নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উন্নয়ন ও মানবাধিকার কর্মী। শিশুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার এবং নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার জন্য কাজ করি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে কৌতূহলী।

মাঈনউদ্দিন মইনুল

মুখোশই সত্য!

মাঈনউদ্দিন মইনুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

Pathos: সাহিত্য রচনায় বিষাদের ব্যবহার

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:০৯

এক) রাজা এগামেমননের সাথে মতের অমিল হওয়ায় গ্রিসের পক্ষে যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন মহাবীর একিলিস। এরপর থেকে একটির পর একটি মৃত্যু এবং পরাজয়ের খবর আসতে লাগলো। কিন্তু কিছুতেই আর একিলিসকে যুদ্ধে নিয়ে যেতে পারবে না। মেনেলাউসের স্ত্রী হেলেনকে উদ্ধারের জন্য সৃষ্ট বিরোধ এখন তার বড়ভাই এগামেমননের রাজ্য-জয়ের অভিলাষের সাথে যুক্ত হয়ে বিশাল যুদ্ধের কারণ হয়েছে। তাছাড়া, রাজা এগামেমননকে একিলিসের একেবারেই না-পছন্দ – লোভী এবং দুশ্চরিত্র। যুদ্ধবন্দী সুন্দরী ব্রাইসিসকে কেড়ে নেওয়া ছিল প্রতিহিংসার বড় কারণ। কেন শুধু একজনের রাজ্য বিস্তারের জন্য যুদ্ধ করা? ওদিকে এগামেমনন প্রবল অহংকারী এক রাজা। তার মতে, একিলিসের নিয়তিই হলো যুদ্ধ করা, সে যোদ্ধা আর এগামেমনন হলেন রাজা। তিনি তার রাজাসুলভ ব্যক্তিত্বকে নিচে নামিয়ে একিলিসকে ফের অনুরোধ করেন নি। উভয়ের বন্ধু ওডিসিউস মধ্যস্থতা করেও একিলিসকে রাজি করাতে পারলেন না।



অন্যদিকে গ্রিসের সকল অঙ্গরাজ্যের সকল সৈন্যরা একে ‘দেশের জন্য যুদ্ধ’ বলে মেনে নিয়েছে। মেনে নিয়েছে একিলিসের বিশ্বস্ত সহচর এবং অনুগত শিষ্য পেটরোক্লাসও। ট্রয়ের যোদ্ধারা এতো আগ্রাসী আর কখনও হয় নি। হাতে তৈরি গোলা গুলো মার্বেলের মতো গড়িয়ে এসে গ্রিকদের তাবুগুলো পুড়িয়ে দিতে লাগলো। তারা বুঝতে পেরেছে গ্রিকদের সাথে একিলিস নেই। কিন্তু একিলিসকে সে কোনভাবেই যুদ্ধে ফেরাতে পারছে না। অগত্যা তারই যু্দ্ধপোশাক বর্ম ঢাল মস্তকাবরণী পড়ে সে যুদ্ধে যোগ দেয়। এটিই তার জন্য মরণফাঁদ ডেকে এনেছে। হেকটরসহ ট্রয়ের সকলেই ধরে নিয়েছে যে, আজ একিলিস যুদ্ধে নেমেছে। একই বিশ্বাসে নিজ দেশের সৈন্যরাও আত্মবিশ্বাসী হয়েছিলো। এক পর্যায়ে হেকটর এসে তাকে চ্যালেন্জ করলে পেটরোক্লাস তা প্রত্যাখ্যান করা কাপুরুষোচিত মনে করলো। বেশ কিছু সময় প্রতিরোধ করার পর মহাবীর হেকটরের হাতে পেটরোক্লাস নিহত হয়। মরণ আঘাত দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে যখন তার মস্তকাবরণ খুললেন, হেকটর কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন – এ তো একিলিসের পোশাকে এক বালক যোদ্ধা! খবর গেলো একিলিসের কাছে! নিহত হবার খবরে সহযোদ্ধাদের ওপর এতই ক্ষিপ্ত হলেন যে, গলায় পা দিয়ে তিনি ঘনিষ্ট এক সহচরকে প্রায় মেরেই ফেলেছিলেন। কেন মরতে হলো পেটরোক্লাসকে? রাজা এগামেমননের ওপর ক্ষিপ্ত একিলিস যেন হঠাৎ শান্ত হয়ে গেলেন। তিনি ফিরে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন সেসব সহযোদ্ধাদের কাছে, যারা তার তাৎক্ষণিক ক্ষোভের শিকার হয়েছিলো। রাজা এগামেমনন ও সকল মন্ত্রী-সেনাপতিদের উপস্থিতিতে এক অবর্ণনীয় বিষাদময় সন্ধায় একিলিস পেটরোক্লাসের মুখাগ্নি করলেন। সকলেই তার শোকের অংশিদার হয়েছিলেন। হেলেনের স্বামী মেনেলাউসের নিহত হবার খবরও গ্রিকদেরকে এতো শোকাহত করে নি। একিলিস ছিলেন অস্বাভাবিক রকমের নিরব। এ নিরবতা যেন ঝড়ের পূর্বের নিরবতা। এগামেমনন বলেই বসলেন, ছোকরা মরে গিয়ে আমাদের জন্য যুদ্ধটাকে বাঁচিয়ে গেলো। তারপর একিলিসের যুদ্ধে ফেরার জন্য এখন কেবল সকাল হবার প্রয়োজন।



