![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(প্লিজ লেখাটি পড়ুন এবং সতর্ক হোন)
======================
প্রথমে শুরু করি আমার মাকে নিয়ে। উনি ডায়বেটিস সহ আরও কিছু সমস্যায় ভূগছেন। একজন কিডনির ডাক্তার উনাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বললেন কিডনিতে স্পট আছে আর এটার ভাল চিকিৎসা না হলে অচিরেই কিডনি বিকল হবে। ওই ডাক্তারের কথা মত চিকিৎসা শুরু হল। প্রতিবার তার কাছে গেলেই বিভিন্ন টেষ্ট ধরিয়ে দিয়ে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে টেষ্ট করতে বলা হত। প্রতিবারেই মোটা অংকের বিল পরিশোধ করতে হত। এভাবে বেশ কয়েক বছর কেটে যাবার পর মা ডাক্তার বদল করলেন। নতুন ডাক্তার অল্প কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই মাকে জানালেন উনার কিডনি ঠিকই আছে,ওতে কোন স্পট বা অন্য কোন অসুবিধা নেই। বরং এতদিন যে ভুল চিকিৎসা হয়েছে এতেই বরং কিডনির ক্ষতি হয়েছে আর টাকা করি তো গেছেই।
এবার আসি আব্বার প্রসঙ্গে। উনি ষাট উর্ধ আর গত পনর বৎসর যাবৎ চশমা পরেন। চশমা ছাড়া যাবতীয় কাজ করলেও লেখা পড়া জাতীয় কোন কিছুই করতে পারেন না। কোন কিছু লিখতে বা পড়তে চশমা লাগেই লাগে। দিনকে দিন অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। ঢাকার একজন চক্ষু বিশষজ্ঞ যার নিয়মিত রুগী আমার বাবা,তিনি বললেন চোখে ছানি পরতে শুরু করেছে। এর থেকে পরিত্রান পেতে হলে অপারেশন করতে হবে। কিছু ব্যাবস্থা পত্র দিয়ে একমাস পর আবার দেখা করতে বললেন। আব্বা একমাস পর দেখা করতে গেলে বিশেষ অজ্ঞ ডাক্তার জানাল এই একমাসেই অবস্থার অনেক অবনতি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আব্বা অচিরেই অন্ধ হয়ে যাবেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশান করে ঐ ছানি সরাতে হবে। এর জন্য উনার ফি এক লাখ টাকা নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব দেখা করতে বললেন। ডাক্তারের এই কথা শুনার পর আব্বা টেনশানে আরও কম দেখা শুরু করলেন। অপারেশনের সব কিছু ঠিকঠাক। আরো একটু নিশ্চিত হবার জন্য আব্বা গেলেন বাসার দুই কদম দূরে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল। হাসপাতালের ডাক্তার আব্বার চক্ষু দুইখান পরীক্ষা করে জানালেন চোখ ঠিক আছে,ওতে কোন ছানি নেই। আব্বা তির্যক ভাবে ডাক্তারকে প্রশ্ন ছুড়ে জিজ্ঞাস করলেন,তাহলে আমি চোখে কম দেখি কেন? ডাক্তার বললেন,চোখে কম দেখার কারন আপনার চশমায় সঠিক পাওয়ার নাই।আমরা বুঝতে পারলাম ঐ এক লক্ষ টাকা হজম করতেই আগের ডাক্তার চোখে ছানি পরার গল্প ফেদেছিলেন।
আমার নিজের একটি ঘটনা বলেই শেষ করব। বিশ্ব বিদ্যালয় শেষ করে সবে একটা চাকরিতে ঢুকেছি। মুখে একটা সমস্যা নিয়া এক মেজর জেনারেল ডাক্তারের নিকট গেলাম। উনি কিছু দামী ক্যাপসুল দিলেন। মাস খানেক পর আরও দামী ক্যাপসুল খাওয়ার পরও যখন ভাল হলাম না তিনি বিষন্ন্ মুখে জানালেন তোমার ক্যানসার হয়েছে। উনার নির্দেশে গেলাম এক ব্রিগেডিয়ার ডাক্তারের কাছে। তিনি তিন মিনিটেই জানালেন মুখে অপারশান করতে হবে। অনেক টাকার ব্যাপার। আব্বা বিষয়টা জেনে আমাকে নামিদামী এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন কনফার্ম হবার জন্য। তিনি এক মিনিটের কম সময়ে আমার মুখের ভেতরের ঐ গুটা গুলি দেখে বললেন তোমার কোন সমস্যা নাই। মুখের ঐ গুটা কোন রোগ না,স্বাভাবিক ভাবেই অনেকের মুখে থাকে। উনি আরও বললেন উনার সিদ্ধন্ত কেউ ভুল প্রমান করতে পারলে উনি এই পেশাই ছেড়ে দিবেন। তবে উনিই সঠিক,আল্লাহর রহমতে গত ষোল বৎসর আমি ভালই আছি। ক্যানসার হলে নিশ্চই সেটা সম্ভব হতনা।
আমার মা ভুল চিকিৎসায় কিডনি হারাতে পারত,বাবার ভাল চোখ নষ্ট হতে পারত আর আমি ভুল ঔষধের পার্শ্বপ্রতিকৃয়াতেই মারা যেতে পারতাম। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় যে অর্থ আমরা খুইয়েছি সেটার কথা বাদই দিলাম। পরিশেষে সবাইকে একটি কথাই বলব,যত বড় ডাক্তারই হোক আপনার সন্দেহ হলে দ্বিতীয় বার ভাবুন। সম্ভব হলে বড় রোগের ক্ষেত্রে একাধিক ডাক্তারের পরামর্শ নিন ।মনে রাখবেন আমাদের সমাজে শুধু ডিগ্রীধারি ডাক্তার নয় কিছু ডিগ্রীধারী ডাকাতও আছে। ওদের থেকে সাবধান।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:১৬
খেয়া ঘাট বলেছেন: ।মনে রাখবেন আমাদের সমাজে শুধু ডিগ্রীধারি ডাক্তার নয় কিছু ডিগ্রীধারী ডাকাতও আছে। ওদের থেকে সাবধান।
কী ভয়াবহ অবস্থারে ভাই।