![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার একটি হচ্ছে 'জঙ্গিবাদ'। দুনিয়াজুড়ে এটি আজ মহামারী আকার ধারণ করেছে। একের পর এক সন্ত্রাসী হামলায় ধরণী যেন কেঁপে উঠছে থেমে থেমেই! বহির্বিশ্বে জঙ্গিবাদ ব্যাপারটি বেশ আগে থেকে চলতে থাকলেও বাংলাদেশে এর সূচনা হয় ২০০১ সালের একটি বিশেষ গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসার পরপরই। সে কী ভয়ঙ্কর অধ্যায়ের সূচনা! বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা যেন হঠাৎ করেই পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে! সেই বিশেষ গোষ্ঠীর মদদে উত্থান হয় বাংলা ভাইয়ের। গঠিত হয় জেএমবি। তারপর একে একে চলে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, উদীচী হামলা, তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দলের নেতা-কর্মীর ওপর জঙ্গি হামলাসহ প্রতিটি জেলায় একসঙ্গে এবং প্রায় একই সময়ে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণের মতো বীভৎস জঙ্গি হামলা। শুধু হামলাই নয়, পুলিশি প্রটেকশনে 'বাংলা বাহিনী'র শোডাউনের ছবিও এসেছিল তৎকালীন পত্রপত্রিকায়, যেখানে সেই গোষ্ঠীর মদদে জঙ্গিবাদ উত্থানের বিষয়টি পরিষ্কারভাবেই উঠে আসে। অথচ যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা তৎকালীন মন্ত্রী নিজামী বলেছিলেন, 'বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি, বাস্তবে বাংলা ভাই বলে কিছু নেই!'
একটি নির্দিষ্ট গ্রুপ বা গোষ্ঠী যদি জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত থাকে তবে তা হয়তো সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দমন করা সম্ভব হয়। কিন্তু একটি দল বা দলের প্রধানের কাছ থেকে যখন জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসের শুরু হয় তখন তা কে বা কীভাবে দমন করবে? বাংলাদেশে ঠিক এ ব্যাপারটিই ঘটেছিল। বাংলাদেশে একটি বিশেষ দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তার দলের শাসনামলে জঙ্গি বোমারুদের মুক্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১১ সালের 'প্রথম আলো'য় এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদনও বের হয়েছিল। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার ছক হয়েছিল সেই রহমান সাহেবের একটি বিশেষ ভবনে, যা পরবর্তীতে দেশের সবচেয়ে আলোচিত ভবন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল।
জঙ্গিবাদ অনেকটা ক্যান্সারের মতো। সেই বিশেষ জোট তাদের পাঁচ বছরের শাসনামলে সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে দিয়েছিল এই ক্যান্সারের বীজ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই জানান দিলেন সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার জিরো টলারেন্স। যে কোনো দেশের পূর্ববর্তী সরকার যদি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক হয় তবে পরবর্তী সরকারকে এই ক্যান্সারের বীজ নির্মূল করতে অবশ্যই বেশ বেগ পেতে হয়। বর্তমান সরকারকেও এর মুখোমুখি হতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকার কতটুকু সফল হয়েছে তা বিগত সরকারের সেই বীভৎস সময়ের সঙ্গে এখনকার সময়কে তুলনা করলেই পার্থক্যটা চোখে পড়বে।
বর্তমান সরকার যখন জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে এগোচ্ছে ঠিকই তখনই জঙ্গিরা বদলে নিয়েছে তাদের কৌশল। শুরু হয়েছে গুপ্তহত্যা কিংবা টার্গেট কিলিং। শিক্ষক, পুলিশ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় সম্প্রদায় থেকে শুরু করে ধর্মবর্ণনির্বিশেষে সকল পেশার লোকজনের ওপর হামলা করা হচ্ছে। এদের এই টার্গেট কিলিং থেকে নিস্তার পায়নি নারীরাও। এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী একজন ধর্মপ্রাণ সাধারণ বাঙালি মুসলিম নারী। অথচ এই সাধারণ নারীকেই হতে হলো জঙ্গিবাদের বলি! আমি নিজে একজন নারী হিসেবে এই নির্মম হত্যাকা-ের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুর মতো হাজারো মিতু আছে এই বাংলাদেশে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই মিতুরা আসলে কতটুকু নিরাপদ?