দি ইলিয়াড পড়েছিলাম কতটি বছর হয়ে গেলো! হেকটরের ওপর একিলিসের প্রতিশোধ নেয়ার বিষয়টি দি ইলিয়াড কাব্য-উপন্যাসের প্রধান ঘটনা। পেলিউসের সন্তান এবং দেবতা জিউসের দৌহিত্র ‘অর্ধ-দেবতা একিলিস’ দি ইলিয়াড-এর প্রধান চরিত্রও। মহাকবি হোমার এই পেটরোক্লাসের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে বিষাদের সৃষ্টি করেছেন তার কালোত্তীর্ণ মহাকাব্যে, তা পর্যাপ্তভাবে বাংলায় প্রকাশ করতে পারি নি। মূলত মহাকাব্যটি লেখাই হয়েছে বিষাদের আবহ দিয়ে। দি ইলিয়াড-এর প্রধান আকর্ষণই ছিলো ঘটনার পরিণতিতে সৃষ্ট বিষাদ, যা পাঠকের হৃদয়ে অনুরণিত হয়েছে। পাঠকের হৃদয়কে দগ্ধ করেছে, মথিত করেছে তার অনুভবকে। তাতে পাঠক আরও আগ্রহী হয়ে মনোযোগী হয়েছে পরবর্তি অধ্যায়গুলোতে। একিলিস কীভাবে ‘নবিস যোদ্ধা’ পেট্রোক্লাসের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেন, এটি দেখা তখন পাঠকের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায়। আদর্শ স্বামী, আদর্শ বড়ভাই, আদর্শ পিতা, সর্বোপরী আদর্শ যোদ্ধা হয়েও তিনি পাঠকের অনুকম্পা পেয়েছেন কেবল একিলিসের হাতে নিহত হবার পর।







দুই) পাঠকের হৃদয়কে জয় করার উদ্দেশ্যে গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল সাহিত্যের আবেদনকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছিলেন: ১. নীতি বা বিশ্বাসযোগ্যতা (Ethos), ২. আবেগ বা বিষাদ (Pathos) আর ৩. যুক্তি বা গ্রহণযোগ্যতা (Logos)। তার মতে লেখায় থাকতে হবে নৈতিক আবেদন, অনুভবের আবেদন এবং যুক্তির আবেদন। গল্প কবিতা অথবা উপন্যাস, যা-ই হোক, এ তিনটি বিষয় আনুপাতিকভাবে থাকা চাই। এতিনটি মৌলিক বিষয়কে ‘ভাব প্রকাশের’ প্রধান কৌশল হিসেবে দেখা হয়: বলা হয় রেটরিকেল ট্রায়াঙ্গেল Rhetorical Triangle।



‘যুক্তি, সত্যতা আর অনুভবের’ অনুপস্থিতি ভালোমতো টের পাওয়া যায়, বর্তমান সময়ের ‘কিছু’ বাংলা সিনেমার দিকে তাকালে। যুক্তি আছে তো সত্যতা নেই, সত্যতা আছে তো সেখানে অনুভবের নেই কোন খাবার। কাহিনীগুলোর এতো পুনরাবৃত্তি হয়েছে যে, যে কোন অংশ দেখলে এর পূর্বের বা পরের ঘটনা বলে দেওয়া যায়। না আছে আবেগ, না আছে সংগতি, না আছে বাস্তবতা। হাতেগুণা কয়েকটি দৃষ্টান্ত ছাড়া, বাংলা ভাষার পুরাতন ছবিগুলোই যেন আমাদেরকে সিনেমাশিল্পটিকে ধরে রেখেছে এখনও।



অন্যদিকে আজকালের বিজ্ঞাপনগুলোর দিকে তাকালে উপরোক্ত উপাদানগুলোর সংমিশ্রণ পাওয়া যায়। বাংলাদেশের তাঁতশিল্পকে তুলে ধরে একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির বিজ্ঞাপনটি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। বেশকিছু বিজ্ঞাপন দর্শকের অনুভবকে জাগিয়ে তোলে। তবে অধিকাংশ বিজ্ঞাপনেই আবেগ আছে, যুক্তিও আছে, কিন্তু সত্যতা প্রায়ই খুঁজে পাওয়া না। ফলে শ্রোতা-দর্শক তাতে আকৃষ্ট হয় না।



আবেগের কাছে যুক্তি অচল। আমার তাই মাঝেমাঝে মনে হয়, আবেগ বা Pathosই বেশি আকর্ষণ করে পাঠক বা শ্রোতার মনকে। অবশ্য কোনটির গুরুত্বই ছোট করা যায় না, তবু মনে হয়, অনুভবে সাড়া জাগাতে না পারলে একটি লেখা পুরোপুরি আকর্ষণহীন হয়ে পড়ে। সিলভেস্টার স্ট্যালনের অসম্ভব ক্ষমতাকেও মেনে নিতে আপত্তি নেই, যদি সেটা দর্শকের অনুভবকে জাগিয়ে দিতে পারে।







