নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মর্গের লাশের ব্লগে স্বাগত।

মর্গের লাশ

জীবন যেখানে শেষ, আমার সেখানে শুরু ।

মর্গের লাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল কোরআনের সৌন্দর্য।। সুরা বাকারা এবং একটি দৃশ্যায়মান মুজেজা।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:০৬

আল কোরআন । আমরা তো এতই বলি যে এটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব যা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে। কিন্তু একটু ও কি এটি নিয়ে ভাবি যে কেন এটা কে বলা হয়েছে একটি জিবন্ত মুজেজা একটি অলৌকিক বই?? আল্লাহ তাআলা কুরআনে একবার নয় দুই বার নয়, তিন তিন বার চ্যালেঞ্জ করেছেন পারলে এমন একটি গ্রন্থ নিয়ে এস পারলে এমন দশটি সুরা নিয়ে এস পারলে এমন একটি সুরা নিয়ে এস। আমরা তো জানি কুরআন এর মর্যাদা এত উপরে আল্লাহ রেখেছেন যে যে ব্যাক্তি নিয়মিত কুরআন পাঠ করবেন কেয়ামত এর ময়দান এ কুরআন তার জন্য সাক্ষি দিবে।

যাই হোক আজ আলোচোনা করব কেন কুরআন এ আল্লাহ এমন চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন। কি জিনিষ কি মহত্ত কুরআন কে অনন্য করে তুলেছে। আজ আল কুরআনের সবচেয়ে বড় সুরা নিয়ে আলোচনা করব। সুরা বাকারা। যার সর্বমোট আয়াত সংখ্যা ২৮৬।
তার আগে একটু রিং স্ট্রাকচার কি জিনিশ সেই সম্পর্কে একটু ধারনা দেই আপনাদের কে। আমরা ছোট বেলাই সবাই রচনা লিখতাম। প্রথমে ভুমিকা দিয়ে শুরু করতাম শেষ করতাম উপসংহার দিয়ে। ঠিক প্রথম টপিকস এর সাথে শেষ টপিক্স এর কেমন যেন একটা মিল থাকত। রিং স্ট্রাকচার এর ক্ষেত্রে ব্যাপার টা আরো একটু এগিয়ে । সেটা হচ্ছে ভুমিকার পড়ে যে টপিক্স টা আসবে তার মিল টা থাকবে উপসংহার এর আগের টার সাথে।তেমনি ভাবে থার্ড টপিক্স এর মিল থাকবে পিছন থেকে থার্ড টপিক্স এর সাথে। এবং মুল রচনার তাৎপর্য থাকবে ঠিক মধ্যম অংশে। বুঝতে না পারলে আরও ভালভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছি। ধরুন একটি রচনাকে সর্বমোট ৯ টি ভাগে ভাগ করা যায়। মিল টা ঠিক এমন হবে।
১-৯
২-৮
৩-৭
৪-৬
আর ৫ নম্বর ভাগ টা হবে রচনার ঠিক প্রধান অংশ। আশা করছি একটু হলেও বুঝাতে পেরছি। না বুঝলেও সমস্যা নেই। নিচের ব্যখ্যা বিশ্লেষন শেষে আশা করা যায় সব পরিস্কার হয়ে যাবে।

সুরা বাকার কুরআন মাজিদের সবচেয়ে বড় সুরা ।এর আয়াত সংখ্যা সর্বমোট ২৮৬ টি। সুরাটি কে আমরা ৯ টি প্রধান ভাগে বিভক্ত করতে পারি।।

ভাগ গুলো যথাক্রমে।।

১। বিশ্বাস ও অবিশ্বাস।
২। সৃষ্টি ও ইলম।
৩।বনী ইস্রাইল এর প্রতি যে সকল বিধি বিধান নাযিল হয়েছিল সে সব এর বর্ণনা।
৪।ইব্রাহিম আঃ এর পরিক্ষা নেয়া হয়েছিল সেই বর্ণনা।
৫।কেবলার দিক পরিবর্তন।
৬।মুসলিমদের পরিক্ষা করা হবে।
৭।মুসলিম দের বিধি বিধান এর বর্ণনা।
৮। সৃষ্টি ও ইলম।
৯। বিশ্বাস ও অবিশ্বাস।