আসলে এখন আমরা কেউই নিরাপদ নই। নারীরা যদি 'নিরাপদে আছি' ভেবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকি তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে। দেশটা নারী-পুরুষ সবার। দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ একজন পুরুষের যেমন নারীর ঠিক ততটুকুই। কোনো দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ততক্ষণ পর্যন্ত জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত না সে দেশের মানুষ সচেতন হয়। বিশেষ করে নারীদের ভূমিকা এখানে আরো গুরুত্বপূর্ণ। এর আগের একটি লেখায় আমি উল্লেখ করেছিলাম, কীভাবে জামায়াত-শিবিরের মহিলা-ছাত্রীরা কিতাব-তালিমের দোহাই দিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্মের কথার ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন উস্কানিসহ জঙ্গিবাদকে প্রমোট করে। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে হয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জঙ্গিবাদের তালিম নারীদেরই বন্ধ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো'। একজন নারী মানেই একটি ঘর। একজন নারী একজন মেয়ে, কন্যা, জায়া, জননী। একজন মেয়েই পারে তার সংসারের খুঁটিনাটি সবকিছুর খোঁজখবর রাখতে। তার পরিবারের কোন সদস্য কোথায় কী করছে তা একজন পুরুষের চেয়ে নারীই ভালো অাঁচ করতে পারেন। সম্প্রতি মাদারীপুরে জঙ্গি হামলাকালে জনতার হাতে ধরা পড়া জঙ্গি ফাহিমের ব্যাপারটি নিয়ে যদি একটু ভাবেন তাহলে দেখতে পাবেন ফাহিম বাসায় বলেছিল বিদেশ যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ফামিহের মা যদি সঠিকভাবে খোঁজখবর রাখতেন তবে হয়তো ছেলেকে সস্নিপিং সেলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারতেন বলে আমার ধারণা। একটি সংসারের মূল একজন নারী। তিনি যদি সচেতন হন তবে জঙ্গিবাদ অনেকাংশেই প্রতিহত করা সম্ভব। কারণ, প্রতিটি ঘরেই যদি দুর্গ গড়ে ওঠে তবে জঙ্গিরা পালিয়েও বাঁচতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে নারীদের সচেতন করার কাজটিও নারীদেরই করতে হবে। গ্রামে একজন পুরুষ মানুষ সহজেই অপরিচিত একজন নারীর সঙ্গে কোনো বিষয়ে কথা বলতে পারেন না, যা একজন নারী খুব অনায়াসেই করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সরকারের উচিত থানা কিংবা ইউনিয়ন পর্যায়ে নারীদের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে নারী টিম গঠন করা এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে উঠান বৈঠক কিংবা প্রয়োজনবোধে ঘরে ঘরে ক্যাম্পেইনের ব্যবস্থা করা। বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুর মতো আর কেউ যেন রাস্তায় এভাবে খুনের শিকার না হন সেজন্য নারী হিসেবে আপনাকেই এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে।
বাংলাদেশ আজ কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। স্ব স্ব ক্ষেত্রে আজ আমাদের নারীরা অনেক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধেও নারীরা একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন, এটাই প্রত্যাশা।
সিলভিয়া পারভিন লেনি: কলাম লেখক
২| ২৮ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০৯
র্যাশ বলেছেন: পৃথিবীর ইতিহাসে প্রতিটি যুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির স্বীকার হয়েছে নারী। ভবিষ্যতে জঙ্গীবাদ বাংলাদেশ যদি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয় তবে তা থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে নারী। জঙ্গীরা তাদের কর্ম কৌশল পাল্টাতে পারে। জঙ্গীবাদ বিস্তারের প্রাথমিক
কৌশল তারা পুরুষের উপর না প্রয়োগ করে নারীদের উপর করতে পারে। দেশে যে হারে বোরখা-হিজাব ওয়ালীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে এই ভয়টা এখন বেশি বাস্তবিক। "কেন বোরখা পড়তে হবে" এই প্রশ্নটা আজকাল খুব মেয়েই করছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫৩
চৈতী আহমেদ বলেছেন: আসলে এখন আমরা কেউই নিরাপদ নই। নারীরা যদি 'নিরাপদে আছি' ভেবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকি তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে। দেশটা নারী-পুরুষ সবার। দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ একজন পুরুষের যেমন নারীর ঠিক ততটুকুই। কোনো দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ততক্ষণ পর্যন্ত জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত না সে দেশের মানুষ সচেতন হয়। বিশেষ করে নারীদের ভূমিকা এখানে আরো গুরুত্বপূর্ণ। এর আগের একটি লেখায় আমি উল্লেখ করেছিলাম, কীভাবে জামায়াত-শিবিরের মহিলা-ছাত্রীরা কিতাব-তালিমের দোহাই দিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্মের কথার ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন উস্কানিসহ জঙ্গিবাদকে প্রমোট করে। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে হয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জঙ্গিবাদের তালিম নারীদেরই বন্ধ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো'। একজন নারী মানেই একটি ঘর। একজন নারী একজন মেয়ে, কন্যা, জায়া, জননী। একজন মেয়েই পারে তার সংসারের খুঁটিনাটি সবকিছুর খোঁজখবর রাখতে। তার পরিবারের কোন সদস্য কোথায় কী করছে তা একজন পুরুষের চেয়ে নারীই ভালো অাঁচ করতে পারেন। সম্প্রতি মাদারীপুরে জঙ্গি হামলাকালে জনতার হাতে ধরা পড়া জঙ্গি ফাহিমের ব্যাপারটি নিয়ে যদি একটু ভাবেন তাহলে দেখতে পাবেন ফাহিম বাসায় বলেছিল বিদেশ যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ফামিহের মা যদি সঠিকভাবে খোঁজখবর রাখতেন তবে হয়তো ছেলেকে সস্নিপিং সেলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারতেন বলে আমার ধারণা। একটি সংসারের মূল একজন নারী। তিনি যদি সচেতন হন তবে জঙ্গিবাদ অনেকাংশেই প্রতিহত করা সম্ভব। কারণ, প্রতিটি ঘরেই যদি দুর্গ গড়ে ওঠে তবে জঙ্গিরা পালিয়েও বাঁচতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে নারীদের সচেতন করার কাজটিও নারীদেরই করতে হবে। গ্রামে একজন পুরুষ মানুষ সহজেই অপরিচিত একজন নারীর সঙ্গে কোনো বিষয়ে কথা বলতে পারেন না, যা একজন নারী খুব অনায়াসেই করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সরকারের উচিত থানা কিংবা ইউনিয়ন পর্যায়ে নারীদের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে নারী টিম গঠন করা এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে উঠান বৈঠক কিংবা প্রয়োজনবোধে ঘরে ঘরে ক্যাম্পেইনের ব্যবস্থা করা। বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুর মতো আর কেউ যেন রাস্তায় এভাবে খুনের শিকার না হন সেজন্য নারী হিসেবে আপনাকেই এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে
ধন্যবাদ লেখককে।
সত্যি চুপ করে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে জঙ্গীবাদের মতো মহামারী থেকে মুক্ত থাকা যাবে না। প্রত্যেককেই সোচ্চার হতে হবে, এখনই, সময় গেলে সাধন হবে না।