![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“হাসনাত”
হালের টকশো আর খবরের কগজে বিভিন্ন বিষয়ে অত্যন্ত খুলাখুলি মত প্রকাশ করে সাংসদ গোলাম মাওলা রনি তরুন সমাজে জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব । টকশোতে তার কথা বলার ষ্টাইল ও যুক্তিতে দর্শক আকৃষ্ট হয় মন্ত্র মু্গ্ধের মত। ক্ষেত্র বিশেষে বারাবারি করার প্রবণতা বা বাচালতার দুষ থাকলেও সমকালীন দুর্নিতি আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে দর্শক মনে একটি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন । বর্তমান সরকারের প্রভাবশালী ব্যাক্তি দরবেশ বাবার সাথে মল্ল যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বেশ কিছুদিন হাজতবাস করলেন । পত্রিকায় দেখলাম এই ঘটনা তার বড়ই মনোকষ্টের কারন।
এমপি রনি ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার দুই ব্যাজ অগ্রজ । তার সাথে আমার ব্যাক্তিগত পরিচয় ছিলনা,আজও নেই । তবে টকশোতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার বাকযুদ্ধ দেখতে দেখতে আমি তার ভক্ত বনে গিয়েছিলাম । কিন্তু আমি মুটামুটি নিশ্চিত ছিলাম অচিরেই এই অবোধ বালক ধরা খাবেন । কারন তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। সরকারের সামগ্রীক দুর্নিতির বিরুদ্ধে কথা না বলে ব্যাক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে তির্যক মন্তব্য করছেন । ক্ষমতাসীন দলের এমপি হয়েও তিনি নিজ দলের এমপি দরবেশ বাবা বা আবুলদের সমালোচনা করেছেন । সার্বিক বিচারে সরকারের দুর্নিতির বিরুদ্ধে তাকে সুচ্চার হতে দেখা যায়নি । যে কারনে তার আচরনে অনেকেই মনে করেন দেনা পাওনার হিসাবে গরমিল থেকেই ঐ ব্যাক্তি বিশেষের সাথে তার দন্দ্ব রয়েছে । আর ব্যাক্তি কেন্দ্রিক সমালোচকের মধ্যমণি হয়ে ব্যাক্তি বিশেষের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন ।
আমার অগ্রজ এমপি রনি খুবই বুদ্ধিদৃপ্ত যুবক । অল্প সময়ের ব্যাবধানে তিনি আজ ধনাঢ্য ব্যাক্তি । স্কুল পাশ করা রনি ভাই অল্প বয়সে রুনি ভাবীকে বিয়ে করে ঢাকা শহরে টিউশনির পয়সায় দিন পার করেছেন । বেঁচে থাকবার অদম্য বাসনায় সাংবাদিকের কলম হাতে তুলে নিয়েছেন । বিভিন্ন ব্যাবসায় তরিৎ গতিতে কোটিপতি হয়েছেন । শুধু ধনাঢ্য ব্যাবসায়ী হয়েই ক্যারিয়ারের ইতি টানেননি । চাঁদাবাজীর দল গোদাকে অর্থ মন্ত্রে বশ করে আওয়ামিলীগের এমপি পর্যন্ত হয়েছেন । এতে তার দলের প্রাথমিক সদস্য হবারও প্রয়োজন পরেনি । এ সবই সম্ভব হয়েছে পঙ্কিল গণতন্ত্রের মেনেজ-মেনেজ খেলায় । অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় তিনি এই খেলায় বড়ই ওস্তাদ । তবে সেই ওস্তাদ এমপি রনিই কিনা শেষ পর্যন্ত ধরা খেলেন দরবেশ বাবার কাছে । কারন দরবেশ বাবা যে ওস্তাদের ওস্তাদ, দরবেশদের দরবেশ ।
