![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
গতকাল আমার ফেসবুকের পোস্টকে কেন্দ্র করে কয়েকটা গ্রুপে আমার মুণ্ডপাত করছে কতিপয় পুরোহিত বা তাদের সন্তানেরা। একটা গ্রুপে তো আমার মন্তব্য প্রকাশও বন্ধ করে দিয়েছে। আরেকটা গ্রুপে জনৈক নিলকু চক্কোতি নামক এক ব্রাহ্মণ্যবাদীর মন্তব্যের প্রতিউত্তর দিয়েছি। সেটাই এখানে তুলে দিলাম। নিচে নিলকুর মন্তব্যও দিলাম।
হিন্দু সংস্কৃতির ভাইরাস ব্রাহ্মণ্যবাদ
দেখুন নেকু চক্কোত্তি, সুদীর্ঘকাল যাবৎ আপনাদের রক্তে-মজ্জায় মিশে আছে পৌরহিত্যের মতো ভিক্ষাবৃত্তি করে চেয়ে-চিন্তে খাওয়ার ও মিথ্যে বিধান দিয়ে ভগবানের ভয় দেখিয়ে সমাজের মাথায় চড়ে থাকার বদ অভ্যাস। তাই আজ যখন আমরা আপনাদের এই কু-অভ্যাস নিয়ে কথা বলছি, আপনাদের গায়ে লাগছে। আমরাও চাই যে এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে আপনারা এই ভিক্ষাবৃত্তি বাদ দিয়ে একটা সম্মানজনক কাজ বেছে নিন। পৌরহিত্যের মতো ভিক্ষাবৃত্তির চাইতে যে-কোনো শ্রমের কাজ অনেক সম্মানের।
বুদ্ধের মৃত্যুর পর কালের বিবর্তনে বৌদ্ধধর্মেও ব্রাহ্মণ্যধর্মের কিছু প্রভাব পড়েছে, ফলে বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থেও বিদ্বেষপূর্ণ কিছু কথা লেখা হয়েছে, যার দায় বুদ্ধের নয়। কিন্তু সমাজ জীবনে ভারতের বৌদ্ধরা সে-সব গ্রহণ করেনি, তারা ব্রাহ্মণদের মতো অত্যাচারী নয়। আজকের দিনেও ভারতে বিভিন্ন মন্দিরে দলিতদের ঢুকতে দেওয়া হয় না, কুয়োর জল আনতে গেলে ব্রহ্মণরা তাদের পিটিয়ে মারে, আবার দলিত মেয়েদের ধর্ষণও করে। এমন মন্দিরও আছে যেখানে কোনো বর্ণের নারীদেরকেই ঢুকতে দেয় না ব্রাহ্মণরা। যে কারণে আমরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রায়ই দেখতে পাই যে নিপীড়নের শিকার দলিতরা সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করছে। ব্রাহ্মণরা প্রাচীন কালেও যেমন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ক্ষতি করেছে, তেমনি আজও ক্ষতি করছে। ইসলামী সন্ত্রাসবাদী আগ্রাসনে হিন্দু-বৌদ্ধরা ইসলাম গ্রহণে বাধ্য হয়েছে একথা যেমন সত্য, তেমনি একথাও সত্য যে ব্রাহ্মণদের জাতপাতের অত্যাচারেও অনেক হিন্দু-বৌদ্ধ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। হিন্দু সংস্কৃতির ভাইরাস ব্রাহ্মণ্যবাদ।
বাংলাদেশের হিন্দু নারীদের নিয়ে আপনি অত্যন্ত আপত্তিকর ও অসম্মানজনক কথা বলেছেন, এই নারীদের মধ্যে কিন্তু ব্রাহ্মণ নারীরাও আছেন। অশিক্ষিত মোল্লা আর অশিক্ষিত ব্রাহ্মণদের চিন্তা আর মুখের ভাষা অনেকটা একই ধারায় প্রবাহিত হয়। কেননা তারা সারাক্ষণ অস্তিত্বসংকটে ভোগে- এই বুঝি সমাজের মানুষ তাদেরকে মাথা থেকে আছড়ে ফেলে দিল! ফলে তারা খুব কুৎসিতভাবে আক্রমণ করে, আর নারীরাও কদর্যভাবে তাদের এই আক্রমণের শিকার হয়।
