নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিশু মিলন

মিশু মিলন

আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।

মিশু মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে যেতে হতো মধুর ক্যান্টিন কিংবা শাহবাগের কোনো রেস্তোরায়। এটা নিয়ে বন্ধুরা আমাকে খোঁচাত, বলত আমার নাকি বেশি শুচিবাই। ওরা মাঝে-মধ্যে খেত রাস্তার খাবার আর আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত। এরপর ২০১৫ সালে আইসিডিডিআরবির এক গবেষণায় জানা গেল যে ঢাকার ৫৫ শতাংশ পথখাবারে নানা ধরনের জীবাণু রয়েছে। ৮৮ শতাংশ বিক্রেতাদের হাতে জীবাণু পাওয়া গেছে।

যারা রাস্তায় খাবার বিক্রি করেন, তাদের হাতে জীবাণু থাকা খুবই স্বাভাবিক। এদের কেউ কেউ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাস্তাতেই থাকেন। অনেকে দুপুরের পর থেকে খাবার বিক্রি করেন। এই যে এরা দিনের একটা দীর্ঘ সময় রাস্তায় থাকেন, এই সময়ে এদেরকে বেশ কয়েকবার প্রসাব করতে হয়, কারো কারো পায়খানাও করতে হয়। এই কাজগুলো এরা কোথায় সারেন? পায়খানা করেন আশপাশের কোনো শপিং মলের টয়লেটে। কেউ কেউ এইসব টয়লেটে প্রসাব করলেও অনেকেই আশপাশের অপেক্ষাকৃত নির্জন রাস্তাতেও করেন। ফলে এইসব খাদ্য বিক্রেতাদের সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কোনো উপায় থাকে না। সঙ্গত কারণেই তাদের হাতে জীবাণু থাকে, আর সেই হাতেই তারা তৈরি করেন সুস্বাদু সব খাবার, যা শহরের অনেক শিক্ষিত মানুষও চেটেপুটে খায়! কী খায়? পশ্চাৎদেশের জীবাণু! শীত-গ্রীষ্ম বারোমাসই এই ধরনের জীবাণু পথখাবারকে সমৃদ্ধ করে!

আমি একটু আগে বাইরে গিয়েছিলাম, দেখলাম চিয়া সিড দেওয়া কমলা রঙের শরবতের দোকানে লোকের ভিড়। গরমে অতিষ্ট হয়ে গোগ্রাসে গিলছে অনেকে। এই গরমে আপনি উপরোক্ত ওই জীবাণু ছাড়াও বাড়তি কিছু জীবাণুও পাবেন এই শরবত কিংবা আখ পিষে বানানো শরবতে। অন্যান্য সব ধরনের পথখাবারেই পাবেন এই উষ্ণকালের বাড়তি জীবাণু। যে মানুষগুলো শরবত বানায় বা অন্যান্য খাবার বানায়, তাদের শরীর প্রচুর ঘামে। এরা একটু পর পর গামছা দিয়ে ঘাম মোছে, বার বার মুছতে মুছতে গামছা ভিজে যায়, হাত না ধুয়ে সেই হাতেই শরবত বা অন্যান্য খাবার বানায়। তাছাড়া বগল ঘেমে হাত বেয়ে শরবতে বাড়তি লবণ যুক্ত হওয়াও খুব স্বাভাবিক, নিঃসন্দেহে স্বাদ বাড়িয়ে দেয়!

এছাড়া গরমে কাজ করার সময় এরা শরীরের নানা জায়গায় চুলকায়, নিন্মাঙ্গও চুলকায়। সেই হাতেই তারা ফুচকা, চটপটি, ধোসা, শরবত ইত্যাদি বানায়! ঘাম গায়ে বসে অনেকের ঠান্ডা লাগে, নাক দিয়ে জল পড়ে, সর্দি পড়ে। পরনের লুঙ্গি কিংবা কাপড় দিয়েই তারা এগুলো মোছে। তারপর সেই হাত দিয়েই টিপে টিপে বানায় সুস্বাদু মোমো!

এর বাইরে পথখাবারে জীবাণু যুক্ত হয় রাস্তার ধুলো ও বাতাস থেকে। নভেম্বর থেকে মে মাসের মধ্যে ঢাকার বায়ুপ্রবাহের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের স্ট্রেন পাওয়া গেছে, যা মিশে যায় উন্মুক্ত পথখাবারে। এছাড়া মানুষের হাঁচি-কাশির জীবাণুও থাকে পথখাবারে। মানুষের হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাইরে বের হওয়া জীবাণু বাতাসে ভেসে ১০ থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত দূরে যেতে পারে।

তো যারা বাইরের খাবার খাওয়া পছন্দ করেন, তাদের পক্ষে পশ্চাৎদেশের জীবাণু, নাকের জীবাণু কিংবা বগলের নোনা ঘামের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে এই গরমে রেস্টুরেন্টের খাবারও খাওয়াও বাদ দেওয়া উচিত।

