নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আমার মত করে অন্যদের যতটুকু ভালবাসি অন্যরা আমাকে ততটুকু ভালবাসে না।
বিয়ের এই পনের বছরে মাঝে মাঝেই একটা দৃশ্য দেখে আসছি।সায়ন গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় দাড়িয়ে উদাস হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে কি যেন ভেবেই যায়।ঘন্টা খানেক থেকে আবার বিছানায় এসে চুপ-চাপ শুয়ে পড়ে।মাসে কদিন যে ও এমন করে তা আমি ঠিক বলতে পারব না।বিয়ের প্রথম প্রথম কয়েক দিন সায়নের কাছে জানতে চেয়েছিলাম,অমন করে আকাশের পানে তাকিয়ে ভর রাতে কার কথা ভেবে দীর্ঘস্বাশ ফেল? মুচকি হেসে সায়ন বলেছিল,
এমনি দাড়িয়ে থাকি,কারও কথা ভাবিনা।এটা আমার পুরানো অভ্যাস।
আমি বিশ্বাস করিনি সায়নের কথা।পরে এই এত বছরে আর জানতেও চাইনি।
এইতো গত বছরে সায়ন অফিসের কাজে তিন দিনের জন্য বাইরে গিয়েছিল।তখনই জানতে পেরেছিলাম ওর মনে চেপে রাখা কষ্টটা কি!যা ও কখনও কাওকে এমনকি আমি ওর স্ত্রী আমাকেও বলেনি।সায়নের একটা কালো বাক্সো আছে।যেটাতে ওর ব্যক্তিগত জিনিস রাখত।বাক্সের চাবিটা ও কখনও কাওকে দিতনা।সায়ন আমার কাছে যেটা লুকাতে চাইত আমি সেটা নিয়ে কখনও মাথা ঘামাতাম না।ঘর গোছাতে যেয়ে সে দিন ওর চাবিটা পেয়েছিলাম।নিজের কৌতুহল চেপে রাখতে না পেরে বাক্সোটা খুলে দেখলাম।না তেমন কিছু ছিলনা বাক্সে।কয়েকটি ডায়েরি কিছু পুরানো দিনের ওর ছবি, আরও কিছু মানুষের ছবি যাদেরকে আমি চিনিই না।বেশ কিছু গল্পের বইও ছিল।ডায়েরি গুলো উল্টে পাল্টে দেখতে লাগলাম।ভাগ্যিস কামিনি আর কাব্য ওদের মামা বাড়ি ছিল।তানা হলে ওদের জ্বালায় ডায়েরি গুলো পড়তে পারতাম না।সারাটা দিন সায়নের ডায়েরি গুলো পড়েছি।পড়তে গিয়ে এক ধরনের অপরাধ বোধ মনের মধ্যে কাজ করছিল।তারপরও পড়েছি।যে মানুষটার সাথে পনের বছর ঘর করলাম তার কত কিছুই এই জীবনে অজানা থেকে গেল।কোথায় যেন পড়েছিলাম,যুগ যুগ একটা মানুষের সাথে বাস করেও চেনা যায়না তাকে পৌছানো যায়না তার মনের গভীরে।আমিও সায়নকে এখনও চিনতে পারিনি,পৌছাতে পারিনি ওর মনের গভীরে!
ডায়েরি পড়ে সবটা না জানলেও যতটুকু জেনেছি তাতে বুঝলাম সায়নের কষ্টটা কোথায়।এতটা কষ্ট বুকে চেপে একটা মানুষ কি ভাবে এতটা বছর কাটিয়ে দিল ভাবতেই অবাক লাগে।সেই কষ্ট গুলোকে ও ভুলতে চেষ্টা না করে আয়োজন করে বুকের মাঝে পুষে রেখেছে!কষ্টও মানুষ অতি যত্নে বুকের মাঝে পুষে রাখে, সায়নকে না জানলে জানতেই পারতাম না।
সায়নের কষ্টটা কি?
না থাক বলছি না।
যে মানুষটা একান্তে তার নিজের কষ্টটা পুষে গেছে।কোন দিন জানতে দেয়নি কাওকে তার কষ্টটা কি।
তাহলে আমি কেনই বা বলতে যাব তার কষ্টটা কি।যে কষ্টটাকে নিজের মাঝেই লুকিয়ে রেখে যত্নে পুষতে চাই তার কষ্টের কথা জানলেও আমার মনে হয় কাউকে না বলাই ভাল।
ডায়েরি গুলো আবার বাক্সে রেখে দেই।
সায়নের কষ্ট গুলো বন্দি থাক এই কালো বাক্সে কিম্বা সায়নের মনের অতল গভীরে।
২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯
সায়ান তানভি বলেছেন: লেখালিখি চালিয়ে যান। শুভ কামনা।
১৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১০
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ধন্যবাদ সায়ান ভাই
৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:২৫
সুমন কর বলেছেন: সাবলীল লেখা। ভালো লাগল।
১৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:০৭
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন দা
৪| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:১০
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন:
ভালোই লিখেছেন।
৫| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩৯
বিজন রয় বলেছেন: সুন্দর।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৩
মুহাম্মদ মোমিনুল বলেছেন: চিন্তার সাগরে ভাসিয়ে দিলেন আরেকবার, কষ্টের কালো বাক্সে হইত এই অজানার কষ্ট টাকে লুকিয়ে রাখতে হবে স্বগোপনে।
সুন্দর লেখনি।