হ্যাঁ, ব্রাহ্মণদের গায়ের রং, এই বঙ্গে তাদের জন্মকথা, এসব নিয়ে অনেক কথাই বলা যায়, সে-সব ইতিহাসের কথা। সেখানেও নারীরা ব্রাহ্মণদের লালসার শিকার হয়েছেন, একেকজন ব্রাহ্মণ আশি-নব্বইজন নারীকে বিয়ে করেছে, মন্দিরে নারীদের সেবাদাসী বানিয়ে রেখে ধর্ষণ করেছে। আমি সেইসব নারীদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, কেননা তাদের দোষ নয়, তারা ব্রাহ্মণদের লালসার শিকার হয়েছেন, লালসার ফল ধারণ করেছেন গর্ভে। সেইসব নিপীড়িত নারীদের গর্ভজাত সন্তানের বংশধরাই আজকে সেই অত্যাচারিত ব্রাহ্মণদের পক্ষে কথা বলছে! আমরা দেখেছি ব্রাহ্মণরা মোগলদের দালালী করেছে, প্রশাসনিক পদ নিয়েছে, ভালো পদ পেতে ও ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে তারা নিজের বাড়ির মেয়েদেরও ব্যবহার করেছে। বাদশাহ-নবাবদের হেরেমে ব্রাহ্মণ নারীর উপস্থিতির কথাও কারো অজানা নয়। এই ব্রাহ্মণরা ব্রিটিশদেরও দালালী করেছে। বিপ্লবীদের ধরিয়ে দিয়েছে বাডুজ্জ্যে-চক্কোত্তিরা।
বাংলাদেশের মুমিনরা একটা কাজ করে, আরবী নাম থাকলেই তাকে মুসলমান বানিয়ে দেয়, ইবনেসিনার মতো নাস্তিককেও। এখন দেখছি সেই কাজটি ব্রাহ্মণরাও করে। ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে ব্রাহ্মণ পরিবারের যারা অবদান রেখেছেন, তারা নমস্য। তারা জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণ, এটা তাদের দোষ নয়, তারা অব্রাহ্মণদের শত্রুও নয়। আপনি তাদেরকে অব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। আমি কথা বলেছি পৌরহিত্যের বিরুদ্ধে। আপনি যাদের নাম উল্লেখ করেছেন, তারা কেউ-ই পুরোহিত ছিলেন না। তারা জ্ঞানচর্চা করেছেন। পৌরহিত্য করলে তারা এই অবদান রাখতে পারতেন না। বরং যে-সব ব্রাহ্মণ জ্ঞানচর্চা করেছেন, তারাও পুরোহিত শ্রেণির ব্রাহ্মণদের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। এই পুরোহিত শ্রেণির ব্রাহ্মণরাই শাস্ত্রের দোহাই দিয়ে অব্রাহ্মণদের জ্ঞানচর্চা ও লেখাপড়া থেকে দূরে রেখেছে। অব্রাহ্মণ কেউ জ্ঞানচর্চা করলে তাকে হত্যার বিধান দিয়েছে এই নৃশংস ব্রাহ্মণরা। শাস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সুদীর্ঘকাল জ্ঞানচর্চা থেকে যদি অব্রাহ্মণদের দূরে রাখা না হতো, তাহলে ভারতবর্ষ আরও এগিয়ে যেত। আরও অনেক কিছুই হয়ত আবিস্কৃত হতো ভারতীয়দের হাতে। বুদ্ধ ব্রাহ্মণ্যবাদকে অস্বীকার করে, ব্রাহ্মণ্যবাদের ছায়া থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন বলেই নতুন দর্শনের পথ উন্মোচন করতে পেরেছিলেন। লালন্দা, বিক্রমশীলা, সোমপুর, জগদ্দল, ওদন্তপুরীর মতো জ্ঞানচর্চার তীর্থ মহাবিহারগুলো তৈরি হয়েছিল। বহুকাল যাবৎ সমাজের মাথায় বসে থেকেও ব্রাহ্মণ্যবাদীরা যা করতে পারেনি।