কমরেডরা হয়ত বলবে, আমি গরিবের পেটে লাথি মারছি। তা বলুক, যে দেশের গরিব সুশিক্ষিত মানুষের কথা না শুনে, পরিবার-পরিকল্পনার কর্মীদের কথা না শুনে ( অতীতে গরিবের হাতে পরিবার-পরিকল্পার কর্মীদের নিপীড়িত হবার ঘটনা অনেক ঘটেছে), অশিক্ষিত মাওলানাদের ওয়াজ শুনে আল্লায় খাওয়াবে বলে বিশ্বাস করে চার-পাঁচটা বাচ্চার জন্ম দেয়, জনবিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করে, বেকারত্বের সৃষ্টি করে, নিজেরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকে ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খায়, আর অস্বাস্থ্যকরভাবে তৈরি করা খাবার বিক্রি করে মানুষের স্বাস্থের ক্ষতি করে, আমি সেই দেশের গরিবের পেটে এভাবে লাথি মারতে চাই।




ঢাকা।
মে, ২০২৪

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৮

রানার ব্লগ বলেছেন: কথা কিন্তু সত্য। কিন্তু কি করবো বলেন, দেশ টা যে গরীব।

২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৪৬

মিশু মিলন বলেছেন: সুস্থ থাকতে হলে পথখাবার বর্জন করতেই হবে। এইসব ব্যবসায়ীদের বিকল্প অবলম্বন খুঁজতে হবে।

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৪৪

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: বাংলাদেশের পথ খাবারের প্রতিটি দোকানদারের হাতে গ্লাভস পরা বাধ্যতামুলক করা উচিৎ।

২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৪৮

মিশু মিলন বলেছেন: এসব নিয়ে সরকারের কোনো ভাবনাই নেই।

৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০৬

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: রাস্তার খাবার খাওয়া হয় না, কালে-ভদ্রে হয়তো কোন নিমন্ত্রন থাকলে বাইরের কোন রেস্টুরেন্টে খেতে হয়। সে ক্ষেত্রেও বোতলের পানি বা সফট ড্রিংকস পান করতে হয়। বাংলাদেশে আসার পর থেকে মূলত ফ্রেস কিংবা মাম এর পানি দিয়েই চলছি, আলহামদুলিল্লাহ কোন সমস্যা হচ্ছে না আপাতত। আরা রাস্তায় যারা খাবার তৈরী করছেন তারা গ্লাভস পড়লেও খাবার ধুলোবালির কারনে হলেও জীবানুযুক্তই থাকবে। বাংলাদেশের বাতাসেও ক্ষুদ্র পার্টিকেলস এর পরিমান অনেক বেশী তাই বাইরে গেলেও মূলত মাস্ক ব্যবহার করার চেষ্টা করছি, তেমন কোন লাভ হচ্ছে না তারপরেও করি। সময়োপযোগী লিখার জন্য ধন্যবাদ জানবেন।

২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৪

মিশু মিলন বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

৪| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৩

শায়মা বলেছেন: আমি খাই না আর এই পোস্ট পড়ার পরে আরও অনেকই নিশ্চয় খাবে না।

২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৩৭

মিশু মিলন বলেছেন: আপনি নিজে সচেতন আছেন, আশপাশের মানুষকেও সচেতন করুন। ধন্যবাদ।

৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৩০

অহরহ বলেছেন: ওয়াক, আমি পথ খাবার খাই না। তবে আচার হলে লোভ সামলাতে পারি না।

২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৩১

মিশু মিলন বলেছেন: আচারও বিপদজনক।

৬| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯

নতুন বলেছেন: ভাই আমি হোটেলিয়ার, নিরাপদ খাবার কিভাবে তৌরি করতে হয়, কিভাবে সংক্ষন করতে হয়, কিভাবে পরিবেসন করতে হয় এটাই আমার পেশা।

দেশে গেলে শুধু খেয়াল করি যে খাবারটা হাই রিস্ক কিনা।

কিছু খাবার খেতে পারবেন যেটা তে ফুড পয়জনিংএর ঝুকি একটু কম হবে। শুকনা খাবার, বেশি চিনি আছে তেমন খাবার, গরম রান্না করা খাবার, সদ্য ভাজা খাবার.

তবে খ্যাদে ভ্যাজাল তো আর এড়াতে পারবেনা । অবশ্য বিশ্বের অন্য দেশের চেয়ে আমাদের দেশের মানুষের পেটে সমস্যা কম হয়। ছোট বেলা থেকে খেতে খেতে এখন অনেক বেশি সহ্য হয়ে গেছে...

২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৩৬

মিশু মিলন বলেছেন: বাংলাদেশের পথখাবারে জীবাণু থাকেই। কারণ এরা যে হাতে খাবার পরিবেশন করে, সেই হাতেই টাকা বিনিময় করে। ধন্যবাদ।

৭| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

নতুন বলেছেন: দেশের প্রতিটা রেস্টুরেন্ট এবং যারা খাবার বিক্রি করবে তাদের নিরাপদ খাদ্যের উপরে ট্রেনিং বাধ্যতা মুলক করা উচিত।

আগে ট্রেনিং দিতে হবে তারপরে অভিজান চালাতে হবে। জনগনও তখন সচেতন হবে।

২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:১০

মিশু মিলন বলেছেন: হুম, ঠিকই বলেছেন। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.