তিন) একটি কেইস স্টোরি তুলে ধরছি, আমার সঙ্গীটি সিনেমায় মারামারি কাটাকাটি একদম সহ্য করতে পারেন না। তাই মারামারির দৃশ্যগুলো আমার একারই সামাল দিতে হয়! বাস্তবত, আমি নিজেও ওসব পছন্দ করি না, কিন্তু হিরোকে ঘুষি দিয়ে রক্ত বের করে ফেলবে সেটা তো মেনে নিতে পারি না! অথবা ধরুন, হিরোইনের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হলো, তখন ইচ্ছে হয় নিজেও গিয়ে একটি ঘুষি লাগিয়ে দিই। কিন্তু আমার স্ত্রী ঠিক প্রতিশোধ গ্রহণের সময়টিতে থাকেন অনুপস্থিত। বলুন, কেমন লাগে! তখনই তো উচিত দু’জন একসাথে থাকার।



কিন্তু একবার হলো কি, এক ধুরন্দর ভিলেনের পাল্লায় পড়লাম। সিনেমার নাম বা হিরোর নাম বিবেচনায় না এনে শুধু প্রাসঙ্গিক অংশটুকু বলছি। সাপ্তাহিক ছুটির পূর্বের রাত হওয়ার সুবাদে দু’জনই টিভি সেটের সামনে বসার সুযোগ পেলাম। একজন সৎ ও চৌকশ পুলিস অফিসার ইতিমধ্যেই তার সততা ও সাহস দিয়ে আমাদের মন কেড়ে নিয়েছেন। প্রথম দিকেই একজন প্রভাবশালী ক্রিমিনালকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি থানায় হাজির হয়ে মুচলেকা দিতে বাধ্য করেছেন। সে একজন চোরাকারবারী এবং সমাজের সকল অপরাধের পৃষ্ঠপোষক আর সকল চোর-ডাকাত-দুর্বৃ্ত্তের গুরু। যেমন খারাপ তেমনই ভয়ংকর, কিন্ত্র প্রকাশ্যে সমাজসেবক। অন্য কোন পুলিস হলে হয়তো, তাকে ডাকারই সাহস পেতো না। কিন্তু থানায় আসতে বাধ্য করায় সেই সমাজপতিরূপী সন্ত্রাস-নেতাটি দারুণ অপমানিত হয়। প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে সে তার নেতা, অর্থাৎ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিয়ে সেই পুলিস অফিসারকে স্থানান্তর করিয়ে নিজ এলাকায় নিয়ে আসে। শহরে নতুন কর্মস্থলে এসে অফিসারটি প্রমাদ গুণে। সন্ত্রাস-নেতাটি ইতিমধ্যেই একটি টেলিফোন কলে ‘ওয়েলকাম টু ….’ জানিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে, এবার যাবে কোথায়! বিভিন্ন উপায়ে তারে চেলারা তাকে উত্যুক্ত করতে থাকে এবং মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ফাইল ঘেটে জানতে পারেন যে, এই থানার পূর্বের অফিসারটি এলাকার প্রধান সন্ত্রাসীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজেরই রিভলবারে আত্মহত্যা করে। বিষয়টি তাকে আতংকিত করে তোলে। সাথে দর্শক হিসেবে আমরা ভয় পেয়ে যাই এবং হিরোর প্রতি আমাদের সহানুভূতি আরও বেড়ে যায়। সিনেমার ভিলেনের প্রতি আমাদেরও ঘৃণা বাড়তে থাকে। এসবের মধ্যেও পূর্বের অফিসারের হত্যাকারীদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোটাকে প্রধান কাজ মনে হলো তার। কিন্তু কাজটি যে কত কঠিন তা তার সিনিয়র কর্মকর্তা ডিএসপি সাহেব এবং মন্ত্রী মহোদয় বুঝিয়ে দিয়েছে। তারাও একই পালের গরু হওয়ায়, পুলিস অফিসারকে সাবধান করে দিয়েছে, এসব নাজাই কাজে সময় নষ্ট না করে তিনি যেন রুটিন কাজে মনোনিবেশ করেন। এতে আইন-শৃঙ্ক্ষলা নিয়ন্ত্রণে পুলিস বিভাগের ক্ষমতা যে কত সীমিত, সেটি করুণভাবে ফুটে ওঠে – এই সাথে ফুটে ওঠে সৎ ও সাহসী পুলিস অফিসারটির অসহায়ত্ব। দর্শকের মন করুণাবিষ্ট হয়।



এরই মধ্যে পুলিস বিভাগের আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ‘পুলিসের অধিকার ও ক্ষমতা’ বিষয়ক জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে সেই পুলিস অফিসার সকলের দৃষ্টি করেন। তার প্রতিটি কথায় ছিলো যুক্তি, প্রমাণ এবং আবেগের প্রাবল্য। সেখানে পুলিসের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। একজন পুলিসের আত্মহত্যার বিষয়টি জেনে তিনিও আবেগাক্রান্ত হলেন। ওটি ছিলো মূলত একটি হত্যাকাণ্ড। ওই অনুষ্ঠানে সকলেই একমত হলেন যে, সকলে মিলে সহকর্মী হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করবেন। বাকি ঘটনা সকলেই অনুমান করতে পারেন। মজার ব্যাপারটি হলো, এর পর যতগুলো মারামারির ঘটনা ঘটেছিলো, আমার সঙ্গীটি আমাকে ত্যাগ করেন নি, বরং আমার চেয়েও বেশি আগ্রহ ও সমর্থন নিয়ে ‘প্রতিশোধ গ্রহণের’ দৃশ্যগুলো দেখে যাচ্ছিলেন।