বিদ্যাসাগর, রামমোহন কেউ পুরোহিত ছিলেন না। এরা ছিলেন ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে। তাদের কাজের বড় বাধা ছিল ব্রাহ্মণ সমাজ। আপনার পূর্বপুরুষেরা তাদের সমাজ সংস্কারের কাজে বাধা দিলেও বোধ করি আজ আর আপনার পরিবারের কোনো বিধবাকে স্বামীর সঙ্গে সহমরণে যেতে হয় না। জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণ বলে এদেরকে মূর্খদের দলে টানা সুযোগ নেই। রবীন্দ্রনাথও ব্রাহ্মণ্যধর্মের বিরুদ্ধে, তিনি জন্মসূত্রে ব্রাহ্মধর্মের। তিনি এইসব পূজা-পার্বণে বিশ্বাসী ছিলেন না।
আর ভারতে এক পা রাখার কথা বলছেন তো? ভারত আপনার বাপ-দাদার কেনা সম্পত্তি নয়! এই ভারত সকল হিন্দুদের, ঈশ্বর বা দেবদেবীতে যারা বিশ্বাস করে তাদের, আবার যারা ঈশ্বর বা দেব-দেবী বিশ্বাস করে না, কেবল নৃতাত্বিকভাবে হিন্দু, তাদেরও। বরং ব্রাহ্মণরা ভিক্ষাবৃত্তির লোভে অনেক পরে এসেছে এই বঙ্গে। আপনার পূর্বপুরুষেরা একসময় এই বঙ্গকে ম্লেচ্ছদেশ বলত, এখানে এলে আপনার পূর্ব-পুরুষদের জাত যেত, ফিরে গিয়ে প্রায়শ্চিত্য করতে হতো। শ্যামা প্রসাদ সকলশ্রেণির হিন্দুদের সাথে নিয়েই বাংলা ভাগের উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তিনি ব্রাহ্মণদের নামে পশ্চিমবঙ্গ লিখে দেননি। ভারতে কিংবা পশ্চিমবঙ্গে, যারা নিজেদের নৃতাত্বিকভাবে হিন্দু মনে করে, এই সভ্যতার অংশ মনে করে, তাদের সবারই থাকার অধিকার আছে। হ্যাঁ, আমারও।
ব্রাহ্মণরা জাতপাতের এত বিভেদ সৃষ্টি করে রেখেছে যে, হিন্দুরা এক হতে পারছে না। অতীতে ইসলামী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে লড়তে পারেনি হিন্দুরা, আজও পারছে না। হিন্দুদের টিকে থাকতে হলে জাতপাত ও পদবীবিহীন এক সমাজ প্রয়োজন, যেটার পথে বড় বাধা ব্রাহ্মণরা।
জাতপাত ও পদবীবিহীন হোক হিন্দু সমাজ।
১০ অক্টোবর, ২০২৫
নিল্কু চক্রবর্তী
কি আর করা যাবে, ব্রাহ্মণরা হিন্দুধর্ম ত্যাগ করলে এইসব মিশু মিলান ফিলান টাইপের impure এর উপদ্রব হবে আর কয়েক বছরের মধ্যে হিন্দুধর্ম লুপ্ত হবে, যেরকম হয়েছিল আদি শঙ্কর আসার আগে উচ্চবর্ণের বৌদ্ধ ভান্তেদের সময়ে, তখনও "ব্রাহ্মণ্যবাদী" হিন্দুধর্ম ছাড়া সো কল্ড দলিতদের যাওয়ার কোন জায়গা ছিল না, কারণ বৌদ্ধধর্মে দলিত ও নারীদের জায়গা কুকুরের বিষ্ঠার থেকেও নিচে বলা হয়েছে। আর ইতিহাস বাংলাদেশী