নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
আমরা যারা দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়মিত এই রাস্তায় যাতায়াত করি পায়ে হেঁটে, রিক্সায় কিংবা গাড়িতে; তাদের কাছে এই তিন রাস্তার মোড়টি বিস্ময়ের, বিরক্তির, স্মৃতিকাতরতার, আবার শঙ্কারও। এই তিন রাস্তার মোড়টি বহুবার তার রূপ বদল করেছে, মানে তার রূপ বদল করা হয়েছে! আর আমরা নারী, পুরুষ, বৃহন্নলা, রূপান্তকামী নির্বিশেষে সাধারণ মানুষেরা- অর্থাৎ অধ্যাপক, ছাত্র, সাংবাদিক, কর্পোরেট অফিসের বড়ো কর্তা, কেরানি, পিওন, বেকার, ভবঘুরে, ভ্রাম্যমাণ কামশিল্পী, ডাক্তার, মুচি, ঠেলাওয়ালা, বাদামওয়ালা, বড়ো ব্যবসায়ী, ভিক্ষুক; মানে সমাজের তাবৎ শ্রেণির মানুষ যারা প্রতিদিন এই রাস্তায় চলাফেরা করি, তারা এই মোড়টির রূপ বদল দেখি আর নিজেদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা করি, কেউ কেউ মুখ বুজে কেবল শোনে। আমরা কেউ কেউ বিস্মিত হই এই ভেবে যে, এই তিন রাস্তার মোড়টি যতবার সংবাদপত্রের পাতায় শিরোনাম হয়েছে, দেশ ও দশের মুখ উজ্জ্বল করে মহৎ কাজ করলেও কোনো মানুষ সংবাদপত্রের পাতায় এর সিকি ভাগও ঠাঁই পান না, কেউ কেউ তো কোনোদিন-ই পান না। বিরক্তির কারণ হলো- পাঁচ বছর পরপরই নানান রকম নির্মাণ সামগ্রী এনে জড়ো করা হয় তিন রাস্তার মোড়ে, ফলে বর্ষায় জল-কাদা হয়, শুষ্ক মৌসুমে প্রচুর ধুলাবালি ওড়ে বাতাসে, আর নির্মাণযজ্ঞ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জ্যাম লেগে থাকায় ভোগান্তিতে পড়ি আমরা। আমাদের মধ্যে যাদের বয়স একটু বেশি তারা স্মৃতিকাতরতায় ভুগি এই ভেবে যে, আহা, একদিন এখানে শিরীষ গাছের ছায়ায় বন্ধুদের সাথে কত আড্ডা দিয়েছি, প্রেয়সীর কাঁধে মাথা রেখে কীভাবে যে দিনের প্রহর পেরিয়ে সন্ধ্যা উতরে গেছে টেরই পাইনি! আর শঙ্কার কারণ হলো- তিন রাস্তার মোড়কে কেন্দ্র করে না জানি কোনদিন ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে কোপাকুপি-গোলাগুলি শুরু হয়ে যায়, আর মাঝখানে পড়ে প্রাণ যায় আমাদের মতো নিরীহ কোনো মানুষের, হয়ত যার একার রোজগারের ওপর নির্ভর করে কোনো মতে বেঁচে আছে পাঁচ-ছয়জন মানুষ।
একসময় তিন রাস্তার মোড়ের মাঝখানটা ছিল বিরাট একটা সমবাহু ত্রিভুজের মতো, লাল ইটে বাঁধাই করা ত্রিভুজের একেকটি বাহুর মতো ঘের, মাঝেখানে তিনটি প্রকাণ্ড শিরীষ বৃক্ষ ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে ছায়া দিতো; আর ত্রিভুজের ভেতরের ঘাসে ছাওয়া সবুজ জমিনে বসে বর্ণিল বিন্দুর মতো আমরা আড্ডা দিতাম নিশ্চিন্ত মনে। ত্রিভুজটা ঘিরে ছিল তিনটি চওড়া রাস্তা। রাস্তা দিয়ে মানুষ যার যার কাজে যেত আসত, ক্লান্ত হলে শিরীষের ছায়ায় বসে জিরিয়ে নিত কিন্তু কেউ কখনও আমাদের আড্ডা কিংবা প্রেয়সীর সঙ্গে সময় যাপনে বিঘ্ন ঘটাত না। শুধু যে তরুণ-তরুণীরাই আড্ডা দিত তা নয়, প্রবীণেরাও দিতেন। রাতের বেলা ভবঘুরে আর রাস্তার পাগলেরা ঘুমাত এখানে, আর ভ্রাম্যমাণ কামশিল্পীরা তাদের সুকোমল বক্ষ ও পিঠের উন্মুক্ত ঊর্ধ্বাংশ কিংবা নাভির চতুঃপার্শ্বের স্ফুরিত তুলতুলে অঞ্চলে ল্যাম্পপোস্টের আলোর নিপুণ ব্যবহারপূর্বক মদনদেবের পঞ্চবাণে কামোপহতকে এখান ধরে নিয়ে অন্য কোথাও গিয়ে কামসেবা করত!