চার) কীভাবে পেইতোস/ আবেগের প্রয়োগ ঘটানো যায়, সেটি একটি গবেষণার বিষয়। এর কোন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আজও প্রতিষ্ঠিত হয় নি। আবেগের ব্যবহার অতিমাত্রায় করলে সেটি যেমন যৌক্তিকতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়, কম করলেও আকর্ষণ হারায়। তাই লেখককে খেয়াল রাখতে হয়, আবেগ যেন লেখার প্রধান বিষয় না হয়। একে লেখার বাহন হিসেবে ব্যবহার করা যায় – গন্তব্য হিসেবে নয়। একটি ‘সত্যকে’ প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ‘আবেগকে’ ব্যবহার করা যায়। অথবা একটি ‘যুক্তিকে’ তুলে ধরার জন্য আবেগের আশ্রয় নেওয়া যায়।



*আবেগ তৈরি করতে হলে নিজের আবেগ এবং নিজের মূল্যবোধ দিয়ে সেটি আগে উপলব্ধি করতে হয়। একই সাথে পাঠকের অবস্থানটিকেও পরিমাপ করতে হয়।



“আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। … … আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়। কি অন্যায় করেছিলাম?...”



বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের শুরু থেকেই বুঝা যায় তিনি কীভাবে বিষাদাক্রান্ত হয়েছেন। একই সাথে তিনি বুঝেছিলেন, তারা শ্রোতা কারা এবং তারা কী প্রত্যাশা নিয়ে সামনে বসে আছে। তার আবেগ তিনি অতি দ্রুতি সংক্রমিত করতে পেরেছিলেন লক্ষ দর্শকের মনে। বক্তৃতার প্রথম অংশটি আমার কাছে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়।





*একই শব্দ একই উচ্চারণ, শুধু আবেগের প্রকাশ থাকলে, কীভাবে সেটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে, এর জ্বলন্ত উদাহরণ হলো মার্টিন লুথার কিং-এর ঐতিহাসিক ‘আমি স্বপ্ন দেখি’ ভাষণটি।



“আমি স্বপ্ন দেখি যে, আমার চারটি শিশু একদিন এমন জাতির মধ্যে বাস করবে, যেখানে গায়ের রঙ দিয়ে নয়, চারিত্রিক গুণাবলী দিয়েই তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে । আমি স্বপ্ন দেখি। … সেদিন বেশি দূরে নয়।” শত বছর পরে হলেও তার সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছিলো। এর প্রধান কারণ, তিনি তার আবেগ-নির্ভর যুক্তি দিয়ে শ্বেত ও কৃষ্ণ সকলকেই প্রভাবিত করতে পেরেছিলেন।





*সুকান্তের ‘মহাকাব্য’ কবিতায় যে আবেগ মিশিয়েছেন, তার আবেশ যুগের পর যুগ ফুরিয়ে গেলেও শেষ হবে না। এখানে আছে আবেগ, যৌক্তিকতা এবং সত্যের এক অনুপম মিশ্রণ। কবিতার কথাগুলো আজ প্রবাদ হয়ে আছে:



“হে-মহাজীবন, আর এ কাব্য নয়

এবার কঠিন, কঠোর গদ্যে আনো,

পদ-লালিত্য-ঝঙ্কার মুছে যাক

গদ্যের কড়া হাতুড়িকে আজ হানো!

প্রয়োজন নেই, কবিতার স্নিগ্ধতা—

কবিতা তোমায় দিলাম আজকে ছুটি,

ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়:

পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝল্সানো রুটি॥”




দুঃখবোধ, হতাশাবোধ, হারানোর বেদনা, রসবোধ, প্রাপ্তি, স্বদেশপ্রেম, ঘৃণাবোধ, শ্রদ্ধা বা অপমান, ইতিবাচক বা নেতিবাচক – প্রতিটি উপলব্ধই পাঠকের মনে ‘পেইতোস’ সৃষ্টি করতে পারে।









পাঁচ) সমালোচনা: “জল পড়ে পাতা নড়ে” অথবা “গাছে কাঠাঁল গোঁফে তেল” অথবা “রাতে মশা দিনে মাছি – এই নিয়ে কলকাতায় আছি” কথাগুলোতে উপরোক্ত তিনটি উপাদান ছাড়াও রয়েছে আরেকটি বিষয়। তা হলো, ভাষার ব্যবহার বা শব্দচয়নের মুন্সিয়ানা। বাংলা অথবা উপমহাদেশীয় সাহিত্যের অনুপম বৈশিষ্ট্যটি এখানেই নিহিত। বাংলা ভাষার গদ্য, কবিতা বা উপন্যাসে ‘ভাষা ও ভাবের ছন্দ’ সৃষ্টি করেছে একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য। তথ্য, সত্য, অনুভব এবং ভাষার সম্মিলনে যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়, তা কবিতা হোক আর প্রবন্ধ হোক, সেটি উত্তম সাহিত্যে স্থান পেতে বাধ্য!