হেঁদুদের থেকে শিখতে হবে না, যাদের এক পা বাংলাদেশ অন্য পা ভারতে থাকে আর যাদের বাড়ির মেয়েদের এক পা পূজামণ্ডপে আর অন্য পা মুসলিম ছেলেদের বিছানায় থাকে, বৈদিক ভারত তৈরীই হয়েছে ব্রাহ্মণদের হাত দিয়ে, চিকিৎসাবিদ্যা,প্লাস্টিক সার্জারি, ব্লাড ট্রান্সফিউশনের জনক শুশ্রুত, চড়ক, শূন্যের আবিস্কর্তা আর্যভট্ট, বোধায়ন, ভাস্করাচার্য, বরাহমিহির, নাগার্জুন, খনা, কনাদ, পতঞ্জলী জ্যোতির্বিজ্ঞানে, ম্যাথমেটিক্সে, মডার্ন ফিজিক্সে, অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে, আয়ুর্বেদে বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে। জ্যামিতি, ত্রিকোনমিতি, উপপাদ্য আবিস্কার করেছে ব্রাহ্মণরা, ব্যাকরণ লিখেছে ব্রাহ্মণরা, নোবেল এনেছে ব্রাহ্মণরা, ফিল্ড মেডেল এনেছে ব্রাহ্মণরা, যুদ্ধবিদ্যা শিখিয়েছে ব্রাহ্মণরা। হিন্দু সভ্যতার ইতিহাসে মুসলমানদের হারিয়ে সবথেকে বড় হিন্দু সাম্রাজ্য তৈরী করেছে ব্রাহ্মণ মারাঠারা, পূর্ববঙ্গে ইসলাম নেওয়ার প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে যুদ্ধে দলে দলে প্রাণ দিয়েছে পাবনার ব্রাহ্মণ রাজা দেবীদাস ও তার পরিবার, গৌর বাংলায় মুসলমানদের হারিয়ে হিন্দুসাম্রাজ্য তৈরী করেছে ব্রাহ্মণ রাজা গণেশ, যে ঈশ্বরচন্দ্র, রামমোহন রায়ের নাম নিচ্ছে বাঙ্গু হেঁদু সেই দুজনেই গর্বিত ব্রাহ্মণ ছিলেন
১০ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৮:২৬
মিশু মিলন বলেছেন: রাষ্ট্রীয় শাসনে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে না পারলেও সামাজিকভাবে প্রভাব ফেলছে। এখনও সামাজিক ও ধর্মীয় অনেক কাজ তাদের বিধান অনুসারে হয়। পূজা-পার্বণে পৌরহিত্য তারাই করে। এসবও বন্ধ করতে হবে। আমি পৌরহিত্যের বিরুদ্ধে বলেছি বলে ক্ষেপে গেছে পুরোহিতের ছানাপোনারা। ধন্যবাদ ভাই।
২| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৮:৫৯
কামাল১৮ বলেছেন: হাজার হাজার বছর ধরে গড়ে উঠা একটা সংস্কৃতি বিলিন হতে সময় লাগবে।আশার কথা বিলিন শুরু হয়ে গেছে।
১০ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১০:১৪
মিশু মিলন বলেছেন: হ্যাঁ, অনেকেই এখন বাড়িতে পুরোহিত ডাকে না, নিজেরাই পূজা করে।
৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:০২
কামাল১৮ বলেছেন: আমাদের এখানে মৌলবাদ বিকশিত হচ্ছে।গনতন্ত্র হীনতায় এসব হচ্ছে।
১০ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১০:১৫
মিশু মিলন বলেছেন: হ্যাঁ ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৮:১৯
কামাল১৮ বলেছেন: অনেকটাই বিলিন হয়ে গেছে প্রগতীশীল আন্দোলনের কারণে।