মাঝে মাঝে দেখতাম ত্রিভুজের পূর্ব দিকের বাহু দুটির মিলনস্থলে সাদা লম্বা দাড়ি-গোঁফওয়ালা জটাধারী এক বৃদ্ধ বসে আঙুলের ফাঁকে একই সাথে চার-পাঁচটা বিড়ি নিয়ে ফুঁকতেন, তার দুই কানেও বিড়ি গোঁজা থাকত, আর তাকে ঘিরে বসে-দাঁড়িয়ে থাকত একদল মানুষ। পাঁচ-ছয়টা বিড়ি ধরিয়ে একসাখে ফুঁকতে ফুঁকতে তার মুখের কাছের দাড়ি-গোঁফ তামাটে হয়ে গিয়েছিল। বৃদ্ধের আঙুলের ফাঁকের বিড়ি অর্ধেক শেষ হলে পুরুষের রতিপাতের ঠিক আগ মুহূর্তের অস্থিরতা নিয়ে ছুঁচালো মুখে পরপর বেশ কয়েকটি টান দিয়ে বিড়িগুলো ছুড়ে দিতেন মানুষগুলোর সামনে এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সেই আধ খাওয়া বিড়ি কুড়িয়ে ফুঁকত, এমনকি মানুষগুলোর সঙ্গে থাকা অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েরাও বড়োদের বাড়িয়ে দেওয়া বিড়ি ফুঁকত! এই মানুষগুলো জটাধারী লোকটির পরিচয় দিত বিড়িপীর বলে আর নিজেদেরকে বিড়িপীরের মুরিদ বলত। মাঝারি গড়নের কৃষ্ণকায় বিড়িপীর কখনো কখনো আশপাশের রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন, তখন মুরিদরাও তার পিছু পিছু ঘুরত হাতে বিড়ির প্যাকেট নিয়ে। তার সারা গায়ে থাকত ধুলি-কালি, সম্ভবত তিনি স্নান করতেন না। বেশিরভাগ সময়ই তিনি থাকতেন উলঙ্গ হয়ে আর তার তলপেটের নিচের ময়লা জটালো সঘন পাকা-আধপাকা কেশের ভেতর থেকে নিস্প্রাণ কাছিমের মাথার মতো নেতিয়ে পড়া লিঙ্গটি থাকত তালগাছের পাতায় ঝুলন্ত মলিন হয়ে যাওয়া বাসার মতো অণ্ডকোষের ওপর। মুরিদরা তাকে নতুন লুঙ্গি কিনে দিলেও তিনি একবেলার বেশি পরনে রাখতেন না এবং খুব যত্ন করে লুঙ্গিখানা আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলতেন, মুরিদরা সেই ছাই কিছু গায়ে-মাথায় মাখত আর কিছু পুঁটলিতে বেঁধে নিয়ে যেত সম্ভবত পরিবারের অন্যান্য সদস্য কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য। মুরিদরা তাকে খাবার কিনে দিলে তিনি কখনো কখনো যৎসামান্য খাবার মুখে দিয়ে ফেলে দিতেন কিংবা কোনো মুরিদের দিকে বাড়িয়ে দিতেন, আবার কখনো কখনো খাবার ছুঁয়েও দেখতেন না।
তারপর এক মাঘের শীতের রাতে বিড়িপীর মরে পড়ে রইল ত্রিভুজের পূর্বদিকের দুই বাহুর মিলনস্থলের কাছে। বিড়িপীরের মুরিদরা এই দুঃসংবাদ শোনামাত্র ছুটে এল। বলল, ‘পীরবাবা স্বেচ্ছায় দেহ রেখেছেন।’ ভদ্রলোকেরা কেউ বিশ্বাস করল আবার কেউ বলল, ‘কোল্ড স্ট্রোক।’ যে যাই বলুক, বিড়িপীরকে নিয়ে আলোচনা আগের চেয়ে বহুগুণে বেড়ে গেল চায়ের দোকানে, সকাল-সন্ধ্যার ভিড় বাসে, রিক্সার আরোহী কিংবা পায়ে হাঁটা মানুষের মধ্যে। বিড়িপীরের অসাধারণত্ব-অলৌকিকত্ব নিয়ে আলোচনা চলতে লাগলো সর্বত্র। বিড়িপীর যে জায়গায় মরে পড়ে ছিলেন তার মুরিদেরা সেই জায়গায় গোলাপজল ছিটিয়ে ফুল-মালা, আগরবাতি ইত্যাদি সহযোগে তাদের ভক্তি প্রদর্শন করতে লাগল। মুরিদদের কেউ কেউ জায়গাটা আপাতত বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সালু কাপড়ে ঢেকে দেবার কথাও ভাবল।
আমি তখন সবে চাকরিতে জয়েন করেছি, দুপুরের পরপরই অফিস থেকে বেরিয়ে তিন রাস্তার মোড়ে এসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি, আশপাশে যুগল যৌবন মেতে আছে প্রেমময় খুনসুটিতে, বিড়িপীরের মৃত্যুস্থান ঘিরে কয়েকজন মুরিদ বসে আগরবাতি জ্বালিয়ে নিজের মনোবাঞ্ছা পূরণের অভিলাষ জানাচ্ছে বিড়িপীরের পরলোকগত আত্মার কাছে! তখনই কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং একদল পুলিশ এসে আমাদের হটিয়ে দিল। কয়েকদিন পর দেখলাম জায়গাটা টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং কয়েক মাসের মধ্যেই দেখলাম ছোট ছোট ঝাউগাছ আর সুশোভিত ফুলের বাগানের মধ্যে বাঁধানো বেদির ওপর স্থাপন করা হয়েছে দারুণ এক ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটা দেখতে হুবহু মানুষের মতো নয়, তবে মানুষের আদল বোঝা গেলেও নারী কি পুরুষ তা বোঝা যায় না! ভাস্কর্যটার নাম ‘মানুষ’। আমরা বেশিরভাগ মানুষ এতদিন জানতাম-ই না যে ভাস্কর্য একেএক উচ্চমার্গের শিল্প এবং এই বিষয়ে বিশ্বের বিখ্যাত সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোও হয়, আর ভাস্কর্য বোঝার তো প্রশ্নই আসে না! আমরা সকালে কাজে যাই, রাতেরবেলা ফিরে এসে একপেট ভাত খাই, সিরিয়াল দেখতে দেখতে হাত থেকে রিমোটটা ফসকে গেলে বুঝতে পারি ঘুম পেয়েছে; নিজে মশারি টাঙিয়ে নয়ত বউয়ের টাঙানো মশারির ভেতরে ঢুকে বউকে জাপটে ধরে শুই, বউয়ের শরীর ভালো থাকলে সারাদিনের অফিসের মানসিক চাপ আর শরীরের তাপ নামিয়ে ভোঁস ভোঁস করে ঘুমাই। রাতে শুয়ে শুয়ে মাথায় যদিবা খানিকটা অন্যরকম ভাবনা আসে তো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ক্ষিধের ভয়ে তা পালায়! সেই জন্ম থেকে পেট আর পুঁজির কাছে রামধরা খেয়ে আছি। ভাস্কর্য নিয়ে মাথা ঘামানোর সময়-ই পাই না, কেননা মাথাটা আমার দেহের সাথে থাকলেও মগজটা ভাড়া দিতে হয়েছে পেটের কারণে, তাও যদি পেটে পরিপূর্ণ প্রশান্তি মিলত!