বিষাদের একটি খণ্ডিত প্রকাশ হলো ‘বিরহ’।

মীরা দেব বর্মন তার গানে লিখেছেন “বিচ্ছেদ হবে এত মধুর জানিতাম না আগেতে … বিরহ বড় ভাল লাগে।” এটি পরে শচীন দেব বর্মনের বিখ্যাত গানে রূপান্তরিত হয়। বাঙালি প্রেমের গল্পে তাই বিরহ থাকেই। বিরহ যেন প্রেমের ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ প্রাপ্তি। বিরহ ছাড়া প্রেমের সাহিত্য অপূর্ণ। লাইলি-মজনু, রোমিও-জুলিয়েট, ক্লিওপেটরা-এনতনি, শিরি-ফরহাদ, এসব প্রেমোপাখ্যান আমাদের কাছে আজও জীবন্ত হয়ে আছে শুধু ‘বিরহের’ কারণে। দেশ ভাষা এবং সময়কে অতিক্রম করে গল্পগুলো আজ কিংবদন্তী।



“আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, আবেগ আমাদের জীবনের প্রধান পরিচালক, উপলব্ধি না করেই আমরা আবেগের আনুগত্য করি।” বলেছেন ডাচ চিত্রশিল্পী ভিনসেন্ট ভেনগগ। আমরা কখন কীভাবে আবেগতাড়িত হই, তা জানি না। কিন্তু জানি কীভাবে আবেগতাড়িত করতে হয়। সেটি এক বিরাট প্রাপ্তি। শেইকসপিয়র অথবা নজরুলের মতো এই প্রাপ্তিকে সকলেই লেখায় বা কথামালায় প্রয়োগ করতে পারেন না। এটি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দ্বারা আসে না। আসে নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং গভীর জীবন বোধ থেকে। তাই যারা পারেন, তারা হয় প্রাকৃতিকভাবেই পেয়েছেন, নয়তো জীবনকে অনেক গভীর থেকে দেখেছেন।







‘পেইতোস’ বিষয়টিতে কেবলই পাঠক হিসেবে ‘খণ্ডিত পর্যবেক্ষণ’ তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণে যতটুকু বুঝেছি বা পেয়েছি, ততটুকুই লিপিবদ্ধ করে রাখলাম। ‘বিষাদ’ নিয়ে আরও ‘তথ্য এবং দৃষ্টান্তের’ অনুসন্ধান করছি। লেখাটি যদি কারও সাহিত্যচেতনাকে একটু নাড়া দিতে পারে, তবে মন্তব্যের মাধ্যমে অংশ নেবার অনুরোধ জানাই। বলা বাহুল্য, এটি একটি অসম্পূর্ণ লেখা।





















‘লেখালেখি’ নিয়ে অন্যান্য পোস্টগুলো:



১) ভালো লেখার ৩টি গোপন রহস্য



২) নোবেল বিজয়ী মো ইয়ানের লেখার স্টাইল



৩) কী লিখবো, কেন লিখবো



৪) হোমার যেভাবে হেলেনের ‘রূপ’ বর্ণনা করলেন...



৫) ব্লগ লেখার ভুলগুলো



৬) কবিতা তোমায় দিলাম পুরাই ছুটি





-----------------------------------------------------------------------

পরিশিষ্ট:



১) Ethos, Pathos এবং Logos সাহিত্য সৃষ্টি বা মৌলিক লেখার প্রধান স্তম্ভ। গল্প, কবিতা, উপন্যাস বা মহাকাব্য যা-ই হোক, তা পাঠকের নীতিবোধ, আবেগ এবং ভালো-মন্দ যাচাইয়ের ক্ষমতাকে আঘাত করতে হবে। ইতোস, পেইতোস, লউগোস।

২) Ethos/ নীতি: লেখায় প্রকাশিত নীতি, অর্থাৎ পাঠকের নীতিবোধকে আহত বা জাগ্রত করার উপাদান।

৩) Pathos/ বিষাদ: বিষাদ, দুঃখ, আবেগ, হর্ষ অর্থাৎ পাঠকের অনুভবকে স্পর্শ বা আহত করতে পারার উপাদান।

৪) Logos /যুক্তি: যৌক্তিকতা বা বিচারবুদ্ধির প্রয়োগ, অর্থাৎ পাঠকের যৌক্তিকতা-বোধকে আহত বা জাগ্রত করার উপাদান।

৫) বিভিন্ন মাধ্যম থেকে লেখকের ব্যক্তিগত অনুসন্ধান থেকে লেখাটি প্রস্তুত হয়েছে। এরিস্টটল’স রেটরিক এবং হোমারের দি ইলিয়াড পড়ার স্মৃতি থেকে হাতড়ে বের করেছি ‘বিষাদ’।

মন্তব্য ৬০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৬০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:২৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: মইনুল ভাইয়ের সেইরকম ওস্তাদী পোস্ট।
++++++++++++++++++++++++

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৫২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, প্রিয় খেয়া ঘাট ভাই...
এতো দরাজ দিলে প্রশংসা করেন যে, লজ্জাই পাই...

