নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিডিহাসনাত

আমি একজন নিয়মিত ব্লগার

ব্যারিষ্টার হাসনাত তালুকদার

ব্যারিষ্টার হাসনাত তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৌলবাদ দমন বা লালন নয়, দরকার নিয়ন্ত্রন

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৫





“হাসনাত”



পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই কম-বেশী ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায় । ধর্ম ভিত্তিক এই রাজনৈতিক দল গুলো মৌলবাদী দল আর এর নেতা কর্মিরা মৌলবাদী হিসাবে আক্ষায়িত হন । দক্ষিন এশিয়ার দেশ পাকিস্থান,ভারত এবং বাংলাদেশে এর শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে । মৌলবাদী রাজনীতির অস্তিত্ব, বিকাশ আর নিয়ন্ত্রন নিয়ে এসব দেশে লোচনা,সমালোচনা আর গবেষনার শেষ নেই । তবে আমার আলোচনা আমি বাংলাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখব ।



বাংলাদেশে নব্বই শতাংশ লোক মোসলমান । তবে এর ক্ষুদ্র একটি অংশই সরাসরি ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির সাথে যুক্ত । ভোটের হিসাবেও এদের সম্মিলিত সংখ্যা পাঁচ শতাংশের বেশী নয় । শতকরা হিসাবে সংখ্যা যাই হোক, সক্রিয় রাজনীতিতে এদের অস্তিত্ব চোখে পরার মত । এরা খুবই সংগঠিত এবং এদের চেইন অব কমান্ড সুবিন্যাস্ত এবং এদের রাজনীতির পেছনে একটি বিশেষ টার্গেট বা উদ্দেশ্য রয়েছে । বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই এরা দল বেধে উঠা বসা,চলা ফেরা এবং বসবাস করে। এরা খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়ন করতে পারে । এসব কারনে এরা সহজেই মিটং,মিছিল বা কোন দাবীর বিষয়ে জুরালো আন্দোলন করতে পারে । প্রাপ্তির বিষয়ে এরা ইহকাল অপেক্ষা পরকালের প্রাধান্য দেওয়ায় খুব সহজেই জীবন বাজী রাখতে পারে, যা দুনিয়াবী রাজনীতির সাথে সংক্লিষ্ট দলের নেতা কর্মিদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠেনা।।কাজেই এদেরকে শুধু মাত্র দমন,নিপিড়ন,নির্যাতন বা আইনের মার প্যাচে আটকে দেওয়া যাবেনা ।



আমাদের বামঘেষা সরকারী দল স্যাকুলার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে । তারা মুখে বলে ধর্ম যার যার দেশটা সবার । ভ্রান্ত বামদের এখন শেষ আশ্রয় স্থল আওয়ামিলীগ । একদিন যারা এই দলের নেতা শেখ মুজিবের চামরা দিয়ে ডুগডুগি বাজাবার স্বপ্ন দেখত,সেই মতিয়া,মেনন আর ইনু বিনুরা সবাই এখন এই দলে । এদের অতি উৎসাহে দলটি এখন অতি বাম হয়ে মৌলবাদ মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে । কিন্তু ভোটের হিসাবে এক শতংশের কম ভোটের অধিকারী বামদের প্রেসক্রিপশনে তারা ভরসা রাখতে পারেনা । আর সে কারনেই ইসলামী ঐক্য জুটের সাথে তাদের ফতুয়া বিষয়ে চুক্তি হয়, হেফাজতকে বাগে আনতে মন্ত্রীরা গলদঘর্ম হয় । ধর্মিয় রাজনীতির প্রধান দল জামাত তাদের শত্রু যতনা আদর্শ গত কারনে তারও চেয়ে বেশী শত্রু ঐ দলটি বিএনপি জোটের মিত্র হবার করনে । শেখ শাসিনা মুখে যতই ইসলাম পন্থদের গালাগাল করুন, নির্বাচন এলে ঠিকই মাথায় হিজাব দিয়ে, তসবি হাতে মাজার জিয়ারত করে ইসলাম পন্থি সাজার চেষ্টা করেন ।