তবে বাসে কিংবা চায়ের দোকানে ভাস্কর্যটি নিয়ে নানা কথা শুনতে পেতাম, কেউ কেউ ভাস্কর্যশিল্প নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করত আর আমরা বেশিরভাগ মানুষই মুখ বুজে শুনতাম সে-সব কথা। তখনই কারো কারো মুখে শুনেছিলাম মাইকেলঅ্যাঞ্জেলো, ফ্র্যাঁসোয়া অগুস্ত র্যোঁদা, রামকিঙ্কর বেইজ, নভেরা আহমেদের মতো দেশ-বিদেশের বিখ্যাত সব ভাস্করের নাম। তিন রাস্তার মোড়ের ‘মানুষ’ নামক ভাস্কর্যটি সম্পর্কে কেউ বলত, ‘ভাস্কর্যটির বিমূর্ত শৈলী ভীষণ আকৃষ্ট করে, দৃষ্টি ও চিত্ত সুখকর’; কেউ বলত, ‘ভাস্কর্যটির ভেতরে এক অদ্ভুত শক্তি আছে যা মানুষকে প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগায়’; কেউ বলত, ‘ভাস্কর্যটির উচ্চতা কম, তাছাড়া লাইটের ব্যবহার ঠিক না হওয়ায় রাতেরবেলা যথার্থ ফোকাস হয় না’; এরকম নানা কথা শুনতে পেতাম। আমরা তাদের কথা কিংবা ভাস্কর্যের অন্তর্গূঢ় ব্যাখ্যা কিছু বুঝতাম আর কিছু কেরানির কাজে দক্ষ মগজ ধারণ করা মাথার ওপর দিয়ে যেত।
আবার কেউ কেউ গলা খাঁকারি দিয়ে বলত, ‘এইগুলা শিরক কর্ম! ইসলামে মূর্তি জায়েজ নয়। সাতসকালে মূর্তি দেখে কাজে বের হওয়া গুণাহ্, এই মূর্তি সরিয়ে ফেলা উচিত।’ কেউ ওয়াক তুলত, ‘নাউজুবিল্লাহ, নাউজুবিল্লাহ, এসব কাফের হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি, পবিত্র ইসলামের জমিনে কাফের সংস্কৃতি চলতে পারে না, আমরা ক্ষমতায় গেলে এই মূর্তি ভেঙে ফেলে আরবীতে আল্লার নাম স্থাপন করা হবে।’
এইসব নিয়েই ছিল আমাদের দৈনন্দিন যাতায়াত কিংবা চায়ের দোকানে বসে এককাপ দুধ কিংবা আদা চা পান। তবে আমাদের অনেকের কাছেই ভাস্কর্যটি ভালো লাগত। আমরা যারা শিল্পের গূঢ় তত্ত্ব কম বুঝতাম কিংবা যাপিত জীবনে দেখাদেখি ধর্মপালনের বাইরে রীতিমতো বেশ ধারণ করে ধর্মচর্চা অথবা কাজকর্মের ভারে রাশভারী ধর্মগ্রন্থ পড়ার সময় পেতাম না, তাদের কাছে ভাস্কর্যটিকে মনে হতো দারুণ এক সৌন্ধর্যের প্রতীক! আর মানুষও ভাস্কর্যটিকে ঘিরে বসতে পারছে, আড্ডা কিংবা প্রেমের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা আসছে না। বেশ তো!
শুনেছি ভাস্কর্য নির্মাণের সময় বিড়িপীরের মুরিদরা গাইগুই করেছিল ওখানে মাজার নির্মাণের দাবী জানিয়ে, কিন্তু সরকারি লোকের কাছে তাদের গাইগুই ধোপে টেকেনি সম্ভবত এই কারণে যে, বিড়িপীরের মুরিদদের সংখ্যাটা খুব বেশি ছিল না এবং তাদের মধ্যে শক্তিশালী নেতৃত্ব গুণসম্পন্ন কেউ ছিল না। তবে বিড়িপীরের মুরিদ যেভাবে বাড়তে শুরু করেছিল, যদি আরও বছর দশেক তিনি বেঁচে থাকতেন, তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় তার মুরিদদের ভেতর থেকে নেতৃত্ব গুণসম্পন্ন কাউকে না কাউকে পাওয়া যেতই, তখন মুরিদদের সংখ্যাকেও অগ্রাহ্য করার উপায় থাকত না। আর বিষয়টা স্পর্শকাতর এবং ভোটের কথা ভেবে সরকার এখানে ভাস্কর্য স্থাপনের বদলে বিড়ি পীরের মাজার গড়ে দিত। বিড়িপীর প্রতিষ্ঠা পেয়ে যেতেন। সেইদিক থেকে বলতে হবে বিড়িপীরের ভীষণ দূর্ভাগ্য, বড়ো অসময়ে চলে গেছেন তিনি। নইলে গুলিস্থানের ব্যস্ত রাস্তার মাঝখানে গোলাপ শাহ্’র মাজারের মতো এখানেও বিড়িপীরের মাজার গড়ে উঠত এবং দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসত হাজার-হাজার মুরিদ। নিজেদের জীবন আর বিড়িপীরের জীবন দেখার অভিজ্ঞতায় আমাদের কারও কারও উপলব্ধি এই যে, প্রতিষ্ঠা অনেকটা লটারীর মতো, শ্রম এবং মেধা থাকা সত্ত্বেও সকলেই এই লটারী জিততে পারে না; এক্ষেত্রে সময় এবং সুযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিড়িপীর সময়ের আগেই মরে যাওয়ায় তার প্রতিষ্ঠা লাভ হয়নি।