দরবেশ বাবার হাত ছাফাই গুনে শেয়ার বাজারের তেত্রিশ লক্ষ লোক পথের ফকির। আবুলদের কমিশন ভেল্কিতে দক্ষিন বঙ্গের তিন কোটি মানুষে স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার । পদ্মা সেতু এখন কেবলই দুরাশা । এসব দুর্নিতি সরকারকে আন্তর্জাতিক ভাবে হেয় করেছে। দেশেও ভোটারদের কাছে আওয়ামিলীগ ব্যাপক ভাবে অজনপ্রিয় হয়েছে । বিষয়টি আমজনতা বুঝে থাকলে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বও বুঝেছেন । কিন্তু সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব আর শীর্ষ দুর্নিতিবাজ দ্বয়ের মধ্যে একটি জটিল এবং কুটিল সমপর্ক বিদ্যমান । “লোকে বলে খায়দায় ফজর আলী,মোটা হয় জব্বর”-দৃশ্য পটে কতিপয় দুর্নিতিবাজকে দেখা গেলেও ঘুষ,কমিশন আর লুন্ঠীত তবারকের মূল ভূক্তা স্বয়ং শীর্ষ নেতৃত্ব এবং তার পরিবার । একথা ঘরে ঘরে আমজনতা জানলেও জানতেননা হালের বুদ্ধিমান ব্যাবসায়ী হঠাৎ রজনীতিক,তর্কবাগীশ এমপি রনি । যে কারনে তিনি না বুঝে জলে নেমে কুমিরের সথে কামর খেলেছেন এবং যথারীতি পরাজিত হয়েছেন । দলের যে সব মেরুদন্ড হীন টিকটিকি সাদৃশ অর্বাচিন তাকে পেছন থেকে সাহস যোগাত,বাহাবা দিত,বিপদে তারা পাশে দাড়ায়নি । বরং জায়গামত বলেদিয়েছে ছেলেটা বেয়াদব, দলের শৃংখলা ভঙ্গকারী ওর শিক্ষা হওয়া উচিৎ । যার ফল সরকার দলীয় এমপি হয়েও সামান্য কারনে দীর্ঘ দিন নিসঙ্গ হাজত বাস ।
এমপি বদির হাতে লান্চিত হননি এমন লোকের সংখ্যা তার নির্বাচনী এলাকায় কম আছে । এমপি কফিলউদ্দিন পুলিশ পিটিয়ে তক্তা বানিয়েছেন । কামাল মজুমদার সাংবাদিক পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন । গফরগাঁয়ের খুনি এমপি গিয়াস নিজ দলের সমর্থকদের উপর গুলি বর্ষণ করেছেন । শুধু এমপি সাহেবরা বলে কথা নেই । প্রতিদিন কোথাও না কোথাও একজন প্রশাসক,পুলিশ বা আমজনতা কোন ছাত্রলীগ,যুবলীগ,শ্রমিকলীগ বা অন্য কারো দ্বারা লান্চিত হচ্ছে । এসব ঘটনার প্রতিটি যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে সাজা হওয়া উচিৎ । কিন্তু সাজাতো বহুদূর এই ক্ষমতাবানরা কোন তদন্তের সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানা নাই । তবে কেন একমাত্র এমপি রনিই এর ব্যাতিক্রম হবেন ? হ্যাঁ তার ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম হবার কারন রয়েছে । কোন অখ্যাত টিবি সাংবাদিকের গায়ে হাত তুলে তিনি হাজতবাসী হয়েছেন । হাততো তিনি সাংবাদিকের গায়ে তুলেননি,হাত তুলেছেন দরবেশ বাবার গায়ে । উনি আবার যেনতেন কেউনা, শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতিনিধি । রনি সাহেবের খুচা ইমাম পর্যন্ত পৌছেচে । দুর্নিতির পরিধি,মাত্রা এবং তার সাথে জড়িত ব্যাক্তির তালিকার প্রকৃত শীর্ষ ব্যাক্তির অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে তিনি ভবিষ্যতে পথ চলবেন বলে আশা করা যায় । আর যদি সাপের মাথা না চিনে লেজ ধরে টানাটানি করেন, বোকার মত একঘুয়ে আচরন করেন তবে ভবিষ্যতে আরও হাজত বাস করতে হতে পারে । কারন তিনি তবে সত্যিকার অর্থে চতুর ব্যাক্তি নন বরং..........
বিদ্রঃ আমি উনাকে দুর্নিতির সাথে আপোষ করতে বলছিনা, উনি চাইলে জিহাদ ঘোষনা করতে পারেন ।
©somewhere in net ltd.