নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মিথুন হাসান

মোঃ মিথুন হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার প্রথম শিক্ষক

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৪

আমার ছাত্রজীবন শুরু হয়েছিল বাবু সুনীল রায় স্যারের হাত ধরে। সে অনেক আগে, ১৯৯৮ বা ১৯৯৯ সালে। তখন আমি আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেনীর ছাত্র আর আমাদের একমাত্র শিক্ষক ছিলেন সুনীল স্যার।

খুবই আদর্শবান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আমাদের প্রতিদিন অ, আ, ক, খ... আর স্কুলের নাম মুখস্ত করিয়ে ছুটি দিতেন। শিশু শ্রেনীতে থাকতে তাকে খুব একটা চিনতে পারিনি, পেরেছি ক্লাস থ্রী থেকে। ক্লাসের সামনের সিটে বসার জন্য স্কুল খোলার অনেক আগেই প্রতিদিন স্কুলে চলে যেতাম। স্যারকেও দেখতাম তিনিও আমার মতো আগেই পৌঁছে গেছেন। তিনি আসতেন নিজ দায়িত্ববোধ থেকে। কারণ, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অফিস সময় মতোই তিনি উপস্থিত থাকতেন।

স্যারকে কোনদিন দেরি করে ক্লাসে আসতে দেখিনি। ক্লাস শেষেও অতিরিক্ত সময় ক্লাসে থাকতেন না। কারণ তার অন্য ক্লাসের সময় শুরু হয়ে যেত। অন্যান্য স্যারদের মতো আমাদের কোনদিনও মারতেন না। অবাধ্য হলে লজ্জা দিতেন। স্কুলের পিছনের ময়লা পুকুরের পানি দিয়ে পাতলা খিচুরি রান্না করে আমাদের অনেকবার খাইয়েছেন তিনি। তবে তা শুধুমাত্র কল্পনায়, আমাদের লজ্জা দিয়ে।

ক্লাস শেষ হবার দশ মিনিট আগে স্যার আমাদের প্রতিদিন একটা করে গল্প শোনাতেন। আমরা আগ্রহ নিয়ে তা শুনতাম। ‘সবজান্তা শমশের’, ‘আদুভাই’, মন্টুর বিয়ে বাড়িতে দই খাওয়ার গল্পগুলো তার মুখ থেকেই শুনেছিলাম।

শুধুমাত্র স্যারের একটি কাজে খুব কষ্ট পেয়েচিলাম। ক্লাস ফাইভে থাকতে একদিন বিনাদোষে স্যার আমাকে শাস্তিস্বরুপ অপমান করেছিলেন। আমার পাশের বন্ধুটি ভাঙ্গা আয়না নিয়ে ক্লাসে এসেছিল, স্যার ক্লাসে থাকা অবস্থায় জানালা দিয়ে আসা রোদকে সেই আয়না দিয়ে ক্লাসরুমের বিভিন্ন স্থানে প্রতিফলিত করছিল। আর স্যার সেই আসামিকে না ধরে আমাকেই আসামি ভেবে ধরেছিল। স্যার কি বলেছিল তা মনে নেই, তবে স্যারের কথাগুলো শুনে অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। সেদিন অনেক কান্না করেছিলাম।

প্রাইমেরি পাস করে তার শিষ্যত্ব হারিয়েছি। তারপর অনেক শিক্ষকেই স্যার বলতে হয়েছে। কিন্তু তার মতো স্যার আর পাইনি, যে কিনা মিশে যেতে পারে তার ছাত্রদের মনের সাথে। আজ স্যার অসুস্থ, হয়তো কোন একদিন চলে যাবেন আমাদের ছেড়ে। হয়তো দেশের সেরা শিক্ষকদের তালিকায় তার নাম আসবে না কোনদিনও, কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে এই আদর্শবান শিক্ষক। কিন্তু আমি কখনোই ভুলবো না তাকে, লুকিয়ে থেকেই শ্রদ্ধা করে যাব তাকে।



Md. Mithun Hasan

06/12/2013

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৯

কামাল। আহমেদ বলেছেন: মানুষের জীবন থেকে মানুষ হারিয়ে যায়। কিন্তু স্নৃতি কখনো হায়ায় না। স্যারের প্রতি আপনার শ্রদ্ধাবোধ দেখে ভাল লাগলো।

অনেকদিন পরে দেখা হল ভাই আপনি কেমন আছেন? আপনি ভীষণ রকম অহংকারি মানুষ মিঠুন ভাই!মেসেজ দিলেও জবাব দেননা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.