তারপর একসময় ‘মানুষ’ নামক ভাস্কর্যটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা একেবারে মিইয়ে গেল। নগর কিংবা নগরের বাইরে দেশের অন্যত্র ঘটা নতুন নতুন ঘটনার আড়ালে চলে গেল ভাস্কর্য। আমরাও যাতায়াতের পথে কোনো দিন ভাস্কর্যের দিকে তাকাতাম, কোনোদিন বা ভাস্কর্যের কথা মনেই থাকত না। কিছুকাল পর একদিন সচেতনভাবে আমরা লক্ষ্য করলাম ধুলোবালির আগ্রাসন এবং পাখ-পাখালির পুরীষে ভাস্কর্যটি কিছুটা মলিন হয়ে পড়েছে, যদিও তাতে ভাস্কর্যটির বাহ্যিক সৌন্ধর্য কিংবা অন্তর্নিহিত শক্তি এতটুকুও ম্লান হয়নি। কিন্তু ভাস্কর্যের এই মলিনতা আমাদেরকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় জাতি হিসেবে আমাদের অপরিচ্ছন্নতা, বিপুল আগ্রহ নিয়ে কোনো বস্তু নির্মাণ করলেও কিছুদিন পরই সেই বস্তুর প্রতি চরম উদাসীনতা, আর পরিচর্যার অভাবে সেই মূল্যবান বস্তুটিকে নষ্ট করার বদস্বভাব।
এমনিভাবে বছর পাঁচেক ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার পর হঠাৎ একদিন দেখলাম ভাস্কর্যটি নেই এবং জায়গাটি পুনরায় টিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। আমাদের মনে নানা ধরনের প্রশ্ন উঁকি দিতে থাকলে সেই প্রশ্ন দীর্ঘ হবার আগেই পরদিন সকালের খবরের কাগজেই মিলল উত্তর- ভাস্কর্যটি ওখান থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে এই জন্য যে ওখানে একজন সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে। ‘মানুষ’ নামক ভাস্কর্যটি অপসারণের প্রতিবাদে কিছু ছাত্র-ছাত্রী, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং বামপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী মানববন্ধন করলেন বটে কিন্তু তাতে কোনো লাভ হলো না, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ‘মানুষ’ নামক ভাস্কর্যের জায়গায় স্থাপন করা হলো সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য।
আর ত্রিভুজটাও সবদিক থেকে আগের চেয়ে কিছুটা ছোট করে ফেলা হলো জনগণের যাতায়াতের স্বার্থে রাস্তা আরও চওড়া করার জন্য। পূর্বদিকের যে স্থানটায় বিড়িপীর মরে পড়ে ছিল সেই স্থান রাস্তার সাথে মিশে গেল। এতে করে সমবাহু ত্রিভুজটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের রূপ নিলো, সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য সর্বদিক তো বটেই এমনকি অনেক দূর থেকেও যাতে দেখা যায় সে-জন্য ভাস্কর্য স্থাপনের আগেই শতবর্ষী শিরীষ বৃক্ষ তিনটি কেটে ফেলা হয়েছিল এবং ত্রিভুজটি লোহার গ্রিল দিয়ে ঘিরে বন্ধ গেটে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হলো ‘সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ’ লিখে। আমি অনেকদিন খেয়াল করেও সেখানে কখনো কোনো অসাধারণজনকে দেখতে পাইনি!
