নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি উড়তে চাই পড়তে চাই কিন্তু থেমে যেতে চাইনা

ঠেটু

Truth is everybody is going to hurt you: you just gotta find the ones worth suffering for

ঠেটু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমকামিতা ও আমার অবস্থান ( যদিও আমি এটা পছন্দ করি না )

০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪০

কোন এক প্রেক্ষিতে কোন এক সময় কথাপ্রসঙ্গে
একদিন আমেরিকান অথবা ইউরোপীয় কোন এক
গীর্জার যাজকের বক্তব্য উঠে আসে; যে তার চার্চে
সমকামিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছেন এবং এরজন্য
দরকার হলে তিনি কারাবরণ এমনকি মৃত্যুবরণ করতেও
রাজি আছেন।যাজকের এই ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন
তোলা যেতেই পারে এবং তার সত্য-মিথ্যা যাচাই
করার কোন ইচ্ছাও আমার নেই।
তবে যেটা নিয়ে আমাদের সত্যতা যাচাইয়ের কোন
দরকার পড়ে না সেটা হলো সমকামিতা! না আসলে
সমকামিতা বললে ভুল হবে তার চেয়ে বলা ভালো এটা
নিয়ে আমাদের মনোভাব।
ছি!
ঐ লোকটি সমাকামি! কথাটি শোনা মাত্রই চোখের
দৃষ্টিটা একটু পালটে যেয়ে কেমন যেন বাঁকা-বাঁকা
চোখে তাকানো শুরু হলো তার সাথে ভ্রুটাও কুঁচকে
গেল, নাকটাও সিটকে গেল আর শরীরটা ঘিনঘিন
করতে করতে পেটের ভেতর থেকে অবজ্ঞা বমির মত
থেকে বের হতে লাগল (কারো-কারো অবশ্য
সতিকারের বমিভাব চলেও আসতে পারে)। ঐ লোকের
সাথে খাওয়া-বসাতো দুরের কথা যে রাস্তায় হাঁটাও
যাবে না আর যদি কোনদিন দুর্ভাগ্যক্রমে চোখের
সামনে চলে আসে তাহলে তো সেখানেই টাটা-বাই-
বাই!
আমাদেরকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় কেন আমরা এই
সমকামিদের পছন্দ করি না, অধিকাংশ ক্ষেত্রে যে
উত্তরটি আসার সম্ভাবনা প্রবল সেটা আপনাকে
বলবে কারন এই সমকামি বিষয়টি অস্বাভাবিক এবং
প্রকৃতিবিরুদ্ধ! এই উত্তরটা নিয়েই বরং শুরু করা যাক
আসলেই কি সমকামিতা অস্বাভাবিক এবং
প্রকৃতিবিরুদ্ধ?
এখন আমরা যদি “অস্বাভাবিক” এই শব্দটা নিয়ে
চিন্তা করি তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে কোন
বিষয়টিকে আমি অস্বাভাবিক বলব? একদম সহজ
উত্তর যেটা স্বাভাবিক নয় সেটাই। তাহলে স্বাভাবিক
কোনটি? এটারও উত্তর একদম সহজ যেটা সবাই করে
সেটাই স্বাভাবিক। তার মানে দাড়াচ্ছে যেহেতু
আমাদের সব মানুষই বিসমকামি(sex with opposite
gender)তাই এর মধ্যে যদি দুই-একটা সমকামি বের
হয়ে যায় তাহলে তা অবশ্যই অস্বাভাবিক বলে
বিবেচনা করাই ঠিক হবে।
যে যুক্তির পথ ধরে আমরা সিদ্ধান্তটি নিলাম তা
নেওয়ার আগে আমরা যদি কিছু ইনফরমেশন জেনে নেই
তাহলেতো কোন সমস্যা নেই।
ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী আলফ্রেড
কিন্সের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি দশ জন ব্যক্তির
একজন সমকামি!কিন্তু কিন্সের গবেষণা তো ছিল সেই
চল্লিশের দশকে! তাহলে একটু বর্তমানের দিকে আসা
যাক ১৯৯০ সালে ম্যাকহৃটার, স্টেফানি স্যান্ডার্স
এবং জুন ম্যাকহোভারের করা গবেষনা বলে,
পৃথিবীতে শতকরা প্রায় চোদ্দ ভাগের মত সমকামি
রয়েছে। এর পরে আবার ১৯৯৩ সালে “জেনাস রিপোর্ট
অন সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার” থেকে জানা যায়,
