| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুম রহমান
পেশাদার ও নেশাদার লেখক, মাঝে মাঝে কবি
নতুন পাঠক, প্রথমেই আপনাকে স্বাগতম জানাই, ছোট ছোট ছোটগল্পের জগতে। ধারাবাহিকভাবে এখানে ছোট ছোট ছোটগল্প প্রকাশিত হবে। প্রতিটি গল্প ২০০ শব্দে লেখা। প্রথমেই বলে নেয়া ভালো, এই পরিমাপ নির্ধারণের মূল কারণ গল্পের আকারকে একটা নির্দিষ্ট সীমায় বাঁধা। ছোট ছোট ছোটগল্প ঠিক কী মাপের হবে, কতটুকু আকৃতি হলে একটি গল্পকে ছোটগল্পের চেয়েও ছোট বলবো - এইসব ভাবনা থেকেই ২০০ শব্দের সীমানায় গল্প লেখার প্রয়াস। কবিরা ছন্দের অনেক সীমানায় মেনেও মহত্তম কবিতা লিখেছেন, সনেট তো একদম কঠিন নিয়মেই আঁটা! কাজেই ছোট ছোট ছোটগল্পের ২০০ শব্দের সীমারেখা স্বচেষ্ট নিরীক্ষায় নিজের লেখনীকে যাচাই করার প্রবণতাও বলা যেতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে চাই ‘ছোট ছোট ছোটগল্প’-এর ধ্বণিগত বৈচিত্র আমার ভাল লাগে। তাছাড়া এমন লোভও হয়, একদিন হয়তো এই রকম সহস্র গল্প লিখে ‘ছোট ছোট ছোটগল্প’-এর আঙ্গিকটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। কাজেই, ‘অনুগল্প’, ‘ক্ষুদ্র গল্প’ ইত্যাদি কোন শিরোনাম নয়, আমার এ গল্পগুলোর ‘ছোট ছোট ছোটগল্প’ শিরোনামটি গৃহীত হোক সে আশা করি।
স্বপ্ন - ১,২,৩
১. স্বপ্নের সমাধান
অনেক দুর থেকে কান্নার মত ডাক শুনতে পাই। কে যেন করুণ সুরে ডাকছে, মা, মা... আমি পথ হারিয়ে ফেলেছি। আমি ব্যস্ত হয়ে উঠি। কে হারিয়ে গেছে, কোথায় হারিয়ে গেছে! কিন্তু আমি কুয়াশা ছাড়া আর কিছু দেখতে পাই না। শীতের সকাল অথবা বিকালও হতে পারে। কোথাও কিছু চোখে পড়ে না। বাতাসে খেজুরের গুড় আর ভাপাপিঠার গন্ধ। আমার খিদে পেয়েছে। কান্নার শব্দ থামছে না। গলার স্বরটা খুব চেনা লাগছে। মানুষটাকে দেখছি না। অনেক দূর থেকে, মনে হয় যতদূর থেকে শব্দ পৌঁছান উচিৎ নয় তার চেয়েও অনেক দূর থেকে চেনা কেউ কাঁদছে। কেঁদে কেঁদে ডাকছে, মা... মা... মাগো... আমি পথ হাড়িয়ে ফেলেছি। আমি হন্য হয়ে খুঁজি। প্রবল বেগে দৌঁড়াতে থাকি। আমার সারা শরীর ঘামে ভিজে যায়...
এই সময় খুব জোরে কি যেন একটা শব্দ হয়। কী যেন ভাঙে খানখান করে। আমার ঘুম ভেঙে যায়। হায়, আমার অনেক দিনের প্রিয় মগটা ভেঙে গেছে! এই কাচের মগের মধ্যে আমার অনেক দিনের স্মৃতি ছিল। স্বপ্নের তোড়ে সেইসব স্মৃতি ভেঙে গেল। আমি আবারও আমার পুরানো স্বপ্নটা দেখছিলাম। একটা খাবনামা কিনতেই হবে। স্বপ্নের ফ্রয়েডীয় ব্যাখ্যাটাও জানা দরকার। কেন আমি এই স্বপ্ন বারবার দেখি। কোথায় কবে শীতের কুয়াশায় পথ হারিয়ে ফেলি, সে ব্যাখ্যা জানা না থাকলে আমি যে বারবার স্মৃতির মগ ভেঙে ফেলব। আমার তো বেশি স্মৃতি চিহ্ন নেই।
২. স্বপ্ন
এক স্বপ্নকামী ভাবে- আমি প্রতিদিন স্বপ্ন দেখবো, জীবনে যত যাই ঘটুক প্রতিদিন আমি নতুন নতুন সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখবো।