এই যে ‘মানুষ’ নামক ভাস্কর্যটি অপসারণ করে সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য স্থাপন করা হলো, এটা নিয়ে কিন্তু আলোচনা-সমালোচনা কম হলো না। কি চায়ের দোকানে, কি বাস-গাড়িতে, সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে গেল। কেউ কেউ বললো, ‘পূর্বের ভাস্কর্যটি সরিয়ে এখানে নেতার ভাস্কর্য স্থাপন করা ঠিক হয়নি।’ কেউ বলল, ‘কাজটা প্রসংশনীয় নিঃসন্দেহে, কেননা দেশের জন্য এই লোকটির অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই।’ আবার কেউ বলল, ‘কোনো মানুষেরই মূর্তি বানানো জায়েজ না, শিরক। দেশে আল্লাহ’র আইন প্রতিষ্ঠিত হলে সব মূর্তি ধ্বংস করা হবে।’
‘মানুষ’ নামক ঐ ভাস্কর্যটির মতোই একসময় সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা মিলিয়ে গেল আমাদের দৈনন্দিন দিনযাপনের ব্যস্ততায় আর নতুন নতুন খবরের ভিড়ে। সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্যের কথা আর মনেই পড়ত না, চলাচলের পথে যদিবা কখনও চোখে পড়ত, তাও ভাসা ভাসা।
এরপর পাঁচ বছর এই মোড়টি আমাদের কাছে রাস্তার আর পাঁচটা সাধারণ মোড়ের মতোই ছিল, কিন্তু পাঁচ বছর অতিবাহিত হতেই আবার সংবাদ শিরোনাম হলো মোড়টি! আবার আমাদের চায়ের দোকানে কিংবা আর বাসের আলোচনায় ফিরে এলো এই বিস্ময়কর, বিরক্তকর, স্মৃতিকাতরতার আর শঙ্কার মোড়টি। কেননা একরাতে সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্যটি ওখান থেকে অপসারণ করা হলো এই অভিযোগে যে, তার কর্মকাণ্ড গণতান্ত্রিক ছিল না, তিনি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন আর দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে ছিলেন মারাত্মক ক্ষতিকর। সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য অপসারণের পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত শুনতে পেলাম। কেউ বলল, ‘ভাস্কর্য অপসারণ করার জন্য বর্তমান সরকারকে সাধুবাদ জানাই। এই লোকটি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষের স্বাধীনতা হরণ করেছিল।’ কেউ কেউ নাক সিঁটকালো, ‘এ আর কিছু নয়, নষ্ট রাজনীতি।’ যথারীতি একশ্রেণির লোককে বলতে শোনা গেল, ‘কোনো ধরণের মূর্তিই ইসলামে জায়েজ নয়! ’
এইসব আলোচনা নিয়ে কোথাও কোথাও একটু-আধটু হাতাহাতিও হয়ে গেল, কিল-ঘুষিতে কারো কারো ঠোঁটের পাশ দিয়ে কষ গড়ালো এবং কারো কারো গাল ফুলে গেল। তবু ভালো যে রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হলো না, লাশ পড়ল না, শুধু বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা সুর চড়িয়ে জানান দিল, ‘ক্ষমতায় গেলে ওখানে পুনরায় আমাদের নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে।’
আমরা যারা আটপৌরে মানুষ, তারা সকালে কাজে যাই আর রাতে ফিরি। কোনো ঝামেলায় জড়ানো আমাদের অভ্যাসে নেই যতক্ষণ না ঝামেলা নিজে এসে আমাদেরকে না জড়ায়। রাস্তায় হাঁটাচলা করি, ঠেলাঠেলি করে বাস-গাড়িতে যখন যাই তখন কিছু কিছু কথা কানে আসে। আসলে অনর্থক সে-সব কথা, সারবত্তা কিছু নেই, লাভ তো নেই-ই। যেখানে লাভ নেই সেখানে মাথা খাটানোর সময় আমাদের কোথায়! আমরা ভাস্কর্য নিয়ে পত্রিকায় পক্ষে-বিপক্ষে কলাম পড়ি, টেলিভিশনের টকশোতে বাকযুদ্ধ দেখি। মজাই লাগে!