শুভেচ্ছা জানবেন :)

২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩৫

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: দারুন একটা পোষ্ট মইনুল ভাই! জাস্ট অসাম। প্রিয়তে নিলাম।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৫২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা আপনাকে, কাল্পনিক ভালোবাসা.... :)

৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫৩

না পারভীন বলেছেন: শিরোনাম ই আকর্ষণ করে নিয়ে এসেছে . এমন পোস্ট পেলে ব্লগ এ এত ঝামেলা পেরিয়ে এসে শান্তি লাগে . প্রিয়তে নিয়ে যাচ্ছি .সময় করে পড়ব।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৫৩

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: প্রিয়তে যেতে পেরে খুশি ;)
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা :)

৪| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২৪

শুঁটকি মাছ বলেছেন: অনেক পড়াশুনা করলেই এরকম পোস্ট লেখা সম্ভব। আপনার জ্ঞানের পরিধিটা বেশ বড়। পোস্টে প্লাস।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৫৪

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: প্রিয় শুঁটকি মাছ, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ...

৫| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:০৩

আসফি আজাদ বলেছেন: আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। বেশ ভালো লাগল ভিন্ন ধর্মী লেখা।
+++

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৫৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আগ্রহ নিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ :)

৬| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:০২

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: দারুন পোস্ট।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৫৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, বঙ্গভূমির রঙ্গমেলা :)

৭| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:০৭

মামুন রশিদ বলেছেন: অসাধারণ একটা লেখা পড়লাম । এরিস্টটলের প্রাচীন সূত্র কি চমৎকার ভাবে হাজার বছর ধরে বহন করে চলেছে বিশ্ব সাহিত্য ।

পোস্ট প্রিয়তে ।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৫৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: সত্যিই তাই। ধন্যবাদ, মামুন রশিদ ভাই
প্রিয়তে যেতে পেরে আনন্দিত... :)

৮| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:২৪

সুমন কর বলেছেন: ভিন্নধর্মী এবং গুরত্বপূর্ণ একটি পোস্ট। প্লাস দিয়ে গেলাম। পরে আবার পড়তে হবে।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৫৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: সুমন কর, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ :)

৯| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:২৫

শায়মা বলেছেন: খেয়াঘাট ভাইয়া সত্যিকারের বিশেষনে ভুষিত করিয়াছেন তোমাকে ভাইয়া। সত্যিই ওস্তাদী পোস্ট!!!!


আমার ধারণা আবেগ ছাড়া আর দুঃখ বিরহ ছাড়া কোনো লেখার কিছুই আমি বুঝিনা.......:(:(:(

তোমার ইলিয়াড, হেলেন, সুকান্ত রচনার সবখানেই আমি শুধু বিষাদটুকুই বুঝেছি....... যত কিছুই মেশাও লেখায় আমি শুধু বিষাদটুকুই বুঝি।

আমি অতি সামান্যা আনন্দবুঝা ও অতি অসামান্যা বিষাদপ্রেমী মানুষ আজকেই তাহা বুঝিলাম।:(:(:(

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: //আমার ধারণা আবেগ ছাড়া আর দুঃখ বিরহ ছাড়া কোনো লেখার কিছুই আমি বুঝিনা.......

ইলিয়াড, হেলেন, সুকান্ত রচনার সবখানেই আমি শুধু বিষাদটুকুই বুঝেছি....... যত কিছুই মেশাও লেখায় আমি শুধু বিষাদটুকুই বুঝি।//
---------------------------------------------------


-আপনি তো গল্প লেখেন, তাই এভাবে মিলে গেলো! খুশি হলাম, শায়মা :)
-তবে লেখাটিতে পর্যাপ্ত রসদ না দিতে পারায় অতৃপ্তি আছে আমার।
-তবু আপনাদের প্রশংসায় আমি কৃতজ্ঞ :)

১০| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৩৩

ইখতামিন বলেছেন:
অসাধারণ লাগলো

আবেগ তৈরি করতে হলে নিজের আবেগ এবং নিজের মূল্যবোধ দিয়ে সেটি আগে উপলব্ধি করতে হয়। একই সাথে পাঠকের অবস্থানটিকেও পরিমাপ করতে হয়। দারুণ

:)

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০৩

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: প্রিয় ইখতামিন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ :)
শুভেচ্ছা জানবেন...

১১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:০৬

এহসান সাবির বলেছেন: চমৎকার লেখা..!!

ব্লগে এই ধরনের লেখা খুব কমই পাই।

ধন্যবাদ এই সুন্দর পোস্টের জন্য....

+++++++++

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০৪

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, এহসান সাবির...
এবং ব্লগের এই এলাকায় স্বাগতম :)

১২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:১৩

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: পোষ্টের ব্যপারে বলতে হয় - ফাডায় লাইছেন !!

আপনি আসলেই জিনিয়াস মানে '' জিনিস ' :P :P

আপনার লিখা পড়ে চেতনার পিলার পুরাই নড়ে গেছে , ঝাকি দিলেই আবেগে কাইন্দালামু :P :P

কিন্তু আমার স্ত্রী ঠিক প্রতিশোধ গ্রহণের সময়টিতে থাকে অনুপস্থিত। বলুন, কেমন লাগে! খুব খারাপ লাগতেছে =p~ =p~

মজা পেলাম মাইনুল ভাই , অবশ্যই আপনি অনেক মজার মানুষ । পোস্ট অনেক ভাল লাগল । ভাল থাকুন ভাই। শুভকামনা রইল । :) '

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আপনার লিখা পড়ে চেতনার পিলার পুরাই নড়ে গেছে , ঝাকি দিলেই আবেগে কাইন্দালামু

=p~ =p~

আপনাদের এতো মজার মানুষের মাঝে কেউ বেরসিক থাকতে পারে?

অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা রইলো, প্রিয় মাহমুদ০০৭ :)

১৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:১৮

রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: বেশ ভালো পোষ্ট ।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ :)

১৪| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৩

সকাল রয় বলেছেন:

আবেগের কাছে যুক্তি অচল।

এতসব কিছু প্রয়োগ করতে পারিনা বলেই ভালো লিখিয়ে হতে পারছিনা। চেষ্টা থাকবে।
উপকারেআসবেআপনার পোষ্ট

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০৯

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: সহমত। উপকারে আসলেই আমি ধন্য।

সকাল রয়, আপনার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

এবং ব্লগের এই পাতাটিতে স্বাগতম :)

১৫| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৪

ওবায়েদুল আকবর বলেছেন: ওয়াও অসাধারণ একটা পোস্ট। কাহিনী নির্মাণে আপনার পরামর্শ মেনে চললে বাঙলা সিনেমাকে যে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবেনা এটা নিশ্চিত।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ওবায়েদুল আকবর :)

১৬| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৭

ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন: অসাধারন !!

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: ইসতিয়াক অয়নকে অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা :)

১৭| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৯

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: গবেষণা-ধর্মী পোস্ট। আসলে সবকথার শেষ কথা হল দর্শক বা পাঠককে ধরে রাখা, তাই না?

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: মানসম্মত লেখকদেরকে ‘পাঠক ধরে রাখার’ চেষ্টা সচেতনভাবে করতে হয় না। সেটি এমনিতেই হয়ে যায়।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, বোধহীন স্বপ্ন :)

১৮| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪০

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: শুধু এটুকু বলার ক্ষমতা রাখি , দুর্দান্ত একটি ব্লগ পোষ্ট !

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১৪

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আপনাদের প্রশংসায় সত্যিই মুগ্ধ...
সামু আমার প্রিয় থেকে প্রিয়তর হচ্ছে দিন দিন...

এটি হচ্ছে আপনাদের মতো প্রিয় সহব্লগারদের জন্য :)

স্বপ্নবাজ অভিকে অনেক ধন্যবাদ :)

১৯| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:



দুর্দান্ত পোস্ট ++++ ক্লাসিক

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
দুর্দান্ত মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, প্রিয় কাণ্ডারি অথর্ব :)

২০| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় বরাবরের মতই সাধুবাদ রইলো।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
বিষযটিই জ্ঞানগর্ভ... লেখা ততটুকু হয় নি।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, মোঃ ইসহাক খান।
ভালো থাকবেন... :)

২১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:২৪

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: এত সুন্দর একটি লেখা অনেক দিন পর পড়লাম,,,,,,,,,ভাল লাগায় মন ভরে গলে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যে অনেক প্রেরণা পেলাম, লাইলী আরজুমান খানম লায়লা :)

২২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার লেখা। অনেক কিছু জানতে পারলাম।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৯

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আপনার ‘চমৎকার’ উপস্থিতি আমার জন্য সবসময়ই আনন্দের :)

ধন্যবাদ জানবেন, জনাব হাসান মাহবুব ভাই
ভালো থাকুন :)

২৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৫২

লেখোয়াড় বলেছেন:
সুন্দর ক্লাস নিয়েছেন।
মনে রাখার মতো।
এগুলো নিয়ে সাধারণত কেউ আরোচনা করে না্।

ধন্যবাদ।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:১০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আমার লেখায় আপনাকে জানাচ্ছি আন্তরিক স্বাগতম :)

লেখোয়াড়কে অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা...

২৪| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৫

আরজু পনি বলেছেন:

হ্যাঁ, নিজের শিক্ষকতার সার্টিফিকেটটির গুরুত্ব কমে গেছে আপনার এই লেকচার শোনার পড় । নিজেকে এখন শিক্ষার্থী মনে হচ্ছে ! :|

ভয়ে ভয়ে শোকেসে নিলাম ।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১১

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আপনার কথায় অনেক ‘আবেগ’ আছে ;) B-)
আপনার শোকেসে যেতে পেরে ধন্য হলাম...
আরজুপনিকে অনেক দিন পর পেয়ে ভালো লাগলো। :)

মানুষ তো সারা জীবনই শেখে। সেই অর্থে আপনি-আমি সকলেই পরস্পরের শিক্ষক অথবা শিক্ষার্থী। বিনয়ী মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম।

অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা... :)

২৫| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:১২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সোজা প্রিয়তে।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:০৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: ধন্যবাদ মাহমুদুর রহমান ‍সুজন...
শুভেচ্ছা জানবেন :)

২৬| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: শ্রদ্ধেয় ব্লগার মাইনুদ্দিন ভাই, আপনার লেখাটি ব্যাপক পরিসরে এবং তথ্য বহুল। এই ধরনের লেখা পাঠকের জন্যে যেমন উপকারি , লেখকেরও তাতে কম উপকার নয়। দিনের শেষে তথ্য উপাত্তগুলো লেখকের রত্ন ভাণ্ডারেই তো জমা হচ্ছে। :)

সামান্য একটু তথ্য যোগ করতে চাই। এখানে একটা নির্দিষ্ট যুগের সাহিত্য বাদ পড়ে গেছে – ওল্ড এন্ড মিডল ইংলিশ। এই সময়কার সাহিত্য নিয়ে আলোচনা ইংরেজি সাহিত্যের গবেষকরাও অনেক কম করেছেন। কিন্তু পেগান ইংরেজি সাহিত্যে যে সার্থক ভাবে এলিজিক টোন এবং মোড ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তার দৃষ্টান্ত বিশ্ব সাহিত্যের ইতিহাসে বিরল।