একটা বইয়ে সে পড়েছে, মানুষ যা নিয়ে বেশি ভাবে তা-ই স্বপ্ন দেখে। ঘুমের মধ্যে মানুষের অবচেতন ভাবনাগুলোও নাকি স্বপ্নে এসে ঘোরাফেরা করে। সেই থেকে সে প্রতিদিন একটা একটা করে সুন্দর সুন্দর বিষয় নিয়ে ভাবতে লাগলো। একদিন ভাবলো, আমি আজ রাতে পদ্মপুকুর দেখতে যাবো। সারাদিন ভাবার পর রাতে স্বপ্ন দেখলো, একটা মাঠ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে গোবরে পা দিয়ে ফেলেছে সে। তাতে অবশ্য হতাশ হলো না সে, বরং ভাবলো, গোবরেও পদ্মফুল ফোঁটে, অতএব আমি আমার ভাবনার অনেক কাছাকাছি যেতে পারছি।
তার কোন প্রেমিকা ছিলো না, কিন্তু একদিন সে তার একজন প্রেমিকার কথা ভাবলো, তারপর রাতের বেলা সে স্বপ্নে এক ভিখারীনিকে দেখতে পেলো। তাতেও সে অবাক হলো না, বরং ভাবলো ভিখারীও তো প্রেমিকা হতে পারে।
এই রকম অবশ্য বেশী দিন চললো না। খুব শীঘ্রই দেখা গেলো, সে যা ভাবছে তাই স্বপ্ন দেখছে। এখন সে যদি ভাবে বরফের দেশে গোলাপ ফুল ফোঁটে কিনা সে কথা, তবে রাতের বেলা স্বপ্ন দেখে, সাদা ধবধবে বরফের মধ্যে লাল টুকটুকে একটা গোলাপ ফুল ফুঁটে আছে।
এই ভাবে তার ভাবনাগুলো স্বপ্নে ধরা দিলো। আর সুন্দর স্বপ্নের আশায় সে সুন্দর সব ভাবনা ভাবতে লাগলো আর তার জীবনটা স্বপ্নের মধ্যে কেটে গেল।
৩. স্বপ্নের বেলুন
বেলুন উড়ালে মনে হয়, লাল নীল হলুদ সবুজ কিছু স্বপ্ন ওড়াচ্ছি।
স্বপ্ন তো ওড়াতে নেই। সবাই বরং তাকে ধরতে চায়।
হু, তা ঠিক। এমনি মনে হলো, তাই বললাম, বেলুন কিনে দেবে আমাকে?
তোমাকে লক্ষ বেলুন দিতে পারি।
এর বেশি কথা হয় না। তখনই স্বপ্নটা ভেঙ্গে যায়। জানি না, কেন মিলিকে নিয়ে এ স্বপ্নটা দেখি বারবার!
একদিন ওকে বলি, চলো তোমাকে কিছু বেলুন কিনে দেই।
ধুরও পাগল, বেলুন দিয়ে আমি কী করবো, বেলুন নিয়ে খেলার বয়স আছে আমার?
কত বয়স তোমার মিলি?
এই বারো কি তেরো!
তাহলে এইটুকু বয়সেই তোমার শরীর এত্তো উত্তাল!
অসভ্যতা করো না।
মিলির চিমটি খেয়ে আমি চুপসে যাই। কিন্তু স্বপ্নের বেলুন গুলো উড়তেই থাকে। তখন মিলিকে আমি স্বপ্নের কথা বলি।
মিলি অবাক হয় না, øেহমাখা গলায় বলে, তুমি এখনও ছেলে মানুষ রয়ে গেছো বাবু, ছেলেবেলায় বেলুন কেনার জন্য জেদ ধরতে?
আমার ছেলেবেলা বলে কিছু নেই। সেই বয়সটা একা ব্রক্ষপুত্রের তীর ধরে হেঁটে কাটিয়ে দিয়েছি আমি।
তখন মিলি আমাকে বুকে চেপে ধরে, পাগলরে, কই ছিলি তুই, খুব কষ্ট করেছিস নারে!
আমার কান্না পায়, কিন্তু কাঁদি না।
শোন, আমাদের বিয়েতে তুুই অনেক বেলুন কিনিস। সেদিন ছাদে উঠে গিয়ে আমরা একসাথে বেলুন ওড়াবো।
হ্যাঁ মিলি, হ্যাঁ। আমি তোকে অনেক ভালবাসবো, দেখিস। বলতে বলতে তাঁর বুকে স্বপ্নের বেলুন খুঁজি, খুঁজতেই থাকি।
২|
০৮ ই জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:২৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: খারাপ নয়।
৩|
০৮ ই জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:৫৪
হতাশার স্বপ্ন বলেছেন: অনেক সুন্দর +
৪|
০৮ ই জুলাই, ২০১০ বিকাল ৫:৫২
উল্টো মানুষ বলেছেন: খুব ভালো! +++
৫|
১৯ শে জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:৫৬
যীশূ বলেছেন: ভালো লাগলো।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:০২
শূণ্য উপত্যকা বলেছেন: ছোট ছোট ছোট গল্প!!