আমরা অনেকেই ভিড় বাসে অফিসে যাবার পথে ভাবতাম- নিশ্চয় ‘মানুষ’ নামক সেই ভাস্কর্যটি পুনঃস্থাপন করা হবে, এটা ভেবে আমার বেশ ভালোই লাগত, কেননা ভাস্কর্যটি আমি খুব পছন্দ করতাম। কিন্তু ‘মানুষ’ নামক ভাস্কর্যটি পুনঃস্থাপনের ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক দলই কিছু বলল না। আমরা অপেক্ষায় রইলাম কী হয় তা দেখার জন্য।
একদিন অফিসে যাবার পথে আমরা প্রচণ্ড যানজটে পড়লাম এবং যথা সময়ে অফিস ধরতে পারবো কি-না সেই চিন্তায় দরদর করে ঘাম ঝরতে লাগল আমাদের শরীর থেকে। কিন্তু অনেকক্ষণ বাসে বসে থাকার পরও যখন বুঝতে পারলাম সহসাই সিগন্যাল ছাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, তখন আমরা অনেকেই বাস থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করলাম। তিন রাস্তার মোড়ের কাছটায় এসে প্রচুর পুলিশ দেখতে পেলাম আর যানজটের কারণ সম্পর্কেও জানতে পারলাম। আমরা যারা বাস থেকে নেমে সময় মতো অফিস ধরার জন্য একে অন্যকে ঠেলেঠুলে হাঁটতে শুরু করেছিলাম তারা সবাই দাঁড়িয়ে পড়লাম মোড়ের কাছে এসে, কেননা পুলিশ কাউকেই সামনের দিকে যেতে দিচ্ছে না। অল্পক্ষণের মধ্যেই আমরা দেখতে পেলাম- সারা শহর প্রদক্ষিণ শেষে পূর্বদিকের রাস্তা দিয়ে ট্রাকে করে একজন প্রয়াত রাজনৈতিক নেতার প্রকাণ্ড ভাস্কর্য নিয়ে একটি মিছিল এগিয়ে আসছে মোড়ে দিকে, পূর্বে মোড়ের যে-জায়গায় ‘মানুষ’ নামক ভাস্কর্য, অতঃপর ‘মানুষ’ নামক ভাস্কর্য অপসারণ করে একজন সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছিল, সেই জায়গায় এখন প্রয়াত রাজনৈতিক নেতার এই প্রকাণ্ড ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে। এ কারণেই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিপরীত সুর থাকলেও অনেকেই সুর চড়ালো এই বলে যে, ‘স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের জন্য এই নেতা ছিলেন নিবেদিত প্রাণ, কৃতজ্ঞতা স্বরূপ জাতিকে তার ভাস্কর্যই স্থাপন করা উচিত।’
সামনে তাকিয়ে দেখলাম- কে নেই এই মিছিলে! তাবড় তাবড় রাজনৈতিক নেতা, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংগীতশিল্পী, চিত্রকর, ভাস্কর, সিনেমার নায়ক-নায়িকাসহ যেন এক তারার মিছিল! সাবেক রাষ্ট্রপতির অগণতান্ত্রিক শাসনামলে এদের অনেকে তার কাছ থেকে নানান রকম সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। তা নিন, আমাদের মতো কেরানিদের অত ভেবে কাজ নেই! তাদের দেখতে পেয়ে আমরা কেরানির দল যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম! এতদিন যাদেরকে সিনেমা-টিভিতে দেখেছি, টকশোতে দেখেছি, বইমেলায় দেখেছি নিজের বই হাতে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে, পত্রিকায় পাতায় যাদের কলাম পড়েছি, তাদেরকে এত কাছ থেকে স্ব-শরীরে দেখতে পেয়ে আমরা একেবারে হাড়-হাভাতের মতো তাকাতে লাগলাম বিলম্বে অফিসে ঢুকে বসের ধমকানি খাবার কথা ভুলে! গোল্লায় যাক অফিস! অফিস রোজ করতে পারব, কিন্তু এই তারাদের তো রোজ দেখতে পাব না, এরা তো আর আকাশের তারা নন যে রাতের বেলা আকাশের দিকে তাকালেই দেখা যাবে, এরা যে আকাশের তারার চেয়েও দুর্লভ!
মিছিল ঘিরে রেখেছে নানান বাহিনীর নিরাপত্তা কর্মীরা, আমাদের মতো আমজনতাকে মিছিলের ধারে কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছে না; তা না দিক, দূর থেকে যে দেখতে পাচ্ছি এই আমাদের চৌদ্দ পুরুষের ভাগ্য! ট্রাকসহ তারার মিছিলটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের কাছাকাছি গিয়ে থামল। কর্মীরা নেতার নামে স্লোগান দিতে দিতে ট্রাক থেকে খুব সতর্কভাবে ভাস্কর্য নামিয়ে ত্রিভূজের দিকে এগোতে লাগল। নেতা-কর্মীরা মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে লাগল নেতার নামে, শিল্পীরা কেউ দু-এক কলি দেশাত্মবোধক কেউবা দু-চার লাইন রবীন্দ্র সংগীত গাইল, কতিপয় আবৃত্তি শিল্পী গলার রগ ফুলিয়ে উদাত্ত কণ্ঠে নেতাকে নিয়ে লেখা কবিতা আবৃত্তি করতে শুরু করল! ভাস্কর্য নিয়ে গান-কবিতা সহযোগে ত্রিভূজের মাঝখানের নবনির্মিত বেদির কাছাকাছি যেতেই বিস্ময়ে থমকে দাঁড়াল সবাই! এমনকি আমরা যারা কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছি তারাও। এতক্ষণ আমরা তারা দেখছিলাম, আর তারারা দেখছিল নেতার ভাস্কর্যের চাঁদমুখ! তাই বেদির দিকে কারো দৃষ্টি পড়েনি। দৃষ্টি যখন পড়ল তখন দেখলাম, বেদির ওপর বসে একটি উলঙ্গ শীর্ণ ধুলিমাখা কালো ছোট্ট শিশু আপন মনে নিজের নুনুর মাথা খুঁটছে, গালে তার ময়লা কেটে শুকিয়ে যাওয়া অশ্রুর দাগ!