অনেকেই হয়ত ধরতে পেরেছেন যে আমি কি বলতে চাচ্ছি।। কেউ যদি ধরতে না পারেন তবে উপরের নয়টি লাইন আবার পরুন।।
দেখুন সুরাটি শুরু হয়েছে বিশ্বাস ও অবিশ্বাস এই টপিক্স দিয়ে। শেষ ও হয়েছে বিশ্বাস ও অবিশ্বাস এই টপিক্স দিয়ে। দ্বিতীয় ভাগ টি লক্ষ্য করুন সৃষ্টি ও ইলম ঠিক তেমনি শেষের আগের ভাগ অর্থাৎ অষ্টম ভাগ টি সৃষ্টি ও ইলম। প্রতিবিম্ব!!। তেমনি ভাবে তিন নম্বর এর সাথে সাত নম্বর এর মিরর ৪ নম্বর এর সাথে ৬ নম্বর এর মিরর। এবার আসি একেবারে মধ্যমভাগ এর টপিক্স টা তে।

সুরা বাকারা নাযিল হয় মহানবীর সঃ মাদানী জীবনে। ঐ সময় কালের নব্য মুসলিম রা জেরুজালেম এর মাসজিদুল আকসার দিকে মুখ করে নামাজ পরত। সুরা বাকারা ১৪৩ নম্বর আয়াত নাযিল হবার পর কেবলা হিসেবে মাসজিদুল হারাম আল্লাহ তাআলা মনোনীত করে দেন। তৎকালীন সময় এর যারা ইয়াহুদি নাসারা ছিল যারা মুসলিম হয়েছিল কিন্তু আসলে ছিল মুনাফিক তাদের জন্য এটা একটা বিশাল বড় আঘাত ছিল। আমরা যদি একটু জুম ইন করি তবে দেখতে পাই এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন আমি তোমাদেরকে "মধ্যম" জাতি হিসেবে মনোনীত করলাম।। আমরা ফোকাস করি মধ্যম শব্দের দিকে।। সুবহানআল্লাহ!!! ১৪৩ নম্বর আয়াত যা কিনা একেবারে সুরার মধ্যাংশে (২৮৬/২)যেখানে সুরার প্রধান তাৎপর্য সেখানেই "মধ্যম" শব্দটাও আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

এবার একটু জুম আউট করা যাক।। আমরা যে নয়টি ভাগ নিয়ে আলোচনা করছিলাম।। সুরার প্রথম ৪ টি খণ্ডে আল্লাহ তাআলা বিশ্বাস ও অবিশ্বাস, সৃষ্টি ও ইলম ,বনী ইস্রাইল এর প্রতি যে সকল বিধি বিধান ও ইব্রাহিম আঃ এর পরিক্ষা নেয়া হয়েছিল সেই বর্ণনা। শেষের চার ভাগে মুসলিমদের পরিক্ষা করা হবে, মুসলিম দের বিধি বিধান এর বর্ণনা ,সৃষ্টি ও ইলম,বিশ্বাস ও অবিশ্বাস।। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে দ্বীনের মশাল ১৪৩ নম্বর আয়াত এর আগ পর্যন্ত বনী ইসরাইল এর কাছে ছিল যা কিনা মুসলিমদের হাতে তুলে দেয়া হয় ঠিক ১৪৩ নম্বর এ কিবলার দিক পরিবর্তন এর মধ্য দিয়ে।

দেখা যাচ্ছে পুরা সুরা টাই একটি রিং স্ট্রাকচার এর মত।তবে আল্লাহ তাআলার কাজ আরও সুক্ষ। কেন বললাম ?? চলুন তবে আবার জুম ইন করা যাক।।

এই যে ৯ টি খন্ডে আমরা সুরা বাকারা কে ভাগ করলা সেগুলো ও আবার একেকটা সাবরিং তৈরি করে।৮ নং খন্ডের উদাহরন এ আসা যাক। সেখানে আমরা তিনটি ভাগে ভাগ করলে দেখা যাবে প্রথম ও শেষ ভাগে আল্লাহ তাআলা দান খয়রাত এর সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন আর মধ্যম অংশে আল্লাহ তাআলা এই বিভাগ এর তাৎপর্যপূর্ণ অংশটুকু রেখেছে।

আল্লাহ তাআলার কাজ আরও সুক্ষ । কেন বললাম। চলুন আরও একটু জুম ইন করি। এই ৮ নং সাব রিং এর যে সেন্ট্রাল পার্ট আয়াতুল কুরসি সেটাও একটা রিং স্ট্রাকচার। সুবাহানাল্লাহ !!!! আয়াতুল কুরসির অনুবাদটুকু দিচ্ছি।।

১। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই ,তিনি "চিরঞ্জিব" ও "সবকিছুর ধারক"।

২।তন্দ্রা নিদ্রা তাকে স্পর্শ করে না।

৩।আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তার।

৪।কে আছে এমন তার অনুমতি ব্যাতিত তার নিকট সুপারিশ করতে পারবে।

৫।

৪।তার ইচ্ছা ব্যাতিত কেউই কোন জ্ঞান অর্জন করতে পারে না।

৩।তার কুরসি আসমান জমিন ব্যাপি।

২। এতদুভয়ের সংরক্ষনে তাকে ক্লান্তি স্পর্শ করে না।

১। তিনি "সর্বোচ্চ" ও "মহীয়ান"।

৫ নং লাইন এ কি হবে সেটা আমি এখানে লিখব না। কারও যদি ভালো লাগে দেখে নিবেন। যখন আপনি নিজে দেখবেন সেজদায় মাথা নত হতে বাধ্য যদি আপনি কাফির না হন।।

আর কোরআন কিন্তু মহানবি সঃ এর মুখনিস্রিত বাণী ছিল এবং তিনি ছিলেন একজন উম্মি নবী।


সূরা বাকারা । রিং স্ট্রাকচার।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৪৩

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: X(( চালিয়ে যান। নতুন কিছু জানার মধ্যে আনন্দ আছে।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪১

মর্গের লাশ বলেছেন: ধন্যবাদ।।

২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:০৯

রাসেল বলেছেন: Thanks a lot for your kind inspiration. May Allah bless you.

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:০৫

মর্গের লাশ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫২

একালের হরকরা বলেছেন: বুঝিলাম আপনার লিখিত বিষয়বস্তু এবং আমার মতামতে দুইটি বিষয় পরিলক্ষিত হইল বলিয়া আপনার মতামতের অপেক্ষা।

১) রিং স্ট্রাকচার - তাহা হইলে আপনার ভাষ্যনুসারে বাঙলা রচনানুসারে রাসুলের কোরআন প্রকাশিত?
২) যখন আপনি নিজে দেখবেন সেজদায় মাথা নত হতে বাধ্য যদি আপনি কাফির না হন - আপনি এই বাক্যের মাধ্যমে কি আপনাকে কোরআনের বক্তব্যকে পদদলিত করিলেন না?
আপনার উল্লেখিত আয়াতের পরবর্তী আয়াতটি পড়িবার অনুরোধ করিলে নিশ্চয় মহোদয় আমাকে অপরাধী বলিয়া সাব্যস্ত করিবেন না

ভালো থাকিবেন।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২০

মর্গের লাশ বলেছেন: প্রথম প্রশ্নের উত্তর। আপনি আমার আলোচনার "আ" ও বোঝেন নি। বাংলা রচনা আমরা রিং স্ট্রাকচার এ লিখি আমি কোন লাইন এ ই লিখি নি। আবার লেখাটি আবার পরুন। না বুঝলে আবার পরুন। তারপর ও না বুঝলে নিচের একটি ভিডিও লিঙ্ক আছে দেখে নিন।

দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর। কাফির শব্দের আভিধানিক অর্থ " যে কোন কিছু লুকায় বা ঢেকে রাখে বা সত্য অমান্য করে"। আপনাকে আমি জোড় করে সেজদা করতে বলি নি।ওটা একটি ভাব বাচ্য ছিল আয়াতটির মহাত্য বুঝানোর জন্য ব্যাবহার করা হয়েছে। এত বড় নিদর্শন দেখার পরও যদি আপনার মনে আল্লাহ ভীতি সৃষ্টি না হয় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা না আসে তবে তো আপনি কাফির ই??? তাই নয় কি?? এখানে তো আমি আপনাকে কোন জোরাজুড়ি করছি না। স্পষ্ট নিদর্শন আপনার সামনে তুলে ধরলাম, আপনি অমান্য করলেন ,আপনাকে কাফির বললাম। আসা করি বুঝতে পেরেছেন। না বুঝলে বাংলা রচনা আর রিং স্ট্রাকচার পার্থক্য খুজেন । উইকির হেল্প নিতে পারেন :/

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.