নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিশু মিলন

মিশু মিলন

আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।

মিশু মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পদক

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৩৭

সতীর বন্ধুরা, ওর মায়ের বন্ধুরা এবং প্রতিবেশী কাকিমা-জেঠিমারা ওর সামনে ওর বর অংশুমানের প্রশংসা করলেও ভেতরে ভেতরে তারা ওর বরভাগ্য নিয়ে ঈর্ষায় জ্বলে মরে, তা ও নিজেও বুঝতে পারে, আর বুঝতে পেরে ওর যেন অলিম্পিকে চারশো মিটার দৌড়ে স্বর্ণ জয়ের আনন্দ হয়! অংশুমান একে তো স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান, সুদর্শন, এমন মিশুক স্বভাবের যে অতি অল্প সময়ের আলাপেই যেন মনে হয় কতোকালের চেনা; তার ওপর ইঞ্জিনিয়ার, সরকারী চাকরি করে; খাসা স্বর্ণপদক, আর সেই পদক এখন সতীর গলায়!

অষ্টমঙ্গলায় গিয়ে বাবার বাড়িতে গিয়ে সতী নিজেও বরের হয়ে ঢাক পিটিয়েছে ইচ্ছে মতো! সতীর মুখে ওর বর আর শ্বশুর-শাশুড়ি-ননদদের প্রশংসা শুনতে শুনতে পাড়ার মানুষ ভেতরে ভেতরে ঈর্ষাকাতর তো বটেই বিরক্তও হয়েছে কেউ কেউ। সতী আরো বেশি বেশি করে বলেছে তাদের সামনে, যারা তাকে একটু অবজ্ঞার চোখে দেখতো। আর একমাত্র জামাইয়ের প্রশংসায় মুখর ময়না, সতীর মায়ের নাম- ময়না। পড়শীরা কানাঘুষা করতে শুরু করেছে সতীর আশির্বাদ হবার পর থেকেই- ‘ভালো জামাই পেয়ে দেমাগে সতীর মায়ের পা মাটিতে পড়ছে না!’

অষ্টমঙ্গলা থেকে কালই ফিরেছে সতী আর অংশুমান, এখন সতী মন দিয়ে বর আর শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে সংসার করতে চায়। বিয়ে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনের আনাগোনায় ঘর-দোর এলোমেলো হয়ে আছে, তাই ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে ঘর গোছাতে শুরু করেছে সে।
ওদের শোবার ঘরের দক্ষিণ দিকের দেয়ালে কাঁচ দিয়ে বাঁধাই করা লোকনাথ ব্রহ্মচারীর একটা ছবি টাঙানো, ছবিটা ভালোভাবে সতীর দৃষ্টিতে পড়ে এবং মনোযোগ পায় বাসররাতে, যখন অংশুমানের মাথা ওর বুকে! লোকনাথ ব্রহ্মচারীর মতো একজন আরাধ্য পুরুষের সামনে সঙ্গম করতে ওর খুব অস্বস্তিবোধ লাগছিল, কিন্তু নতুন বউ লজ্জায় কিছু বলতেও পারেনি অংশুমানকে। তার পরদিন তো অষ্টমঙ্গলায় চলে গেল আর ফিরে এলো গতকাল রাতে।

তাই আজ ঘর গোছানো শুরু করতেই ছবিটার দিকে দৃষ্টি পড়ে সতীর, ছবিটা এখান থেকে সরিয়ে ঠাকুর ঘরে টাঙাতে চায় সে। বিছানায় উঠে ছবিটা পেরেক থেকে খুলতেই ছবির পিছন থেকে কিছু একটা পড়ে বিছানায়, সে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে ধুলো আর ঝুলমাখা বাদামি কাগজের ছোট্ট প্যাকেটে মোড়ানো কিছু একটা। ছবিটা বিছানায় রেখে প্যাকেটটা হাতে নিয়ে ধুলো-ঝুল ঝেড়ে সে বাদামী কাগজটা ছিড়ে ফেলতেই ভেতরের ছোট্ট প্যাকেট দেখে তার দৃষ্টি হোঁচট খায়!

তার মনে হয়- তাদের বিয়ে হয়েছে সাতদিন, কিন্তু এই প্যাকেটটা তো সাতদিন আগে কেনা নয়, বাদামী কাগজের গায়ে যে পরিমাণ ধুলো-ঝুল ছিল, তাতে তো মনে হয় কমপক্ষে তিন-চার মাস আগে কেনা, তখন তো তার সঙ্গে বিয়ের আলাপ হয়নি!

সতীর জলভরা চোখের দৃষ্টিতে ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসে তার হতের কন্ডোমের প্যাকেটের গায়ের সোনালি পদকের ছবিটা আর পদকে লাল রঙে লেখা- আসল পুরুষ!


ঢাকা।
জানুয়ারি, ২০২২

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৪৯

তানীম আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: হায় B:-) হায় :`>

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.