ঢাকা।
নভেম্বর, ২০১৫
০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৩
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভীষণ অনুপ্রাণিত হলাম আপনার মন্তব্যে। আপনার প্রত্যাশা মতো কাটুক নতুন বছর। ভাল থাকবেন।
শুভকামনা..........
২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনুসরণ করছি
০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৪
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা.......
৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০২
হাসান মাহবুব বলেছেন: অসাধারণ! সময় এবং ক্ষমতার পালাবদলে তিন রাস্তার বিস্তার বদলে যাওয়া, ভাস্কর্য স্থাপন এবং সরিয়ে নেয়ার মধ্যে রাজনৈতিক কালক্রমের ইতিহাস রচিত হওয়া, এবং অবশেষে বেদিতে বসে থাকা নগ্ন শিশুর মাধ্যমে এই সুবিধাবাদী এবং নীতিহীন রাষ্ট্রকে ভর্ৎসনা করা, সবকিছুই ছিলো চমৎকার এবং ভাবনার বুদবুদ সৃষ্টি করা।
শুভকামনা রইলো।
০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৮
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয় হাসান মাহবুব, আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য। নতুন বছরে সকল প্রত্যাশা পূরণ হোক। খুব ভাল থাকবেন।শুভকামনা নিরন্তর........
৪| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০১
গেম চেঞ্জার বলেছেন: হামা ভাইয়ের ফেসবুক শেয়ার থেকে খোঁজ পেয়ে আসছিলাম। উচ্চমানের সাহিত্য তা বলাই যায়। ক্ষমতাবানদের অসুস্থ্য চর্চা, সহজ সরল মানুষের প্রবণতা, মানুষের জীবনাচরণ নিয়ে দারুণ একটি গল্প লিখেছেন।
এইরকম সাহিত্যের আরো আশা করছি আপনার কাছ থেকে।
০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৬
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ। অনুপ্রাণিত হলাম।
খুব ভাল থাকবেন। নববর্ষের শুভেচ্ছা.........। শুভকামনা.........
৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২৩
সোমহেপি বলেছেন: আহ ! nice ! very nice !
০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৪
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভকামনা............
৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৫
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
দর্পনকথন ৷
(পঞ্চশাল)ঘোরগ্রস্ত আটকে থাকা উলম্ব নয়ত সমান্তরালে ৷ নির্লিপ্ত গ্রহণকাল কৃঞ্চপক্ষে গমন ৷বৃত্তবন্ধী তো বৃত্তায়ন উগড়াবে আশার নির্মেদ ছটা ৷
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৪
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
খুব ভাল থাকবেন। শুভকামনা রইলো...........
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৯
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এতো ভালো গল্প অনেকদিন পড়িনি| সত্যি বলছি| আমি অনেকের পোস্টে গিয়ে উৎসাহ দিতে পিঠ চাপড়ে বলি "ভাল লিখেছেন| চমৎকার"| এর মধ্যে উৎসাহ দেয়ার একটা ব্যাপার থাকে, তবে তার মধ্যে কিছু লেখা থাকে আসলেই চমৎকার| আপনাকে তেমন কোন কথা বলছি না| যা বলছি, ভিতর থেকে, পাঠ করার পরের অনুভূতি থেকে|
এত চমৎকার আর এত বিচিত্র বিষয় এই গল্পে যে শুধু গল্পটা নিয়েই একটা প্রবন্ধ লেখা যায়| লেখা যায় একটা রিভিউ|
নির্বাচিত পাতাকে ধন্যবাদ গল্পটিকে নির্বাচিত পাতায় অপাঠ্য কিছু কবিতার সাথে চমৎকার এই গল্পটাকে স্থান দেয়ার জন্য