অপরদিকে দল হিসাবে বিএনপি অনেকটা খুলাখুলিই ইসলাম পন্থী । ভোটের রাজনীতিতে জামাত ও ইসলামী এক্যজুট তাদের মিত্র । আওয়ামিলীগ সৃষ্ট ফ্রাংকেনষ্টাইন হেফাজতও মধ্য রাতের বর্বর ক্রেকডাউনের পর অনেকটাই বিএনপির দখলে । বিএনপি নিজে ধর্মাশ্রয়ী দল না হলেও ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিকে সে কখনও অস্বীকার করেনা । অপরদিকে জেনারেল এরশাদের নেতৃত্ত্বাধীন ডান পন্থী অপর দল জাতীয় পার্টিও ইসলামী দলের রাজনৈতিক অধীকারকে অস্বীকার করেনা ।



অনেক সময় ধর্মিয় রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট যুবক-যুবতিদেরকে জঙ্গী হিসাবে ব্রান্ডিং করার চেষ্টা করা হয় । অথচ ঐ যুবক-যুবতিটি হয়ত একজন আলেম, প্রকৃতই ধার্মিক । তার দ্বারা সমাজের ক্ষতি কারক কাজ অসম্ভব । আবার এটাও সত্য ভুল মানুষের পাল্লায় পরে অনেকেই জঙ্গী জীবন বেছে নেয় । মাদ্রাসায় পরা ছাত্র ছাত্রী বা ইসলামী রাজনীতিতে বিশ্বাসী সকলকে ঢালাও ভাবে জঙ্গী আক্ষায়িত করে অবজ্ঞা করা হলে তাদের বরং জঙ্গী হতে উৎসাহ প্রদান করা হবে । আর মৌলবদী রাজনীতি বন্ধের নামে ইসলামী দল গুলোকে নিষিদ্ধ করা হলে ঐ দল গুলো হাত গুটিয়ে বসে থাকবে এমনটি ভাববার কারন নেই । সুজা পথে রাজনীতি করার অধিকার বন্চিত হয়ে বরং তারা বক্র পথে চালিত হতে চাইবে । আর জঙ্গীবাদের প্রকৃত ঝুকিতে তখনই বাংলাদেশ নিমজ্জিত হবে ।





একটি কথা এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, মৌলবাদী রাজনীতির বাহিরে যখন কোন বাম দল তাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য খুন খারাবী আর ধ্বংস যগ্য চালায়,তখন তাদের আমরা জঙ্গী বলিনা, বলি বিপ্লবী । আইরিশরা যখন বোমা ফোটায় তখন তাদের বলা হয় স্বাধীনতাকামী । আবার মধ্যবাম বা মধ্য ডানেরা হরতাল,অবরোধ বা ধর্মঘট ডেকে যখন ভাংচোর চালায় তখনও তাদের আমরা জঙ্গী বলিনা, বলি দলীয় আদর্শ কর্মি । আর অন্যায় গুলোকে আমলে নিয়ে এই দল গুলোকে নিষিদ্ধ করার দাবীও কেউ করেনা । তবে কেন শুধু মৌলবাদীদের উপর খরগস্থ হতে হবে ? কউমি মাদ্রাসা সহ যে সকল ইসলামী প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ গুলোকে জঙ্গী প্রজনন ক্ষেত্র বিবেচনায় দমন,নিপিড়ন আর অবজ্ঞা না করে বরং দরকার এর যথাযথ নার্সিং । সাধারন স্কুল কলেজ পড়ুয়াদের মত ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদেরও মূল্যায়ন করতে হবে । দরকার তাদের আধুনিকায়নও । অপরদিকে একটি মাদ্রাসা মসজিদ বা ধর্মিয় প্রতিষ্ঠানে ধর্ম সংশ্লিষ্ট বিষয় তথা জ্ঞান চর্চার বাহিরে কোন কুকর্ম চলে কিনা সে বিষয়েও সরকারকে যথাযথ নজরারী করতে হবে । যদি জ্ঞান চর্চা বা ধর্ম কর্মের বাহিরে জঙ্গীবাদী ক্রিয়া কলাপের প্রমান পাওয়া যায়, তারও যথাযথ ব্যাবস্থা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে মৌলবাদের দমন বা লালন করে নয় বরং এর যথাযথ নার্সিং আর আইন শৃংখলা বাহিনীর নজরদারী ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনেই বাংলাদেশ মৌলবাদের রাজনীতির সুফল পেতে পারে ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.