দা ওয়ান্ডারার , দা সি ফেরার, এপিক কবিতা বেউলফ এবং ভাইকিংদের আক্রমন ঠেকাতে এংলো – স্যাক্সনদের ব্যারথ কিন্তু মহৎ যুদ্ধের ওপর লেখা এপিক- ব্যাটল অফ ম্যালডন – এগুলির নাম কম শোনা যায়, কিন্তু এলিজিক কাব্য হিসেবে - প্যাথোসের রসে সিক্ত হবার জন্যে এরা অনন্য।

ভালো লেগেছে লেখাটি। শুভেচ্ছা জানবেন। :)

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: হুম, সত্যি। লেখকেরই উপকার হয়। অন্তত আমার ক্ষেত্রে। আপনার জ্ঞানগর্ভ মন্তব্যে আমার লেখাটি সম্মানীত হলো। এরকমই চেয়েছিলাম আমার লেখার শেষ কথাগুলো দিয়ে।

আপনার দৃষ্টান্তগুলো চমৎকার সাক্ষী হয়ে থাকবে। সাহিত্যের প্রাণ হলো পেইতোস। হর্ষ এবং বিষাদ ছাড়া সাহিত্যে নিরাত্মা।

অনেক ধন্যবাদ, সাজিদ উল হক আবির :)
এবং আমার লেখায় আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি...

২৭| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩১

এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল স্বর্ণা বলেছেন:
এসম্পর্কে পড়েছি লাস্ট উইক, রাইটিং ক্লাসে।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: তাই নাকি? ধন্যবাদ, একস্ট্রাটেরেস্ট্রিয়াল স্বর্ণা, দেখা দেবার জন্য। অনেক দিন আপনার দেখা পাই নি। শুভেচ্ছা :)

২৮| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৫৮

এরিস বলেছেন: প্রিয়তে!!

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা নিন...! :)

এরিসকে অনেক দিন পরে পেলাম?

২৯| ১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ২:১৪

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:



প্রিয়তে ৷

১৪ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ :)

৩০| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২০

শামছুল ইসলাম বলেছেন: সামুতে আমার আগমন মার্চ, ২০১৫।
তাই আপনার অনেক মূল্যবান, শিক্ষণীয় পোস্ট থেকে আমি বঞ্চিত হয়েছি।
সেই ক্ষতিটা কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য আমার এই প্রচেষ্টা।

সৃষ্টিশীল লেখার কোন বয়স নেই, সে চিরতরুণ।

//পাঠকের হৃদয়কে জয় করার উদ্দেশ্যে গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল সাহিত্যের আবেদনকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছিলেন: ১. নীতি বা বিশ্বাসযোগ্যতা (Ethos), ২. আবেগ বা বিষাদ (Pathos) আর ৩. যুক্তি বা গ্রহণযোগ্যতা (Logos)। তার মতে লেখায় থাকতে হবে নৈতিক আবেদন, অনুভবের আবেদন এবং যুক্তির আবেদন। গল্প কবিতা অথবা উপন্যাস, যা-ই হোক, এ তিনটি বিষয় আনুপাতিকভাবে থাকা চাই। এতিনটি মৌলিক বিষয়কে ‘ভাব প্রকাশের’ প্রধান কৌশল হিসেবে দেখা হয়: বলা হয় রেটরিকেল ট্রায়াঙ্গেল Rhetorical Triangle।//

উদাহরণ সহ চমৎকার ব্যাখ্যা করেছেনঃ

//*আবেগ তৈরি করতে হলে নিজের আবেগ এবং নিজের মূল্যবোধ দিয়ে সেটি আগে উপলব্ধি করতে হয়। একই সাথে পাঠকের অবস্থানটিকেও পরিমাপ করতে হয়।

“আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। … … আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়। কি অন্যায় করেছিলাম?...”

বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের শুরু থেকেই বুঝা যায় তিনি কীভাবে বিষাদাক্রান্ত হয়েছেন।//

শেষ প্যারাটা আমার কাছে প্রণিধান যোগ্য মনে হয়েছেঃ

//শেইকসপিয়র অথবা নজরুলের মতো এই প্রাপ্তিকে সকলেই লেখায় বা কথামালায় প্রয়োগ করতে পারেন না। এটি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দ্বারা আসে না। আসে নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং গভীর জীবন বোধ থেকে। তাই যারা পারেন, তারা হয় প্রাকৃতিকভাবেই পেয়েছেন, নয়তো জীবনকে অনেক গভীর থেকে দেখেছেন।//

ভাল থাকুন। সবসময়।



১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আপনার মন্তব্য পড়ে আবার লেখায় ফিরে গেলাম। ফিরে গেলাম ব্লগারদের মন্তব্যের দিকে। আবারও পড়া, আবারও ভাবনা। ভাবছি এবিষয়ে আরও দু’একটি পর্ব লেখবো।

এজন্য আপনাকে দায়ি করছি। আপনার প্রেরণাকে ক্রেডিট দিচ্ছি।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে... শামছুল ইসলাম :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.