নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চলের বন্দর নগরী জেদ্দা। লোহিত সাগরতীরে গড়ে ওঠা এ শহর পর্যটকদের কাছে পছন্দের একটি জায়গা। সৌদি সরকারের ভিশন ২০৩০ মাথায় রেখে সাগরপাড়ে গড়ে ওঠা ইন্টারন্যাশনাল হোটেলগুলোর সামনের ৫ কিলোমিটার পথ বিশ্বমানের আদলে গড়ে তুলেছে শহর কর্তৃপক্ষ। এই আলো–ঝলমলে শহরের শারাফিয়ায় ২০১২ সাল থেকে আমার বসবাস। আমার বাসা থেকে লোহিত সাগরতীর গাড়িতে ১০-১৫ মিনিটের দূরত্ব।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমি সমুদ্রের কাছে যাই। আর সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করি। প্রবাসীদের জীবন এই ঢেউয়ের মতো, কখনো উত্থান কখনো পতন। সমুদ্রের ঢেউ দেখলেই নিজের জীবনের সঙ্গে মিল খুঁজে পাই। এভাবে কখনো সন্ধ্যা কখনো মধ্যরাত পর্যন্ত সাগরের কাছে কাটিয়ে ফিরে আসি চিরাচরিত কর্মময় পরিবেশে।
মূল কথায় আসি। যে শহর ২৪ ঘণ্টা কর্মমুখর, সেই শহর আজ করোনা মহামারিতে অচেনা এক শহর। জেদ্দা শহরের প্রাণকেন্দ্র বালাদে, যাকে শপিংয়ের রাজধানী বলা হতো, সেখানে প্রবেশ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে থাকতে হতো। করোনা এই সময়ে মাত্র পাঁচ মিনিটে পুরো বালাদ আপনি গাড়ি দিয়ে চক্কর দিতে পারবেন। গত তিন মাসে একবারও যাওয়া হয়নি আমার প্রিয় জায়গা লোহিত সাগরতীরে। করোনা মহামারিতে আমার সীমিত ডিউটি চালু ছিল এবং ২৯ মার্চ থেকে জেদ্দায় ২৪ ঘণ্টা লকডাউনের সময় বাসায় থেকে রাসুলের জীবনী ও ‘প্রথম আলো ভাষারীতি’ পড়েছি। নামাজ শিক্ষা বই শেষ করতে পারিনি।
সৌদি আরবে প্রায় ২১ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন। আমি যেহেতু জেদ্দা কনস্যুলেটের সঙ্গে যুক্ত, প্রায় দিনই ফোন আসে করোনায় মৃত ব্যক্তির কাগজপত্র বিষয়ে। কষ্ট লাগত আমার মতো আরেকজন প্রবাসী ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে। কত রঙিন স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল এই মরুর দেশে। কত মা তাঁর সন্তানকে দেখতে পাবেন না, সন্তান তার বাবাকে দেখতে পায়নি। এভাবে অসংখ্য প্রবাসী চলে যাচ্ছেন সুন্দর এই দুনিয়া থেকে। আমি যখন এই লেখা লিখছি , তখন মেসেজ পেলাম ২৮ মে পর্যন্ত করোনায় বাংলাদেশির মৃত্যুর সংখ্যা এ দেশে ১৭১।
প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসকদের মতে, অসচেতন হওয়ায় বাংলাদেশিদের মৃত্যুহার বেশি। অসুস্থ হলে দেরিতে হাসপাতালে যাওয়াকে মূল কারণ হিসেবে তাঁরা চিহ্নিত করেছেন। করোনায় বন্দী এই জীবনে মায়ের সঙ্গে প্রায় দিনই কথা হতো, কিন্তু মায়ের মন কী আর মানে? সৌদি আরবে মৃত্যুসংবাদ দেখলেই মা ছোট ভাইদের বলে, ‘মোবারককে কল দাও! মেসেজ করো!’