পুরুষদের মধ্যে প্রায় শতকরা নয় ভাগ এবং মহিলাদের
মধ্যে শতকরা ৪ ভাগ সমকামি রয়েছে। সমকামিদের
এই সংখ্যাটা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হলেও কিন্তু এ
পরিসংখ্যানগুলোর পরিসীমা একে অন্যের খুব
কাছাকাছি(মোটামুটি ৫-১৫ ভাগ)।
কিন্তু সত্যিকার অর্থে আপনার কি মনে হয় এই
পরিসংখ্যানগুলো সত্যিকারের সংখ্যা বলছে?
এমনটা তো নয় যে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় কেউ
নিজেকে সমকামি বলে দাবী করলে সমাজ তাকে
পুরস্কৃত করবে বরং আমাদের সামাজতো কোন সময়
মেনে নিতে পারেনি এই সমকামিতাকে (যেমনটা
মধ্যযুগে একদল মানুষকে ডাইনী অপবাদ দিয়ে হত্যা
করা হয়ছিল), সে জায়গায় একজন কীভাবে দাড়িয়ে
সাহস করে বলবে সে সমকামি যতই তার নাম-পরিচয়
গোপন রাখা হোক(তারও তো প্রানের মায়া আছে)।
তারপরেও যদি সংখ্যাটা কম মনে হয় তাহলে বলি,
পৃথিবীর জনসংখ্যা যদি ৭ বিলিওন হয় আর এর মধ্যে
যদি ৩৫ কোটি থেকে ১০৫ কোটি (জনসংখ্যার ৫-১৫
ভাগ) মানুষ সমকামি হয় তাহলে সে সংখ্যাটিকে কি
সামান্য বলা ঠিক হবে?
সমকামিতা প্রকৃতিবিরুদ্ধ এই প্রসঙ্গটা নিয়ে তাহলে
কি বলা যায়? যদি এটা প্রকৃতবিরুদ্ধ হয়ে থাকে
তাহলে অবশ্যই প্রকৃতি কি তার নিজের স্বার্থেই
এইসব সমকামীদের টিকিয়ে রাখত? আচ্ছা ধরে নিলাম
সমকামিতা মানুষদের মাঝে না হয় ভুল করে এটা চলে
এসেছে কিন্তু অন্যন্য প্রানীদের মধ্যে এটা থাকবে
না। তাহলে আরেকটু জানিয়ে রাখি ২০০৬ সালের
হিসেব অনুযায়ী বিজ্ঞানীরা প্রানীজগতে ১৫০০‘রও
বেশী প্রজাতিতে সমকামিতার সন্ধান পাওয়া গেছে
আর মেরুদন্ডী প্রাণীর তিনশ’রও বেশী প্রজাতিতে
সমকামিতার অস্তিত্ব খুব ভালভাবেই নথিবদ্ধ ।
সংখ্যাগুলো কিন্তু প্রতিদিনই বাড়ছে। তালিকায়
স্তন্যপায়ী প্রানী থেকে শুরু করে পাখি, মাছ, সরীসৃপ,
উওভচর, কীটপতঙ্গ সবই আছে।
ন্যাশনাল জিওগ্রাগিক চ্যানেলে সম্প্রতি ‘Out in
Nature: Homosexual Behavior in the Animal
Kingdom’ নামের একটি ডকুমেন্ট্রিতে প্রানীজগতের
অসংখ্য সমকামিতার উদাহরণ তুলে ধরা হয় ।
[কারো যদি দেখার ইচ্ছে হয় তাহলে ইউটিউবে দেখে নিয়েন]
এবং আমি মানি আর না মানি তাতে এটা প্রমানিত
হয়না যে সমকামিতা একটি পাপ এবং যে মানুষটি এটা
করে সে চুড়ান্তরকমের অপরাধী। হায়রে মানুষ আমরা!
আমরা নিজেরা এই প্রকৃতির অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটা
অংশ এবং সবচেয়ে অসহায় অংশ, আমার নিজের মানা
কিংবা না মানাতে আসলে প্রকৃতির কিচ্ছু যায়-আসে
না। আর প্রকৃতি যদি মনে করত তাহলে অনেক কিছুর
মতই সমকামিতাও বিলুপ্ত হয়ে যেত।তারপরেও যেহেতু
লড়াই করে টিকে আছে, তাই?
সর্বশেষ কথা আমি কাউকে সমকামিতা সমর্থন করার
জন্য বলছি না এমনকি কাউকে এটাও বলতে বলছি
সমকামিতা ভালো। এটা সম্পুর্ন আপনার নিজের
ব্যাক্তিগত চিন্তা-ভাবনা। কারো নিজস্ব চিন্তা-
ভাবনাকে পালটানো আমার কাজ নয় বরং আমি
সর্বোচ্চ যেটা করতে পারি তা হলো আপনার চিন্তা-
ভাবনার জগতে একটু আলতোভাবে ঝাঁকি দিতে, এর
বেশি সামর্থ্য আমার নেই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৫০

সজীব মোহন্ত বলেছেন: ভালো পোষ্ট

২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:০২

ঠেটু বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.