সাধারণভাবে সকল কাফেরদের মত, কারণ কাফেরেরা মুমিনদের কল্যাণ চাই না।

* হিংসুক এটা উপলব্ধি করবে যে, সে আল্লাহর প্রতিদ্বন্দ্বী, কারণ হিংসা করার মাধ্যমে সে মুমিনের বিরোধীতা করছে ,অথচ মুমিন ব্যক্তি হল আল্লাহর ওলীদের অন্তর্গত।

* হিংসুকের উচিত হল, সে নিজেকে হিংসার কূ-প্রভাব থেকে বাঁচাতে সচেষ্ট হবে, যেমনঃ দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, বিষণ্নতা, দুঃখ-কষ্ট ইত্যাদী। বরং কখনও কখনও হিংসা তাকে নি:শেষ করে ফেলে।

* হিংসুকের জানা প্রয়োজন যে, উঁচু-নিচু / ধনী-গরীব করার মালিক একমাত্র আল্লাহ ।

* যাকে হিংসা করা হয় হিংসুকের হিংসা তার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। বরং কখনও কখনও যাকে হিংসা করা হয় সেই লাভবান হয় ৷

* বিশেষভাবে এটা জেনে রাখবে যে, আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত রিযিক ও বয়স সম্পূর্ণ না করে কেউ মৃত্যু বরণ করবে না।

* নিজেকে এমন সব কাজে ব্যস্ত রাখবে যার দ্বারা উপকারীতা লাভ করা যায়।

* সর্বদা পরকালের আযাবকে স্মরণ করবে।

* হিংসা-বিদ্বেষ ছেড়ে দেয়ার জন্য আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা চালাবে।

* এটা জেনে রাখবে যে, হিংসার দ্বারা নিজের দুর্নাম ও তিরষ্কার, এবং নিজে অপমান হওয়া ছাড়া আর কিছুই অর্জন করতে পারবে না।

* নিজের প্রতি আল্লাহর অগনিত নিয়ামত রাজিকে সর্বদা স্মরণ করবে এবং এটা জানবে যে, আপনি যদি অন্যকে হিংসা করেন তবে তা আপনার নিয়ামত পতনের কারণ হতে পারে। কারণ আপনি আপনার প্রতি আল্লাহর নিয়ামতগুলোর শুকরিয়া আদায় করেননি।



দ্বিতীয়তঃ যাকে হিংসা করা হয় তার জন্য যা করণীয়ঃ



* আল্লাহর ভয় এবং তার সীমার হিফাজত করা।

* অভিশপ্ত শয়তান এবং হিংসুকের হিংসার অনিষ্টতা হতে আল্লাহর নিকট খাঁটিভাবে আশ্রয় চাওয়া।

* বেশী বেশী কোরআন তেলাওয়াত ও আল্লাহর যিকির করা এবং এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা।

* হিংসুকের হিংসার ব্যাপারে ধৈর্য্য ধারণ করা এবং আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ভরসা রাখা।

* প্রচন্ড ভালবাসার সাথে আল্লাহর দিকে মনোযোগ দেয়া এবং তাঁর প্রতি নিবেদিত ও বিনয়ী হওয়া।

* সকল প্রকার গুনাহ হতে এবং যা হিংসুকের প্রভাব বিস্তারের কারণ, তা হতে খাঁটি তাওবা এবং বেশী বেশী ক্ষমা প্রার্থনা করা।

* হিংসুকের ব্যাপারে ব্যস্ত না থাকা এবং তাকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা হতে বিমুখ হওয়া বরং চিরতরে তা ভূলে যাওয়া।

* হিংসুকের প্রতি ইহসান করা , তাকে দান-খয়রাত বা হাদিয়া দেয়া, যেন তার অন্তরে প্রজ্জলিত হিংসার অগ্নিশিখা নিভে যায় । তবে মনের দিক দিয়ে এটা করা খুব কঠিন ।

আল্লাহ তা’য়ালা এরশাদ করেনঃ ( وَمَا يُلَقَّاهَا إِلَّا الَّذِينَ صَبَرُوا وَمَا يُلَقَّاهَا إِلَّا ذُو حَظٍّ عَظِيمٍ)

অর্থাৎঃ আর এই গুনের অধিকারী করা হয় কেবল তাদেরকেই , যারা ধৈর্যশীল । এই গুনের অধিকারী করা হয় কেবল তাদেরকেই যারা মহাভাগ্যবান। (সূরা: হা-মীম আস্-সাজদাহঃ৩৫ )

* তাওহীদ বা একত্ববাদকে একমাত্র আল্লাহ তা’য়ালার জন্যই নির্ধারণ করা।

* অন্যের প্রতি অনুগ্রহ করা এবং অন্যের প্রশংসা প্রকাশ করা পরিত্যাগ করা।

* শুধুমাত্র যেগুলো প্রকাশ করা ছাড়া উপায় নাই তা বাদে সকল সুবিধাদি ও সুখ-সম্পদ গোপন রাখা।

* মানুষের প্রতি বিনয়ী হওয়া । কারণ তা অন্তরকে নরম করে এবং রাগ ও আক্রোশকে দমন করে।



শেষকথাঃ



উপরোক্ত ব্যবস্থাপত্র আলহামদুল্লিাহ এত কার্যকরী যে, হাজার হাজার রোগী উপকৃত হচ্ছেন এবং আরোগ্য লাভ করছেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে এ ধরণের মারাত্বক ও ভয়াভহ রুহানী ব্যাধিসহ সকল প্রকার জাহেরী-বাতেনী রোগের এসলাহ হয়ে, তাকওয়া, ঈমান-আমল ও মাওলা পাকের ইশক-মুহাব্বাত নিয়ে কবরে যাওয়ার তাওফীক দান করূন। (আমীন)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:১৪

In2the Dark বলেছেন: ভাল লাগলো :) ধন্যবাদ।

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:২১

রাকিব জাভেদ মিন্টু বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.