মায়ের সঙ্গে প্রায়ই কথা হয় দীর্ঘ সময়। মা আমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। ‘তোর একটা আলাদা ঘর যদি আমি দেখে যেতে পারতাম। তোর ঘরে যদি আমি কিছুদিন থেকে যেতে দেখে পারতাম।’ এই কথা বলে আর কাঁদে। এ পাশে থাকা প্রবাসী ছেলেও কাঁদে, কিন্তু বুঝতে দেয় না। কারণ, প্রবাসী ছেলে জানে, সে কাজ করে যে বেতন পায়, ঠিকমতো নিজেই চলতে পারে না। ঘর তো দূরের কথা। বেঁচে থাকতে মায়ের স্বপ্ন পূরণ হবে কি না, জানি না। রবের কাছে প্রার্থনা করি, মা যেন বেচে থাকে তার সন্তানের ঘর দেওয়া পর্যন্ত।
২৬ এপ্রিল সৌদি আরব সরকার কারফিউ শিথিল করায় আমার কাছে ঈদের খুশি লেগেছে। কারণ, প্রবাসীদের অনেকেরই পকেট শূন্য, আমি তার ব্যতিক্রম নই। আমার মতো হাজারো প্রবাসী পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এই কারণে আমাদের দিকে হাজারো প্রবাসী পরিবার চেয়ে থাকে। করোনামুক্ত পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। এই শহরে আবার প্রাণ খুলে হাসতে–বাঁচতে চাই।
প্রথম আলো দূর প্রবাস
প্রথম আলো দূর প্রবাসে প্রকাশিত আমার লেখা ।
২| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩৬
আমি সাজিদ বলেছেন: স্পর্শ করে গেলো। সাবধানে থাকুন। নিরাপদে থাকুন। প্রবাস জীবন কি সবসময় অখুশীর? এই যে চাইলেই আপনি আজকে ভিডিও কলে ঘন্টার পর ঘন্টা বাবা মায়ের সাথে কথা বলতে পারবেন। দশ বছর আগে কিন্তু এইটা সম্ভব ছিল না। আশা করি লক ডাউনের পর আবার নতুন করে সব কিছু শুরু করবেন।
৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৯:০৯
মোবারক বলেছেন: দোয়া করবেন, পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে
৩| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩৯
বিজয় নিশান ৯০ বলেছেন: দেশেও অনেকে কষ্টে আছেন । কিন্তু বলতে পারেন না
৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৯:০৯
মোবারক বলেছেন: রাইট
৪| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৫৫
শের শায়রী বলেছেন: সব জায়গায় আমরা সবাই কষ্টে আছি, তবে প্রবাসে থেকে এই ধরনের কষ্ট অনেক বেড়ে যায়, কিছুটা অভিজ্ঞতা আছে। সাবধানে থাকুন। ভালো থাকুন।
৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৯:১০
মোবারক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
৫| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৯:০৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: জীবন থেকে নেয়া।
৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৯:১০
মোবারক বলেছেন: জি , ধন্যবাদ আপনাকে
৬| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৯:০৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
তেলের দাম কমার পর, বাংগালীরা বেতন পাবে?
৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৯:১১
মোবারক বলেছেন: অনেক সমস্যা দেখা দিচ্ছে , সামনের দিন গুলো আরও খারাপ যাবে বেকার হবে।
৭| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: মধ্যপাচ্য অনেক লোক বেকার হবে। করোনায় সৌদিতে বেশী বাঙ্গালী মারা গিয়েছে। কি কারণ মনে হয় আপনার
৮| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ১০:১০
মাহিরাহি বলেছেন: আল্লাহ আপনার এবং আপনার মায়ের ইচ্ছা পূরণ করুন।
৯| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: প্রবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্ট সৌদি প্রবাসীদের।
১০| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:০৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার পোস্টটা হৃদয়স্পর্শী!
আপনার রোগমুক্ত প্রবাস জীবন কামনা করছি, সেই সাথে দেশে থাকা আপনার স্বজনদেরও।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৮:২৭
মোবারক বলেছেন: Click This Link